কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা : মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেসন

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ☞ কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এখানে আলোচনা করা হলো ।

কোশবিভাজন ও কোশচক্ৰ : যে প্রক্রিয়ায় জনিতৃ কোশ থেকে অপত্য কোশ সুষ্টি হয় তাকে কোশবিভাজন বলে এবং কোশের বৃদ্ধি দশার ও বিভাজন দশার চক্রাকার আবর্তনকে কোশচক্র বলে।
বিজ্ঞানী ফ্লেমিং (1880) প্রথম কোশ বিভাজন পর্যবেক্ষণ করেন।
ক্রোমােজোম, DNA ও জিনের আন্তঃসম্পর্ক : কোশের নিউক্লিয়াসমধ্যস্থ নিউক্লিয় জালক থেকে সূত্রাকার অংশ জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করে এবং প্রজাতির পরিব্যক্তি, প্রকরণ ও বিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, তাকে ক্রোমােজোম বলে।
DNA-এর কুণ্ডলীকৃত অংশই হল ক্রোমােজোম। DNA-এর বিশেষ বিশেষ অংশ হল জিন।
নিউক্লিওজালক – ক্রোমােজোম → DNA — জিন

ক্রোমােজোমের প্রকারভেদ : দেহগঠন ও লিঙ্গ নির্ধারণের বৈশিষ্ট্য অনুসারে ক্রোমােজোম দু প্রকার। যথা অটোজোম ও সেক্স ক্রোমােজোম। দেহজ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকারী ক্রোমােজোম হল আটোজোম। মানবদেহে এর সংখ্যা 22 জোড়া এবং লিঙ্গ নির্ধারণে অংশগ্রহণকারী ক্রোমােজোমকে সেক্স ক্রোমােজোম বা হেটেরােজোম বা অ্যালােজোম বলে। মানবদেহে এদের সংখ্যা একজোড়া। অর্থাৎ মানুষের মােট ক্রোমােজোম 23 জোড়া। ক্রোমোজোম নামকরণ – করেন ওয়ালডেয়ার

ক্রোমােজোম সংখ্যা : নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা সবসময় ধ্রুবক থাকে। মানুষের দেহকোশের ক্রোমােজোম সংখ্যা 46 (2n) এবং গ্যামেটের ক্রোমােজোম সংখ্যা 23 (n)। জীবদের দেহকোশের ক্রোমােজোম সংখ্যাকে ডিপ্লয়েভ (2n) সংখ্যা এবং গ্যামেটের মধ্যে অবস্থিত একসেট ক্রোমােজোমকে হ্যাপ্লয়েড (n) সংখ্যা বলে।

ক্রোমােজোমের গঠন : একটি আদর্শ ক্রোমােজোমের অংশগুলি হল—
ক্রোমাটিড : প্রতিটি ক্রোমােজোমে দৈর্ঘ্য বরাবর অবস্থিত সূক্ষ্ম সুতাের মতাে অংশই হল ক্রোমাটিড।
ক্রোমােনিমাটা : ইন্টারফেজ দশায় ক্রোমােজোমের মধ্যে যে দুটি সূক্ষ্ম তন্তু থাকে তাদের ক্রোমােনিমাটা বলে।
প্রাথমিক খাঁজ : ক্রোমােজোমের মধ্য স্থানে যে খাঁজ থাকে তাকে প্রাথমিক খাঁজ বলে। এই খাঁজে সেন্ট্রোমিয়ার অবস্থান করে।
গৌণ খাঁজ: ক্রোমােজোমে অবস্থিত মুখ্য খাঁজ ব্যাতীত অপর কোনাে খাঁজ থাকলে তাকে গৌণ খাঁজ বলে।
নিউক্লিওলার অরগানাইজার : টেলােফেজ যে অঞ্চল DNA নিউক্লিওলাস গঠন করে তাকে, নিউক্লিওলার অরগানাইজার বলে[NOR]।
স্যাটেলাইট : গৌণখাঁজযুক্ত ক্রোমােজোমের বারের মতাে ফোলা টেলােমিয়ারকে স্যাটেলাইট বলে।
টেলােমিয়ার : ক্রোমােজোমের দুই প্রান্তকে টেলােমিয়ার বলে।

প্রশ্ন : একটি আদর্শ ক্রোমোজোমের পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করে চিহ্নিত করো – ক্রোমাটিড, সেন্ট্রোমিয়ার, গৌণ খাঁজ, টেলোমিয়ার, NOR.

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা
চিত্রঃ আদর্শ ক্রোমোজোম

পার্থক্য লেখো- ক্রোমোজোম ও ক্রোমাটিড ।

ক্রোমোজোম

ক্রোমাটিড

ক্রোমোজোম নিউক্লীয় জালিকা থেকে উৎপন্ন হয়।

প্রতিটি ক্রোমোজোমে দুটি ক্রোমাটিড থাকে।

সংখ্যায় দুই-এর অধিক হতে পারে ।

প্রতিটি ক্রোমোজোমে দুটি ক্রোমাটিড থাকে।

ক্রোমােজোমের রাসায়নিক উপাদান : ক্রোমােজোম প্রধানত প্রােটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিড নিয়ে গঠিত।
প্রােটিন ও ক্রোমােজোমে দু-ধরনের প্রােটিন থাকে। এর প্রায় 45% ক্ষারীয় হিস্টোন প্রােটিন এবং 5% আক্সিক নন-হিস্টোন প্রােটিন থাকে।
নিউক্লিক অ্যাসিড ও ক্রোমােজোমে দুই ধরনের নিউক্লিক অ্যাসিড থাকে। যথা DNA ও RNA
DNA – এর উপাদানঃ DNA-তে ডিঅক্সিরাইবােজ নামক পেন্টোজ শর্করা, নাইট্রোজেনাস বেস-পিউরিন [অ্যাডেনিন (A) ও গুয়ানিন (G)] এবং পিরিমিডিন [সাইটোসিন (C) ও থাইমিন (T)] এবং একটি ফসফোরিক অ্যাসিড উপস্থিত থাকে।
RNA – এর উপাদান : RNA-এই জৈব অণুতে রাইবােজ নামক পেন্টোজ শর্করা, নাইট্রোজেনাস বেস পিউরিন [অ্যাডেনিন (A) ও গুয়ানিন (G)] এবং পিরিমিডিন[সাইটোসিন (C) ও ইউরাসিল (U)]এবং একটি ফসফোরিক অ্যাসিড উপস্থিত থাকে।

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা : মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেসন

DNA ও RNA এর পার্থক্য :

DNA এর বৈশিষ্ট্য: ১) শর্করা : ডি-অক্সিরাইবোজ শর্করা থাকে ৷ ২) নাইট্রোজেন বেস : অ্যাডেমিন, গুয়ানিন , সাইটোসিন ও থাইমিন ৩) গঠন : দ্বিতন্ত্রী ও প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো ৷ ৪) কাজ : জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করা।

RNA এর বৈশিষ্ট্য : ১) শর্করা : রাইবোজ শর্করা ২) নাইট্রোজেন বেস : অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন, ইউরাসিল ৩) গঠন: একতন্ত্রী ও রেখাকার ৪) কাজ : প্রোটিন সংশ্লেষ করা।

ইউক্রোমাটিন: এই ক্রোমাটিন খুব সূক্ষ্ম, স্থির নিউক্লিয়াসে এরা প্রসারিত অবস্থায় থাকে, ক্ষারীয় রঞ্জকে হালকা বর্ণ ধারণ করে, এর সক্রিয় জিন বহন করে ।
হেটেরােক্রোমাটিন : এই ক্রোমাটিন অপেক্ষাকৃত পুরু, স্থির নিউক্লিয়াসে কুণ্ডলীকৃত অবস্থায় থাকে, ক্ষারীয় রঞ্জকে গাঢ় বর্ণ ধারণ করে, এরা সক্রিয় জিন বহন করে না।

ইউক্রোমাটিন ও হেটারোক্রোমাটিন এর পার্থক্যঃ

ইউক্রোমাটিন এর বৈশিষ্ট্য : ১) রঞ্জক গ্রহণ : ইন্টারফেজ দশায় হালকা ও বিভাজন দশায় গাঢ় ভাবে রঞ্জিত হয়। ২) জিনের সক্রিয়তা : সক্রিয় ৷ ৩) ক্রসিং ওভার সম্পাদন : ক্রসিং ওভার ঘটে।

হেটারোক্রোমাটিন এর বৈশিষ্ট্য : ১) রঞ্জক গ্রহণ : ইন্টারফেজ দশায় গাঢ়ভাবে ও বিভাজন দশায় হালকা ভাবে রঞ্চিত হয়। ২) জিনের সক্রিয়তা : নিস্ক্রিয় ৩) ক্রসিং ওভার সম্পাদন : ঘটে না।

কোশ বিভাজনে অংশগ্রহণকারী কোশীয় অঙ্গাণু : কোশ বিভাজনে অংশগ্রহণকারী কোশীয় অঙ্গাণু হল—
নিউক্লিয়াস : এটি কোশ বিভাজনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, এটি প্রােফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ ও টেলােফেজ দশায় বিভাজিত হয়।
সেন্ট্রোজোম ও মাইক্রোটিউবিউল : কোশ বিভাজনকালে সেন্ট্রোজোম প্রাণীকোশে ও মাইক্রোটিউবিউল উদ্ভিদ কোশে বেমতন্তু গঠন করে।
রাইবােজোম : প্রােটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে।
মাইটোকনড্রিয়া : কোশ বিভাজনের প্রয়ােজনীয় শক্তির জোগান দেয়।

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা

কোশ বিভাজনের তাৎপর্য : কোশ বিভাজনের প্রধান তাৎপর্য হল— বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ এবং প্রজনন।
কোশ বিভাজনের প্রকারভেদ : কোশ বিভাজন তিন প্রকার। যথা– অ্যামাইটোসিস, মাইটোসিস ও মিয়ােসিস।
অ্যামাইটোসিস : যে সরলতম প্রক্রিয়ায় কোনাে জনিতৃ কোশ নিউক্লিয় পর্দার অবলুপ্তি না ঘটিয়ে, ক্রোমােজোম ও বেতন্তু গঠন ব্যাতিরেকে নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমে সরাসরি বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কেশ সৃষ্টি করে, তাকে অ্যামাইটোসিস বলে
স্থানঃ নিম্নশ্রেণির জীবদেহে (ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, অ্যামিবা) দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য : ১) নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের একই সঙ্গে বিভাজন ঘটে। ২) দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়। ৩) সরাসরি বিভাজন হওয়ায় একে প্রত্যক্ষ বিভাজন বলে।
মাইটোসিস : যে জটিল ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় কোনাে দেহ মাতৃকোশের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম একবার মাত্র বিভাজিত হয়ে সমআকৃতি, সমগুণ ও সমসংখ্যক ক্রোমােজোমসহ দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে তাকে মাইটোসিস বলে।
স্থানঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহমাতৃকোশ।
বৈশিষ্ট্যঃ ১) একটি জনিতৃ কোশ থেকে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়, ২) জনিতৃ কোশ ও অপত্য কোশে ক্রোমােজোম সংখ্যা সমান হয়, ৩) নিউক্লিয়াসটি চারটি দশার মাধ্যমে বিভাজ্জিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে।

সমবিভাজনঃ মাইটোসিস কোশ বিভাজনের সময় একটি মাতৃকোশ থেকে সমআকৃতি , সমগুন সম্পন্ন ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হওয়ায় মাইটোসিসকে সদৃশ বিভাজন বলে।

মিয়ােসিস : যে বিভাজন প্রক্রিয়ায় জনন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি প্রথমে হ্রাস বিভাজন ও পরে সমবিভাজন পদ্ধতিতে পরপর দু-বার বিভাজিত হয়ে জনন মাতৃকোশের অর্ধেক ক্রোমােজোমসহ চারটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে তাকে মিয়ােসিস বলে।
স্থানঃ জনন মাতৃকোশে জননকোশ সৃষ্টির সময় সম্পন্ন হয়। মস, ফার্ন প্রভৃতি উদ্ভিদের রেণু মাতৃ কোশে রেণু সৃষ্টির সময় ঘটে।
বৈশিষ্ট্য : ১) চারটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়, ২) অপত্য কোশে মাতৃকোশের অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমােজোম থাকে, ৩) মাতৃকোশটিতে প্রথমে হ্রাস বিভাজন ও পরে সদৃশ্য বিভাজন ঘটে। অর্থাৎ কোশটি পরপর দুবার বিভাজিত হয়।

হ্রাস বিভাজন: মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা অপত্য কোশে অর্ধেক হয়ে যাওয়ায় মিয়োসিসকে হ্রাস বিভাজন বলে।

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা

কোশচক্র : কোশের বৃদ্ধি ও বিভাজন দশার চক্রাকার আবর্তনকে কোশচক্র বলে। কোশচক্রের দুটি পর্যায় ইন্টারফেজ দশা ও মাইটোটিক দশা।
ইন্টারফেজ দশা : একটি কোশ বিভাজনের টেলােফেজ দশা ও পরবর্তী বিভাজনের প্রফেজ দশার মধ্যবর্তী দশাকে ইন্টারফেজ দশা বলে।এটি কোশবিভাজনের প্রস্তুতি দশা। এই দশায় DNA, RNA ও প্রােটিনের সংশ্লেষণের কাজ সংঘটিত হয়। এই দশা তিনটি উপদশায় বিভক্ত।
১) G1দশা: এই দশায় প্রােটিন ও RNA সংশ্লেষিত হয়।
২) S দশা : এই দশায় DNA সংশ্লেষণ ঘটে।
৩) G2 দশা : এই দশায় চরম বিপাকীয় সক্রিয়তা দেখা যায়।
G1 দশায় যেখানে কোশচক্রটি থেমে যায় তাকে G০ দশা বলে। স্নায়ুকোশ, পরিণত লােহিত রক্তকণিকায় দেখা যায়।

মাইটোটিক ফেজ : বিভাজন দশাই হল মাইটোটিক ফেজ। এটি প্রােফেজ, মেটাফেজ,অ্যানাফেজ ও টেলােফেজ দশায় বিভক্ত।

মাইটোসিস : মাইটোসিস বিভাজনের চারটি দশা। যথা—প্রােফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ, টেলােফেজ।
প্রফেজ দশা : এটি নিউক্লিয়াস বিভাজনের প্রথম ও দীর্ঘস্থায়ী দশা।
বৈশিষ্ট্য : ১) নিউক্লিও জালক থেকে ক্রোমােজোম সৃষ্টি হয়।
২) ক্রোমােজোমে ক্রোমাটিড গঠিত হয়। ৩) নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয় পর্দার অবলুপ্তি ঘটে।

মেটাফেজ দশাঃ এটি মাইটোসিস বিভাজনের দ্বিতীয় ও স্বল্পস্থায়ী দশা।
বৈশিষ্ট্য : ১) নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয় পর্দার সম্পূর্ণ অবলুপ্তি ঘটে।২) বেম বা স্পিন্ডল গঠিত হয়, ৩) ক্রোমােজোমগুলি বেমের নিরক্ষীয় তলে অবস্থান করে।
অ্যানাফেজ দশা : এটি নিউক্লিয়াস বিভাজনের তৃতীয় ও সর্বাপেক্ষা ক্ষণস্থায়ী দশা।
বৈশিষ্ট্য: ১) ক্রোমােজোম ক্রোমাটিড দ্বয়কে বিচ্ছিন্ন করে অপত্য ক্রোমােজোম সৃষ্টি করে।
২) অপত্য ক্রোমােজোমগুলি মেরুর দিকে ধাবিত হয়।
৩) সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুসারে ক্রোমােজোমগুলি মেটাসেন্ট্রিক, সাব মেটাসেন্ট্রিক (L), অ্যাক্রোসেন্ট্রিক (J) ও টেলােসেন্ট্রিক (I) ভাগে বিভক্ত করা হয়ে থাকে।
৪) এই দশার শেষে ক্রোমােজোমগুলি বেমের মেরুপ্রান্তে পৌছায়।

টেলােফেজ দশা: নিউক্লিয়াস বিভাজনের সর্বশেষ দশা।
বৈশিষ্ট্য : ১) মেরুপ্রান্তে জড়াে হওয়া ক্রোমােজোম গুলিকে ঘিরে নিউক্লিয় পর্দার আবির্ভাব ঘটে।
২) নিউক্লিওলাসের পুনঃআবির্ভাব ঘটে।
৩) বেমতন্তু অবলুপ্ত হয়।
৪) অপত্য নিউক্লিয়াস উৎপন্ন হয়।

কোশ বিভাজন-জীবনের প্রবাহমানতা : মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেসন

সাইটোকাইনেসিস : উদ্ভিদকোশের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াস বিভাজনের টেলেফোজ দশা চলাকালীন বেমের বিষুব অঞ্চলের মাঝবরাবর মাইক্রোফিলামেন্ট গুলাে গুচ্ছাকারে জমা হয়ে ফ্রাগমােপ্লাস্ট গঠন করে যা গলগিবস্তুর সঙ্গে মিলিত হয়ে কোশপাত গঠন করে। কোশপাতের উভয় পার্শ্বে বিভিন্ন
রাসায়নিক বস্তু জমা হয়ে কোশপ্রাচীর গঠিত হয় এবং সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে। প্রাণীকোশের ক্ষেত্রে ক্লিভেজ পদ্ধতিতে সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে।

মাইটোসিসের তাৎপর্য : বৃদ্ধি, কোশ প্রতিস্থাপন ও ক্ষয়পূরণ, পুনরুৎপাদন এবং প্রজননের জন্য মাইটোসিস কোশবিভাজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মিয়ােসিস কোশবিভাজন:
মিয়ােসিস-I : ১) পিতৃ ও মাতৃ ক্রোমােজোম জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে। এই জোড়কে বাইভ্যালেন্ট বলে। ২) বাইভ্যালেন্টের ক্রোমােজোমগুলি লম্বালম্বি বিভাজিত হয়ে টেট্রাড গঠন করে।টেট্রাডে একজোড়া সিস্টার ও একজোড়া নন-সিস্টার ক্রোমাটিড থাকে।
৩) সমসংস্থ ক্রোমােজোম জোড়ার মধ্যে পৃথকীকরণ ঘটে কিন্তু স্থানে স্থানে তারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কায়াজমা (x-আকৃতি বিশিষ্ট) গঠন করে।

সাইটোকাইনেসিস : উদ্ভিদকোশের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াস বিভাজনের টেলেফোজ দশা চলাকালীন বেমের বিষুব অঞ্চলের মাঝবরাবর মাইক্রোফিলামেন্ট গুলাে গুচ্ছাকারে জমা হয়ে ফ্রাগমােপ্লাস্ট গঠন করে যা গলগিবস্তুর সঙ্গে মিলিত হয়ে কোশপাত গঠন করে। কোশপাতের উভয় পার্শ্বে বিভিন্ন
রাসায়নিক বস্তু জমা হয়ে কোশপ্রাচীর গঠিত হয় এবং সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে। প্রাণীকোশের ক্ষেত্রে ক্লিভেজ পদ্ধতিতে সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি করে।

মাইটোসিসের তাৎপর্য : বৃদ্ধি, কোশ প্রতিস্থাপন ও ক্ষয়পূরণ, পুনরুৎপাদন এবং প্রজননের জন্য মাইটোসিস কোশবিভাজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মিয়ােসিস কোশবিভাজন:
মিয়ােসিস-I : ১) পিতৃ ও মাতৃ ক্রোমােজোম জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে। এই জোড়কে বাইভ্যালেন্ট বলে। ২) বাইভ্যালেন্টের ক্রোমােজোমগুলি লম্বালম্বি বিভাজিত হয়ে টেট্রাড গঠন করে।টেট্রাডে একজোড়া সিস্টার ও একজোড়া নন-সিস্টার ক্রোমাটিড থাকে।
৩) সমসংস্থ ক্রোমােজোম জোড়ার মধ্যে পৃথকীকরণ ঘটে কিন্তু স্থানে স্থানে তারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কায়াজমা (x-আকৃতি বিশিষ্ট) গঠন করে।

মিয়ােসিস -II : ১) এই দশার শুরুতে হােমােলােগাস ক্রোমােজোম দুটির ক্রোমাটিডগুলি পৃথক হয়ে বেমের দুদিকে চলে যায়। ২) এই বিভাজনের ফলে চারটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়।
ক্রসিং ওভার : সমসংস্থ ক্রোমােজোমের নন-সিস্টার ক্রোমাটিড দুটির মধ্যে খণ্ড বিনিময়ের ঘটনাকে ক্রসিং ওভার বলে।
পদ্ধতি : সমসংস্থ ক্রোমােজোম দুটি জোট বেঁধে বাইভ্যালেন্ট গঠন করে। এই পদ্ধতিকে সাইন্যাপসিস বলে।   প্রতিটি ক্রোমােজোম টেট্রাড গঠন করে। টেট্রাডের নন-সিস্টার ক্রোমাটিড দ্বয়ের মধ্যে DNA খণ্ডাংশের বিনিময় ঘটে, একে ক্রসিংওভার বলে। এই অংশে গঠিত ‘x’ আকৃতির গঠনটিকে কায়াজমা বলে।।

কোশচক্রের গুরুত্ব: কোশ চক্রের বিভিন্ন বিন্দুতে নিয়ন্ত্রণ বিনষ্ট হলে অনিয়ন্ত্রিত কোশ বিভাজন ঘটে যা টিউমার সৃষ্টি করে। এটি বিনাইন ও ম্যালিগন্যান্ট প্রকারের হতে পারে।ম্যালিগন্যান্ট টিউমারই হল ক্যানসার।

মিয়ােসিসের তাৎপর্য :
১) প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখা
২) ক্রোমাটিডের খণ্ড বিনিময়
৩) জীবের মধ্যে প্রকরণ সৃষ্টি
৪) গ্যামেট উৎপাদন
৫) জনুক্রম ঘটানাের জন্য মিয়ােসিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন: জীবের বৃদ্ধি, প্রজনন ও ক্ষয়পূরণ কীভাবে
কোশবিভাজনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তা বিশ্লেষণ করো। অথবা, কোশ বিভাজনের তাৎপর্য লেখো।

উত্তরঃ

উত্তর: কোশ বিভাজনের তাৎপর্যঃ কোশ বিভাজনের প্রধান তাৎপর্য হল—
(i) জীবের বৃদ্ধি : জীবদেহের বৃদ্ধির জন্য কোশ বিভাজন হয়। কোশ বিভাজিত হয়ে কোশের
সংখ্যা বাড়ে, ফলে জীবদেহের বৃদ্ধি ঘটে।
(ii) প্রজনন বা বংশবিস্তার : কোশ বিভাজনের দ্বারা এককোশী জীবদের বংশবিস্তার ঘটে। এ ছাড়া রেণু উৎপাদন ও গ্যামেট উৎপাদনের জন্যও কোশ বিভাজিত হয়।
(iii) ক্ষয়পূরণ :  আঘাতপ্রাপ্ত স্থানের মেরামতির জন্য কোশ বিভাজিত হয়।

প্রশ্ন:  একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমােজোমের নিম্নলিখিত অংশগুলির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করাে :
সেন্ট্রোমিয়ার, টেলােমিয়ার

উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ার : সেন্ট্রোমিয়ার ভগ্নী ক্রোমাটিডগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত করে।কোশবিভাজনের সময় সেন্ট্রোমিয়ারের কাইনেটোকোর অংশে বেমতন্তু যুক্ত হয় এবং সিস্টার ক্রোমাটিড দুটিকে পৃথক করে, কোশের মেরুর দিকে নিয়ে যায়।

টেলােমিয়ার :  টেলােমিয়ার DNA প্রতিলিপি গঠনে সাহায্য করে। কাছাকাছি অবস্থিত ক্রোমােজোম গুলির প্রান্ত জুড়ে যাওয়া প্রতিরােধ করে।

প্রশ্ন: মিয়ােসিস কোশবিভাজনের সময় ক্রোমােজোম সংখ্যার হ্রাস ও ক্রোমাটিডের মধ্যে খণ্ড বিনিময় ঘটে—এই ঘটনা দুটির তাৎপর্য কী কী তা বিশ্লেষণ করাে। অথবা, মিয়ােসিস কোশবিভাজনের তাৎপর্য লেখো।

উত্তর: মিয়ােসিসের তাৎপর্য :
(i) প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখা :  মিয়ােসিসের ফলে ডিপ্লয়েড (2n) মাতৃকোশের ক্রোমােজোম সংখ্যা হ্রাস ঘটিয়ে হ্যাপ্লয়েড (n) জনন কোশ সৃষ্টি হয়। দুটি হ্যাপ্লয়েড জনন কোশ মিলিত হয়ে পুনরায় ডিপ্লয়েড কোশ সৃষ্টি হয়। ক্রোমােজাম সংখ্যার হ্রাস না ঘটলে প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা 2n থেকে 4n, 8n, 16n হারে বেড়ে যেত।
সুতরাং, মিয়ােসিসের ফলে ক্রোমােজোম সংখ্যার হ্রাস ঘটে প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা বংশপরম্পরায় ধ্রুবক থাকে।
(ii) ক্রোমাটিডের খণ্ডবিনিময় :  মিয়ােসিসের সময় দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের মধ্যে খণ্ড বিনিময় ঘটার ফলে জিনের পুনর্বিন্যাস ঘটে।

প্রশ্ন: নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মাইটোসিস কোশ বিভাজনের ক্যারিওকাইনেসিসের দশাগুলি শনাক্ত করাে—
(i) ক্রোমোেজামগুলির কোশের বিষুব অঞল বরাবর অবস্থান ও নির্দিষ্ট নিয়মে সজ্জা। (ii) বেতন্তুর বিলুপ্তি। (iii) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাসের বিলুপ্তি (iv) অপত্য ক্রোমােজোমের কোশের বিপরীত মেরুতে গমন

উত্তর: (i) ক্রোমোেজামগুলির কোশের বিষুব অঞল বরাবর অবস্থান ও নির্দিষ্ট নিয়মে সজ্জা: প্রোফেজ. (ii) বেতন্তুর বিলুপ্তি: টেলোফেজ (iii) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাসের বিলুপ্তি: প্রোফেজ. (iv) অপত্য ক্রোমােজোমের কোশের বিপরীত মেরুতে গমন: অ্যানাফেজ

প্রশ্ন: মাইটোসিস কোশবিভাজনের ক্যারিওকাইনেসিসে নিম্নলিখিত ঘটনা দুটি কোন্ কোন্ দশায় ঘটে তা নীচের উত্তরগুলাে থেকে নির্বাচন করাে।

i ) অপত্য ক্রোমােজোম দুটি পরস্পরের থেকে তাদের নিজস্ব মেরুর দিকে সরতে থাকে ।
ii) নিউক্লিও পর্দা ও নিউক্লিওলাস অবলুপ্ত হয়—

A) প্রফেজ এবং অ্যানাফেজ
B) অ্যানাফেজ এবং প্রােফেজ
C) টেলােফেজ এবং মেটাফেজ
D) মেটাফেজ এবং টেলােফেজ

উত্তর: B) অ্যানাফেজ এবং প্রােফেজ ।