ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় নিম্নবিত্ত পরিবারের বাস্তব চিত্র!

ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় নিম্নবিত্ত পরিবারের বাস্তব চিত্র!

ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় নিম্নবিত্ত পরিবারের বাস্তব চিত্র! পথ শিশুর মর্মান্তিক জীবন চিত্র।

সিগারেট টানছিলাম, পাশে কেউ গেঞ্জি ধরে টানলো। ঘুড়ে দেখলাম এক 6-7 বছরের একটা মেয়ে।

➛ভাই 10 টাকা দেন না।

➛10 টাকায় কি হবে ?

-➛ভাত খাবো।

-➛10 টাকায় ভাত হয় ??

-➛অল্প করে খাবো।

-➛(বাক্যহীন !!) কত টাকা হলে বেশি করে খাওয়া হবে ?

➛ 50 টাকা। ভাত 10 আর তরকারি 40।দিবেন ?

➛ হুম দিতে পারবো।

➛এত টাকা দিবেন !! (চোখে মুখে বিস্ময়)তয় ভাত কিইনা দেওন লাগবোনা,একটা উপকার করেন।

➛কি উপকার ?

➛ঐ টাকার চাউল কিনে দেন। বাসায় নিয়ে যাবো। মা সহ খাবো।

➛বাসায় কে কে আছে আর তোমার ?

➛মা বুইন আর একটা ভাই। মা হাটবার পারেনা। বুবু কাজ করে। বড় ভাই চা এর দোকানে থাকে। আমি ভিক্ষা করি।

➛ তোমার বাবা ?

➛ছাইড়া গেছে অনেক আগে, মনে নাই।

➛হুম। পড়াশোনা কর না ?

➛পড়লে ভিক্ষা করতাম কখন ? খাওন জুটবোনা।

1 কেজি চাউল আর কিছু ডিম কিনে দিয়ে বিদায় নিলাম। 4 জনের সংসারে একদিন চলে যাবে।

খুব অদ্ভুত ভাবে বেড়ে উঠে ওরা।খুব অল্প বয়সেই জীবনকে বুঝে নিতে শেখে।
6 বছরে যথসম্ভব আমি “কেজি/ওয়ান” এ পড়তাম। এই বিকাল টাইম টাই Drawing করতাম। অবসরে ওটাই শখ ছিল। নিশ্চিন্তে Drawing করতাম। খাওন জুটবে কই থেকে এই চিন্তা অন্তঃত ছিলনা। “পড়লে খাওয়োন জুটবো কই থেকে” এই ধরণের প্রশ্নও মাথায় আসেনাই।এগুলো চিন্তার জন্য বাবা-মা ছিল।

>>➛10 টাকায় আমি তো ছোটবেলায় কলম কিনেছি – আমার শিক্ষার উপকরণ। সে 10 টাকায় ভাত খুঁজে- তার বেঁচে থাকার উপকরণ। বর্তমানে আমাকে অফিস থেকে কলম দেওয়া হয়, যার দাম 250 টাকা। আর যেই সিগারেটটা খাচ্ছিলাম তার দাম 10 টাকা।

পথের ধুলোয় অদ্ভুত ভাবে বেড়ে উঠার মাঝেও তাদের মধ্যে বিবেকবোধ তৈরী হয়েছে। 50 টাকায় হোটেল থেকে ভাত-তরকারি কিনে খাওয়ার থেকে বাসায় পঙ্গু মা আর ভাই বোন কে নিয়ে খাওয়া বেশি তৃপ্তিজনক সেই বোধও এই 6 -7 বছরের অশিক্ষিত মেয়ের মাঝে তৈরী হয়েছে।

আরও দেখুন : শিশুশ্রমিক জাতীয় সমস্যা

ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় নিম্নবিত্ত পরিবারের বাস্তব চিত্র!

➛ শিক্ষায়-শুধুমাত্র-বিবেক-বোধ-শেখায়না

এর বয়সে রোজ সকালে আমি ভাবতাম আজ স্কুলে যেয়ে টিফিনে কি খেলব, কার পাশে বসবো, স্যারের কোন হোমওয়ার্ক আছে কিনা।
আর এই মেয়েটা ভাবে রোজ সকালে “কোন রাস্তায় ভিক্ষা করলে বেশি টাকা পাবে” আর 50 টাকা আমাদের একদিন মোবাইলে খরচ যায় আর ওদের সবাই মিলে এক বেলা খাওয়া হয়ে যায়।

একই স্রষ্টার সৃষ্টি আমরা দুইজনই। দুইজনই দুইজনের বাবা-মা এর সন্তান। স্রষ্টা চাইলে আমার স্থানটাও উল্টো হতে পারতো। আমরা ভুলে যাই সব।অনেক অহংকার আমাদের। গরীবদের মানুষ ভাবিনা। কখনও তাদের গায়ে হাত তুলি। কাছে আসলে রুমাল নাকে দিই।আমাদের ভাব ভঙ্গি এমন যে আজ আমাদের যা ভালো পজিশন এর ক্রেডিট আমাদের।অথচ স্রষ্টা চাইলে আজ সে চা খাইতো আর আমি গেঞ্জি টেনে 10 টাকা চাইতাম অল্প করে ভাত খাওয়ার জন্য।

ভালো রেখেছেন স্রষ্টা সত্যিই অনেক। নিম্নবিত্ত এই মানুষ গুলোর জীবন বৈচিত্রের সাথে তুলনা না দেওয়া পর্যন্ত সত্যিই বুঝিনা আমি কতটা সুখে আছি, কতটা ভাল আছি…………

তাই কখোনো এই সব ছোট পথ শিশুদের গায়ে হাত তুলবেন না, নাকে রুমাল দিয়ে তাদের কে তাড়িয়ে দিবেন না, তাদেরই সমবয়সী আমাদের ও আছে ভাই বোন, আজকে এই পথ শিশুর জায়গায় আপনার ছোট ভাই বা বোন থাকলে আপনি কি করতেন? নাকে রুমাল দিয়ে তাড়িয়ে দিতেন?