মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন/দশম শ্রেণির ভূগােল

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2022
বিকল্পগুলির থেকে সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখাে :

১.১ শুষ্ক অঞলে গিরিখাতকে বলা হয় –

(ক) ক্যানিয়ন (খ) V আকৃতির উপত্যকা (গ) মন্থকূপ (ঘ) ধান্দ

উঃ শুষ্ক অঞলে গিরিখাতকে বলা হয় – (ক) ক্যানিয়ন।

১.২ পাখির পায়ের মতাে আকৃতির বদ্বীপ গঠিত হয়েছে।

(ক) নীলনদের মােহনায় (খ) হােয়াংহের মােহনায় (গ) সিন্ধুনদের মােহনায় (ঘ) মিসিসিপি-মিসৌরীর মােহনায়

উঃ পাখীর পায়ের মতাে আকৃতিক বদ্বীপ গঠিত হয়েছে – (ঘ) মিসিসিপি-মিসৌরীর মােহনায়।

১.৩. উল্কাপিণ্ড পুড়ে ছাই হয় নিম্নলিখিত স্তরে –

(ক) আয়নােস্ফিয়ার (খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (গ) মেসােস্ফিয়ার (ঘ) এক্সোস্ফিয়ার

উঃ উল্কাপিণ্ড পুড়ে ছাই হয় নিম্নলিখিত স্তরে – (গ) মেসােস্ফিয়ার।

১.৪ নিম্নলিখিত রাজ্য ভেঙ্গে তেলেঙ্গানা রাজ্যের সৃষ্টি হয় –(ক) মধ্যপ্রদেশ (খ) অন্ধ্রপ্রদেশ (গ) বিহার (ঘ) উত্তরপ্রদেশ

উঃ নিম্নলিখিত রাজ্য ভেঙে তেলেঙ্গানা রাজ্যের সৃষ্টি হয় – (খ) অপ্রদেশ।

১.৫ শিবালিক হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে –

(ক) খাদার (খ) ভাঙ্গার (গ) ভাবর (ঘ) বেট

উঃ শিবালিক হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ড সঞ্জিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে –

(গ) ‘ভাবর।

১.৬ ভারতে একটি লবণাক্ত হ্রদের উদাহরণ হলাে –

(ক) প্যাংগং হ্রদ (খ) ভীমতাল (গ) ডাল হ্রদ (ঘ) লােক্টাক হ্রদ।

উঃ ভারতে একটি লবণাক্ত হ্রদের উদাহরণ হলাে – (ক) প্যাংগং হ্রদ।

১.৭ ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা যায় নিম্নলিখিত অঞ্চলে –

(ক) গাঙ্গেয় সমভূমি (খ) পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে (গ) সুন্দরবন (ঘ) মরু অঞ্চল

উঃ ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা যায় নিম্নলিখিত অঙ্কুলে – (খ) পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে।।

১.৮ গম হলাে একটি-(ক) রবি শস্য (খ) খারিফ শস্য (গ) জায়িদ শস্য (ঘ) পানীয় ফসল

উঃ গম হলাে একটি – (ক) রবি শস্য।
নিম্নলিখিত বাক্যগুলি শুদ্ধ হলে পাশে শু’ এবং অশুদ্ধ হলে পাশে ‘অ’ লেখাে।

১. জলপ্রপাতের পাদদেশে মন্থকূপের সৃষ্টি হয়।

উঃ জলপ্রপাতের পাদদেশে মন্থকূপের সৃষ্টি হয়। – ‘অ’।

২.বিহার ও ছত্তিশগড় রাজ্যে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভূমি দেখা যায়।

উঃ বিহার ও ছত্তিশগড় রাজো ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভূমি দেখা যায়। – ‘অ

৩.পেট্রোরসায়ন শিল্পকে আধুনিক শিল্পদানব’ আখ্যা দেওয়া হয়।

উঃ পেট্রোরসায়ন শিল্পকে আধুনিক শিল্পদানব’ আখ্যা দেওয়া হয়। – শু
উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করে :

1.–নদীর নাম অনুসারে নদীতে সৃষ্ট বাক মিয়েন্ডার” নামে পরিচিত।

Ans:মিয়েড্রেস নদীর নাম অনুসারে নদীতে সৃষ্ট বাঁক মিয়ােন্ডার’ নামে পরিচিত।

2.হিমবাহ পৃষ্ঠে আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটলগুলিকে–বলে।

Ans: হিমবাহ পৃষ্ঠে আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটলগুলিকে ক্রেভাস বলে।

3.২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমসুমারি অনুসারে ভারতে স্বাক্ষরতার হার –

Ans:২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমসুমারি অনুসারে ভারতে স্বাক্ষরতার হার 74.04(৭৪.০৪) শতাংশ।
একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও :

1.বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে জেট বিমান যাতায়াত করে?উঃ বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে জেট বিমান যাতায়াত করে।

2.দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম কী ?

উঃ দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম গােদাবরী নদী।

3.ভারতের কোন অরণ্যে সিংহ পাওয়া যায়?

উঃ ভারতের গির অরণ্যে সিংহ পাওয়া যায়।

4.ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যৌথ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার নাম লেখাে।

উঃ ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যৌথ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার নাম হল দামােদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা DVC।
প্রশ্ন :হিমশৈল কী? অথবা হিমশৈলের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ হিমশৈল :মহাদেশীয় হিমবাহের হিমরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ হওয়ায় বরফের স্তূপ জলে এসে পড়ে।মেরু অঞ্চলে সমুদ্রের জলে ভাসমান ও গতিশীল বিশালাকার বরফের স্তৃপকে হিমশৈল বলে।

বৈশিষ্ট্য :a) ১/৯অংশ জলের উপরে থাকে ও ৮/৯অংশ ডুবে থাকে।b) মিষ্টিজল দিয়ে তৈরি।

প্রভাব :অনেক ক্ষেত্রে জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।মগ্নচড়া সৃষ্টিতে সাহায্য করে যা বাণিজ্যিক মৎস্য ক্ষেত্র গড়ে উঠতে সহায়ক।
প্রঃ কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশের নাম লেখাে।

উঃ কর্নাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশ হল । মালনাদ ও ময়দান।

মালনাদ :

অবস্থান : কর্নাটক মালভূমির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।

অর্থ :পাহাড়ি দেশ।

শিলার গঠন : গ্রানাইট শিলা।

ময়দান :

অবস্থান : কর্নাটক মালভূমির উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।

অর্থ : নীচু ভূমি।

শিলার গঠন : গ্রানাইট ও নাইস।
প্রশ্ন:নদীর মােহনায় বদ্বীপ কেন গড়ে ওঠে ব্যাখ্যা করাে।Ans:নদীর মােহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার কারণ :

1.নদীর পলির পরিমাণ : নদীতে পলি, বালি, কাদা ইত্যাদির পরিমাণ বেশি হলে মােহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে।

2.নদীর বেগ : মােহনায় নদী ও সমুদ্র উভয়েরই স্রোতের বেগ কম থাকলে বদ্বীপ গড়ে ওঠে।

3.নদীর সঞ্চয় ক্ষমতা : মােহনায় নদীর পলি সঞ্চয় ক্ষমতা সমুদ্রের অপসারণ ক্ষমতার থেকে বেশি হলে বদ্বীপ গড়ে ওঠে।

4.মহীসােপানের আকৃতি : মােহনায় সমুদ্রের ঢাল বেশি হলে বদ্বীপ গঠন হয় না। তাই সমুদ্রের ঢাল কম হতে হবে।

5.অববাহিকার আয়তন : নদীর অববাহিকার আয়তন বেশি হলে নদীতে পলির পরিমাণ বাড়ে।

এছাড়া জোয়ারভাটার প্রাবল্য কম, লবণতা বেশি হলেও বদ্বীপ গড়ে। উদাহরণ : হুগলী নদী মােহনায় সৃষ্ট বদ্বীপ।
প্রশ্ন:পৃথিবীর নিয়ত বায়ুপ্রবাহগুলির উৎপত্তি ও গতিপথ চিত্রসহ ব্যাখ্যা করাে।

উঃ পৃথিবীতে যে সমস্ত বায়ু সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট দিকে নির্দিষ্ট গতিতে চলাচল করে তাকে নিয়ত বায়ু বলে।

নিয়ত বায়ু সৃষ্টির কারণ :নিয়ত বায়ু সৃষ্টি হয় বায়ুচাপ বলয়গুলির অবস্থানের জন্য। চাপের বৈপরীত্যই নিয়তবায়ুগুলি প্রবাহের কারণ। চারটি উচ্চচাপ বলয় ও তিনটি নিম্নচাপে বলয়-এর সৃষ্টি হয়েছে মূল উয়তা, আবায়ু, বায়ুর বিক্ষেপ, বায়ুর নিমজ্জন, মেরু বায়ুর আগমন, শীতল ও শুষ্ক বায়ুর অবস্থানের কারণে।

বায়ুচাপ বলয়গুলি হল –1.নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়।2.কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়।3.মকরীয় উচ্চচাপ বলয়।4.সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়।5.কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়।6.সুমেরু উচ্চচাপ বলয়।7.কুমেরু উচ্চচাপ বলয়।

ফেরেলের সূত্রানুযায়ী নিয়তবায়ুগুলি উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যাওয়ার সময় উত্তর গােলার্ধে ডানদিকে বেঁকে ও দক্ষিণ গােলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়।

আয়ন বায়ুর প্রবাহস্থল : উভয় গােলার্ধে ৫৭-৩৫° অক্ষাংশ।

উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু : কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু প্রবাহিত হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু : মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু প্রবাহিত হয়।

পশ্চিমাবায়ুর প্রবাহস্থল : উভয় গােলার্ধে ৩৫°- ৬০° অক্ষাংশ।

দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।

উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু : মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।

মেরু বায়ুর প্রবাহস্থল : উভয় গােলার্ধে ৭০-৮০° অক্ষাংশ।

উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু : সুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু প্রবাহিত হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু : কুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু প্রবাহিত হয়।

প্রশ্ন:ভারতের পশ্চিম হিমালয়ের ভূ-প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

Ans:হিমালয়ের পশ্চিম দিকে পশ্চিম হিমালয় নামে পরিচিত।

অবস্থান : নাঙ্গা পর্বত থেকে নেপালের কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।

শ্রেণীবিভাগ :a) কাশ্মীর হিমালয় b) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় c) কুমায়ুন হিমালয়।

a) কাশ্মীর হিমালয় :অবস্থান : জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অবস্থিত।

আয়তন :৩.৫ লক্ষ বর্গ কিমি।

পর্বতশ্রেণী : পিরপাঞ্জাল, জাস্কর, কারাকোরাম, পু পাহাড়, লাদাখ ইত্যাদি।

হিমবাহ : ফেডচেঙ্কো, বিয়াফো, বলটারাে ইত্যাদি।

উপত্যকা : পিরপাঞ্জাল ও জাস্করের মাঝে কাশ্মীর উপত্যকা অবস্থিত।

গিরিখাত : বানিহাল, জোজিলা ইত্যাদি।

হ্রদ : ডাল ও উলার হ্রদ।

মালভূমি : ভারতের উচ্চতম লাদাখ মালভূমি এখানে অবস্থিত।
b) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় :
অবস্থান : পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত।
আয়তন : ৬৪ হাজার বর্গকিমি।
পর্বতশ্রেণী : নাগটিব্বা, মুসৌরি ইত্যাদি।
c) কুমায়ুন হিমালয় :
অবস্থান : উত্তরাখন্ড রাজ্যে অবস্থিত।
আয়তন : ৬০ হাজার বর্গকিমি।
পর্বতশ্রেণী : ত্রিশূল, কামেট, নন্দাদেবী ইত্যাদি।
হিমবাহ : গঙ্গোত্রী, যমুনেত্রী ইত্যাদি হিমবাহ অবস্থিত।
হ্রদ : এখানে হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদকে তাল বলে। যেমন : সাততাল, নৈনিতাল, পুনাতাল ইত্যাদি।
উপত্যকা : এখানে উপত্যকাকে দুন বলে। যেমন : পাটলিদুল, দেরাদুন ইত্যাদি।
প্রশ্ন :পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার প্রধান কারণগুলি ব্যাখ্যা করাে।
ওয়েবারের শিল্প স্থানিকতার তত্ত্ব অনুযায়ী দুটি প্রধান কাঁচামাল, (কয়লা, আকরিক, লােহা), পরিবহন এবং বাজার- এই উপাদানগুলির সান্নিধ্যে পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ-ইস্পাত কেন্দ্রগুলির অবস্থান ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে।
পূর্ব ও মধ্য ভারতের বিভিন্ন স্থানে যে লৌহ-ইস্পাত শিল্পগুলি গড়ে উঠেছে। সেগুলি হল –
i)TISCO (জামসেদপুর)
ii) IISCO(কুলটি)
ii) দুর্গাপুর স্টিলপ্ল্যান্ট
iv) ভিলাই স্টিলপ্ল্যান্ট
v) রৌরকেল্লা স্টিলপ্ল্যান্ট ইত্যাদি।
এই লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি হল :
i) কয়লা : ঝাড়খন্ডের ঝরিয়া, গিরিডি, পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ, ওড়িশার তালচের ইত্যাদি থেকে উন্নত মানের বিটুমিনাস কয়লা পাওয়া যায়।
ii) আকরিক লােহা : ঝাড়খন্ডের গুয়া, নােয়ামুন্ডি, বুদাবুরু, ওড়িশার গুরুমহিষানি, সুলাইপাত, বাদামপাহাড় ইত্যাদি অঞ্চল থেকে হেমাটাইট জাতীয় উন্নতমানের আকরিক লােহা পাওয়া যায়।
iii) চুনাপাথর, ডলােমাইট, ম্যাঙ্গানিজ : ওড়িশার হাতাবাড়ি, বীরমিত্রপুর থেকে চুনাপাথর, বীরমিত্রপুর, গাংপুর থেকে ডলােমাইট, কোরাপুট, কালাহান্ডি ইত্যাদি স্থান থেকে ম্যাঙ্গানিজ নিয়ে আসা হয়।
iv) জল : কাঁচামাল পরিষ্কারকরণ ও বাতচুল্লি শীতলীকরণের জন্য স্বচ্ছ প্রয়ােজনীয় জল দামােদর, মহানদী, ব্রাক্ষ্মণী,খরকাই, সুবর্ণরেখা ইত্যাদি নদীর এবং তেনুঘাট বাঁধ, মঞ্জিরা জলাধারের জল ব্যবহৃত হয়।
V) বিদ্যুৎ :বােকারাে, গিরিডি, পত্রাতু ইত্যাদি স্থানের তাপবিদ্যুৎ, ডিভিসি (DVC), হীরাকুঁদের জলবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়।
vi) যােগাযােগ ব্যবস্থা : এই অঞ্চল পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ, মধ্য-পূর্ব এবং দঃ-পূঃ-মধ্য রেলপথ দ্বারা এবং অসংখ্য জাতীয় সড়কপথ (২, ৫, ৬, ২৩, ৩২, ৩৩, ৪২, ৪৩, ৭৫) ইত্যাদি দ্বারা যুক্ত হওয়ায় কাঁচামাল আমদানি ও ইস্পাত বাজারজাত এবং রপ্তানিতে সুবিধা হয়।
vii) বন্দর : বিভিন্ন কাজে বিশাখাপত্তনম, কলকাতা-হলদিয়া, পারাদ্বীপ ইত্যাদি বন্দরের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি আনয়ন ও ইস্পাত রপ্তানির সুবিধা রয়েছে।
viii) শ্রমিক : পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্রিশগড় ইত্যাদি রাজ্য ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় সুলভে শ্রমিক পাওয়া যায়।
ix) চাহিদা : আশপাশের বিভিন্ন অঞলে (যেমন হুগলি শিল্পাঞ্চল) প্রচুর মহিদা রয়েছে।
x) সরকারি নীতি : আঞ্চলিক উন্নয়নে ভারত সরকারের পরিকল্পনা ও মূলধন নিয়ােগ ইস্পাত শিল্প একাদশী ভবনের গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
প্রশ্ন:হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলির চিত্রসহ বিবরণ দাও।
Ans:হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি হল –
বহি:বিধৌত সমভূমি, এস্কার,কেম, ড্রামলিন, কেটল ইত্যাদি।
i) বহিঃবিধৌত সমভূমি : হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে পর্বতের ক্ষয় প্রাপ্ত নুড়ি, বালি,কাঁকর ইত্যাদি জলধারার মাধ্যমে পাদদেশ থেকে কিছু দূরে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গড়ে ওঠে তাকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলে।
বৈশিষ্ট্য : এতে ভ্যালিট্রেন, গােক্ষুর হ্রদ ইত্যাদি দেখা যায়।
উদাহরণ : আইসল্যান্ডে দেখা যায়।
ii) ড্রামলিন : হিমবাহ ও জলধারার মিলিত ক্ষয়কার্যের ফলে নুড়ি, বালি, কাদা জমে চামচ বা উল্টানাে নৌকার মতাে যে ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে ড্রামলিন বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) ড্রামলিনের হিমবাহের প্রবাহের দিক বা প্রতিবাত ঢাল, অমসৃণ ও অনুবাত ঢাল মৃদু ঢালু হয়।
(ii) উচ্চতা 30-60 মিটার হয়।
(iii) ড্রামলিন থাকলে সেই ভূমিরূপকে ‘ডিমভর্তির ঝুড়ি’র মতাে ভূমিরূপ বলে।
উদাহরণ : উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডে দেখা যায়।।
iii) এস্কার : হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে পর্বতের পাদদেশে বিভিন্ন আকারের প্রস্তর খন্ড
সঞ্জিত হয়ে যে নাতিদীর্ঘ, সংকীর্ণ, আঁকাবাঁকা শৈলশিরার মতাে ভূমিরূপ দেখা যায় তাকে এস্কার বলে।
বৈশিষ্ট্য :এস্কার ১০-৩০ মিটার উঁচু হতে পারে।
উদাহরণ : (i) ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যাণ্ড ইত্যাদি স্থানে দেখা যায়।(ii) পুনকাহারয়ু হল বিখ্যাত এস্কার।
iv) কেটল : বহিঃবিধৌত সমভূমিতে আটকে পড়া বরফের চাই গলে গিয়ে স্থানটি অবনমিত হয়ে যে গর্ত সৃষ্টি হয় তাকে কেটল বলে। গর্তে বরফগলা জল জমে কেটল হ্রদ সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য:ক) এটি বহিঃবিধৌত সমভূমির মধ্যে অবস্থিত হয় ।
খ) হিমবাহ গলে গেলে এরা উন্মুক্ত হয় ।
v) কেম : হিমবাহের প্রান্তভাগে সৃষ্ট হ্রদে জলধারা বাহিত পদার্থসমূহ একসঙ্গে সঞ্চিত হয়ে সমতল পৃষ্ঠদেশযুক্ত ত্রিকোণাকার ব-দ্বীপের মতাে গঠিত ভূমিরূপকে কেম বলে।
বৈশিষ্ট্য :ক) এখানে জলাধারাগুলির অবলুপ্তি ঘটে।
খ) এটি প্রায় ঢালহীন সমভূমি।
উদাহরণ : স্কটল্যান্ডের ল্যামারমুয়ার উপত্যকায় দেখা যায়।
প্রশ্ন:পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণ লেখো। অথবা মুম্বাই ও আমেদাবাদে কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণ গুলো লেখো।
Ans:পশ্চিম ভারতের মুম্বাই আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি হল —
(১) কাঁচামাল :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
মহারাষ্ট্রের ডেকানট্র্যাপ অঞ্চলের রেগুর বা কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে (অমরাবতী, জলগাঁও, নাসিক, নাগপুর প্রভৃতি) প্রচুর পরিমাণে তুলা উৎপন্ন হয়, যা মুম্বাই সমেত অন্যান্য বস্ত্র শিল্প কেন্দ্রগুলিতে ব্যবহৃত হয়।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
গুজরাটের রেগুর বা কৃষ্ম মৃত্তিকা অঞ্চলে (আমেদাবাদ, রাজকোট, সুরেন্দ্রনগর প্রভৃতি) উৎপাদিত তুলা নিকটবর্তী বস্ত্রশিল্প কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করা হয় ৷
(২) জলবায়ু :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
আরব সাগরের তীরে অবস্থিত মুম্বই অঞ্চলের জলবায়ু আর্দ্র প্রকৃতির কারুণ আ্দ্র জলবায়ুতে সুতাে ছেঁড়ার সম্ভাবনা কম। তাই এই অঞ্চল বস্ত্র শিল্প স্থাপনের পক্ষে আদর্শ।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
এই অঞ্চল খাম্বাত ও কচ্ছসাগরের অনতিদূরে অবস্থিত হওয়ায় জলবায়ু আর্দ্র প্রকৃতির। এই জলবায়ু বয়ন শিল্পের পক্ষে বিশেষ উপযুক্ত।
(৩) বন্দর :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
মুম্বাই ছিল প্রাচীনকালে অতিগুরুত্বপূর্ণ বিন্দর। ফলে বর্তমানে এটিিদেশ থেকে উন্নত যন্ত্রপাতি, উন্নত তুলা (মিশর, সুদান থেকে) আনার যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি বিদেশে বস্ত্র রপ্তানিরও সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে নভসেবা বা জওহরলাল নেহরু বন্দর স্থাপন হওয়ায় পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সুবিধা আরও বেড়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
এই অঞ্চলের বস্ত্রশিল্প কেন্দ্রগুলিকেপ্রথম যুগে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য মুম্বাই-এর ওপর নির্ভর করতে হত পরবর্তীকালে কান্দালা (করমুক্ত বন্দর) পােরবন্দর, সুরাট, ওখা, প্রভৃতি বন্দর স্থাপিত হওয়ায় উন্নত তুলা এবং যন্ত্রপাতির আমদানি ও বস্ত্র রপ্তানির কাজ সহজ হয়েছে।
(৪) শক্তি :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
মুম্বাই-এ বস্ত্রশিল্প প্রাথমিক পর্যায়ে আফ্রিকার নাটালের কয়লা আমদানি করে গড়ে উঠলেও পরবর্তীকালে ভিবপুরী, ভীরা, খােপালি প্রভৃতি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির চাহিদা মেটাত। বর্তমানে জলবিদ্যুৎ, তাপবিদ্যুৎ এবং তারাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির জোগান দেওয়া হয়।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
প্রথমে বস্ত্র শিল্পের জন্য শক্তির জোগান দেওয়া হত আফ্রিকা থেকে আনা কয়লার মাধ্যমে। পরবর্তীকালে উকাই জলবিদ্যুৎ আমেদাবাদ, ধুবারান তাপবিদ্যুৎ ও কাকড়াপাড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির জোগান দেওয়া হয়।
(৫) পরিবহন :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
১৮৫৩ সালে মুম্বাই থেকে থানে (ভারতের প্রথম রেলপথ) রেলপথ স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে রেলপথ ও সড়ক পথের সম্প্রসারণ ঘটতে থাকে। বর্তমানে এই অঞ্চল সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে যুক্ত ফলে কাঁচা তুলা শিল্প কেন্দ্রে আনয়ন ও তৈরি বস্ত্র ভারতের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ করা সহজসাধ্য হয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
এই অঞ্চল সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে উত্তমরূপে যুক্ত। ফলে কাঁচা তুলা ও অন্যান্য সামগ্রী এবং তৈরি বস্ত্রের আমদানি ও রপ্তানি সহজ হয়েছে।
(৬) মূলধন :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
স্থানীয় পার্শী এবং ভাটিয়া শিল্পপতিদের মূলধন, ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং পরিচালন ব্যবথা মুদ্বাই অঞ্চলে কার্পাসবয়ন শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাই, বড়াে বড়াে অর্থ লগ্নী সংস্থার সদর দপ্তর এখানে রয়েছে। তাই শিল্প পরিচালনায় বর্তমানে মূলধনের অভাব হয় না।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
গুজরাটের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মূলধন, ব্যবসায়িক দক্ষতা আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনে সাহায্য করেছে। আমেদাবাদেঅসংখ্য ব্যাংকব্যকথা গড়ে ওঠায় বর্তমানে শিল্পে অর্থ লগ্নীকরণ আরও সহজ হয়েছে।
(৭) শ্রমিক :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
কঙ্কন, শােলাপুর, সাতারা কৃষিতে অনুন্নত হওয়ায় প্রচুর সুলভে শ্রমিক প্রাপ্তির সুবিধা রয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
সুরাট, কল্লোল, মহেসানা প্রভৃতি অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষিজীবী পরিবার আমেদাবাদ অঞ্চলের কার্পাস বয়ন শিল্পে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে।
(৮) চাহিদা ও বাজার :
(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :
চাহিদা বা মুম্বাই ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় বস্ত্রের চাহিদা খুব বেশি যা বস্ত্রশিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি, চাহিদা ও বাজারের পরিধির বিস্তার ঘটিয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :
মুম্বাই অঞ্চলের মত একই কারণে আমেদাবাদ অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় বস্ত্রের চাহিদা খুব বেশি। পরবর্তীকালে যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে বাজারের সম্প্রসারণ ঘটেছে এবং চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রশ্ন :পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ লেখো
Ans:পশ্চিম ভারতে এই শিল্পের সর্বাধিক বিকাশ ঘটেছে
পশ্চিমাঞ্চলের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্যে। পশ্চিম ভারতের উল্লেখযোগ্য পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র গুলি হল–
মহারাষ্ট্র: ট্রম্বে, থানে, চেম্বুর, নাগোথেন প্রভৃতি
গুজরাট: জামনগর, হাজিরা, কয়ালি, ভাদোদরা,গান্ধার প্রভৃতি।
পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ গুলি হল–
1. কাঁচামালের প্রাচুর্য:
পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামাল (ন্যাপথা প্রোপেন বিউটেন বেনজিন প্রভৃতি) গুলির উৎস হল খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস। গুজরাটের আঙ্কেলেশ্বর, কাম্বে, নুনেজ, আমেদাবাদ ও কোসাম্বা এবং মহারাষ্ট্রের বোম্বে হাই, দমন দরিয়া, গান্ধার ও রত্না প্রভৃতি তৈলখনি ও গুজরাটে সুরাটের প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি এই অঞ্চলের পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামালের উৎস।
2. তৈল শোধনাগার:
মহারাষ্ট্রের ট্রম্বেতে দুটি এবং গুজরাটের জামনগর, কয়ালি তৈল শোধনাগার থেকে প্রাপ্ত উপজাত দ্রব্য সহজে কাঁচামাল হিসেবে পাওয়া যায়।
3. বন্দরের সুবিধা:
মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, নবসেবা ও গুজরাটের কান্ডালা, সুরাট বন্দর দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ইরাক, ইরান ও সৌদি আরব থেকে অপরিশোধিত খনিজ তেল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ফ্রান্স থেকে উন্নত যন্ত্রপাতি আমদানি এবং উৎপন্ন পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করার সুবিধা রয়েছে।
4. বিদ্যুতের সরবরাহ:
এই শিল্পের বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র গুলি হল–
তাপবিদ্যুৎ: ট্রম্বে, আমেদাবাদ, ধুবারন প্রভৃতি।
জলবিদ্যুৎ: উকাই, কয়না, ভিরা প্রভৃতি।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ: তারাপুর, কাকরাপাড়া ও কোটা প্রভৃতি।
5. উন্নত পরিকাঠামো:
মহারাষ্ট্র ও গুজরাট ভারতের প্রধান শিল্পোন্নত রাজ্য হওয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্প বিকাশের জন্য উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে।
6. পর্যাপ্ত জলসম্পদ:
নর্মদা তাপ্তি সবরমতী মাহি প্রভৃতির নদী ও বিভিন্ন জলাধারা এবং ভূগর্ভস্থ জলের বিপুল যোগান রয়েছে।
7. উন্নত পরিবহন:
পশ্চিম ও মধ্য রেলওয়ে এবং 3, 4, 5, 6, 7,15,17 প্রভৃতি জাতীয় সড়কের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র গলি থেকে উৎপন্ন পণ্য সহজে পরিবহন করা যায়।
8. সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক:
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে ঘনবসতি এবং কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষা কেন্দ্র গুলি থাকায় সুদক্ষ শ্রমিক সহজে পাওয়া যায়।
9. উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যা:
মহারাষ্ট্র গুজরাট কারিগরি ও প্রযুক্তি বিদ্যায় উন্নত হওয়ায় উচ্চ প্রযুক্তির অত্যাধুনিক পেট্রোরসায়ন শিল্প স্থাপনে সুবিধা হয়।
10. মূলধনের জোগান:
রিলায়েন্স, মফতলাল ও বম্বে ডাইং প্রকৃতির মত বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার এই শিল্পে অর্থলগ্নি করেছে। মুম্বাই ভারতের মূলধনের রাজধানী হওয়ায় বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা সংস্থা ও অর্থলগ্নিকারী সংস্থা থেকে শিল্পের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
11. সরকারি নীতি:
গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের সরকারের অনুকূল শিল্প, শুল্ক, বাণিজ্য নীতি এবং শিল্প স্থাপনের জন্য উৎসাহ প্রদান করায় শিল্পটির দ্রুত প্রসার ঘটেছে।
12. বিপুল চাহিদা:
পশ্চিম ভারত জনবহুল ও সমৃদ্ধ বাজার সম্পন্ন হওয়ায় বস্ত্র, প্লাস্টিক, রং, ওষুধ, রাবার, সার, মোটরগাড়ি ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকৃতি অনুসারে শিল্পে পেট্রোরসায়ন শিল্পজাত দ্রব্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে।
উপরিউক্ত কারণ গুলির জন্য পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ট্রম্বে, থানে, ভাদোদরা, কয়ালি ও জামনগরকে কেন্দ্র করে পেট্রোরসায়ন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটেছে।

জলবিভাজিকা (Watershed) কী?

উত্তর ➪ সংজ্ঞা: সাধারণত দুটি নদী অববাহিকা বিভাজনকারী উচ্চভূমিকে জলবিভাজিকা বলে।
বৈশিষ্ট্য: 1. জলবিভাজিকা অববাহিকাকে পৃথক করে।
2. জলবিভাজিকাগুলি সাধারণত পাহাড়, পর্বত হয়ে থাকে।
3. উৎসের দিকে নদীক্ষয়ের ফলে জলবিভাজিকা পশ্চাদপসরণ করে।
4. এক সময় জলবিভাজিকা ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে দুটি নদী গােষ্ঠী একসঙ্গে মিশে যায়। 5. এশিয়ার মধ্যভাগের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল পৃথিবীর বৃহত্তম জলবিভাজিকা।
উদাহরণ: ভারতের সাতপুরা পর্বত নর্মদা ও তাপ্তী নদীর জলবিভাজিকা।

নদী অববাহিকা (River basin) কী?

উত্তর ➪ সংজ্ঞা: প্রধান নদী ও তার উপনদী ও মিলিত শাখানদী দ্বারা গঠিত কোনাে একটি নদী গােষ্ঠী ভূপৃষ্ঠের যতটুকু জায়গা দখল করে তাকে নদী অববাহিকা বলে ।

বৈশিষ্ট্য : 1. নদী অববাহিকা হল নদীর দুধারে অবস্থিত নিম্নভূমি, যা ক্রমশ ঢালু হয়ে নদী গর্ভের দিকে নেমে যায় ।

2. বন্যায় নদী অববাহিকা প্লাবিত হয়।

3. নদী অববাহিকায় নদীর ক্ষয় ও সঞ্চয় দেখা যায়

উদাহরণ: আমাজন অববাহিকা পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা । ভারতের বৃহত্তম নদী অববাহিকা গঙ্গা অববাহিবা।

ষষ্ঠঘাতের সূত্র কী?

উত্তর » সংজ্ঞা : অধিক বৃষ্টিপাত বা বােঝা হ্রাস বা ঢাল বৃদ্ধির দরুন নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলে নদীর বহন ক্ষমতা 64 গুণ অর্থাৎ 2⁶ গুণ বৃদ্ধি পায়। নদীবিজ্ঞানে নদীর গতিবেগের সঙ্গে নদীর বহনক্ষমতার এই অনুপাতকে ষষ্ঠঘাতের সূত্র বলে।
ষষ্ঠঘাতের সূত্রানুযায়ী: নদীর গতিবেগ বাড়লে,
বহন ক্ষমতা বাড়ে।

বদ্বীপ (Delta) কী ?

উত্তর সংজ্ঞা : নদী মােহানায় নদীস্রোতের বেগ।
মন্দীভূত হওয়ায় নদীবাহিত বস্তুভার ক্রমান্বয়ে সঞ্চিত হয়ে কালক্রমে বাংলা মাত্রাহীন ব’ বা গ্রিক অক্ষর ‘∆’ -এর মতাে একধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। একে বদ্বীপ বলে।

বৈশিষ্ট্য : 1.নদীর সঙ্গে সমুদ্রতরঙ্গ বাহিত পলি
সঞ্চিত হয়ে, নিম্নাংশ ক্রমশ ভরাট হয়ে বদ্বীপ গঠিত হয়। 2. মূল নদী থেকে যেখানে শাখানদী বিভক্ত হয়, সেটাই বদ্বীপের শীর্ষবিন্দু। 3. সমভূমির ক্ষীণ নদীপ্রবাহ, পর্যাপ্ত বস্তুভার বদ্বীপ সৃষ্টির প্রধান কারণ।

উদাহরণ: গঙ্গা-ব্রক্ষ্মপুত্র বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম
বদ্বীপ।

বদ্বীপ গঠনের অনুকূল পরিবেশগুলি লেখো ।
উত্তর :
গতিবেগ: সমভূমি অঞ্চলে নদীর গতিবেগ কম হবে।
ঢাল : মৃদু ঢালে মােহানা সমুদ্রের সঙ্গে মেশে।
বায়ুপ্রবাহ: নদীপ্রবাহের প্রতিকূলে বায়ুপ্রবাহ দেখা যাবে।
জোয়ারভাটা: মােহনায় জোয়ারভাটার প্রকোপ কম থাকতে হবে।
পলি: নদীবাহিত পলির পরিমাণ বেশি হতে হবে।
ক্ষেত্রমান : নদী অববাহিকার ক্ষেত্রমান বেশি হলে ক্ষয়িত উপাদানের পরিমাণও বেশি হয়।
উপনদী: উপনদীর সংখ্যা বেশি হলে বস্তুভার বেশি হয়, যা বদ্বীপ সৃষ্টির সহায়ক।
লবণতা : সমুদ্র জলের লবণতা বেশি হলে পলি দ্রুত অধঃক্ষিপ্ত হয়।
শিলাকাঠিন্য: ধারণ অববাহিকা কোমল শিলা গঠিত হয়ে ক্ষয় বেশি হয় ও বদ্বীপ সৃষ্টি হয়

One thought on “মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন/দশম শ্রেণির ভূগােল”

  1. Pingback: Madhyamik Geography|দশম শ্রেণির ভূগোল সাজেশন 2022|rlearn - Rlearn Education

Comments are closed.