
বাংলা সংলাপ রচনা | মাধ্যমিক বাংলা
প্লাসটিকের ব্যবহার (এই নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ):
অমর: দেখেছিস, প্রায় ৮ বছর হয়ে গেল আমাদের রাজ্যে পাতলা প্লাসটিক বা ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ হয়েছে। অথচ এখনও বাজারে প্লাসটিক প্যাকেটের ব্যবহার রমরমিয়ে চলছে।
প্রদীপ: তা ঠিক, তবে বড়াে বড়াে মলে বা দোকানে অবশ্য মােটা প্লাসটিকের প্যাকেট কিনে দিতে হয়। সংখ্যায় খুব কম হলেও আজকাল অনেকেই সচেতনভাবে প্লাসটিকের ব্যাগ নেন না।
অমর: ‘মল’ এ ক-জন যায় বলতাে! ফুটপাতের দোকান, পাড়ার ছােটোখাটো প্রয়ােজনীয় জিনিসের দোকানে পাতলা প্লাসটিক ব্যবহার করছে। এইরকম কোটি কোটি প্লাসটিক ব্যাগ প্রতিদিন আমরা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছি। জলে ফেলছি। অথচ প্লাস্টিক ব্যবহার বেআইনি তা আমরা সবাই জানি।
প্রদীপ: জানলে কী হবে। আমরা দোকানে জিনিস কিনেই বলি, ‘দাদা একটা প্লাসটিক থাকলে দিন না!’ কেন? নিজেরা একটা ব্যাগ সঙ্গে রাখতে বাধাটা কোথায় ?
অমর: ক্ষতি কিছুই নেই, আমরা কি চটের থলি নিয়ে বাজারে যাব?
প্রদীপ: ঠিক তা নয়, এখন তাে খবরের কাগজেরও ব্যাগ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে তাে যেতে পারি।
অমর: হয়তাে, আসলে কী বলতাে, “প্লাসটিক বর্জন করুন বলে দিলে চলে না। সবাইকে এর বিপদটা বােঝাতে হবে। ব্যাপক প্রচার দরকার।
প্রদীপ: স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে এই প্রচারের কাজটা শুরু করতে হবে।
অমর: খবরের কাগজে দেখলাম, কলকাতার একটি স্কুলে এই নিয়ে একটা সেমিনার হয়েছে। সেখানে ছাত্রীরা প্লাস্টিক বর্জন নিয়ে নাটক করেছে।
প্রদীপ: আরও একটা কথা। প্লাস্টিকের ব্যবহার দেখলেই সামনে গিয়েই বলতে হবে। কারণ ছােটো ছােটো দোকানিরা অনেকেই হয়তাে বিষয়টির খবর রাখে না।
অমর: সরাসরি বললে কেউ রাগ করে, উলটে কিছু বলে।
প্রদীপ: হাল ছাড়লে হবে না। চেষ্টা করে দেখতে দোষ কী?
অমর: তা ঠিক, চেষ্টাতেই অনেক কিছু হয়।
বাংলা সংলাপ রচনা
আরও দেখুন : বাংলা প্রতিবেদন রচনা সাজেসান
পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা (দুই বন্ধুর সংলাপ)
সুমন: ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কোথায় গিয়েছিলি স্বরূপ? বেড়াতে?
স্বরূপ: না রে, বেড়াতে নয়, ডাক্তারখানায়। ক-দিন ধরে ভাই কানে ভালাে শুনতে পাচ্ছে না।
সুমন: কানের দোষ কি বলতাে। দিনরাত কানের উপর শব্দের যে অত্যাচার চলছে। আমরা এই শব্দদূষণ কিছুতেই বন্ধ করতে পারছি
স্বরূপ : শুধু শব্দদূষণের কথাই বা বলি কেন। গােটা পরিবেশটাই দূষিত হয়ে উঠছে।
সুমন : ঠিকই, জলদূষণ, ভূমিদূষণ, বায়ুদূষণ, সর্বত্রই তাে দূষণ।
স্বরূপ : এভাবে আমাদের পরিবেশ যে নানা দূষণে দূষিত হয়ে উঠছে। তাকে রক্ষা করার চিন্তা আমরা সবাই না করলে ক্ষতি তাে সকলের।
সুমন : শব্দদূষণ কলকাতা এবং গ্রামাঞ্চলে সমানভাবে হয়ে চলেছে, কলকারখানার ধোঁয়া গ্রামে না থাকলেও যেখানে সেখানে গজিয়ে ওঠা ইট তৈরির মিলগুলােতে ধোঁয়া, আর কীটনাশকের ব্যবহার ভূমি এবং জল দুটোই দূষিত করছে।
স্বরূপ : মানুষ নিজেই তাে ওর জন্য অনেকটা দায়ী।
সুমন : একেবারে খাঁটি কথা, একদিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অভাবনীয় উন্নতি করে চলেছে, আর একদিক থেকে ডেকে আনছে নিজেদের সর্বনাশ।
স্বরূপ : দূষণরােধের ক্ষেত্রে গাছপালার একটা বড়াে ভূমিকা আছে। কিন্তু আজ আমরা গাছপালা কেটে ফাকা করে দিচ্ছি, নতুন করে লাগাবার চিন্তা মাথায় আনছি না।
সুমন : গাছপালা পরিবেশ রক্ষায় বড়াে ভূমিকা গ্রহণ করে। পরিবেশ সচেতন করার জন্য পরিবেশবিদ্যা বিদ্যালয়ে পাঠ্য হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে পরিবেশ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
স্বরূপ : কিন্তু শুধু আলােচনা বা পাঠ্যস্তরে রেখে দিলে চলবে না, চাই পরিবেশ ও পরিবেশদূষণ সম্পর্কে যথার্থ চেতনা, পরিবেশকে রক্ষা করার আন্তরিক উদ্যোগ।

ছাত্র-শিক্ষকের আদর্শ সম্পর্ক (এই বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ)
শােভনঃ সুমন, তুই মাষ্টারপাড়ার পলাশস্যারের কাছে ভূগােল পড়তে যাস না?
সুমনঃ যেতাম, তবে এখন আর যাই না।
শােভনঃ পলাশস্যার কোন্ স্কুলে পড়ান রে?
সুমনঃ মানিকচক শিক্ষা নিকেতন ।
শােভনঃ তা ওনার কাছে টিউশন ছেড়ে দিলি কেন?
সুমনঃ স্যারের ব্যবহার খুব খারাপই লাগে। জানিস, ওনার কোনাে কিছুই শিক্ষকসুলভ নয়।
শােভনঃ খুব সত্যি কথা। জানিস, আমাদের স্কুলেও জীবনবিজ্ঞানের স্যার ছাত্রদের ঠিক পছন্দের নয়। বড়াে বেশি কথা বলে, নিজের বিদ্যের বহরের বড়াই করে। আমাদের সাথে ব্যবহারে আন্তরিকতাও নেই।
সুমনঃ শিক্ষক এবং ছাত্রের মধ্যে আদর্শ সম্পর্ক গড়ে না উঠলে মােটেই ভালাে লাগে না। একজন শিক্ষকের
আচরণ বন্ধুর মতাে, প্রয়ােজনে অভিভাবকের মতাে হবে, সব ছাত্রছাত্রীই তাে তাই চায়।
শােভনঃ ঠিক বলেছিস। পােশাক-পরিচ্ছদ থেকে শান্ত-সৌম্য ভাব, সংযত আচার-আচরণ – এটাই তাে আমাদের কাম্য।
You must be logged in to post a comment.