Madhyamik History Short Questions

Madhyamik History Short Questions (Mark- 2)

দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে কোনো ১১ টি) : ২ x ১১ = ২২

৩.১) আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে ‘সরকারি নথিপত্রে’র সীমাবদ্ধতা কী ?(Madhyamik 2020)

Ans. আধুনিক ইতিহাসচর্চার উপাদান হিসেবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিবেদন, চিঠিপত্র, অন্যান্য সরকারি নথি প্রভৃতির প্রধান সীমাবদ্ধতাগুলি হল—[i] এসব নথিপত্রে নানা ঘটনার বিকৃতি থাকতে পারে। [ii] এসব নথিপত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারের ভালোদিকগুলো প্রকাশ করা হয় যা প্রকৃত ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে বাধাস্বরূপ।

৩.২) আত্মজীবনী এবং স্মৃতিকথা বলতে কী বোঝায় ?(Madhyamik 2020)

Ans. [i] লেখক তার নিজের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন তা আত্মজীবনী নামে পরিচিত। আত্মজীবনী থেকে সমকালীন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রভৃতি বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। সরলাদেবী চৌধুরানির ‘জীবনের ঝরাপাতা’ একটি আত্মজীবনীমূলক রচনা। [ii] লেখক যখন নিজের স্মৃতি থেকে তার অতীত সময়কালে দেখা বা জানা বিভিন্ন ঘটনাবলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন তখন তাকে স্মৃতিকথা বলা হয়। দক্ষিণারঞ্জন বসুর লেখা ‘ছেড়ে আসা গ্রাম একটি অন্যতম স্মৃতিকথা।

৩.৩) এ দেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল ?(Madhyamik 2020)

Ans. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে [i] ভারতীয় সমাজ-সংস্কৃতির অগ্রগতি ঘটানো। [ii] এদেশে পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটানো [iii] ভারতীয়দের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্মের প্রসার ঘটানো।

৩.৪) ‘নববিধান’ কী ?(Madhyamik 2020)

Ans. ‘নববিধান’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল ‘নতুন বিধান’ বা ‘নতুন নিয়ম রীতি’ নববিধান হল ব্রাম্মনেতা কেশবচন্দ্র সেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজের একটি শাখা| কেশবচন্দ্র সেন ও শিবনাথ শাস্ত্রীর মধ্যে বিরোধ শুরু হলে শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর অনুগত তরুণদের নিয়ে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং কেশবচন্দ্র ১৮৮০ সালে তার অনুগামীদের নিয়ে নববিধান প্রতিষ্ঠা করেন।

৩.৫) চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮ – ১৭৯৯) গুরুত্ব কী ছিল ?(Madhyamik 2020)

Ans. বিদ্রোহী চুয়াড় উপজাতি ইংরেজ শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৭৮৯-৯৯ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহের গুরুত্বগুলি ছিল—[i] বিদ্রোহের পর চুয়াড়দের ওপর পুলিশি দমন-পীড়ন বাড়ে। [ii] চুয়াড়দের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে তাদের জন্য দুর্গম অঞ্চল নিয়ে জঙ্গলমহল জেলা গঠন করা হয়৷ [iii] এই বিদ্রোহ পরবর্তীকালে ব্রিটিশবিরোধী পথ দেখায়। [iv] বিদ্রোহে ইরেজদের বিরুদ্ধে চুয়াড় কৃষক ও জমিদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়।

৩.৬) ফরাজি আন্দোলন কী নিছক ধর্মীয় আন্দোলন ছিল ?(Madhyamik 2020)

Ans. ফরাজি আন্দোলনের প্রকৃতি শুধুই ধর্মীয় ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকে মনে করেন যে, এটি নিছকই হিন্দুবিরোধী এবং ধর্মীয় আন্দোলন ছিল| তবে নরহরি কবিরাজ, অভিজিত দত্ত প্রমুখ ধর্মীয় আন্দোলনের পাশাপাশি ফরাজি আন্দোলনে কৃষকশ্রেণির ব্যাপক অংশগ্রহণ, তীব্র ব্রিটিশ-বিরোধিতা প্রভৃতিও লক্ষ করেছেন।

৩.৭) ‘ল্যান্ডহোল্ডার্স সোসাইটি’ কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ?(Madhyamik 2020)

Ans. ল্যান্ডহোল্ডার্স সোসাইটি প্রতিষ্ঠার (১৮৩৮ খ্রি.) প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল—[i] চিরস্থায়ী ভূমিব্যবস্থার মধ্যে জমিদারদের নিজেদের স্বার্থরক্ষা করা। [ii] খাজনা-মুক্ত ভূমিব্যবস্থা প্রণয়নের সরকারি উদ্যোগ প্রতিহত করা। [iii] ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটানো।

৩.৮) উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদের উন্মেষে ‘আনন্দ মঠ’ উপন্যাসটির কীরূপ অবদান ছিল ?(Madhyamik 2020)

Ans. উনিশ শতকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের উন্মেষে বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল—[i] উপন্যাসটি যুবসমাজকে শেখায় যে, জন্মভূমি স্বদেশ হল মা। [i] মায়ের মুক্তির উদ্দেশ্যে সন্তানের চুড়ান্ত আত্মত্যাগের প্রয়ােজন। [iii] দেশসেবায় আনন্দমঠের সন্তানদলের আত্মত্যাগ বিপ্লবীদের অনুপ্রাণিত করে।

৩.৯) বাংলার সাংস্কৃতিক জীবনে ছাপাখানার বিকাশের প্রভাব কতটা ?(Madhyamik 2020)

Ans. বাংলার সাংস্কৃতিক জীবনে ছাপাখানার বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব লক্ষ করা যায়—[i] বাংলায় গণশিক্ষার প্রসার শুরু হয়। [ii] উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সস্তায় বইপত্র শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছোতে থাকে। [iii] সাধারণ মানুষ সুলভে বইপত্র থেকে বিভিন্ন জ্ঞান আহরণের সুযোগ পায়। [iv] বইয়ের ব্যাবসার নতুন বাজার গড়ে ওঠে।

৩.১০) উপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ ছিল কেন ?(Madhyamik 2020)

Ans. ঔপনিবেশিক শিক্ষা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ ছিল, কারণ—

[i] ভারতের চিরাচরিত শিক্ষায় যা কিছু সদর্থক ছিল ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা তা ধ্বংস করে। [ii] ঔপনিবেশিক শিক্ষাকাঠামোয় ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অবহেলা করা হয়। [ii] ইংরেজি ভাষার বাহন এই শিক্ষা ভারতে গণশিক্ষার প্রসারে ব্যর্থ হয়। [iv] এই শিক্ষার মাধ্যমে ইংরেজদের গোলাম করণিক তৈরি এবং খ্রিস্টান ধর্মের প্রসার ঘটানো সম্ভব হয়।

৩.১১) মোপলা বিদ্রোহের (১৯২১) কারণ কী ?(Madhyamik 2020)

Ans. মোপলা বিদ্রোহের (১৯২১) প্রধান কারণগুলি ছিল—[i] ব্রিটিশ সরকার মোপলার কৃষকদের ওপর তীব্র রাজস্বের বোঝা ও অন্যান্য বেআইনি কর চাপিয়ে দেয়। [ii] জমিতে কৃষকদের অধিকার অস্বীকার করা হয়। [ii] কৃষকদের ওপর জমিদারদের তীব্র অত্যাচার ও শোষণের ফলে তারা ক্ষুব্ধ হয়।

৩.১২) কী উদ্দেশ্যে কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠিত হয় ?(Madhyamik 2020)

Ans. কংগ্রেসের অভ্যন্তরে কংগ্রেস সমাজতান্ত্রিক দল (১৯৩৪ খ্রি.) প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি ছিল—[i] কংগ্রেসে সমাজতান্ত্রিক আদর্শগুলি গ্রহণ করার জন্য বর্ষীয়ান নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। [i] দরিদ্র দেশবাসীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দাবিতে কাজ করা। [iii] পুঁজিপতি, জমিদার ও দেশীয় রাজাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া [iv] ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ করা।

৩.১৩) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দেরর ১৬ই অক্টোবর বাংলার নারী সমাজ কেন অরন্ধন পালন করে ?(Madhyamik 2020)

Ans. স্বদেশি আন্দোলনের সূচনালগ্নে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর আহবানে বাংলার নারীরা অরন্ধন পালন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল—[i] বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, [ii] হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালি ঐক্যের স্বরূপ তুলে ধরা, [iii] নারীদের অংশগ্রহণে স্বদেশি আন্দোলনকে শক্তিশালী করা।

৩.১৪) ননীবালা দেবী স্মরণীয় কেন ?(Madhyamik 2020)

Ans. ননীবালা দেবী ইতিহাসে স্মরণীয়, কারণ—[i] তিনি ছিলেন এক দুঃসাহসী বিপ্লবী। [ii] নিজের বাড়িতে বিপ্লবীদের গোপনে আশ্রয় দিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হন। [iii] তাকে মাটির নীচে জানালাহীন কক্ষে আটক রাখা হয়। [iv] একদা প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি অবস্থায় পুলিশ সুপার গোল্ডিকে কষিয়ে চড় মারেন। [v] তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম রাজবন্দি।

৩.১৫) সর্দার প্যাটেলকে ‘ভারতের লৌহমানব’ বলা হয় কেন ?(Madhyamik 2020)

Ans. ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলকে ভারতের লৌহমানব বলা হয়, কারণ—[i] তিনি ছিলেন সর্বদা নীতি ও আদর্শে অটল। [ii] তিনি অনমনীয় দৃঢ়তার সঙ্গে স্বাধীন ভারতে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্যের ভারতভুক্তি ঘটান।

৩.১৬) কী পরিস্থিতিতে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (১৯৫৩) গঠিত হয়েছিল ?(Madhyamik 2020)

Ans. স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনের ভিত্তি নির্ধারণে ব্যাপক সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় [i] কংগ্রেস ভাষাভিত্তিক পুনর্গঠনের বিরোধিতা করলে (১৯৪৮ খ্রি.) সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। [ii] ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তেলুগু গান্ধিবাদী নেতা পত্তি শ্রীরামুলু পৃথক অপ্রদেশ গঠনের দাবিতে অনশন করে মৃত্যুবরণ করলে তেলুগুভাষী জেলাগুলিতে দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। [ii] এই অবস্থায় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠিত হয়।