EDUCATION COMMISSION :INDIA
শিক্ষা কমিশন ব্রিটিশ ভারতে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ও পুনর্গঠনের সর্বপ্রথম উদ্যোগ সূচিত হয় ১৮৫৪ সালের উডের শিক্ষা ডেসপ্যাচের মাধ্যমে। ব্রিটিশ হাউজ অব কমন্সের সিলেক্ট কমিটি কর্তৃক ভারতে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত সমীক্ষার ফলই হলো উডের শিক্ষা প্রস্তাব। বস্ত্তত উডের ডেসপ্যাচই বাংলায় আধুনিক গণশিক্ষার আইনি ভিত্তি রচনা করে। প্রতিটি প্রদেশে শিক্ষা বিভাগ সৃষ্টি, বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রেডেড স্কুল প্রতিষ্ঠা, পরিদর্শন ও তদারকি ব্যবস্থার প্রবর্তন, বেসরকারি বিদ্যালয়ে অর্থ মঞ্জুরী প্রদান, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, এবং ইংরেজি ও মাতৃভাষার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত জ্ঞানদানের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন ছিল উডের ডেসপ্যাচের মুখ্য ফলশ্রুতি। উডের ডেসপ্যাচ প্রকাশের পরেই কেবল মাধ্যমিক শিক্ষা সামগ্রিক শিক্ষা কাঠামোর একটি স্বতন্ত্র পর্যায় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। উডের ডেসপ্যাচ ছিল বাংলায় মেয়েদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রচলনের সুপারিশ সম্বলিত অন্যতম প্রথম দলিল।ভাইসরয় লর্ড রিপন ১৮৮২ সালে উইলিয়ম হান্টারকে চেয়ারম্যান করে প্রথম ইন্ডিয়ান এডুকেশন কমিশন নিয়োগ করেন। হান্টার কমিশন সরকারি অনুদান ব্যবস্থার মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যক্তি উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেয়া, স্কুলে অভ্যন্তরীণ ও প্রবেশিকা পরীক্ষা অনুষ্ঠান এবং মাধ্যমিক স্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে। ১৯০১ সালে সিমলায় অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান কনফারেন্সের পর লর্ড কার্জন একটি সরকারি সিদ্ধান্তের আদলে ১৯০৪ সালে তাঁর শিক্ষানীতি প্রকাশ করেন। এই শিক্ষানীতিতে হাইস্কুল পর্যায়ে বিশেষত পাবলিক স্কুলে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়।১৯১৯-১৯২১ সালের শিক্ষা সংস্কারের আওতায় পৌরসভা এলাকায় ও গ্রামাঞ্চলে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক করা হয় এবং ১৯৩০ সালের বেঙ্গল প্রাইমারী এডুকেশন অ্যাক্টের মাধ্যমে বাংলায় প্রথম সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রচলনের পদক্ষেপ গৃহীত হয়। ১৯৩০ সালে প্রাদেশিক শিক্ষা বিভাগ গঠিত হয় এবং এই করে শুরু হয় শিক্ষাকে কেন্দ্রনির্ভর ও আমলা নিয়ন্ত্রিত করার প্রক্রিয়া। ফলত প্রণীত হয় ১৯৩১ সালের বেঙ্গল এডুকেশন কোডের মতো বিখ্যাত আইন এবং এ আইনবলে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার নিয়ন্ত্রক প্রশাসনিক দপ্তর ডিস্ট্রিক্ট স্কুলবোর্ড। ১৯২৭ সালের হার্টগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৩৫ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণী সংস্থা হিসেবে গঠিত হয় একটি কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা বোর্ড।এরপর ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য নানান শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় ।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি শিক্ষা কমিশন নিয়ে আলোচনা করা হলো – – – – – –
বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
গঠন :এই শিক্ষা কমিশন টি স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন। শিক্ষাবিদ ডক্টর সর্বপল্লি রাধা কৃষ্ণানের সভাপতিত্বে এই শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। এছাড়াও যে সমস্ত বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ এই কমিশনের সাথে যুক্ত ছিলেন তারা হলেন – নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত, তারা চাঁদ, জাকির হোসেন, মুদালিওর, মেঘনাদ সাহা, করম বহাল,জোসেফ ডাফ প্রমুখ। 1949 সালে এই কমিশন 747 পৃষ্ঠার শিক্ষা সম্পর্কিত এক রিপোর্ট ভারত সরকারের কাছে পেশ করেন, যেখানে উচ্চ শিক্ষার কাঠামো, কার্য ধারা, শিক্ষায় ধর্ম নিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিষয় গুলি তুলে ধরা হয়।
কমিশনের সদস্য : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন তথা স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ১০ এর মধ্যে ভারতীয়দের সদস্য সংখ্যা ছিল ৭জন এবং বিদেশিদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩জন।ইতিহাসের মূল্যবান দলিল হিসেবে
রাধাকৃষ্ণন কমিশনের প্রতিবেদন :রাধাকৃষ্মণ কমিশনের প্রতিবেদনকে ভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে একটি মূল্যবান দলিল বলা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানাের প্রয়ােজনীয়তা অনুভূত হয়। তাই স্বাধীনতার পরপরই ভারত সরকার ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্মণের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করে। উচ্চশিক্ষার মানােন্নয়নের জন্য এই কমিশন গঠন করা হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন প্রসঙ্গও তুলে ধরেছে। কমিশন স্বীকার করেছে যে, উচ্চশিক্ষার মানােন্নয়ন ঘটাতে গেলে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার আগে উন্নতি ঘটাতে হবে। শুধুমাত্র সুপারিশ করার মধ্য দিয়েই কমিশন তার দায়িত্ব শেষ করেনি, ভবিষ্যৎ ভারতের শিক্ষার রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়েও আলােচনা করেছে – – –
(১) শিক্ষা পরিকল্পনা: ভারতের স্বাধীনতা শুধুমাত্র ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়াই নয়, নিজের দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে গেলে ভালাে শিক্ষা পরিকল্পনা দরকার। তাই এই স্বাধীনতার অর্থ ব্যাপক।(২) ব্যক্তির গুণাবলির বিকাশ: বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশগুলি পর্যালােচনা করলে এর গুরুত্ব বােঝা যায়। এই কমিশনে শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে—নতুন ভারত গঠনের জন্য নেতৃত্বদানের শিক্ষা, গণতান্ত্রিক মনােভাবের বিকাশ, সৌভ্রাতৃত্ববােধ, সহনশীলতা, শিক্ষায় সমান অধিকার, স্বাধীনতা প্রভৃতি গুণাবলি প্রয়ােজন। ব্যক্তির মধ্যে এই গুণগুলি বিকশিত হলে সামাজিক উন্নতিবিধান সম্ভব।(৩) শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সুবিধা প্রদান: শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার স্থাপন, গবেষণার উৎকর্ষতসাধন, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন কাঠামাের উন্নয়ন সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের জন্য ফেলােশিপের ব্যবস্থা প্রদান, সরকারি কলেজগুলির উন্নতিসাধন প্রভৃতি সুবিধাপ্রদান।(৪) শিক্ষাসংক্রান্ত সংশােধনী: প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন ভুল-ত্রুটিসমূহকে সংশােধন করার জন্য কমিশন কতগুলি সুপারিশ করে। এইসকল ত্রুটিগুলির কয়েকটি যথাক্রমে গ্রামীণ শিক্ষার অবহেলা, প্রশাসনিক ব্যর্থতা, শিক্ষার নিম্নমুখী মান ইত্যাদি।(৫) বৃত্তি ও পেশাগত শিক্ষার গুরুত্ব: পাঠক্রমে সাধারণধর্মী শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তি ও পেশাগত শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এতে বােঝা যায়, কমিশন একদিকে যেমন মেধাকে গুরুত্ব দিয়েছে, অপরদিকে সাধারণ মানের শিক্ষার্থীরা যাতে স্বনির্ভর হতে পারে, সেই ব্যবস্থাও পাঠক্রমে রেখেছে।(৬) হাতেকলমে কাজের দক্ষতা: একদিকে গবেষণার মান উন্নত হবে, অন্যদিকে হাতেকলমে কাজের দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। কমিশন পাঠক্রমে সমন্বয়ী দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে।(৭) ভারতীয় ভাষার মর্যাদা: শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে কমিশনের ত্ৰিভাষা নীতি অত্যন্ত উল্লেখযােগ্য বিষয়। মাতৃভাষার উপর কমিশন গুরুত্ব দিয়েছে। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতীয় ভাষা (আঞ্চলিক ভাষা) গ্রহণ করার কথা বলেছে। এইভাবে ভারতীয় ভাষাকে মর্যাদা দিতে চেয়েছে।(৮) পরীক্ষা ব্যবস্থার সুপারিশ: পরীক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি অত্যন্ত প্রগতিশীলতার পরিচায়ক। সারা বছর পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করার কথা বলেছে, বর্তমানে যেটা প্রচলিত হয়েছে।(৯) প্রশ্নের ধরন নির্ধারণ: এ ছাড়া অভীক্ষাপত্রে রচনাধর্মী ও নৈর্ব্যক্তিক দু-ধরনের প্রশ্ন রাখার উপর জোর দিয়েছে। এর ফলে রচনাধর্মী প্রশ্নের ত্রুটিগুলি দূর করা সম্ভব হবে বলে কমিশন মনে করে।(১০) শিক্ষক নিয়ােগ: শিক্ষক নিয়ােগ সম্পর্কে কমিশন অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে। শিক্ষক হবেন জ্ঞানপিপাসু এবং আদর্শ চরিত্রের অধিকারী। শিক্ষাগত যােগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়ােগ করতে বলেছে।(১১) নারীশিক্ষা: নারীদের শিক্ষার জন্য পাঠক্রমে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি অন্তর্ভুক্ত করেছে। সহশিক্ষার কলেজগুলিতে মেয়েদের স্বাচ্ছন্দ্যের উপর জোর দিয়েছে শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের নৈতিক চরিত্রের উন্নতিসাধনের জন্য ধর্মশিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার কথা বলেছে, তবে ধর্মের গোঁড়ামিকে বাদ দিয়ে।(১২) চিত্তসংযতকরণ : চিত্ত সংযত করার জন্য ধ্যান, প্রার্থনা, মনীষীদের জীবনীপাঠের ব্যবস্থা করার কথা বলেছে।
(১৩) গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন: বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হল, গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা। গ্রামের শিক্ষার্থীদের প্রয়ােজনীয়তার কথা ভেবে, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেছে।
পরিকল্পনা
১. প্রাথমিক শিক্ষা – ৮ বছর
২. মাধ্যমিক শিক্ষা – ৩-৪ বছর
৩. কলেজীয় শিক্ষা – ৩ বছর
৪. বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা – ২ বছর
১. প্রাথমিক শিক্ষা : প্রাথমিক শিক্ষার সময়কাল ৮ বছর। অর্থাৎ ৬ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত। প্রাথমিক স্তরে সুস্পষ্ট বুনিয়াদি শিক্ষা পরিকল্পনা থাকায়, কমিশন নতুন করে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে আর কোনো আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি। অর্থাৎ, এই স্তরে শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে বুনিয়াদি শিক্ষা পরিকল্পনায় সংগঠিত হবে।
পরীক্ষা সংস্কার : পরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য কমিশনের সুপারিশগুলো হল:-১. পরীক্ষা রচনাধর্মী না হয়ে যতটা সম্ভব নৈর্ব্যক্তিক হবে।২. সমগ্র শিক্ষাবর্ষ ধরে শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার মূল্যায়ন করতে হবে।৩. স্নাতক স্তরে তিন বছরের শেষে একটি পরীক্ষার পরিবর্তে তিন বছরে তিনটি পরীক্ষা করতে হবে।
১. পূর্বের কমিশনগুলির সীমাবদ্ধতা : ১৯৪৮ সালের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । ১৯৫২ সালে গঠিত শিক্ষা কমিশনের এক্তিয়ার ছিল কেবলমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষার পর্যালোচনা এবং সুপারিশ করা ।
২. পূর্বের কমিশনের সুপারিশগুলি পূরণে ব্যর্থতা : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন ও মুদালিয়র কমিশন – এর সুপারিশ সমূহ পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি । যার ফলে, শিক্ষাব্যবস্থার এুটিগুলি অনেকাংশেই থেকে যায় ।এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাব্যবস্থার এুটিসমূহ দূর করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার ১৯৬৪ সালের ১৬ জুলাই ড. ডি. এস. কোঠারির নেতৃত্বে একটি ‘এডুকেশন কমিটি’ নিয়োগ করা।
কোঠারি কমিশন গঠন
১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই ভারত সরকার ১৭ জন ভারতীয় ও বিদেশী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেন । এর মধ্যে ১০ জন হলেন ভারতীয় এবং ৭ জন হলেন বিদেশি । এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন ডা. ডি. এস. কোঠারি এবং সম্পাদক ছিলেন ড. জে. পি. নায়েক । এই কমিশন ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর কাজ শুরু করেন এবং ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন “Union Education Minister” -এর নিকট তাঁদের সুপারিশ জমা দেন ।কমিশন তাঁদের সুপারিশগুলিকে “শিক্ষা ও জাতীয় অগ্রগতি” এই শিরোনামে প্রকাশ করেছিলেন । এই রিপোর্টটির ৬৯২ পৃষ্ঠার মধ্যে মূল রিপোর্ট ছিল ৪৮৯ পৃষ্ঠার।এটি স্বাধীন ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিক্ষা কমিশন ।এই কমিশন ১২টি Task Force এবং ৭টি Working Group নিয়ে কাজ করেছিল ।
কমিশনের ১২টি Task Force :
১. বিদ্যালয় শিক্ষা, 2. উচ্চশিক্ষা,
৩. কৃষিবিদ্যা শিক্ষা, ৪. কিরিগরি শিক্ষা,
৫. বয়স্ক শিক্ষা, ৬. বিজ্ঞান শিক্ষা এবং গবেষণা,
৭. শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকের মর্যাদা,
৮. ছাএ কল্যাণ,
৯. নতুন শিক্ষণ কৌশল ও পদ্ধতি,
১০. মানবশক্তি, ১১. শিক্ষামূলক প্রশাসন,
১২. শিক্ষার অর্থনীতি ।
কমিশনের গঠিত ৭টি Working Group হল –
১. নারীশিক্ষা, 2. অনুন্নত শ্রেণির শিক্ষা,
৩. বিদ্যালয় গৃহ, ৪. পরিসংখ্যান,
৫. বিদ্যালয় ও সম্প্রদায়ের সম্পর্ক,
৬. প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা, ৭. বিদ্যালয় পাঠ্যক্রম ।
কোঠারি কমিশনের মতে শিক্ষার লক্ষ্য :
কোঠারি কমিশন বর্তমান বিজ্ঞান নির্ভর পরিবর্তনশীল সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যেসকল লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব আরোপের কথা বলেছেন, তা হল-
১. উৎপাদনমুখী শিক্ষা : শিক্ষাকে জাতীয় উৎপাদনমুখী করতে হবে । সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা যাতে সচল থাকতে পারে এবং শিক্ষা যাতে জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে তার জন্য বিজ্ঞানসম্মত সমস্ত রকমের জ্ঞান এবং কর্ম প্রশিক্ষণ দেওয়াই হবে শিক্ষার লক্ষ্য ।২. ভাষার বিকাশ : কমিশনের মতে, ভাষার বিকাশের মধ্য দিয়েই মানুষ তার মনের ভাবকে দ্রুত অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারে । তাই প্রতিটি মানুষের মধ্যে ভাষার বিকাশসাধন করা শিক্ষার একটি বৃহৎ লক্ষ্য ।
৩. শিক্ষার সমসুযোগ : সমাজের সকল মানুষ যাতে শিক্ষার সযোগসুবিধা লাভ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে । অর্থাৎ, গণতান্ত্রিক নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে ।
৪. জাতীয় শিক্ষা পরিকল্পনা রচনা : কমিশনের মতে, শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হল ভারতীয় শিক্ষার একটি জাতীয় পরিকল্পনা রচনা ।
৫. নৈতিক মূল্যবোধ জাগরণ : কমিশনের মতে, শিশুর মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করাই শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ।
৬. গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ : কমিশনের মতে, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য হবে শিক্ষার্থীদের মনে গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার প্রতি আস্থার ভাব জাগ্রত করা ।
Excellent one
Super post