
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা | মাধ্যমিক বাংলা সাজেসান
প্রশ্ন : জ্ঞানচক্ষু’গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।
উত্তর : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপন নামের এক কিশাের। পাঠ্যাংশে কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে চরিত্রটি জীবন্ত হয়ে ওঠে।
কল্পনাপ্রবণতা : তপন কল্পনাপ্রবণ। সে বিশ্বাস করে লেখক কোনাে সাধারণ মানুষ নয়; লেখক আকাশ থেকে পড়া কোনাে অদ্ভুত জীব। কৌতুহলী : তপন কৌতূহলী। তাই তার সাহিত্য অনুরাগী মন এবং লেখক হওয়ার স্বপ্নাকাঙ্ক্ষা মামার বাড়িতে লেখক মেসাের সঙ্গে আলাপে কৌতুহলপ্রবণ হয়ে ওঠে। নতুন মেসাের দাড়ি কামানাে, সিগারেট খাওয়া, গল্প করা ইত্যাদি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যাবলি অবাক হয়ে দেখে সে।
সাহিত্যপ্রেমিক : তপন সাহিত্যপ্রেমিক। শৈশব থেকেই সে গল্প পড়ে এবং গল্প লেখে। লেখক হওয়ার স্বপ্নে তার দিন কেটে যায়।
অন্তর্মুখী : তপন অন্তর্মুখী। তাই তপন সবার আড়ালে গল্প লেখে। তপনের সমবয়সি সকলে খুনজখম, অ্যাকসিডেন্ট, অনাহার ইত্যাদি নিয়ে গল্প লিখলেও সে নিজের স্কুলে ভরতি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে গল্প লেখে।
সংবেদনশীল : তপন সংবেদনশীল বলেই সে যখন দেখে সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম দিন’ নামক তার লেখা গল্পটি নতুন মেসাের নিজস্ব ভঙ্গিতে লেখা সম্পূর্ণ নতুন একটি গল্প, তখন সেই ঘটনায় সে অপমানিত, দুঃখিত ও স্তম্ভিত হয়ে যায়।
আত্মমর্যাদাবােধসম্পন্ন : তপনের আত্মমর্যাদাবােধ প্রবল। তাই গল্প ছাপার প্রসঙ্গে সে অপমানিত হলে দৃঢ়ভাবে সংকল্প নেয় ভবিষ্যতে নিজের লেখা ছাপাতে হলে সে নিজেই যাবে ছাপাখানায়। কারাের সাহায্যে আর গল্প ছাপাবে না।
প্রশ্ন : তপনের নতুন মেসােমশাই একজন লেখক। সত্যিকার লেখক।– লেখক সম্পর্কে তপনের প্রাথমিক ধারণার পরিচয় দাও। মেসােমশাইকে দেখে কীভাবে সেই ধারণার পরিবর্তন হয় ?
উত্তর : লেখক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা : উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ ছােটোগল্পটি থেকে গৃহীত হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র কল্পনাপ্রবণ বালক তপন। লেখক সম্পর্কে তার কিশাের মনে এক অলীক কল্পনার জগৎ ছিল। তার প্রাথমিক ধারণা ছিল লেখকেরা অসাধারণ, ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। এমনকি সে মনে করত লেখক আকাশ থেকে পড়া কোনাে অদ্ভুত জীব। সাধারণ রক্তমাংসের মানুষের থেকে তাদের গতিবিধি একেবারেই আলাদা। তারা অসামান্য সব ক্ষমতার অধিকারী।
ধারণার পরিবর্তন : যে লেখকদের সম্পর্কে তপনের এমন ধারণা সেইরকম একজন লেখকের সঙ্গে তপনের ছােটোমাসির বিয়ে হলে তপন বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যায়। প্রাথমিক বিস্ময় কেটে গেলে সে দেখে নতুন মেসাের মধ্যে কোনাে উলটোপালটা নেই, অন্যরকম নেই, একেবারে নিছক মানুষ! যে মানুষ তার বাবা, ছােটোমামা বা মেজোকাকুর মতােই স্বাভাবিকভাবে দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসে অতিরিক্ত খাবার দেখে পাত থেকে অনেক কিছুই কমিয়ে দেন, স্নানের সময় স্নান করেন, ঘুমের সময় ঘুমােন, খবরের কাগজের। বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে প্রবল তর্ক করেন, সিনেমা দেখেন, বেড়াতে বেরােন সেজেগুজে। এইসব দেখে তপন অনুভব করে তার নতুন মেসাে লেখক হলেও তিনি তপনদের মতােই মানুষ। এভাবেই লেখক সম্পর্কে তপনের প্রাথমিক ধারণার পরিবর্তন হয়।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা
প্রশ্ন : জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।
উত্তর : ভূমিকা : শিরােনাম সাহিত্যের মূল ভাববস্তুর পরিচয় বহন করে। কথাসাহিত্যে প্রধানত তিন ধরনের নামকরণ পদ্ধতি লক্ষিত হয়—চরিত্রকেন্দ্রিক, বিষয়কেন্দ্রিক এবং ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ। জ্ঞানচক্ষু গল্পটির নামকরণ কোন্ পদ্ধতি অনুসরণে হয়েছে তা আলােচনাসাপেক্ষ।
জ্ঞানচক্ষু শব্দের অর্থ: “জ্ঞানচক্ষু’ শব্দটির অর্থ হল ‘বােধোদয়’ বা ‘প্রকৃত জ্ঞানের উন্মেষ। এর দ্বারা প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করা যায়।
প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষুর উন্মােচন : আলােচ্য গল্পটির প্রধান চরিত্র কিশাের তপনের স্বপ্ন লেখক হওয়ার। সদ্যবিবাহিত তপনের ছটোমেসাে একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক। লেখক সম্পর্কে তপনের ধারণা ছিল যে, তারা ভিন্নপ্রকৃতির, হয়তাে বা আকাশ থেকে পড়া কোনাে বিস্ময়কর জীব। কিন্তু নতুন মেসােকে দেখার পর তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে অনুভব করে লেখক সাধারণ মানুষের মতােই রক্তমাংসে গড়া মানুষ।
প্রকৃত জ্ঞানচক্ষুর উন্মােচন:নতুন মেসােকে দেখে উৎসাহিত হয়ে সে লিখে ফেলে তার স্কুলে ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা।
লেখক মেসাে সেই গল্পটি একটু কারেকশান’ করে ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তপনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নতুন মেসাের সৌজন্যে প্রথম দিন’ নামে সেই গল্পটি প্রকাশিত হয় ‘সন্ধ্যাতারা পত্রিকায়। কিন্তু সকলের মুখে বারবার মেসসার গল্প কারেকশানের প্রসঙ্গটি তাকে অস্বস্তিতে ফেলে। অবশেষে নিজের লেখা গল্পটি পাঠ করতে গিয়ে তপন দেখে, মেসাে তার নিজস্ব দক্ষতায় কারেকশান’ নয়, সম্পূর্ণ গল্পটাই বদলে দিয়েছেন। লজ্জায়, অপমানে, দুঃখে তপন সংকল্প করে যদি কোনােদিন তার লেখা ছাপতে হয় তবে সে নিজে গিয়ে দিয়ে আসবে ছাপাখানায়। নিজের লেখা যদি পত্রিকার দপ্তর থেকে বাতিলও হয়, তাহলেও সে খুশি। সমস্ত আবেগকে জয় করে তার এই অনুভবই প্রমাণ করে, তার জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ ঘটেছে। তাই ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ হিসেবে গল্পটির জ্ঞানচক্ষু’ নামকরণ সার্থক হয়েছে।
প্রশ্ন : “কিন্তু নতুন মেসােকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।”—কীভাবে তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল? তার সত্যিকারের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল কীভাবে?
উত্তর : [প্রশ্ন : জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে ] – এই প্রশ্নের উত্তর থেকে লেখে নিতে হবে
***প্রশ্নঃ “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”—কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে কার মধ্যে এই প্রবাদবাক্যটি জেগে ওঠে? এক্ষেত্রে রত্ন কোনটি এবং জহুরিই বা কে? বক্তার কেন মনে হয়েছিল জহুরি রত্নটিকে চিনে নিতে পারবে?
উত্তর : প্রসঙ্গ : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের ছােটোমাসি তপনের লেখা গল্পের গুণগত মান নির্ধারণের জন্য যখন লেখক নতুন মেসাের কাছে গল্পটি নিয়ে যায়, তখন তপনের মনে এই প্রবাদবাক্যটি জেগে ওঠে।
রত্ন, জহুরি: এক্ষেত্রে ‘রত্ন’ বলতে তপনের লেখা গল্পকে বােঝানাে হয়েছে। আর জহুরি’ বলতে লেখক মেসােমশাইকে বােঝানাে হয়েছে।
কারণ : তপনের ছােটোমেসাে একজন প্রফেসার এবং একজন দক্ষ লেখক। তাই তিনি জ্ঞানী ব্যক্তি এবং সাহিত্য পাঠক। সুতরাং তিনিই একটা গল্প বা লেখার প্রকৃত মূল্য বা তার গুণমান যথার্থভাবে বিচার করতে পারবেন। একারণেই তপনের’ মনে হয়েছে ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই,’ অর্থাৎ জহুরি বা রত্ন বিশেষজ্ঞ যেমন রত্ন চেনেন এবং সহজেই আসল-নকল নির্বাচন করতে পারেন তেমনি একজন লেখক তথা জ্ঞানী ব্যক্তি গল্পের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা | মাধ্যমিক বাংলা সাজেসান
প্রশ্ন : ‘আমি বললে সন্ধ্যাতারা’র সম্পাদক না করতে পারবে ‘—বক্তা কে? সন্ধ্যাতারা কী? বক্তা কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলেছেন?
উত্তর : বক্তা : আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলােচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। উক্তিটির বক্তা হলেন তপনের ছােটোমাসির সঙ্গে সদ্য বিয়ে হওয়া ছােটো মেসােমশাই, যিনি একজন লেখক।
সন্ধ্যাতারা’ : ‘সন্ধ্যাতারা’ হল একটি সাহিত্য পত্রিকা। এইপত্রিকায় বিভিন্ন সুপ্রতিষ্ঠিত লেখক লেখিকার গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশিত হত।
প্রসঙ্গ : নতুন মেসাে একজন লেখক একথা জানতে পেরে তপন বুঝতে পারে লেখকরাও সাধারণ মানুষের মতােই হয়। অর্থাৎ তপন চেষ্টা করলে লেখক হতে তার কোনাে বাধা নেই। সেই প্রেরণায় তপন গল্প লেখা শুরু করে এবং তার প্রিয় ছােটোমাসিকে গল্পটি দেখায়। ছােটোমাসি মারফত গল্পটি মেসােমশাইয়ের হাতে পৌঁছেলে মেসােমশাই কিশাের তপনকে খুশি করার উদ্দেশ্যে তার লেখা গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং জানান ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে তার বিশেষ জানাশােনা থাকায় তার কথা সন্ধ্যাতারা’র সম্পাদক ফেলতে পারবে না। এই প্রসঙ্গেই তিনি উক্ত উক্তিটি করেছেন।
আরও পড়ুন : বহুরূপী গল্প
প্রশ্ন : বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।”—চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? নতুন মেসােরই বা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল?
উত্তর : বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণ দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে দেখা যায়, তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত মূল্য বিচারের জন্য তার ছােটোমাসি গল্পটি নতুন মেসাের কাছে নিয়ে যায়। তখন মেসােমশাই গল্পটি সামান্য কারেকশান’ করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এই কথা বিকেলের চায়ের টেবিলে বাড়ির অন্য সদস্যরা জানতে পারলে, তারা তপনের গল্প শুনে হাসে। নতুন মেসাের বক্তব্য : এই ঘটনায় তপনের নতুন মেসাের প্রতিক্রিয়া ছিল প্রায় বিপরীত। তার শশুরবাড়ির লােকেরা যেখানে তপনের লেখা গল্প শুনে হাসাহাসি করেছে, সেখানে তিনি কিন্তু তপনকে গল্প লেখায় উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তপনের বয়সি অন্য ছেলেরা যেখানে প্রথম গল্প লিখতে বসে, হয় রাজারানির গল্প লেখে নতুবা লেখে খুনজখম, অ্যাকসিডেন্টের গল্প অথবা লেখে অনাহারে মৃত্যুর কাহিনি—সেখানে তপন লিখেছে ওর স্কুলে ভরতির দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প। এ থেকেই সমবয়সী আর পাঁচজনের সঙ্গে তপনের লেখকসুলভ দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য ধরা পড়ে। অর্থাৎ এই ঘটনায় ছােটোমেসাের প্রতিক্রিয়া ছিল সংবেদনশীল।
প্রশ্ন : “সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ?”—তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন কোন্টি? ওই সুখের দিনের শেষ পরিণতি কী হয়েছিল?
উত্তর : সবচেয়ে সুখের দিন : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের ছটোমাসি আর ছােটোমেসাে যেদিন সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার একটি সংখ্যা নিয়ে তপনদের বাড়ি এসেছিল, সেদিনটি ছিল তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। কারণ তপন আশা করেছিল মেসাের নিয়ে আসা পত্রিকাটিতে তার জীবনের প্রথম লেখা গল্পটি ছাপা হয়েছে। সেই উত্তেজনায় ওই দিনটি হয়ে উঠেছিল তার কাছে সর্বাপেক্ষা সুখের।
শেষ পরিণতি : তপনের ছােটোমাসি এবং নতুন মেসাে সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে এলে তপনের মনে যে ভীষণ আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু তার শেষ পরিণতি বালক তপনের কাছে হয়ে উঠেছিল অত্যন্ত করুণ। “প্রথম দিন (গল্প) শ্রী তপন কুমার রায়”—এই শিরােনামে সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি মায়ের আদেশে পাঠ করতে গিয়ে তপন দেখেছিল সম্পূর্ণ গল্পটি লেখক মেসাে নতুন করে লিখেছেন। একমাত্র শিরােনাম ছাড়া তাতে তপনের কোনাে অস্তিত্বই নেই।এই ঘটনায় তপন অপমানে, লজ্জায় সকলের আড়ালে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিল। এই গভীর দুঃখের মুহূর্তে সে সংকল্প নিয়েছিল—ভবিষ্যতে কখনােই কারাের সাহায্যে সে গল্প ছাপাতে দেবে না। নিজের অপটু লেখা ছাপা না হলেও কোনােভাবেই যা তার নিজের লেখা নয়, সেই গল্প ছাপার অপমানে অপমানিত হবে না।
***প্রশ্ন : “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”—অলৌকিক ঘটনাটি কী? কার মধ্যে, কেন এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল ? অলৌকিক ঘটনার আনন্দ উদ্দিষ্ট ব্যক্তি উপভােগ করতে পারেনি কেন?
উত্তর : অলৌকিক ঘটনা : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলতে তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে হাজার হাজার ছেলের হাতে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকে বােঝানাে হয়েছে। যার মধ্যে, যে কারণে ভাবনার উদয় : কিশাের তপন লেখক হওয়ার সুপ্ত বাসনা পূরণ করতে গল্প লেখে। তার নতুন মেসােমশাই সেই গল্প পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই থেকে অধীর আগ্রহে গল্প ছাপার অপেক্ষা করে থাকে তপন। কিন্তু বহুদিন কেটে গেলেও গল্পটি প্রকাশিত না হওয়ায়, গল্পটি সম্পর্কে আশা ছেড়ে দেয় সে। ঠিক এরকম সময় একদিন সন্ধ্যাবেলায় মেসােমশাই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার একটি সংখ্যা নিয়ে বাড়িতে এলে তপন ভাবে নিশ্চয়ই তার লেখা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কিন্তু পরমুহূর্তেই তার মনে হয় এ অলৌকিক, অসম্ভব। নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে দেখতে পাওয়ার আনন্দেই তপনের মধ্যে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল।
আনন্দ উপভােগ করতে না পারার কারণ : সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের লেখা গল্পটি ছাপা হলে সকলে তপনের থেকে তপনের মেসাের কৃতিত্বকে বেশি গুরুত্ব দেয়। সবাই বলে মেসো কারেকশান করে না দিলে গল্পটা ছাপার যােগ্য হত না। সন্ধ্যাতারা’র সম্পাদক তপনের গল্প ছুঁয়েও দেখত না। মেসাের অবদানের পাশে তপনের লেখা গদ্য গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। বিষন্ন তপনের নিজের লেখা গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা | মাধ্যমিক বাংলা সাজেসান
প্রশ্ন : “এর প্রত্যেকটি লাইনই তাে নতুন আনকোরা, তপনের অপরিচিত” -এর’ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে -বিষয়টি পরিস্ফুট করাে।
অথবা, এর মধ্যে তপন কোথা?’—এরকম ভাবনার
কারণ কী?
উত্তর : যার কথা বলা হয়েছে : উদ্ধৃত অংশটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে গৃহীত। উক্ত উদ্ধৃতিটিতে এর’ বলতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত তপনের লেখা প্রথম দিন’ গল্পটিকে বােঝানাে হয়েছে।
ব্যাখ্যা : তপনের ছােটোমেসাে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের লেখা গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বেশ কিছুদিন পরে একদিন তপনের ছােটোমাসি আর ছােটোমেসাে সন্ধ্যাতারা পত্রিকার একটি সংখ্যা নিয়ে তপনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। দেখা যায়, সন্ধ্যাতারায় তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছে, সূচিপত্রেও তার নাম রয়েছে। তপন নিজের গল্পকে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হতে দেখার আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়। সারা বাড়ির সকলে তপনের গল্প
পড়ে নানারকম মন্তব্য করে। শেষ অবধি বেশ কিছুক্ষণ পরে তপন বইটা হাতে পায়। মায়ের ধমক খেয়ে নিজের লেখা গল্প জোরে জোরে পড়তে গিয়ে সে হতভম্ব হয়ে যায়। নিজের লেখার সঙ্গে ছাপা গল্পের বিন্দুমাত্র মিল খুঁজে পায় না সে। স্পষ্ট বুঝতে পারে মেসাে তার কাচা হাতের লেখা গল্পটিকে ছাপানাের উপযুক্ত করে তুলতে কারেকশানের নাম করে পুরােটাই নতুন করে লিখে দিয়েছেন। তাই এই গল্পের প্রত্যেকটা লাইনই তার কাছে আনকোরা, নতুন এবং অপরিচিত। এর মধ্যে তপনের নিজস্বতা নেই।
***প্রশ্ন : “তপন আর পড়তে পারে না। বােবার মতাে বসে থাকে।”—তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করাে।
উত্তর : ভূমিকা : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের লেখক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কল্পনাপ্রবণ তপন মনে করত লেখক সাধারণ চেনা মানুষের মতাে কেউ নয়, আকাশ থেকে পড়া কোনাে অদ্ভুত জীব। কিন্তু ছােটো মাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে নতুন মেসাের সঙ্গে আলাপে তপনের সেই ভুল ভাঙে।
কারণ : নতুন মেসােকে দেখে তপনের গল্প লেখার ইচ্ছে হয়। স্কুলে প্রথম ভরতির অভিজ্ঞতা নিয়ে তপন নতুন যে গল্প লেখে, ছােটোমাসি তা নতুন মেসােকে দেখায় এবং মেসাের সৌজন্যে ‘প্রথম দিন’ শিরােনামে সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সেই গল্প মায়ের নির্দেশে সকলের সামনে পড়তে গিয়ে তপন উপলদ্ধি করে তার লেখা গল্পটি কারেকশান করার পরিবর্তে নতুন মেসাে নিজের পাকা হাতের কলমে নতুন করে লিখে দিয়েছেন। যে গল্প তপনের নিজের লেখা নয়, সেই গল্প তার নিজের নামে প্রকাশিত হওয়ার যে অপমান, সেই অপমানে তপন স্তন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হতে দেখে তপনের প্রাথমিকভাবে যে তীব্র আনন্দ হয়েছিল, এই মানসিক আঘাতে তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাকরুদ্ধ তপন আর পড়তে পারে না।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা | মাধ্যমিক বাংলা সাজেসান

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন :
প্রশ্ন : কথাটা শুনে তপনের চোখ’ মার্বেল হয়ে গেল’—কোন কথা শুনে তপনের চোখ’ মার্বেল হয়ে গেল? মার্বেল হয়ে গেল কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? তপনের চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ কথা: তপনের নতুন মেসােমশাই একজন লেখক এবং তার বই নাকি ছাপাও হয়—এই কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।
অর্থ: চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়া অর্থে বিস্ময়ে তপনের চোখ গােল হয়ে যাওয়াকে বােঝানাে হয়েছে।
কারণ : তপনের ধারণা ছিল লেখকরা বােধহয় সাধারণ মানুষের মতাে নন। কিন্তু তপন দেখে তার লেখক মেসাে একেবারে তার বাবা কাকার মতাে সাধারণ মানুষ, বিন্দুমাত্রও পার্থক্য নেই। তাই বিস্ময়ে তার চোখ মার্বেল হয়ে যায়।
প্রশ্ন : “লেখক মানে কোনাে আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, “—কার মধ্যে কখন এই অনুভূতি হয়েছিল?
উত্তর : জ্ঞানচক্ষু’গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের এই অনুভূতি হয়েছিল।
যখন এই অনুভূতি : ছােটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে এসে তপন তার লেখক মেসােমশাইকে সামনাসামনি দেখে। তপন অনুভব করে লেখক বলে তিনি আলাদা নন। একেবারেই সাধারণ। মানুষের মতাে স্বাভাবিকভাবে তিনি দাড়ি কামান, সিগারেট খান, স্নানের সময় স্নান করেন এবং ঘুমের সময় ঘুমােন। লেখক ছােটোমেসােকে কাছ থেকে দেখে তপনের লেখক সম্পর্কে এতদিনের ভুল ধারণা ভেঙে যায়।
প্রশ্ন : ‘মেসাের উপযুক্ত কাজ হবে সেটা’—কার মেসাে ? তার উপযুক্ত কাজটি কী?
উত্তর : যার মেসাে : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের এই উক্তিতে তপনের মেসাের কথা বলা হয়েছে।
উপযুক্ত কাজ : তপনের ছােটোমেসাে একজন লেখক। তার অনেক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে পরিচিতি আছে। নিজের পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে তপনের লেখা গল্পটি যদি তিনি কোনাে পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন তাহলে সেটাই মেসাের উপযুক্ত কাজ হবে।
প্রশ্ন : তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গােনে।—তপন কৃতার্থ হয়েছিল কেন?
উত্তর : কৃতার্থ হওয়ার কারণ : জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপন জীবনে প্রথমবার গল্প লিখলে, তার নতুন লেখক মেসাে গল্পটি পড়ে প্রশংসা করেন এবং বলেন গল্পটি একটু কারেকশান করে দিলেই পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠবে। তপন মেসাের এই গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথায় কৃতার্থ হয়ে যায়। সেইদিন থেকে তার গল্পটি ছাপার অক্ষরে বইয়ের পাতায় দেখার আশায় সে বসে বসে দিন গুনতে শুরু করে।
প্রশ্ন : গায়ে কাটা দিয়ে উঠল তপনের’—তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল কেন?
অথবা, মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল।’—কার মাথার চুল কী কারণে খাড়া হয়ে উঠেছিল?
উত্তর : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত। গায়ে কাটা দেওয়ার কারণ : তপন মামার বাড়ির তিনতলা সিড়িতে বসে একবারে একটা গল্প লিখে ফেলে। গল্পটা লেখার পর মন দিয়ে সে সেটা পড়ে, তখন তার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। সে অনুভব করে তার লেখাটি হুবহু গল্পের মতাে লাগছে। নতুন সৃষ্টির আনন্দে তপনের – গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
প্রশ্ন : “আর উঠতে বসতে ঠাট্টা করছে তাের হবে। হাঁ বাবা তাের হবে।”-ঠাট্টার বিষয়টি কী ছিল?
উত্তর : ঠাট্টার বিষয় : “জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের বাড়ির প্রায় সকলের ঠাট্টাতামাশার লক্ষ্য ছিল নবীন লেখক তপনের গল্প লেখা এবং নতুন মেশোর সেই গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানাের ঘটনাটি। তপনের লেখা গল্প শুনে ছােটোমেসাে গল্পটির প্রশংসা করলে বাড়িতে তপনকে নিয়ে ঠাট্টা করা শুরু হয়। বাড়িতে তার নতুন নামকরণ হয় কবি , সাহিত্যিক, কথাশিল্পী। তবুও এইসব ঠাট্টাকে অগ্রাহ্য করে তপন তার
মধ্যে সাহিত্যচর্চা চালিয়ে যায়।
প্রশ্নঃ ‘যেন নেশায় পেয়েছে।’—কার কথা বলা হয়েছে? তাকে কীসের নেশায় পেয়েছে?
উত্তর : যার কথা : ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের কথা বলা হয়েছে।
যার নেশা : তপন তার লেখক মেসােকে দেখে গল্প লেখার প্রেরণ লাভ করে। প্রথম গল্পটি পড়ে মেসাে প্রশংসা করায় তপন আরও উৎসাহিত হয়ে ওঠে। সে একের পর এক গল্প লিখে হােম টাস্কের খাতা ভরিয়ে ফেলে। বাড়ির লােকেরা সাহিত্যিক, কথাশিল্পী বলে বিদ্রুপ করলেও তপন থামে না। গল্প লেখা তাকে নতুন নেশার মতাে পেয়ে বসে।
প্রশ্ন : পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে!’—তপনের এমন মনে হওয়ার কারণটি লেখাে।
উত্তর : মনে হওয়ার কারণ : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের ছােটোমেসাে হাতে একসংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে এলে নিজের গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশ হওয়ার উল্লাসে তার এমন মনে হয়। তপন প্রথমে মেসাের হাতে সন্ধ্যাতারা দেখে অনুমান করে নিশ্চয়ই তার লেখা গল্প এতে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু পরমুহূর্তে তার মনে সংশয় দেখা দেয়, এত সহজে কী নিজের লেখা গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে? বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলতায় এই ঘটনাকে অলৌকিক, অবিশ্বাস্য বলে মনে হয় তপনের।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – মাধ্যমিক বাংলা | মাধ্যমিক বাংলা সাজেসান
প্রশ্ন : “ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন্ কথাটি কেন) ছড়িয়ে পড়েছিল?
উত্তর : কথা : তপনের লেখা গল্পটা ছাপার আগে তপনের অপটু ; লেখাকে মেসােমশাই অনেকটা কারেকশান’ করে দিয়েছেন—এই কারেকশানের কথাটি ছড়িয়ে পড়েছিল।
কারণ : তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পর বাড়ির সবাই যখন তা নিয়ে কোলাহল শুরু করে, তখনই তপনের মেসােমশ মৃদু হেসে জানান, তিনি তপনের কাঁচা হাতের লেখাকে সামান্য কারেকশান করে দিয়েছেন। তখন সবাই ধারণা করে যে, মেসােমশাই কারেকশান করে দিয়েছেন বলেই গল্পটা ভালাে হয়েছে।
প্রশ্ন : “যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।”—’আহ্লাদ” হবার কথা ছিল কেন? ‘আহ্লাদ খুঁজে ‘না পাওয়ার কারণ কী?
উত্তর : যে কারণে আহাদ হওয়ার কথা : ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের লেখা প্রথম গল্প ‘প্রথম দিন প্রকাশিত হলে, তার আহ্লাদ হওয়ার কথা ছিল আহ্লাদ না হওয়ার কারণ : তপনের জীবনের প্রথম গল্প সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বাড়ির সদস্যরা সকলে তপনের গল্পকে নয়, বরং মেসাের কৃতিত্বকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা তপনকে ঠাট্টাতামাশা এবং ব্যঙ্গ বিদ্রুপে ভরিয়ে দেয়। তাই তপনের গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হলে যে আহ্লাদটা হওয়ার কথা ছিল তা হয় না।
প্রশ্ন : ‘ নিজের পাকা হাতের কলমে!’-কার পাকা হাত? পাকা হাতের কলমে’ তিনি কী করেছিলেন?
উত্তর : উদ্দিষ্ট:তপনের সদ্যবিবাহিত ছােটোমাসির বর, যিনি প্রফেসার ও লেখক, তার পাকা অর্থাৎ দক্ষ হাতের কথা আলােচ্য অংশে বলা হয়েছে।
যা করেছিলেন : তপন তার লেখক ছােটোমেসােকে দেখে, লেখক হওয়ার সুপ্ত বাসনা থেকেই লিখে ফেলে একটি সম্পূর্ণ গল্প। তপনের কাঁচা হাতের লেখা গল্প পড়ে মেসাে গল্পটি ছেপে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ছাপানাের আগে কাঁচা হাতের লেখা গল্পটিকে কারেকশান’ করে তিনি নিজের পাকা হাতের কলমে’ অর্থাৎ সুদক্ষ লিখনকৌশলে সম্পূর্ণ গল্পটি নতুন করে লিখেছিলেন।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
প্রশ্ন : বিয়ে হয়ে গেল দেদার ঘটাপটা করে।”—কার ঘটাপটা সহকারে বিয়ে হয়েছিল ?
উঃ তপনের ছােটোমাসির ঘটাপটা সহকারে বিয়ে হয়েছিল।
প্র: জানচক্ষু’ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর : জ্ঞানচক্ষু’কথাটির অর্থ হল অন্তর্দৃষ্টি বা চেতনার জাগরণ হওয়া। জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ ঘটেছিল।
প্রঃ “তাই, জানতাে না।”—কে, কী জানত না ?
উত্তর : জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রধান চরিত্র তপন জানত না যে, লেখকরা জলজ্যান্ত মানুষের মতােই হয়। বিয়েবাড়িতে ছােটোমাসির লেখক বরকে দেখে তার সেই ভ্রান্তি দূর হয়।
প্রঃ “তবে তপনেরই ৰা লেখক হতে বাধা কী?”—তপনের এরকম মনে হওয়ার কারণ কী ?
উত্তর : তপনের লেখক মেসােকে দেখে মনে হয় লেখকরা কোনাে আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, তারা সবাই তপনদের মতােই মানুষ, তাই তপনের লেখক হতে কোনাে বাধা নেই বলে মনে হয়েছে।
প্রঃ কাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় ?
উত্তর : মামার বাড়িতে সদ্য বিয়ে হওয়া লেখক নতুন মেসােকে বাবা-মামা বা কাকুর মতােই সব কাজ করতে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
প্র: “ছােটোমাসি সেই দিকেই ধাবিত হয়।”—কোন্ দিকে?
উত্তর : তপনের ছােটোমেসাে গ্রীষ্মের ছুটিতে দুপুরবেলা দিবানিদ্রা যাচ্ছিলেন, এমন সময় তপনের ছােটোমাসি তপনের লেখা প্রথম গল্পটি মেসােকে দেখানাের উদ্দেশ্যে ঘুমন্ত মেসাের দিকে ধাবিত হন।
প্রঃ “কিন্তু কে শােনে তার কথা ?”—কোন্ কথার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : তপনের প্রথম লেখা গল্প নিয়ে ছােটোমাসি মেসাের কাছে যাচ্ছিল, তপন এই ব্যাপারেই আপত্তি তােলে। এই আপত্তির কথাই এখানে বলা হয়েছে।
প্রঃ “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”—কথাটির সরল অর্থ কী?
উত্তর : যে জহরতের ব্যাবসা করে সে যেমন আসল রত্ন চেনে তেমনই একজন লেখক তথা জ্ঞানী ব্যক্তিই গল্প সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন।
প্রঃ “একটু কারেকশান’ করে ইয়ে করে দিলে ছাপাতে দেওয়া চলে।”—কে, কী ছাপানাের কথা বলেছেন?
উত্তর : তপনের মেসােমশাই, তপনের লেখা গল্প ‘একটু কারেকশান করে’ ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।
প্রঃ “মেসাে তেমনি করুণার মূর্তিতে বলেন।”—মেসাে কী বলেছিলেন?
উত্তর : সাহিত্য পত্রিকা ‘সন্ধ্যাতারা’-র সম্পাদকের সঙ্গে নতুন মেসাের সুসম্পর্ক থাকায় তিনি তপনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার।‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিকালে চায়ের টেবিলে এই গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথা ওঠে।
প্রশ্ন : তপনের গল্প পড়ে ছােটোমাসি কী বলেছিল?
উত্তর : প্রশংসার সুরে তপনের গল্প যে বেশ ভালাে হয়েছে, তা জানিয়ে সন্দেহের সুরে মজা করে ছােটোমাসি জানতে চায় এ গল্প তপন নিজে লিখেছে নাকি কোনােখান থেকে টুকলিফাই করেছে।
You must be logged in to post a comment.