ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগের পরবর্তীকালে ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করো। অথবা, সংক্ষেপে টীকা লেখো: দেশবিভাগ (১৯৪৭) জনিত উদ্বাস্তু সমস্যা। [Madhyamik 2018 ]

উত্তর : উদ্বাস্তু সমস্যা :

ভূমিকা: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগের পর পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ হিন্দু, শিখ প্রভৃতি ধর্মের মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়।


[1] ভারতের তীব্র সংকট: পাকিস্তান থেকে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুর অর্থনৈতিক দায়দায়িত্ব গ্রহণ করা সদ্যস্বাধীন ভারতের পক্ষে খুবই কঠিন সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। ফলে উদ্বাস্তু সমস্যা ভারতে এক গভীর সংকটের সৃষ্টি করে।

[2] সংকটের কেন্দ্রবিন্দু: ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যা সবচেয়ে গভীর আকার নেয় পাঞ্জাব এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। কেন-না, এই দুই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক উদ্বাস্তু আশ্রয় নেয়।


[3] পাঞ্জাবের পরিস্থিতি: দেশভাগের সঙ্গে সঙ্গে পাঞ্জাবে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তু আশ্রয় নেয়। ভারত সরকারও পাঞ্জাবের উদ্বাস্তুদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও
পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিলে পাঞ্জাবের উদ্বাস্তু সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়।

[4] পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ববঙ্গের বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তু পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেন। তবে পাঞ্জাবের উদ্বাস্তুদের মতো ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সুন্দর ব্যবস্থা বাঙালি উদ্বাস্তুরা পায়নি। ফলে অধিকাংশ উদ্বাস্তুকে বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির, ফুটপাত, রেলস্টেশন প্রভৃতি স্থানে আশ্রয় নিয়ে দিন কাটাতে হয়। বহু উদ্বাস্তুকে বহু দূরে দণ্ডকারণ্য, আন্দামান প্রভৃতি স্থানে পুনর্বাসনে পাঠানো হয়।



উপসংহার: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাব প্রদেশে সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তু আশ্রয় নেয়। তাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সেই দুর্দশার কবল থেকে নিঃস্ব, রিক্ত উদ্‌দ্বাস্তুরা অনেকটা মুক্তি পায়।

ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক —