জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ

মাধ্যমিক ভূগোল : জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ

চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণে সমুদ্রের জলরাশির এই নিয়মিত ফুলে ওঠা বা জলস্ফীতিকে জোয়ার (High Tide) এবং সমুদ্রের জলরাশির এই নিয়মিত নেমে যাওয়া বা সমুদ্রজলের অবনমনকে ভাটা (Low Tide) বলে ।

জোয়ারভাটা সৃষ্টির মুখ্য দুটি কারণ হল—

চন্দ্র ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তি :

জোয়ারভাটা সৃষ্টির মূল কারণ হল পৃথিবীর উপর চন্দ্র ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব| চন্দ্ৰ অপেক্ষা সূর্যের ভর 255 লক্ষ গুণ বেশি হওয়া সত্ত্বেও অধিক দূরত্বের কারণে পৃথিবীর উপর চন্দ্রের আকর্ষণ মান 2.2 গুণ বেশি হয় |তাই মূলত চন্দ্রের আকর্ষণেই সমুদ্রের জল স্ফীত হয়ে জোয়ারের সৃষ্টি করে। তবে সূর্যের আকর্ষণে জোয়ার সৃষ্টি হলেও তা তেমন প্রবল আকার নেয় না |কিন্তু পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করলে জোয়ারের প্রাবল্য অনেক গুণে বৃদ্ধি পায় |

পৃথিবীর আবর্তনজনিত বিকর্ষণ শক্তি:

পৃথিবী নিজ অক্ষের চতুর্দিকে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ক্রমাগত আবর্তন করতে থাকায় পৃথিবীতে কেন্দ্রমুখী শক্তির পাশাপাশি কেন্দ্ৰবহির্মুখী শক্তিও উৎপন্ন হয়। এই কেন্দ্রবহির্মুখী বলের প্রভাবে পৃথিবী বিভিন্ন সাগর, মহাসাগরের জলরাশি সেই স্থান থেকে বাইরের দিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে জোয়ারের সৃষ্টি করে।

ভাটার কারণ:

একই সময়ে পৃথিবীর দুটি স্থানে মুখ্য ও গৌণ জোয়ার হয়। উভয় জোয়ারে অতিরিক্ত জল আসে পার্শ্ববর্তী সমুদ্রাঞ্চল থেকে। ফলে সেখানে জল কমে। জোয়ারের দুটি সমকোণ স্থান, যেখান থেকে জল সরে যায়, সেই স্থানে ভাটা সংঘটিত হয়। তাই একই সময়ে সমগ্র পৃথিবীর দুটি অংশে জোয়ার এবং দুটি অংশে ভাটা হয়।