নদীর পার্বত্য প্রবাহ বা উচ্চগতি বা নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ চিত্রসহ বর্ণনা করো|
নদীর ক্ষয়জাত তিনটি ভূমিরূপের উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য উদাহরণ-সহ আলোচনা করা
হল—
‘v’ আকৃতির উপত্যকা বা গিরিখাত:
উৎপত্তি: আর্দ্র অঞ্চলে নদীর উচ্চ প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি থাকায় নদী প্রবলভাবে নিম্নক্ষয় করে। এইরূপ নিম্নক্ষয়ের কারণে নদীখাতগুলি যেমন সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ওঠে, তেমনই পুঞ্জিতক্ষয়,বৃষ্টির জলের ধারার কারণে নদী উপত্যকার ঊর্ধ্ব অংশ প্রশস্ত হয়ে পড়ে। ফলে নদী উপত্যকার আকৃতি ‘V’ অক্ষরের মতো হয়।
বৈশিষ্ট্য:
(i) পার্বত্য অঞ্চলে এই ভূমিরূপ দেখা যায়।
(ii) উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো হয়।
উদাহরণ: নেপালের কালী নদীর গিরিখাত।

জলপ্রপাত:
উৎপত্তি: নদীর প্রবাহপথে ঢালের ব্যাপক তারতম্য ঘটলে নদীর জল উপর থেকে নীচে হঠাৎ প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে। এভাবে জলপ্রপাতের উৎপত্তি ঘটে। এ ছাড়া,
(i) চ্যুতির ফলে নদীর গতিপথে ঢালের তীব্র বিচ্যুতি ঘটলে,
(ii) মালভূমির খাড়া প্রান্তভাগ থেকে নদী নিম্নে পতিত হলে, এবং
(iii) নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা পাশাপাশি অবস্থান করলে বৈষম্যমূলক ক্ষয়ের ফলেও জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য:
(i) নদীর উচ্চ পার্বত্য প্রবাহে জলপ্রপাত দেখা যায়।
(ii) নদীর দীর্ঘ ক্ষয়ের কারণে জলপ্রপাতের
পশ্চাদপসরণ ঘটে।
উদাহরণ: কর্ণাটকের সরাবতী নদীর উপর যোগ জলপ্রপাত।

মন্থকূপ বা পটহোল:
উৎপত্তি: উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি প্রভৃতি ঘুরতে ঘুরতে নীচের দিকে অগ্রসর হয়। এর ফলে পরিবাহিত নুড়ি ও প্রস্তরখণ্ডের দ্বারা ঘর্ষণজনিত ক্ষয়ের কারণে নদীখাতে কূপের মতো অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়। এগুলিকে বলা হয় মন্থকূপ বা পটহোল |
উদাহরণ: তিস্তা নদীর পার্বত্যপ্রবাহে অনেক মন্থকূপ দেখা যায় |

You must be logged in to post a comment.