মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন রচনা

মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন রচনা | বাংলা প্রতিবেদন রচনা

Check point : 1. মােবাইল ফোন কানে রাস্তা পার হওয়া বিপজ্জনক ➪ 2. মােবাইল ফোনের ব্যবহার বিষয়ক সেমিনার ➪ 3. বিদ্যালয়ে বৃক্ষরােপণ উৎসব পালন ➪ 4. জল অপচয় নয়, জল সঞ্চয় ➪ 5. প্লাস্টিক বর্জন আমাদেরকেই বাঁচাবে।

‘প্রতিবেদন’ শব্দের অর্থ হল বিবরণী বা রিপাের্ট। সাধারণত সংবাদপত্রে খবররূপে প্রকাশের উদ্দেশ্যে কোনাে বিষয়কে যেভাবে উপস্থাপন করা হয় বা তুলে ধরা হয়, তাকেই প্রতিবেদন বলা হয়ে থাকে। যিনি এই প্রতিবেদন রচনা করেন, তাকে বলা হয় প্রতিবেদক।সংবাদপত্রে প্রকাশের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্যান্য কারণেও প্রতিবেদন রচিত হতে পারে।

পরীক্ষার উত্তরপত্রে প্রতিবেদন রচনা পর্ষদনির্দেশিত শব্দসীমার (কমবেশি ১৫০ শব্দ) মধ্যে রাখা আবশ্যিক। নিম্নে কয়েকটি প্রতিবেদন রচনার উদাহরণ দেওয়া হলো ➪

মােবাইল ফোন কানে রাস্তা পার হওয়া বিপজ্জনক

নিজস্ব সংবাদদাতা: হাওড়া, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২মােবাইল ফোন ক্রমশই আধুনিক মানুষের জীবনযাত্রার এক অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ফোন কোম্পানির নামমাত্র মূল্যে নানাবিধ সুযােগসুবিধা প্রদান, হ্যান্ডসেটের দাম কমে যাওয়া—এই সমস্ত কারণে গরিবধনী নির্বিশেষে এখন সবার হাতে মুঠোফোন। কেবল কথা বলা বা শােনা নয়, ইনটারনেটের মাধ্যমে ফেসবুক, হােয়াটসঅ্যাপের মতাে নানাবিধ সােশ্যাল মিডিয়ার নেশাতেও মজেছে আপামর বাঙালি। আর এই নেশা প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে যখন তখন। আজ দুপুরে মঙ্গলা হাটের উত্তর মােড়ে এরকমই একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। মােবাইলের হেডফোন কানে দিয়ে সিগন্যাল না দেখে রাস্তা পার হওয়ার সময় ৮০ বি রুটের বাসে চাপা পড়ে এক তরুণী।‌ যুবতীকে কাছেই একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সুত্রে জানা গিয়েছে তার নাম, মনিকা সিং, বাড়ি আনন্দপুরে। তাঁর অবস্থা যথেষ্ট সংকটজনক। ঘটনায় উত্তেজিত জনতা বাসটিতে ভাঙচুর চালায় এবং এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। হাওড়া পুলিশের ডি সি (ট্রাফিক) বি সান্যাল জানিয়েছেন যে, পথ নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও মানুষের সচেতনতার অভাবেই এইসব বিপদ ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

মােবাইল ফোনের ব্যবহার বিষয়ক সেমিনার

নিজস্ব সংবাদদাতা : এনায়েতপুর,১১ ফেব্রুয়ারি ,২০২২—গত ১০ ফেব্রুয়ারি এনায়েতপুর ই.এ. হাইস্কুলে ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকদের‌ উপস্থিতিতে একটি মনােজ্ঞ সেমিনার অনুষ্ঠিত হল। বিষয় ছিল বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মােবাইল ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি ও তার ফলে উদ্ভূত ক্ষতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি। স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বিষয়টি সম্পূর্ণভবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মােবাইল ব্যবহারের‌ একটা প্রতিযােগিতা চলছে যেন। স্কুল টাইমের ক্লাসের মধ্যে বসে বসে মােবাইলে গেম খেলার ফলে গােটা ক্লাসটাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নীচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও এর একটা ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের এই মােবাইল ফোনের অপব্যবহার তাদের আগামী দিনে চরম বিপদের মুখে ফেলে দেবে—এ কথা জানিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষয় মহাশয় বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করার দায়িত্ব অর্পণ করেন।

বিদ্যালয়ে বৃক্ষরােপণ উৎসব পালন

নিজস্ব সংবাদদাতা: আসানসােল, ২২ জুন ‘২০২১-পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসােলের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের আর পাঁচটি শহরের মতাে নয়। এখানকার কলকারখানায় নানারকম শিল্পসামগ্রী‌ তৈরি হয়।তাইকয়লাখনি, কারখানা ও সহযােগী শিল্পের বিস্তারের কারণে এই অঞলে গাছপালার পরিমাণ কম। সর্বত্রই ধুলাে ধোঁয়া আর কংক্রিটের জঙ্গলের ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা চূড়ান্ত পরিমাণের। পরিবেশের এই রুক্ষদশা ফেরাতে এবং সবুজায়নের লক্ষ্যে গত ২০জুন বিএম হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বেশ কয়েকটি গাছ লাগিয়ে দু-দিনব্যাপী বৃক্ষরােপণ উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। উপস্থিত ছাত্রদের কাছে প্রধানশিক্ষক মহাশয় বৃক্ষরােপণ উৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। মিশনের ছাত্ররা উপনিষদের শ্লোক দিয়ে বৃক্ষ বন্দনা করে। এইভাবে বৃক্ষরােপণ উৎসবের সূচনা ঘটিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, আগামীকাল জিটি রােড সংলগ্ন এলাকাজুড়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কয়েক হাজার চারাগাছ লাগানাে হবে।

মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন রচনা

জল অপচয় নয়, জল সঞ্চয়

নিজস্ব সংবাদদাতা: মানিকচক, মালদা ২৬ জুন ২০২১—পৃথিবীর তিনভাগ জল এবং থলভূমি মাত্র একভাগ। শুনলে মনে হয় এত জল কী হবে ! তবে এটা খুব আশ্চর্যের কথা যে আরও কয়েক দশক পর পৃথিবীব্যাপী মানুষের ব্যবহার্য জলের আকাল ঘটতে বাধ্য। মূল কারণ হল জলের অপচয়। এই অপচয় বন্ধ করতে না পারলে মানুষ তথা মনুষ্যেতর জীবকুলের কপালে অশেষ কষ্ট আছে। তাই বিগত ২৫ তারিখে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে মানিকচক কমিউনিটি হলে ‘জল অপচয় নয়, জল সঞ্চয়’ এই মর্মে একটা আলােচনাসভার আয়ােজন হয়েছিল। বহু বিশিষ্টজন এবং এলাকার বিধায়ক উক্ত সভায় উপস্থিত হয়ে নাগরিকবৃন্দের এই শুভ উদ্যোগকে উৎসাহিত করেন। পথেঘাটে এবং গৃহস্থ বাড়িতে যতটুকু জল প্রয়ােজন তার থেকে তিন গুণ বেশি খরচ করে অপচয় করছি আমরা নিত্যদিন। এজন্য সরকারের তরফ থেকে ‘জল ধরাে, জল ভরাে’ স্লোগানের প্রচার চলছে প্রায় সারা বছর ধরে। বৃষ্টির জল ধরে রেখে প্রয়ােজনে লাগানাে এবং পুষ্করিণী খনন করে জলপূর্ণ করে রাখার অভ্যাস আমাদের গড়ে না উঠলে ক্ষতি আমাদেরই। ভূগর্ভস্থ জলস্তর প্রতিবছর নেমে যাচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে একসময় এই জলসংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

প্লাস্টিক বর্জন আমাদেরকেই বাঁচাবে

মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন রচনা
প্লাস্টিক বর্জ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা ৫ জানুয়ারি ২০২২—প্লাস্টিক দূষণ বর্তমানে একটি বড়াে সমস্যা। এই প্লাস্টিক বর্জন করতে না পারলে উত্তরােত্তর সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করবে। প্রশাসনের তরফ থেকে মানুষকে সচেতনভাবে প্লাস্টিক বর্জন করতে বলা হচ্ছে, তবু তাতে বিশেষ ফল হচ্ছে না। কলকাতা বা শহরতলির ড্রেনগুলােতে প্লাস্টিক পড়ে পড়ে জমা হওয়ার ফলে জলনিকাশি ব্যবস্থা প্রায়শই বন্ধ হয়ে যায়। পথঘাট প্লাস্টিকের জঞ্জালে ভরতি হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে কোনাে কোনাে বাজার এলাকায় দোকানিরা প্লাস্টিক ছাড়াই মালপত্র দিতে থাকে, তবে সেই ব্যবস্থা বেশিদিন বলবৎ থাকে না, দেখা যায় পক্ষকাল বা মাসখানেক পরে আবার প্লাস্টিকে মাল সরবরাহ শুরু হয়ে যায়। কলকাতার বেশ কিছু এলাকার জনগণ মিলিতভাবে এই প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জনের লক্ষ্যে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁরা মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত ও সার্বিক প্রচার করে তা তাঁরা প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষকে দেখাবার ব্যবস্থা করেছে। এই প্রচার অভিযানে সাধারণ মানুষকেও শামিল করেছেন। তারা এই উদ্যোগে সকলকে শামিল হতে আহ্বান জানিয়ে ” প্লাস্টিক হঠাও, জীবন বাঁচাও” স্লোগান তুলেছে।