Life science : Madhyamik 2017

Madhyamik Examination (WBBSE) – 2017

Life Science

বিভাগ—ক

(সমস্ত প্রশ্নের উত্তর করা আবশ্যিক)

১. প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যা-সহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখ : ১x১৫ =১৫

১.১ কিছু ফুল সূর্যোদয়ের পরে ফোটে, কিন্তু সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বুজে যায় । এটি হল—

(ক) ফটোন্যাস্টি (খ) সিসমোন্যাস্টি (গ) কেমোন্যাস্টি (ঘ) থার্মোন্যাস্টি

Ans. (ক) ফটোন্যাস্টি।

১.২ ডায়াবেটিস মেলিটাস -এ আক্রান্ত একজন ব্যক্তি নীচের কোন হরমোনটি যথেষ্ট মাত্রায় ক্ষরণ করতে অক্ষম ?

(ক) অ্যাড্রেনালিন (খ) ইনসুলিন (গ) থাইরক্সিন (ঘ) টেস্টোস্টেরন

Ans. (খ) ইনসুলিন।

১.৩ ‘দৈহিক উষ্ণতা’ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত মানব মস্তিষ্কের অংশটি হল—

(ক) থ্যালামাস (খ) লঘুমস্তিষ্ক (গ) হাইপোথ্যালামাস (ঘ) সুষুম্নাশীর্ষক

Ans. (গ) হাইপোথ্যালামাস।

১.৪ তুমি মাইটোসিস কোশ বিভাজনের একটি দশায় সিস্টার ক্রোমাটিডদ্বয়কে আলাদা হতে দেখলে । দশাটি হল—

(ক) প্রফেজ (খ) টেলোফেজ (গ) অ্যানাফেজ (ঘ) মেটাফেজ

Ans. (গ) অ্যানাফেজ।

১.৫ নীচের কোন জোড়াটি সঠিক ?

(ক) কোরকোদগম—ইস্ট (খ) খন্ডীভবন—কেঁচো (গ) রেনু উৎপাদন—অ্যামিবা (ঘ) পুনরুৎপাদন—ড্রায়োপটেরিস

Ans. (ক) কোরকোদগম—ইস্ট।

১.৬ জনন-অঙ্গ ও জননগ্রন্থির পরিপূর্ণতা ঘটে মানব পরিস্ফুটনের—

(ক) শৈশব দশায় (খ) বয়ঃসন্ধি দশায় (গ) বার্ধক্য দশায় (ঘ) সদ্যোজাত দশায়

Ans. (খ) বয়ঃসন্ধি দশায়।

১.৭ মটরগাছের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যটি হল—

(ক) কুঞ্চিত বীজ (খ) হলুদ রঙের বীজ (গ) বেগুনি রঙের ফুল (ঘ) কাক্ষিত পুষ্প

Ans. (ক) কুঞ্চিত বীজ।

১.৮ YyRr জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছ থেকে কত ধরনের গ্যামট উৎপন্ন হয় ?

(ক) 1 ধরনের (খ) 4 ধরনের (গ) 2 ধরনের (ঘ) 3 ধরনের

Ans. (খ) 4 ধরনের।

১.৯ হিমোফিলিয়ার বাহক মাতা ও স্বাভাবিক পিতার কন্যাসন্তানদের হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হল—

(ক) 75% (খ) 50% (গ) 100% (ঘ) 0%

Ans. (ঘ) 0%

১.১০ পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টির সময় পরিবেশে যে-গ্যাসটি অনুপস্থিত ছিল, সেটি হল—

(ক) হাইড্রোজেন (খ) অক্সিজেন (গ) মিথেন (ঘ) অ্যামোনিয়া

Ans. (খ) অক্সিজেন।

১.১১ সমবৃত্তীয় অঙ্গের বৈশিষ্ট্যটি হল—

(ক) উৎপত্তিগতভাবে ভিন্ন এবং কাজও ভিন্ন

(খ) উৎপত্তিগতভাবে ভিন্ন কিন্তু কাজ একই

(গ) অপসারী বিবর্তনকে নির্দেশ করে

(ঘ) উৎপত্তিগত ও গঠনগতভাবে এক

Ans. (খ) উৎপত্তিগতভাবে ভিন্ন কিন্তু কাজ একই।

১.১২ নীচের কোনটি অস্থিযুক্ত মাছের পটকার গ্যাস শোষণ করে নেয় ?

(ক) রেড গ্রন্থি (খ) অগ্র প্রকোষ্ঠ (গ) গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি (ঘ) রেটি মিরাবিলিয়া

Ans. (ঘ) রেটি মিরাবিলিয়া।

১.১৩ সিউডোমোনাস জীবাণুটি নাইট্রোজেন চক্রের নীচের কোন ধাপের সঙ্গে যুক্ত ?

(ক) নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ (খ) নাইট্রিফিকেশন (গ) ডিনাইট্রিফিকেশন (ঘ) অ্যামোনিফিকেশন

Ans. (গ) ডিনাইট্রিফিকেশন।

১.১৪ পূর্ব হিমালয় জীববৈচিত্র্য হটস্পটের একটি বিপন্ন প্রজাতি হল—

(ক) লায়ন টেল্ড ম্যাকাক (খ) ওরাংওটাং (গ) রেড পান্ডা (ঘ) নীলগিরি থর

Ans. (গ) রেড পান্ডা।

১.১৫ বায়ুদূষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগগুলি হল—

(ক) ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস

(খ) হেপাটাইটিস, ব্রংকাইটিস, বধিরতা

(গ) ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার

(ঘ) ফুসফুসের ক্যান্সার, পোলিয়ো, ম্যালেরিয়া

Ans. (গ) ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার।

বিভাগ—খ

২. নির্দেশ অনুসারে নিচের ২৬টি প্রশ্ন থেকে যেকোনো ২১টি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ১x২১=২১

নিচের শূন্যস্থানগুলিতে উপযুক্ত শব্দ বসাও (যেকোনো পাঁচটি) ১x৫=৫

২.১ মানুষের চোখের লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য প্রয়োজনমতো পরিমার্জন করার পদ্ধতিকে ______ বলে ।

Ans. উপযোজন।

২.২ অ্যাডেনিন একটি ______ জাতীয় নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক ।

Ans. পিউরিন।

২.৩ ______ হল একটি লিঙ্গ সংযোজিত জিন দ্বারা সৃষ্ট রোগ ।

Ans. হিমোফিলিয়া।

২.৪ ঘোড়ার বিবর্তনে আদিমতম পূর্বপুরুষ হল ______ ।

Ans. ইয়োহিপ্পাস।

২.৫ ধানক্ষেত থেকে উৎপন্ন একটি দাহ্য গ্রিনহাউজ গ্যাস হল ______ ।

Ans. মিথেন।

২.৬ ______ হল পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ ।

Ans. সুন্দরবন।

নীচের বাক্যগুলি সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো (যেকোনো পাঁচটি) ১x৫=৫

২.৭ জিব্বেরেলিন হরমোন উদ্ভিদের অকাল পত্রমোচন রোধ করে ।

Ans. মিথ্যা।

২.৮ ডিম্বাণু শুধুমাত্র মাইটোসিস -এর ফলে উৎপন্ন হয় ।

Ans. মিথ্যা।

২.৯ মটরগাছের ফুলে প্রয়োজন অনুসারে স্ব-পরাগযোগ বা ইতর পরাগযোগ ঘটানো যায় ।

Ans. সত্য।

২.১০ প্রাকৃতিক নির্বাচন পদ্ধতি হল ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের মূল প্রতিপাদ্য ।

Ans. সত্য।

২.১১ ভঙ্গুর দূষক জীববিবর্ধনের জন্য দায়ী ।

Ans. মিথ্যা।

২.১২ ফ্ল্যাজেলা হল প্যারামিশিয়ামের গমন অঙ্গ ।

Ans. মিথ্যা।

A -স্তম্ভের দেওয়া শব্দের সঙ্গে B-স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতাবিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নং উল্লেখ-সহ সঠিক জোড়াটি পুনরায় লেখো ( যেকোনো পাঁচটি): ১x৫=৫

একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও (যে-কোনো ছ-টি): ১x৬=৬

২.১৯ বিসদৃশ বেছে লেখো : TSH, ACTH, GTH, CSF ।

Ans. CSF

২.২০ মায়েলিন আবরণী -র একটি কাজ লেখো ।

Ans. স্নায়ুস্পন্দন তরঙ্গাকারে এক নিউরোন থেকে অন্য নিউরোনে প্রবাহিত হয়।

২.২১ নীচে সম্পর্কযুক্ত একটি শব্দ জোড় দেওয়া আছে । প্রথম জোড়াটির সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়াটির শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও:

প্রফেজ : নিউক্লিয়পর্দা ও নিউক্লিয়োলাসের অবলুপ্তি :: —— : নিউক্লিয়পর্দা ও নিউক্লিয়োলাসের পুনরাবির্ভাব ।

Ans. টেলোফেজ।

২.২২ মানুষের মধ্যে বংশানুক্রমে সঞ্চারিত একটি প্রকরণের উদাহরণ দাও ।

Ans. রোলার জিভ।

২.২৩ থ্যালাসেমিয়া রোগের জন্য দায়ী জিন মানুষের কোন ধরনের ক্রোমোজোম বহন করে ?

Ans. অটোজোম।

২.২৪ বাষ্পমোচন রোধে ক্যাকটাসের একটি অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজন উল্লেখ করো ।

Ans. পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে।

২.২৫ নীচের চারটি বিষয়ের মধ্যে তিনটি একটি বিষয়ের অন্তর্গত । সেই বিষয়টি খুঁজে বার করো এবং লেখো:

ভ্রূণ, ভাজক কলা, বীজ, ক্রায়োসংরক্ষণ ।

Ans. ভূণ, ভাজক কলা, কাহোসংবচ্চন মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়।

২.২৬ সুন্দরবনের পরিবেশ সংক্রান্ত সাম্প্রতিকতম উদ্বেগের কারণটির নাম লেখো ।

Ans. ভূউন্নয়নের ফলে সমুদ্রের জলতল বাড়ছে, ফলে মন অরণ্য ধ্বংস হচ্ছে।

বিভাগ —গ

৩. নীচের ১৭টি প্রশ্ন থেকে যে-কোনো ১২টি প্রশ্নের উত্তর দু- তিনটি বাক্যে লেখো : ২x১২=২৪

৩.১ ট্রপিক চলন ও ন্যাস্টিক চলন এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো ।

৩.২ মানবদেহে জনন গ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরণে GTH -এর দুটি ভূমিকা লেখো ।

Ans. মানবদেহে জননগ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরণে GTH-এর ভূমিকাগুলি হল— (1) FSH বা ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন মহিলাদের ডিম্বাশয় থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। (2) লিউটিনাইজিং হরমোন বা LH মহিলাদের পীতগ্রন্থি থেকে প্রোজেস্টেরন হরমোন এবং পুরুষদের শুক্রাশয় থেকে টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণে উদ্দীপিত করে।

৩.৩ নিম্নলিখিত ক্রিয়াগুলির মধ্যে কোনগুলি সহজাত এবং কোনগুলি অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া তালিকাভুক্ত করো:

(i) সদ্যোজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা (ii) সাইকেল চালানো (iii) হাঁচি (iv) ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেটকিপারের বল ধরা ।

Ans. (1) সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (2) অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (3) সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (4) অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।

৩.৪ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশগুলি লেখো ।

Ans. মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত। প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র প্রধানত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সারাদেহে বিন্যস্ত স্নায়ুগুলি নিয়ে গঠিত। মোট 12 জোড়া করোটি স্নায়ু ও 31 জোড়া সুষুম্না স্নায়ু। নিয়ে প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত।

৩.৫ কোশচক্রের দুটি গুরুত্ব লেখো ।

Ans. কোশচক্রের গুরুত্ব:

(1) কোশ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ : কোশচক্রের কতকগুলি নির্দিষ্ট বিন্দুতে কোশ বিভাজন নিয়ন্ত্রিত হয়। কোশচক্রের নিয়ন্ত্রণ বিন্দুগুলি বিনষ্ট হলে কোশ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, অনিয়ন্ত্রিত কোশ। বিভাজন দ্বারা টিউমার সৃষ্টি হয়। টিউমার দুইপ্রকার হয়। যেমন- বিনাইন টিউমার ও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। বিনাইন টিউমারগুলি। দেহের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। তবে ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের কোণগুলি পার্শ্ববর্তী কোশের সঙ্গে সংলগ্ন না থেকে রক্ত বা লসিকা দ্বারা বাহিত হয় ও অপর স্থানে গিয়ে পুনরায় টিউমার তৈরি করে। এই ঘটনাকে মেটাস্ট্যাসিস বলে।

(2) স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ: স্বাভাবিক কোশ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ দ্বারা কোশের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণের জন্য কোশচক্র গুরুত্বপূর্ণ।

৩.৬ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে DNA ও RNA -এর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো :

(i) পিরিমিডিন ক্ষারক; (ii) 5-C শর্করা

৩.৭ কোন কোন বাহক নীচের উদ্ভিদগুলিতে পরাগযোগ সম্পন্ন করে :

(i) ধান; (ii) পাতাঝাঁঝি; (iii) শিমুল; (iv) আম ।

Ans.

৩.৮ সংকরায়ন পরীক্ষায় কীভাবে প্রকট গুণ প্রকাশিত হয় তা উদাহরণের সাহায্যে লেখো ।

Ans. সংকরায়ণে F1 জনুর উদ্ভিদে T ও t উভয় অ্যালিল উপস্থিত থাকলেও, T, t র ওপর প্রকট হওয়ায় F1 জনুর সকল উদ্ভিদ লম্বা হয় অর্থাৎ, F1 জনুতে শুধু প্রকট গুণ প্রকাশিত হয়। এটি মেন্ডেলের প্রকটতার সূত্রকে সমর্থন করে।

৩.৯ অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ন পরীক্ষায় F2 -জনুতে ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপের অনুপাত কী হবে ?

Ans. অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে ফিনোটাইপিক অনুপাত হবে—লাল : গোলাপি : সাদা =1:2:1 [সন্ধ্যামালতীর ক্ষেত্রে]।

অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে জিনোটোইপিক অনুপাতটি হবে—বিশুদ্ধ লাল (RR) : সংকর গোলাপি (Rr): বিশুদ্ধ সাদা (rr) =1:2:1 [সন্ধ্যামালতী ফুলের ক্ষেত্রে যেখানে। লাল প্রকট বৈশিষ্ট্য (R) এবং সাদা প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য (r)]।

৩.১০ বর্ণান্ধতার কীভাবে বংশগতি সঞ্চরণ ঘটে তা একটি ক্রসের সাহায্যে দেখাও ।

Ans. ধরা যাক, একজন বর্ণান্ধ পুরুষের (XcY) সাথে একজন স্বাভাবিক মহিলার (Xc+Xc+) বিবাহ হল, এরপর তাদের সন্তান সন্ততিদের মধ্যে কীভাবে পিতার বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটি সঞ্চারিত হবে, তা ক্রসের মাধ্যমে দেখানো হল ।

কন্যা একটি X ক্রোমোজোম পিতার থেকে ও অপরটি মাতার থেকে পায়, তাই পিতা যদি বর্ণান্ধ (XcY) হয় তাহলে কন্যা বাহক হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে মাতা স্বাভাবিক (Xc+Xc+) হওয়ায় কোনো পুত্ৰই বর্ণান্ধ হয় না, কারণ পুত্ররা Y ক্রোমোজোমটি পিতার থেকে পেলেও X ক্রোমোজোমটি মাতার থেকে পায়, তাই মাতা স্বাভাবিক হলে পুত্ররাও স্বাভাবিক হয়। আবার যদি মাতা বাহক বা বর্ণান্ধ হয় তবে পুত্ররাও বর্ণান্ধ হয়।

৩.১১ জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সংক্রান্ত মিলার ও উরে -র পরীক্ষায় ব্যবহৃত বিক্রিয়াগুলির এবং উৎপন্ন একটি জৈব যৌগের নাম লেখো ।

Ans. মিলার ও উরের পরীক্ষায় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ মিথেন, আমোনিয়া ও হাইড্রোজেন (2: 2: 1 অনুপাত), জল। (H2O)।

মিলার ও উরের পরীক্ষায় উৎপন্ন উপজাত পদার্থ—গ্লাইসিন, অ্যালানিন। অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, আলফা অ্যামিনো বিউটাইরিক অ্যাসিড প্রভৃতি। অ্যামিনো অ্যাসিড।

৩.১২ ঘোড়ার বিবর্তনে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখো যা পরিবর্তিত হয়েছে ।

Ans. ঘোড়ার বিবর্তনে যে সকল পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলি হল— (1) উচ্চতার ধারাবাহিক বৃদ্ধি। (2) উভয় পদের আঙুলের সংখ্যা হ্রাস (4টি থেকে টি) ও ক্ষুরের উৎপত্তি। (3) পুরপেষক ও পেষক দাঁতের দন্তচুড় (crown)-এর আয়তন বৃদ্ধি। (4) মস্তিষ্কের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার অংশের আকার বৃদ্ধি।

৩.১৩ সুন্দরী গাছ তার দেহের অতিরিক্ত লবণ কীভাবে রেচিত করে ?

Ans. সুন্দরী গাছের লবণ রেচনের পদ্ধতিগুলি হল— (1) পাতায় লবণ গ্রন্থির উপস্থিতি যা জলের সাথে লবণ নির্গত করতে সাহায্য করে। (2) অতিরিক্ত লবণ বাকলের বিশেষ কোশ বা মূলের কোশে সঞ্জিত থাকে, যা বাকলমোচন বা অন্যান্য বিশেষ পদ্ধতি দ্বারা নির্গত হয়। (3) সাধারণত কচি পাতার তুলনায় পরিণত পাতায় দেহের অতিরিক্ত লবণ সঞয় করে রাখে এবং প্রয়োজনমতো পত্রমোচনের দ্বারা সেই অতিরিক্ত লবণ নির্গত করে দেয়।(4) কোশের ভ্যাকুলগুলি আকৃতিতে বড়াে হওয়ায় এরা। ভ্যাকুওলের কোশরসে লবণ সঞ্জয় করে এবং প্রয়োজনমতো দেহ থেকে সেটি নির্গত করে। এমনকি এদের মূল অধিক লবণ শোষণে এদের বাধা দান করে।

৩.১৪ জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারী দুটি জীবাণুর নাম লেখো ।

Ans. জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারী দুটি জীবাণু হল— অ্যাজোটোব্যাকটর ও ক্লসট্রিডিয়াম।

৩.১৫ অ্যাসিড বৃষ্টিজাত দুটি ক্ষতি উল্লেখ করো ।

Ans. পরিবেশের ওপর অম্লবৃষ্টির বা অ্যাসিড রেন-এর প্রভাব

(1) প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর প্রভাব : অম্লবৃষ্টির ফলে বেশিরভাগ জলাশয়ের মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটে। স্থলভাগের গাছপালা, কৃষিজ ফসল ধ্বংস হয়। অম্লবৃষ্টির কারণে জলাশয়ের pH-এর মান যদি 4-এর কম হয়, তবে ওই জলাশয়ের অধিকাংশ সজীব উপাদানের মৃত্যু ঘটে।

(2) মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব : অম্লবৃষ্টির ফলে মানুষের ত্বক ও কোশের অস্বাভাবিক ক্ষতি হয়। অম্লবৃষ্টির জন্য অ্যালুমিনিয়াম এবং তামা নির্মিত জলের পাইপ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং পানীয় জলের সঙ্গে মেশে এবং ওই জল পান করে বহু মানুষ পেটের রোগে ভোগে।

৩.১৬ পৃথিবীর উষ্ণায়নের ফলে জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হচ্ছে তার চারটি উদাহরণ দাও ।

Ans. পৃথিবীর উন্নয়নের ফলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির 4 টি উদাহরণ হল—

(1) অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সংলগ্ন প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য হ্রাস। (2) পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা 1∘C−2∘C বৃদ্ধির ফলে উত্তর মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ায় আজ মেরু ভল্লুক খাদ্যের অভাবে সংকটাপন্ন, তেমনই সিন্ধুঘোটক, মেরু শেয়াল, পেঙ্গুইন প্রভৃতিও বিপদগ্রস্ত। (3) বিশ্ব উন্নয়নের ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতি করছে। (4) বিশ্ব উন্নয়নের ফলে বিভিন্ন মাছের প্রজাতি, পরিযায়ী পাখি, শামুক-ঝিনুকের প্রজাতি, উভচরেরা আজ বিপদের সম্মুখীন।

৩.১৭ পিপলস বায়োডাইভার্সিটি রেজিস্ট্রার (PBR) -এ জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত যে-প্রধান বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ করা হয় তা লেখো ।

Ans. PBR-এ যে সমস্ত বিষয়ে তথ্য মজুত করা থাকে তা হল— (1) সমস্ত স্থানীয় প্রজাতি সম্পর্কে সামগ্রিক তথ্য। (2) প্রজাতির বাসস্থান। (3) প্রজাতির থেকে প্রাপ্ত জৈবিক উৎপাদন (বা সম্পদ) সম্বন্ধে ধারণা, তাদের বাজারমূল্য, সংগ্রহের সময়, সংগ্রহের নিয়ম ও তাদের পরিবহণ পদ্ধতি। (4) প্রজাতিজাত উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণের প্রযুক্তি। (5) প্রজাতিজাত সম্পদের স্থানীয় ব্যবহার এবং পরিচালন পদ্ধতি। (6) স্থানীয় ভৌগোলিক তথ্য (7) বিপন্ন প্রজাতি নির্ণয় ও স্থানীয় মানুষদের তরফ থেকে প্রজাতি সংরক্ষণের ধারণা ও উদ্যোগ।(8)স্থানীয় প্রজাতিগলি সম্বন্ধে ঐতিহ্যবাহী, পরম্পরাগত ও বিশ্বাস-সংক্রান্ত তথ্য।

বিভাগ—ঘ

৪. নীচের ৬টি প্রশ্ন বা তার বিকল্প প্রশ্নের উত্তর লেখো : ৫x৬=৩০

৪.১ মানুষের চোখের অক্ষিগোলকের লম্বচ্ছেদ -এর একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো ।

(a) কর্নিয়া (b) লেন্স (c) ভিট্রিয়াস হিউমর (d) রেটিনা (৩+২)

অথবা, একটি উদ্ভিদকোশ বা একটি প্রাণীকোশের মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশার চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো ।

(a) ক্রোমোজোম (b) বেমতন্তু (c) মেরুঅঞ্চল (d) সেন্ট্রোমিয়ার (৩+২)

৪.২ ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ব্যাখ্যা করো । ইউক্রোমাটিন ও হেটেরোক্রোমাটিনের মধ্যে নিম্নলিখিত দুটি বিষয়ে পার্থক্য লেখো :

(i) কুণ্ডলী; (ii) সক্রিয়তা । (৩+২)

অথবা, মাইক্রোপ্রোপাগেশন কীভাবে সম্পন্ন করা হয় ? সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের নিম্নলিখিত তিনটি পর্যায়ের ঘটনাগুলি বিবৃত করো :

(i) জননকোশ বা গ্যামেট উৎপাদন; (ii) নিষেক ; (iii) ভ্রুণসৃষ্টি ও নতুন উদ্ভিদ গঠন (২+৩)



Ans. ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক

অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কোশকে পর্যবেক্ষণ করলে নিউক্লিয়াসের ভিতর সূক্ষ্ম জালকাকার গঠন দেখা যায়। লক্ষ করলে বোঝা যায় যে, এগুলি। প্যাচানো সিঁড়ির মতো দ্বিতন্ত্রী গঠন—এগুলিই হল DNA। এরা বৃহৎ অণু, তাই নিউক্লিয়াসে কুণ্ডলীকৃত অবস্থায় থাকে। বিভাজনের সময়ে DNA আরও কুণ্ডলীকৃত হয় ও বিভিন্ন প্রোটিনকে দৃঢ়ভাবে পেঁচিয়ে লুপ তৈরি করে। কুণ্ডলীকৃত এই গঠনকে ক্রোমোজোম বলা হয়। অর্থাৎ, প্রোটিন সমন্বিত। কুণ্ডলীকৃত DNA-এই হল ক্রোমোজোম।

(1) ক্রোমোজোমে অবস্থিত DNA-তে সরলরৈখিক সজ্জাক্রমে জিন। পরপর সজ্জিত থাকে। (2) একটি ক্রোমোজোমে নির্দিষ্ট সংখ্যক জিন থাকে। (3) ক্রোমোজোমে জিনগুলির প্রকৃতিও নির্দিষ্ট থাকে। (4) ক্রোমোজোমীয় অংশ বিলুপ্ত হলে ওই অংশের জিনও বিলুপ্ত হয়। ফলে নানা মিউটেশন-জনিত সমস্যা দেখা দেয়।

অথবা,

উত্তরঃ মাইক্রোপ্রােপাগেশন সম্পন্ন করার পদ্ধতি : মাইক্রো’ বা ‘অণু’ কথার অর্থ হল খুব ক্ষুদ্র। উদ্ভিদের কোনাে ক্ষুদ্র অংশ (কোশ, কলা,মুকুল) কৃষ্টি দ্রবণে পালন করে শিশু উদ্ভিদে পরিণত করার কৌশলকে অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রােপাগেশন বলে।

মাইক্রোপ্রােপাগেশন পদ্ধতি :
1. উপযুক্ত উদ্ভিদ অঙ্গ-কলা, কোশ, মুকুল ইত্যাদি নির্বাচন।
2. কালচার বা কৃষ্টি মাধ্যমে রেখে উপাদানটির বৃদ্ধি ঘটানাে এবং ক্যালাস গঠন।
3. ক্যালাসের বৃদ্ধি ঘটিয়ে এমব্রয়েড (embroid) গঠন।
4. এমব্রয়েড থেকে অসংখ্য প্লান্টলেট (plantlet) সৃষ্টি।
5. প্লান্টলেটগুলিকে পৃথক টবে স্থানান্তরকরণ এবং অসংখ্য চারাগাছ সৃষ্টি।

সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের পর্যায় :
জননকোশ বা গ্যামেট উৎপাদন : পুংকেশরের পরাগধানীতে পুংগ্যামেট এবং গর্ভকেশরের ডিম্বাশয়ের ডিম্বকের মধ্যে ডিম্বাণু উৎপন্ন করে।

নিষেক : পুং ও স্ত্রী গ্যামেটের মিলনকে নিষেক বলে। সপুষ্পক উদ্ভিদের ডিম্বকের মধ্যে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিলন ঘটে।

ভ্রুণ সৃষ্টি ও নতুন উদ্ভিদ গঠনঃ নিষেকের পর নিষিক্ত ডিম্বাণু বা জাইগােট (2n) বারবার বিভাজিত হয়ে ডিম্বকের মধ্যে ভ্রুণ গঠন করে। এই ভ্রুণ থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়।

৪.৩ একটি সংকর কালো গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগের মিলন ঘটালে যে-যে ধরনের অপত্য গিনিপিগ উৎপন্ন হতে পারে তা একটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও । মেন্ডেলের পৃথককরণ সূত্রটি বিবৃত করো । (৩+২)

অথবা, থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গগুলি উল্লেখ করো । অনেক পরিবারে কন্যাসন্তান জন্মের জন্য মাতাকে দায়ী করা হয় । এই ধারণাটি যে যথার্থ নয় তা একটি ক্রসের সাহায্যে দেখাও । (২+৩)

৪.৪ যে-দুটি অন্তর্গঠনগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ‘তিমির ফ্লিপার’ আর ‘পাখির ডানা’ -কে সমঃসংস্থ অঙ্গ বলে বিবেচনা করা হয় তা উল্লেখ করো । একটি মৌচাকে কোনো শ্রমিক মৌমাছি অন্য শ্রমিক মৌমাছিদের কীভাবে খাদ্য উৎসের সন্ধান ও অবস্থান জানায় ? (২+৩)

অথবা, অভিব্যক্তি বা বিবর্তনের মুখ্য ঘটনাগুলি একটি পর্যায়চিত্রের মাধ্যমে দেখাও । (৫)

Ans. তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানা (এ ছাড়াও মানুষের অগ্রপদ, বাদুড়ের ডানা) উভয়ই মেরুদণ্ডী প্রাণীর অগ্রপদ, অর্থাৎ সমসংস্থ অঙ্গ। কারণ-

(1) মেরুদণ্ডীয় অগ্রপদের প্রধান হাড়, হিউমেরাস, রেডিয়াস-আলনা, কারপাল, মেটাকারপাল, ফ্যালানজেস এতে বর্তমান। (2) এদের অগ্রপদ পেক্টোরাল গার্ডল বা শ্রেণিচক্রের সঙ্গে সংলগ্ন থাকে। (3) এই অঙ্গটির পেশি, যেমন—বাইসেন্স, ট্রাইসেন্স প্রভৃতি উভয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়। (4) অগ্রপদের স্নায়ু ও রক্তবাহগুলিও উভয়ের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়। এগুলির গঠন ও উৎপত্তি এক হলেও বিভিন্ন পরিবেশে বসবাসের জন্য ছড়িয়ে পড়ায় (তিমি—জল, পাখি—বায়ু) তাদের কার্যগত পরিবর্তন (অর্থাৎ সাঁতার ও উডডয়ন) ঘটেছে। এই জন্য তারা সমসংস্থ অঙ্গ৷


মৌমাছিদের বার্তা আদানপ্রদান :

মৌচাকে দুই প্রকার কমী মৌমাছি থাকে, যথা স্কাউট বা খাদ্য সন্ধানী কমী মৌমাছি এবং ফোরেজার বা খাদ্য সংগ্রাহক কর্মী মৌমাছি | স্কাউটরা খাদ্যের সন্ধান করে এবং খাদ্যের সন্ধান পেলে এরা মৌচাকে ফিরে এসে চাকের সামনে বিশেষ নাচের ভঙ্গিতে দেহ সঞলন দ্বারা অপর মৌমাছিদের খাদ্যের উৎস সম্পর্কে বার্তা বা সংকেত প্রদান করে। একে মৌনৃত্য বলে। প্রধানত দুই প্রকার মৌনৃত্য দেখা যায়, রাউন্ড ডান্স বা বৃত্তাকার নৃত্য এবং ওয়াগ্ল ডান্স বা ওয়াল নৃত্য।

(1) ওয়াগল নৃত্য : খাদ্যের উৎস 50-75m-এর থেকে দূরবর্তী হলে সন্ধানী কর্মী বা স্কাউট মৌমাছিরা ওয়া নৃত্যে অংশ নেয়। এরা চাকের। নিকটবর্তী অংশে উল্লম্ব তলে নাচে, যার বার্তা বা সংকেত থেকে অন্যান্য মৌমাছিরা অনুভূমিক তলে খাবারের উৎসের অবস্থান নির্ণয় করতে পারে। এই নৃত্য ইংরাজি ‘8’ সংখ্যার আকৃতিবিশিষ্ট হয়। অর্থাৎ, একবার ডানদিকে ও একবার বাঁদিকে লুপ তৈরি করে, এবং নৃত্যের সময় লুপের মধ্যের সরলরৈখিক অংশে সন্ধানী মৌমাছির উদর অংশ ওপর নীচে আন্দোলিত (waggle) হয়। ইংরাজি ওয়াল শব্দের অ আন্দোলন বা কম্পন। তাই এই নৃত্যকে ওয়াল নৃত্য বলে।

গুরুত্ব : এই ওয়াল বা কম্পনের মাত্রা থেকে খাদ্যের অবস্থানের দূরত্ব। সম্পর্কে জানা যায় এবং সুর্যের সাপেক্ষে নাচের কৌণিক অভিমুখ থেকে খাদ্যের উৎসের দিক নির্ধারণ করা যায়।

(2) বৃত্তাকার নাচ/চক্রাকার নৃত্য : খাদ্যের সন্ধান 50-75m এর মধ্যে হলে শ্রমিক সন্ধানী মৌমাছিরা বৃত্তাকার নৃত্য করে থাকে। সন্ধানী মৌমাছিদের পিছনে সংগ্রাহকরাও খাদ্য উৎসের দিকে ধাবিত হয় এবং যাত্রাপথে তারাও একই নৃত্য শুরু করে।

রাউন্ড ডান্স গুরুত্ব: চক্রাকার নৃত্য দ্বারা নিকটবর্তী স্থানে খাদ্য উৎস থেকে মৌমাছিরা খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে।

অথবা,

৪.৫ অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণগুলি কী কী ? জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট -এর ভূমিকা কী কী ? (২+৩)

অথবা, জীববৈচিত্র্য কী কী কারণে হ্রাস পায় তা সঠিক উদাহরণের সাহায্যে নির্ধারণ করো । (৫)

Ans. (1) অ্যাজমার পরিবেশগত কারণগুলি হল বিভিন্ন প্রাকৃতিক অ্যালারজেন-এর সংস্পর্শে রোগটি বৃদ্ধি পায়, যেমন—প্রাণীর মল, উদ্ভিদের পরাগরেণু, ধুলো ও ছত্রাক। এ ছাড়া, বিভিন্ন গৌণ দৃষক, যেমন—ওজোন, ফরম্যালডিহাইড, PAN প্রভৃতি অ্যালারজেনের প্রভাব বাড়িয়ে দিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ বৃদ্ধি করে। (2) অ্যাজমার মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলি হল— কলকারখানা বা গৃহে কয়লা, তেলের দহনে সৃষ্ট ধোঁয়া, কলকারখানায় সৃষ্ট সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড ইত্যাদি।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে JFM-এর ভূমিকা বা গুরুত্ব : (1) বিভিন্ন রাজ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে রাজ্য বনদপ্তরকে সক্রিয় সহযোগিতা করে JFM কমিটি। (2) বনে চোরাশিকারের ঘটনা তাৎক্ষণিক বনদপ্তরকে জানানোর কাজ করে JFM কমিটি। (3) দাবানল, বেআইনি পশুচারণ, বনভূমি বিনাশের প্রচেষ্টা, বেআইনি খননকার্য রোধে প্রাথমিকভাবে বনদপ্তরকে তা জানানো ও সংশ্লিষ্ট কাজে বনদপ্তরের সঙ্গে JFM কমিটি কাজ করে থাকে।

অথবা,

জীববৈচিত্র্য হ্রাসের বা বিনাশের কারণ :

(1) জমি ব্যবহারের ধরন পরিবর্তন : জমি ব্যবহারের ধরন পরিবর্তনের ফলে উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রজাতি ধবংস হয়ে যাচ্ছে ও তার সঙ্গে বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থলগুলিও সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এ ছাড়া পৃথিবীতে জনসংখ্যার অত্যধিক চাহিদা পূরণ করার জন্য নির্বিচারে বনভূমি ধবংস করা হচ্ছে।

(2) শিকার ও চোরাশিকার : খাদ্যের প্রয়োজনে, নিছক শিকারের আনন্দ উপভোগ করার জন্য অথবা চামড়া, শিং, চর্বি প্রভৃতি বিক্রি করে উপার্জনের লোভে বিভিন্ন বন্যজীবকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এর ফলে সেই প্রজাতিগুলি ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়ছে। যেমন—সুগন্ধি দ্রব্য প্রস্তুতের জন্য ভারতীয় কস্তুরীমৃগ নির্বিচারে হত্যার ফলস্বরূপ এখন এসে | সংখ্যা হ্রাস পেয়ে প্রজাতিটির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

(3) বিশ্ব উন্নয়ন ও জলবায়র পরিবর্তন : ইচ্ছেমতো বৃক্ষছেদন অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বিশ্ব উন্নয়নের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। বহু প্রাণী ওই পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছে না। ফলে তারা অবলুপ্ত হচ্ছে। যেমন—বিশ্ব উন্নয়নের ফলে আন্টার্কটিকার বরফ গলে যাওয়ার দরুন সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জীববৈচিত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে।

(4) দূষণ : সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে জলদূষণ, বায়ুদূষণ ও মৃত্তিকাদূষণের মাত্রা ও প্রভূত পরিমাণে বাড়ছে | দূষণের ফলে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে। প্রকৃতিতে প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশককেই দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

(5) অতিব্যবহার : বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি তাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য বনাঞ্চল থেকে নির্বিচারে বিভিন্ন বৃক্ষলতা ও গুল্ম আহরণ করে। এর ফলে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনাঞ্চল থেকে ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদগুলি সংখ্যায় অতিদ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন প্রাণীগুলিও অতিব্যবহারে আজ বিনাশের সম্মুখীন। যেমন—ভেষজ গুণসম্পন্ন সর্পগন্ধা গাছের অতিব্যবহারের ফলে প্রজাতিটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

(6) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় : বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের ফলে বহু প্রজাতি চিরকালের মতো অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বন্যা, ভূমিক্ষয়, ভূমিকম্প, সুনামি ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলি বিভিন্ন স্থানের বহু জীববৈচিত্র্যকে বিলুপ্ত করেছে। যেমন–2004 সালের 26 ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে ঘটা সুনামির ফলে আন্দামানের প্রবাল প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

(7) বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ : যে-কোনো বাস্তুতন্ত্রের নিজৰ গঠনবৈচিত্র্য থাকে। বাইরে থেকে হঠাৎ কোনো প্রজাতি এনে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রের গঠন বিনষ্ট হয়। যেমন—‘হাইব্রিড মাপুর। প্রজাতিটির আবির্ভাবে দেশি মাগুর প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

৪.৬ ভারতীয় একশৃঙ্গ গন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য দুটি সংরক্ষণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রস্তাব করো । মিষ্টি জলের উৎসগুলি কী কী ভাবে দূষিত হয় ? —তোমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মতামত জানাও । (২+৩)

অথবা, দুটি অঞ্চলের মধ্যে একটিকে জীববৈচিত্র্য হটস্পট বলে ঘোষণা করতে চাইলে কী কী শর্ত তুমি বিবেচনা করবে ? এক্স সিটু সংরক্ষণের দুটি উদাহরণ দাও । (৩+২)

Ans. গন্ডার সংরক্ষণে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল— (1) গন্ডারের জন্য বাসস্থান সুনিশ্চিত করা ও তাদের খাদ্য ও পানীয়ের যথেষ্ট জোগানের ব্যবস্থা করা। (2) গন্ডারের প্রজননের ব্যবস্থা করা, সম্ভব হলে ‘ক্যাপটিভ ব্রিডিং এর মাধ্যমে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা করা। (3) জনগণের মধ্যে গন্ডার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।

জলদূষণের কারণ :

নানা কারণে জল দূষিত হয়ে থাকে | নীচে কয়েকটি কারণ আলোচিত হল |

(1) কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য দ্বারা দূষণ : গ্রামাঞ্চলে চাষের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক, আগাছানাশক, রাসায়নিক সার ইত্যাদি প্রধানত বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে গিয়ে নিকটবর্তী নদীনালা বা পুকুরের জলে মেশে এবং জলকে দূষিত করে। কৃষিতে ব্যবহত নাইট্রেট, ফসফেটজাতীয়। রাসায়নিক সার থেকে ইউট্রোফিকেশন -এর মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়।

(2) কলকারখানার বর্জ্য দ্বারা দূষণ : শহরাঞ্চলে কলকারখানার দূষিত বর্জ্য নদী, সমুদ্র ও বড়ো জলাশয়ে এসে মেশে এবং জলদূষণ ঘটায়।

(3) জীবাণু ও গৃহস্থালির প্রাত্যহিক আবর্জনা দ্বারা দূষণ : গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত জলে খাদ্যদ্রব্যের ফেলে দেওয়া অংশ, তরকারির পচা অংশ, মলমূত্র, সাবান, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি মিশে থাকে। ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি মিশ্রিত এই নোংরা জল নর্দমা, পয়ঃপ্রণালী দিয়ে। নদনদী, হ্রদ, খাল বা সমুদ্রের জলে পড়ে ও দূষণ ঘটায়।

(4) যথেচ্ছ ব্যবহারজনিত দূষণ : বিভিন্ন জলাশয়ের জল, মানুষের যথেচ্ছ ব্যবহার, যেমন—মলমূত্র ত্যাগ, স্নান, বাসনপত্র ধোয়া, গবাদিপশুর স্নান বা কাপড় কাচার ফলে দূষিত হয় ও তাতে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু জন্মায়।

(6) ভারী ধাতু দ্বারা দূষণ : ভৌমজলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মাটির নীচে জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে অনেক নীচে নেমে যায়, যার ফলে জলে আর্সেনিক ও ফ্লুরাইডের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং জলদূষণ ঘটায়।

অথবা,

পরিবেশসংক্রান্ত সংস্থা ‘কনজারভেশন ইনটারন্যাশনাল’, একটি অঞলের জীববৈচিত্র্যের হটস্পট রূপে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যে দুটি শর্ত তুলে ধরেছে, সেগুলি হল— (1) নির্দিষ্ট হটস্পট অঞ্চলে অন্তত 1500টি সংবহনকলাযুক্ত এনডেমিক উদ্ভিদ প্রজাতির অস্তিত্ব থাকতে হবে। (2) হটস্পট অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের অন্তত 70% প্রজাতিই বিলুপ্ত হয়ে গিয়ে থাকতে হবে।

এক্স-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ হল— (1) চিড়িয়াখানা (আলিপুর চিড়িয়াখানা) ও (2) বোটানিক্যাল গার্ডেন (আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ভারতীয় বোটানিক গার্ডেন)।