
বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি (শিল্প – সাহিত্য – সংস্কৃতি) | HS Bengali Question and Answer :
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
Q. ব্রতচারীর উদ্ভাবক হলেন –
(A) নবগোপাল মিত্র
(B) প্রিয়দারঙ্গন মিত্র
(C) প্রিয়নাথ বসু
(D) গুরুসদয় দত্ত
Ans: (D) গুরুসদয় দত্ত।
Q.‘ ভলিবল ‘ খেলাটির আবিষ্কারক কে ?
(A) উইলিয়াম জি. মর্গান
(B) জন কোচরেন
(C) শ্রীভাই নুরুলকার
(D) রানী লক্ষীবাই
Ans: (A) উইলিয়াম জি. মর্গান।
Q. নগেন্দ্রপ্রসাদ কোন ক্লাবে হকি এবং টেনিস খেলার সূচনা করেন ?
(A) টাউন ক্লাব
(B) স্পোটিং ক্লাব
(C) শোভাবাজার ক্লাবে
(D) ন্যাশনাল ক্লাবে
Ans: (B) স্পোর্টিং ক্লাব ।
Q. কার নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে খো খো খেলা শুরু হয় ?
(A) ফনী ভট্টাাচার্য্য
(B) দিলীপ রায়
(C) ভূপতি মজুমদার
(D) বাঘা সোম
Ans: (C) ভূপতি মজুমদার।
Q. নারায়ণচন্দ্র ঘোষ পশ্চিমবঙ্গে কোন খেলার প্রসারে স্থান গ্রহণ করেন ?
(A) তীরন্দাজি
(B) কাবাডি
(C) ব্যাডমিন্টন
(D) ব্রতচারী
Ans: (B) কাবাডি।
Q. ১৮৯৩ সালে আই.এফ.এ শিল্ড প্রতিযোগিতায় প্রথম যে ক্লাবটি অংশগ্রহণ করার অধিকার পায় –
(A) ডালহৌসি ক্লাব
(B) প্রেসিডেন্সী ক্লাব
(C) ক্যালকাটা এফ.সি ক্লাব
(D) শোভাবাজার ক্লাব
Ans: (D) শোভাবাজার ক্লাব।
Q.বাংলা ক্রিকেটার ধাত্রীগৃহ –
(A) স্পোটিং ইউনিয়ন ক্লাব
(B) ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব
(C) শোভাবাজার ক্লাব
(D) মোহনবাগান ক্লাব
Ans: (A) স্পোর্টিং ইউনিয়ন ক্লাব ৷
Q. প্রথম এশীয় ব্যাক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্ব লাইট হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ কে জেতেন ?
(A) গোবর গুহ
(B) ফনীন্দ্রকৃষ্ণ গুপ্ত
(C) রাখালচন্দ্র ঘোষ
(D) দারা সিং
Ans: (A) গোবর গুহ।
Q. ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ব্যাক্তিত্ব হলেন ?
(A) শ্যামসুন্দর মিত্র
(B) কুমারেশ সেন
(C) নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী
(D) যতীন্দ্রচরণ গুহ
Ans: (C) নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি (শিল্প – সাহিত্য – সংস্কৃতি) | HS Bengali Question and Answer :
—————————————————————–
আরও পড়ুন : ভাত গল্প (মহাশ্বেতা দেবী)
—————————————————————-
রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি
✶Q. বাঙালর ক্রীড়াসংস্কৃতির ধারায় ক্রিকেটে সৌরভ গাঙ্গুলির অবদান লেখো ।
অথবা , ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদান লেখো । অথবা , বিশ্বক্রিকেটে সৌরভ গাঙ্গুলির গুরুত্বপূর্ণ অবদান লেখো ।
অথবা , আন্তর্জাতিক স্তরে সুনাম অর্জন করেছেন এমন একজন বাঙালি ক্রীড়াবিদের কৃতিত্বের পরিচয় দাও ।
Ans: ক্রিকেটের জগতে বাঙালি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় একটি পরিচিত মুখ । ক্রিকেটপ্রেমী প্রতিটি মানুষের কাছেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব । এই বাঁহাতি ক্রিকেটার ভারতের জাতীয় দলে অধিনায়কের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন । এই বিচক্ষণ ব্যক্তির অধিনায়কত্বে ভারত মোট ৪৯ টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে ২১ টি ম্যাচে জয়লাভ করে । তাঁর হাত ধরেই ভারত ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ফাইনালে পৌঁছায় । আগ্রাসী মনোভাব অধিনায়ক সৌরভের চারত্রিক গুণ । তরুণ ক্রিকেটারদের কেরিয়ারের উৎকর্ষসাধনে তিনি বিশেষভাবে নিয়োজিত ছিলেন ।
✶ অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শুধু বাংলা এবং ভারতের নয় , বিশ্বক্রিকেটের গর্ব । একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি এগারো হাজারেরও বেশি রানের মালিক । খ্যাতিসম্পন্ন এই ব্যক্তিত্ব ফুটবল খেলা দিয়ে জীবন শুরু করেছেন , কিন্তু জনপ্রিয়তার অধ্যায় রচনা করেছেন ক্রিকেটে । তিনি দেহ – মনের আন্তরিক চেষ্টায় অতি দুরবস্থার মধ্যেও ভারতকে ক্রিকেট খেলায় আলোকিত মানচিত্রে এনে দাঁড় করিয়েছেন । তিনি সারাজীবনে ১১৩ টি টেস্ট ম্যাচ , ৩১১ টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ এবং ২৫৪ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন । প্রতিটি ম্যাচেই তাঁর পারদর্শিতা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দেয় । বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের টেস্টে মোট রান ৭২১২ , একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে মোট রান ১১৩৬৩ , প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোট রান ১৫৬৮৭। এই প্রভূত রান বাংলা এবং বাঙালির ঐশ্বর্য । ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলকে জনপ্রিয়তার উচ্চশিখরে প্রতিষ্ঠিত করে তিনি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে মডেল হয়ে উঠেছেন । সৌরভ কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবে নয় , বোলার হিসেবেও কৃতিত্ব দেখিয়েছেন । তিনি টেস্ট ম্যাচে ৩২ টি উইকেট , একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ টি উইকেট লাভ করেছেন । পারদর্শী , বিচক্ষণ , উচ্চাবিলাসী এই ক্রিকেট ব্যক্তিত্বকে ভারত সরকার ১৯৯৮ সালে ‘ অর্জুন পুরস্কার ‘ এবং ২০০৪ সালে ‘ পদ্মশ্রী ‘ সম্মান প্রদান করে ।
বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি
Q. রামায়ণে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা কে ? এই খেলায় বাঙলির সাফল্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
অথবা , ‘ দাবা ’ খেলায় আমাদের রাজ্য একটি বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে– আলোচনা করো ।
Ans: ‘ রামায়ণ ’ মহাকাব্যের কাহিনিসূত্রে বলা চলে রাবণের স্ত্রী মন্দোদরিই দাবা খেলার স্রষ্টা ।
✶ ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে জন কখরেনের উদ্যোগে ক্যালকাটা চেস ক্লাব তৈরি হয় । ভারতের প্রাচীনতম এই দাবা খেলার ক্লাব বাঙালির দাবাচর্চাকে বিশ্বগামী করে । ‘ ওয়েস্ট বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন (১৯৫৯ ) রাজ্য দাবার উন্নতির জন্য জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করে । ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবারই এ প্রতিযোগিতায় প্রাণকৃয় কুণ্ডুর জয় দাবায় বাঙালির স্বীকৃতির প্রবাহকে ধারাবাহিক করে । বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ছয়জন গ্র্যান্ডমাস্টার , ন’জন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার , দু’জন মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার , একজন মহিলা ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার রয়েছেন । তিন বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন দিব্যেন্দু বড়ুয়া , মাত্র উনিশ বছরে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া সূর্যশেখর গাঙ্গুলি ( যিনি টানা ছয় বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ড করেছেন , বিশ্বনাথন আনন্দের সেকেন্ড হয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় কাজ করেছেন ) , সন্দীপন চন্দ , নীলোৎপল দাস , দীপ সেনগুপ্ত , সপ্তর্ষি রাজচৌধুরী , মেরী অ্যান গোমস , সহেলি ধর বড়ুয়া , নিশা মেহেতা প্রমুখ দাবা খেলায় বিশ্বে বাংলা তথা বাঙালির মুখোজ্জ্বল করেছেন এবং করে চলেছেন ।
বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতি
✶ Q. প্রথম বাঙালি সাঁতারু কে ? সাঁতার প্রতিযোগিতায় বাঙালির অবদান লেখো ।
অথবা , বাংলার দু’জন সাঁতারুর পরিচয় দাও ।
Ans: প্রথম বাঙালি সাঁতারু পুরুলিয়াবাসী মিহির সেন । ভারতের ক্রীড়াচর্চার ইতিহাসে সাঁতার প্রতিযোগিতা বিশেষ স্থান দখল করে আছে । স্বাধীন ভারতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ‘ সুইমিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া ‘ গঠিত হয় । অবশ্য এর অনেক আগেই কলকাতার প্রথম ভারতীয় সাঁতারু ডিডি মুলজি আমস্টারডাম অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করেন । সাঁতার চর্চার বিশেষভাবে আগ্রহ দেখিয়েছেন পুরুলিয়ার মিহির সেন । তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে মারফত এক মহিলার ইংলিশ চ্যানেল পার করার খবর পাঠ করেন । এই সম্মান লাভের জন্য তিনি ইংল্যান্ডে সাঁতার শিখতে শুরু করেন । তিনিই প্রথম বাঙালি তথা ভারতীয় যিনি প্রথম ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেছেন । এই অবিসংবাদিত কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার তাকে ১৯৫৯ সালে ‘ পদ্মশ্রী ’ সম্মানে ভূষিত করে ।
✶ পুরুষদের পাশাপাশি বাঙালি মহিলারাও সাঁতারে বিশেষ অবদান দেখিয়েছেন । বাংলার মেয়ে আরতি সাহা কেবল ভারতের নয় , সমগ্র এশিয়ার মেয়েদের মধ্যে প্রথম ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেছেন । এই সাফল্যের সম্মানস্বরূপ ভারত সরকার আরতি সাহাকে ১৯৬০ সালে ‘ পদ্মশ্রী ‘ উপাধিতে ভূষিত করে । আরতি সাহার পূর্বে গোটা বিশ্বে মাত্র চব্বিশ জন মহিলা ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করতে পেরেছেন । কিন্তু তাঁরা মাত্র নয়টি দেশ থেকে এসেছিলেন । এই হিসাব থেকে স্পষ্ট হয় আরতি সাহার সময়েও বিশ্বের উন্নত দেশগুলিও সাঁতার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে ছিল । এরকম পরিস্থিতিতে আরতি সাহার বিরাট সাফল্য ভারতকে বিশ্ববাসীর চোখে নতুন করে উপস্থাপিত করে । আরতি সাহার পরে ভারতের অনেক মহিলাই ইংলিশ চ্যানেল বিজয়িনীর শিরোপা পেয়েছেন । এঁদের মধ্যে অনিতা সুদ , বুলা চৌধুরী , রেশমি শর্মা , রিচা শর্মা উল্লেখযোগ্য ।