
বাঙালির চিত্রকলা| উচ্চমাধ্যমিক বাংলা |HS Bengali Question and Answer :
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – বাঙালির চিত্রকলা (শিল্প – সাহিত্যিক – সংস্কৃতি) | HS Bengali Question and Answer :
বহুবিকল্প ভিত্তিক সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
Q. শিল্পী নন্দলাল বসু কার ছাত্র ছিলেন ?
(A) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
(B) দেবীপ্রসাদ চৌধুরীর
(C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
(D) গুনেন্দ্র্ণাথ ঠাকুরের
Ans: (C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।
Q. ‘জুবিলি আর্ট আকাদেমি ‘কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
(A) রণদাসপ্রসাদ গুপ্ত
(B) হেনরি হোভার লক
(C) আর্নেস্ট বিনকিন্ড হ্যাভেল
(D) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (A) রণদাসপ্রসাদ গুপ্ত।
Q. বিশ্বভারতীর হিন্দি ভবনের দেওয়ালে আঁকা ৭৭ ফুট বিস্তৃত, ৮ ফুট মদ্ধযুগের সন্তগণ নামে ছবিটি কার –
(A) বিনোদবিহারী মুখোাধ্যায়
(B) রামকিঙ্কর বেইজ – এর
(C) দেবীপ্রসাদ রায় চৌধুরী
(D) জয়নুল আবেদিন
Ans: (A) বিনোদবিহারী মুখোাধ্যায়।
Q. ‘অস্টসহাস্রিকা – প্রঞ্জপারমিতা ‘ নামের তালপাতার পুথিটির বারোটি রঙিন ছবির সময়কাল –
(A) আনুমানিক ৯৮৩ খ্রি:
(B) আনুমানিক ৯০০ খ্রি:
(C) আনুমানিক ৯৩৩ খ্রি:
(D) আনুমানিক ৯৮০ খ্রি:
Ans: (A) আনুমানিক ৯৮৩ খ্রি:।
Q. অভিধানে ‘ পট ‘ শব্দটির অর্থ –
(A) পতাকা
(B) পুস্তক
(C) চিত্র
(D) সংগীত
Ans: (C) চিত্র।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর – বাঙালির চিত্রকলা (শিল্প – সাহিত্যিক – সংস্কৃতি) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Question and Answer :
Q. ‘ কর্তাবাবা ’ কার আত্মজীবনীমূলক রচনা ?
Ans: বাঙালি চিত্রশিল্পী শ্রীবিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়এর আত্মজীবনী মূলক রচনা ।
Q. ‘ সিদ্ধিদাতা গণেশ ’ , ‘ শোকার্ত সিদ্ধার্থ ’ , ‘ জগাই মাধাই’— ছবিগুলি কে অঙ্কন করেছেন ?
Ans: নন্দলাল বসু ।
Q ‘ হরিপুরা পট ’ – এর চিত্রকর কে ?
Ans: ‘ ‘হরিপুরা পট ’ – এর চিত্রকর নন্দলাল বসু ।
‘ পাটা ’ শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে ?
Ans: সংস্কৃত ‘ পটু ’ শব্দ থেকে ‘ পাটা ’ শব্দটি এসেছে ।
Q. রবীন্দ্রনাথ নিজে অলংকরণ করেছেন , তাঁর এমন দু’টি ছোটোদের বইয়ের নাম লেখো ।
Ans: রবীন্দ্রনাথ নিজে অলংকরণ করেছেন , তার এমন দু’টি বই— ‘ খাপছাড়া ’ ও ‘ সে ’ ।
আরও পড়ুন : বাঙালির ক্রীড়া-সংস্কৃতি
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – বাঙালির চিত্রকলা (শিল্প – সাহিত্যিক – সংস্কৃতি) | HS Bengali Question and Answer :
Question: বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিংকর বেইজের অবদান আলোচনা করো ।

Ans: ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাস খুঁজলে যে সকল ব্যক্তিবর্গের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত পাওয়া যায় রামকিঙ্কর বেইজ তাদের মধ্যে অন্যতম।তিনি 1906 সালের 25 শে মে বাঁকুড়ার যুগীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেণ।আবাল্য দারিদ্রের সাথে লড়াই করেই এগিয়ে যেতে হয়েছে তাকে।তবে শিল্পের প্রতি অনুরাগ একটু কমাতে পারেনি এই দারিদ্র।তিনি দেবদেবীর ছবি যেমন আঁকতে পারতেন সুন্দরভাবে তেমনই ছুতোর,কামারদের কাজ;পুতুল তৈরী,পোস্টার লিখন,থিয়েটারের মঞ্চসজ্জায় তার ছিল সহজাত দক্ষতা।
রামকিংকর বেইজকে পাদপ্রদীপের আলোয় আনেন প্রবাসীর সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় । তাঁর উল্লেখযোগ্য চিত্রগুলি হলো- ‘ লেডি উইথ ডগ ’ , ‘ সুজাতা ‘ , ‘ সান্থাল ফ্যামিলি ’ , ‘ যক্ষ – যক্ষী ’ , ‘ নতুন শস্য ’ , ‘ গ্রীষ্মের দুপুর ’ , ‘ রবীন্দ্রনাথ ’ , ‘ অবনীন্দ্রনাথ ’ প্রমুখের প্রতিকৃতি প্রভৃতি ৷ নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি । বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ দেশিকোত্তম ’ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট , ‘ পদ্মভূষণ ‘ ( ১৯৭০ ) প্রভৃতি ।
কলকাতা , দিল্লি , মুম্বাই প্রভৃতি স্থানে প্রদর্শিত হয় তাঁর ছবি । এছাড়া প্যারিস বা জাপানে প্রদর্শনীতে গেছে তাঁর ছবি । শুধু তাই নয় , তার নানা শিল্পকর্ম এদেশের প্রধান প্রধান শিল্প সংগ্রহ শালায় রক্ষিত আছে ।
রামকিংকর নিজের শিল্প সম্পর্কে বলতেন তার সমস্ত মূর্তিই মুভিং । স্থবিরতাই বিশ্বাস নেই । আজও সবার মনে মাটির মানুষ শিল্পী রামকিংকর বাংলার মাটির অলংকার হয়ে রয়েছেন ।
Question: বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান আলোচনা করো ।
Ans: ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাস খুঁজলে যে সকল ব্যক্তিবর্গের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত পাওয়া যায় নন্দলাল বসু তাদের মধ্যে অন্যতম একজন।গ্রামীন প্রকৃতি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও দরিদ্র মানুষের জীবন ছিল তার ছবির মূল বিষয়। চিত্রশিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুযোগ্য শিষ্য ছিলেন ‘ সহজপাঠ ‘ বইটির অসামান্য অলংকরণের স্রষ্টা ছিলেন । নন্দলাল বসুর জন্ম ৩ ডিসেম্বর ১৮৮২ সালে । বাংলা চিত্রকলাচর্চার ধারায় তার অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না ।
১৯২০ সালে নন্দলাল বসু শান্তিনিকেতনে কলাভবনে স্থায়ীভাবে যোগদান করার পর থেকেই শিল্প শিক্ষার এক বিশিষ্ট পদ্ধতি এই প্রতিষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করে তোলে ৷ নন্দলাল বসুই প্রথম ভারতীয় শিল্প শিক্ষায় ‘ out door study ‘ বা ‘ Nature Study ’ এর উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন । শান্তিনিকেতনের দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর মাঠে বিচরণরত মোষ , নারী – পুরুষ – শিশু , হাটযাত্রী পথিক , মাল বোঝাই গোরুর গাড়ি এই সমস্তই উঠে এল তাঁর ছবির বিষয় হিসেবে । এছাড়াও ১৯৩০ সালে ডান্ডি লবণ আন্দোলনে গান্ধিজীর গ্রেফতারের পর নন্দলাল সাদা কালোয় চলমান গান্ধিজীকে এঁকেছিলেন লাঠি হাতে । এই চিত্রটি অহিংস আন্দোলনের প্রায় আইকন বা প্রতীকে পরিণত হয় ।
নন্দলাল বসু তাঁর অসামান্য প্রতিভার জন্য ১৯৫৪ সালে ভারত সরকারের ‘ পদ্মবিভূষণ ’ বিশ্বভারতীর ‘ দেশিকোত্তম ’ উপাধি লাভ করেন । তাঁর দুই খানি উল্লেখযোগ্য শিল্প গ্রন্থ হলো ‘ শিল্পচর্চা ’ ও ‘ রূপাবলী ’ । অবশেষে তিনি ১৬ ই এপ্রিল ১৯৬৬ সালে পরলোকগমন করেন ।

বাঙালির চিত্রকলা| উচ্চমাধ্যমিক বাংলা
Question: চিত্রকর যামিনী রায়ের পরিচয় সহ তার চিত্রকলা চর্চা সম্পর্কে তোমার মতামত লিপিবদ্ধ করো ।
অথবা , বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায়ের অবদান সম্পর্কে যা জানো লেখো ।
Ans:ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাস খুঁজলে যে সকল ব্যক্তিবর্গের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত পাওয়া যায় যামিনী রায় তাদের মধ্যে অন্যতম।বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।গ্রামে মৃৎশিল্পীদের সাহচর্য তাকে এই শিল্পী জীবনে প্রবেশের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। চিত্রকর যামিনী রায়ের জন্ম বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে । জন্মসূত্রেই তিনি চিত্রচর্চার উত্তরাধিকার লাভ করেন । ছেলেবেলা থেকে গ্রামজ পরিবেশ , গ্রামীণ নিসর্গের অবিরাম হাতছানি ও গ্রাম্য মৃৎশিল্পীদের অতি সাধারণ কিতু মায়াময় সঙ্গ ও শিল্প তার শিল্পীমনকে গড়ে দেয় ।
তার প্রথাগত চিত্রশিক্ষার বৃহৎ অঙ্গন ছিল ‘ গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল ‘ , যেখানে ১৯০৬ থেকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাগ্রহণের বিশেষ পর্বে তিনি ‘ ফাইন আর্ট ‘ বিভাগে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতির চিত্রাঙ্কন শিক্ষা করেন । এর কয়েক বছর পর থেকে তার অঙ্কিত চিত্র ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্ট ‘ – এর নিজস্ব ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হতে থাকে । ভারতীয় চিত্রকলায় তার ছবির ভাব – বিষয় – অঙ্কনরীতি সমকালীন শিল্পীদের থেকে এতটাই ভিন্নতাদর্শী ছিল যে , তিনি ক্রমে এক স্বতন্ত্র চিত্ররীতি নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠিত হন ।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে তাঁর ছবি ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে । ১৯৩৫ – এ তাঁর ছবির একটি একক প্রদর্শনী হয় কলকাতা কর্পোরেশন বিল্ডিং – এর সমবায় ম্যানসনে , যেখানে প্রদর্শিত হয় ‘ রামায়ণ উপাখ্যান ‘ , ‘ বাউল বৈয়ব ’ , ‘ সাঁওতাল রমণী ‘ , ‘ মাতৃমূর্তি ও অন্যান্য বিখ্যাত কিছু ছবি । ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের ‘ পদ্মবিভূষণ সম্মান ‘ লাভ করেন । তেলরঙের একজন দক্ষ শিল্পী হলেও জলরঙ্গের প্রতি শিল্পীর পক্ষপাত ছিল । ক্রমে তার চিত্র বিষয়ে উঠে আসে গ্রামের নিসর্গ প্রকৃতি , ধর্মীয় জগৎ , ধর্মকাহিনির পটচিত্র , আদিবাসী জীবন ও জীবিকা । কালীঘাটের পটচিত্রের বিশেষ শৈলী তার মনকে আচ্ছন্ন করে । এককথায় লোকশিল্পের আঙ্গিককে তিনি তাঁর সৃজনবৈশিষ্ট্যে প্রবাহিত করে নতুন মাত্রা দেন । ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল এই মহান শিল্পী তিরোহিত হন ।
You must be logged in to post a comment.