মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান | Madhyamik Life Science|rlearn

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেশন | Madhyamik Life Science Suggestions 2022 |Rlearn Education

বংশগতি অধ্যায় এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর | Class Ten Life Science |দশম শ্রেণীর তৃতীয় অধ্যায় এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর ।

প্রঃ প্রকরণ কাকে বলে ? এর কারণ কী ?
উত্তর : যৌন জননের সময় জিনের পরিবর্তনে বা পরিবেশের প্রভাবে একই প্রজাতির জীবের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা যায় তাকে প্রকরণ বলে । কারণ :জিনগত পরিবর্তন প্রকরণের কারণ।

প্রঃ প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ : দু’টি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে যে বৈশিষ্ট্যটি F , জনুতে বা প্রথম অপত্য বংশে প্রকাশ পায় তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য বলে । অন্যদিকে , যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পায় না বা সুপ্ত অবস্থায় থাকে তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে ।

প্রঃ অসম্পূর্ণ প্রকটতা কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তর : বিপরীত বৈশিষ্ট্যযুক্ত দু’টি জীবের সংকরায়ণে প্রকট জিনটি সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ না পাওয়ায় জীবের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যবর্তী একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় । এই ঘটনাকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে ।

উদাহরণ – সন্ধ্যামালতী উদ্ভিদে লাল ও সাদা ফুলযুক্ত গাছের মিলনে প্রথম জনুতে সমস্ত ( গোলাপি ) ফুল উৎপন্ন হয় । এটি অসম্পূর্ণ প্রকটতার উদাহরণ ।

প্রঃ অ্যালিল কাকে বলে ?
উত্তরঃ : সমসংস্থ ক্রোমোজোমের কোনো একটি বিন্দুতে উপস্থিত বিপরীতধর্মী জিন জোড়াকে অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ বলে ।

প্রঃ ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ কাকে বলে ?
উত্তরঃ : কোনো জীবের বৈশিষ্ট্যাবলির বাহ্যিক প্রকাশকে ওই জীবের ফিনোটাইপ বলে এবং জিন সংযুক্তির দ্বারা নির্ধারিত বৈশিষ্ট্যকে তার জিনোটাইপ বলে ।

প্রঃ মেন্ডেল তার পরীক্ষার জন্য মটর গাছ কেন বেছে নেন ?
উত্তর : মটর গাছ নির্বাচনের কারণ : মটর গাছ সহজে কম স্থানে প্রতিপালন করা হয় । ও মটর গাছ স্বপ্রজননক্ষম এবং বিশুদ্ধ । অল্প সময়ে প্রচুর অপত্য উৎপন্ন হয় । মটর গাছে সহজে সংকরায়ণ ঘটানো যায়।

প্রঃ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কোনো শিশুর দেহে কী কী লক্ষণ প্রকাশিত হয় ? সেই ক্ষেত্রে জেনেটিক কাউন্সেলিং – এর সময় কী পরামর্শ দেওয়া হয় ?
উত্তর : লক্ষণ : ১ ) হিমোগ্লোবিন উৎপাদন কমে যাওয়া ২ ) রক্তাল্পতা রোগ দেখা দেয় । ৩ ) লোহিত রক্ত কণিকার আকার ছোটো হওয়া ৪ ) দেহে লোহা জমে যাওয়া ইত্যাদি ।

জেনেটিক কাউন্সেলিং – এর পরামর্শ : ১ ) দুই পরিবারেই ( পাত্র – পাত্রী ) রক্ত পরীক্ষা করা উচিত । ২ ) সন্তান না নেওয়া যদি পূর্বেই বিয়ে হয়ে যায় । ৩ ) দুই পরিবারে রক্ত পরীক্ষায় থ্যালাসেমিয়া আছে জানতে পারলে বিবাহ বন্ধন না করা ।

প্রশ্ন : থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর গুরুত্ব লেখাে ।
উত্তরঃ থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করে নিলে তাদের মাঝে থ্যালাসেমিয়া রয়েছে কি-না তা জানা যাবে। পাত্র-পাত্রীর যদি উভয়ের থ্যালাসেমিয়া থাকে তাহলে তাদের মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যৎ সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হবে।এজন্য বিবাহের পূর্বে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রঃ মানুষের দেহকোশে অটোজোমের সংখ্যা কত ?
উত্তর:- 22 জোড়া বা 44 টি।

প্রঃ কী কারণে মেন্ডেল মটর গাছকে তাঁর পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করেছিলেন ?
উঃ মটর গাছে নিম্নলিখিত নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলি থাকায় মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছকে নমুনা হিসেবে  ব্যবহার করেছিলেন ।
১. মটর গাছ দ্রুত বংশবিস্তারে সক্ষম, তাই অল্প সময়ের মধ্যে বংশানুক্রম কয়েকপুরুষ ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব ।
২. মটর ফুল উভলিঙ্গ হওয়ায় মটর গাছে স্ব-পরাগযোগ ঘটানো সম্ভব ।
৩. মটর গাছ স্ব-পরাগী হওয়ায় বাইরে থেকে আসা অন্য কোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ।
৪. মটর গাছের মধ্যে অনেক রকমের বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটতে দেখা যায়, অর্থাৎ মটর গাছের মধ্যে বহু প্রকার দেখা যায় ।
৫. মটর গাছ বংশপরম্পরায় নির্দিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাঁটি অপত্য গাছ উত্পাদনে সক্ষম ।
৬. সংকর গাছগুলি জননক্ষম হওয়ায় নিয়মিতভাবে বংশবৃদ্ধি করতে পারে ।

প্রশ্ন :মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র দুটি লেখো।

উত্তর :মেন্ডেল বংশগতির দুটি সূত্র প্রবর্তন করেন । প্রথম সূত্রটি একসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত এবং দ্বিতীয় সূত্রটি দ্বিসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত ।

মেন্ডেলের প্রথম সূত্র [First Law of Mendel]:- মেন্ডেলের প্রথম সূত্রটি ‘পৃথকীভবনের সূত্র [Law of Segregation] নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী “কোনও জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য একটি জনু [জনিতৃ] থেকে আর একটি জনুতে [অপত্য] সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও এরা [বৈশিষ্ট্যগুলি বা অ্যালিলগুলি] কখনও মিশ্রিত হয় না, বরং গ্যামেট গঠনকালে বিপরীতধর্মী অ্যালিল দুটি পরস্পর পৃথক হয়ে যায় ।”

মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্র [Second Law of Mendel]:- মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্রটি ‘স্বাধীন বন্টনের সূত্র’ [Law of Independence Assortment] নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী “কোনও জীবের দুই বা ততোধিক যুগ্ম বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য জনিতৃ হ’তে অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও শুধুমাত্র গ্যামেট গঠনকালে যে এরা পরস্পর পৃথক হয় তাই নয়, উপরন্তু প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্য স্বাধীনভাবে যে-কোনও বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্ভাব্য সমস্ত ধরনের সমন্বয়ে সঞ্চারিত হয় ।”