
GPS সম্পর্কে ধারণা :
গ্লোবাল পোজেসানিং সিস্টেম হল একটি স্যাটেলাইট ভিত্তিক নেটওয়ার্ক বা জালক। পৃথিবীতে 24 টি কক্ষপথ সমন্বিত স্যাটেলাইট কয়েকশো নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত থেকে 6 টি কক্ষপথ জুড়ে 24 ঘন্টা ধরে প্রতি সেকেন্ডে 2.6 কিমি গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে ।
ব্রেডফোর্ড পারকিনসন, রজার এল ইসটন ও ইভান এ গেটিং-কে GPS-এর উদ্ভাবক বলা হয়। প্রথম GPS স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল 1978 খ্রিস্টাব্দে। এই স্যাটেলাইটগুলি সবই NAVSTAR স্যাটেলাইটের পথ ধরে এসেছিল। এই উপগ্রহ গুলির আয়তন প্রায় 1 টন এবং 5 মিটারেরও বেশি দৈর্ঘ্যযুক্ত। এদের ট্রান্সমিটেড পাওয়ার 50 ওয়াট। যেমন—সিভিলিয়ান GPS ‘L1’ -এর ফ্রিকোয়েন্সি হল 1575.42 MHZ। এদের কক্ষপথেই প্রায় 10 বছর অন্তর GPS
স্যাটেলাইটগুলিকে পরিবর্তন করা হয়। এদের অক্ষ পৃথিবীর বুক থেকে প্রায় 20,000 কিমি দূরে অবস্থিত। এদের অক্ষ প্রায় 60° উত্তর বা দক্ষিণে হেলে থাকে। উপগ্রহগুলির সিগন্যাল পৃথিবীর যে-কোনো প্রান্ত থেকেই যে-কোনো ব্যক্তিই পেতে পারে। যখন দরকার তখনই এই সিগন্যাল পাওয়া যায়।

GPS এর গুরুত্ব :
❶ যে-কোনো ঋতুতে এই স্যাটেলাইটের সিগন্যাল পাওয়া যায়।
❷ এটি স্পেশাল রেডিয়ো রিসিভার রূপে কাজ করে।
❸ বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধজাহাজ চালানো, মিসাইল নিক্ষেপ, র্যাডার ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে GPS পদ্ধতি বড়ো ভূমিকা নেয় বলে নেভি ও আরমিদের কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
❹ সাধারণ মানুষ গাড়ি চালাতে, ট্রলারে করে সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে GPS সিস্টেম ব্যবহার করছেন।
❺ দামি মোবাইল ফোনে GPS-এর ব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিভিন্ন GPS গোষ্ঠীর নাম :
● ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর-‘গ্যালিলিয়ো পোজিসানিং সিস্টেম’।
●ভারতীয়দের—’ইন্ডিয়ান রিজিওনাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম’।
● চিনের—’চাইনিজ নেভিগেশনে স্যাটেলাইট সিস্টেম।
● উদাহরণ: LORAN (ডেকা নেভিগেশন)। MOSAIC (MOBILE SYSTEM FOR ACCURATE ICBM CONTROL) – 3D LORAN প্রভৃতি।
GPS (Global Positioning System) – এর বহুমুখী ব্যবহার
GPS-এর পুরো নাম হল— Global Positioning System বা ভূঅবস্থানিক ব্যবস্থা। GPS-পদ্ধতির মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো কিছু কৃত্রিম উপগ্রহ একসঙ্গে রেডিয়ো সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং এই সিগন্যালকে গণনার উপযোগী করে ভূপৃষ্ঠের ওপর কোনো কিছুর সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা যায় ।
GPS-এর বহুমুখী ব্যবহারগুলি হল—
সামরিক ক্ষেত্রে GPS-এর ব্যবহার : সমুদ্রপথে দিকনির্দেশ করতে ও যুদ্ধ জাহাজ ও যুদ্ধ বিমান পরিচালনা করতে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ সৈন্যকে খোঁজা ও উদ্ধার করার জন্য GPS-এর ব্যবহার হয়।
অসামরিক ক্ষেত্রে GPS-এর ব্যবহার : অসামরিক বিমান পরিবহণ ও জাহাজ পরিবহণে GPS-এর ব্যবহার হয়।
● বিপর্যয় মোকাবিলায় : বিপর্যস্ত এলাকায় বিপদ মোকাবিলা করার জন্য GPS-এর ব্যবহার করা হয়। যেমন- দাবানল থেকে রক্ষা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ (খরা, বন্ধু ভূমিকম্প) ইত্যাদি।
● মহাকাশ বিজ্ঞানে: মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে GPS-এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন— উপগ্রহের অবতরণ, কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ, উপগ্রহের উন্নতা ও কক্ষপথ নির্ণয় ইত্যাদি।
জরিপ ও মানচিত্র তৈরিতে: জরিপ-এর কাজে ও মানচির তৈরিতে GPS-এর প্রভূত ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন- Survey of Inda বা সমীক্ষার সময় GPS-এর ব্যবহার করে থাকে। GPS ব্যবহার করে Survey of Inda মানচিত্র তৈরি করে থাকে।
ভৌগোলিক তত্ত্ব GPS : ভৌগোলিক তত্ত্বপ্রণালী সহজে সংগ্রহ করার জন্য GPS-এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন— কোনো স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, উচ্চতা, সময়ের তথ্য, Satellite তত্ত্ব আদান প্রদান, রেল পরিবহণে নজরদারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
● ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণে: GPS-এর ব্যবহারের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। যেমন— ভূমিরূপের আকৃতি অনুধাবন করা, কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়, বাণিজ্যিক পরিবহণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
You must be logged in to post a comment.