Different ways to avoid sin
বর্তমান সময়ের এক বড় বাস্তবতা হল, ইন্টারনেটকেন্দ্রিক গুনাহ। এই গুনাহতে আমরা সকলেই কম-বেশি আক্রান্ত। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দীনের খাদেম পর্যন্ত (আল্লাহর কাছে পানাহ চাই) প্রত্যেকে কোনো না কোনো অংশে গুনাহটির সঙ্গে কম-বেশি জড়িত। এটা এক কঠিন বাস্তবতা। বলা যায়, গুনাহটি এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। গুনাহটি থেকে বাঁচার উপায় কী? এ সম্পর্কে ‘ইনশা আল্লাহ’ কিছু কথা বলবো।
কিছু গুনাহ জাহান্নামে যাওয়ার ইস্যূ হয়ে যেতে পারে ৷
কোরআন মাজিদের একটি আয়াত আমাদের জন্য আশা-জাগানিয়া আবার ভয়েরও। আয়াতটি হল, আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن تَوَلَّوْا فَاعْلَمْ أَنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَن يُصِيبَهُم بِبَعْضِ ذُنُوبِهِمْ
‘অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রেখো, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কিছু গুনাহর জন্য শাস্তি দিতে চান। -(সূরা মায়েদাহ ৪৯)
অর্থাৎ, আল্লাহ বোঝাতে চেয়েছেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পরেও যদি আমরা গুনাহ থেকে ফিরে না আসি তাহলে তিনি কিছু গুনাহর জন্য আমাদেরকে পাকড়াও করবেন।
বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বলা হয় গোনাহের স্বর্গরাজ্য। এ মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোর-যুবক ও বৃদ্ধ। খেলার ছলে কিংবা নফসের তাড়নায় অহরহ গোনাহে জড়িয়ে পড়ছে মানুষ। এমন কিছু চিন্তার বিষয় রয়েছে, যা মানুষকে গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখবে। সেগুলি হল —
1. এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা অন্যায় অপরাধ করেও পরিবার কিংবা সমাজের কাছে ভদ্র হতে চান। তাদের এ কথা ভাবা জরুরি যে, দুনিয়ার মানুষের কাছে ভদ্র না সেজে মহান আল্লাহর কাছে ভদ্র ও নেককার বান্দা হওয়া জরুরি। তবেই পরকালে মিলবে মুক্তি। দুনিয়ার লজ্জা বা অপমানের ভয়ে নয় বরং আল্লাহর সামনে অপরাধী হয়ে দাঁড়ানোর আগে নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করা আবশ্যক।
2. প্রতীকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। গোনাহ হয়ে গেলে তা থেকে ক্ষমা চাওয়ার চেয়ে অন্যায় বা গোনাহের কাজ পরিহার করে চলার বিষয়টি কাজে বাস্তবায়ন করা জরুরি। সেক্ষেত্রে দুনিয়ার জীবনে বন্ধু নির্বাচন, যে কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা কিংবা মন্দ কাজের দিকে ধাবিত না হওয়াই উত্তম।
3. অযথা সময় ব্যয় করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সময় যত কম ব্যয় করা যায় ততই উত্তম। কোনো কাজ না থাকলে মহান আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান আল-কুরআনের তেলাওয়াত, অধ্যয়ন, তাওবাহ-ইসতেগফার, জিকির-আজকার কিংবা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজের উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণও গোনাহমুক্ত থাকার উপায়।
4. মানুষের কল্যাণের চিন্তায় সময় অতিবাহিত করাই শ্রেয়। সন্দেহযুক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সঠিক দিকনির্দেশনা মেনে চলার প্রতি ধাবিত হওয়া জরুরি।
5. অনেক মানুষই ভুলে যায় যে, মহান আল্লাহ মানুষের ভালো-মন্দ কাজের হিসাব গ্রহণে তার সঙ্গেই ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। যারা দিন-রাত এ হিসাব রেকর্ড করছেন। এ চিন্তা বা ভয় করা যে, কোনো মানুষ একা নয়। মানুষের প্রতিটি কাজের হিসাব রেকর্ড করা হচ্ছে। বিচার দিবসে এসব অপরাধের বর্ণনা মানুষের সামনে প্রকাশ করা হবে।
6. যে কোনো গোনাহের কাজের সময় মহান আল্লাহর উপস্থিতি উপলব্ধি করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোনো ইলেক্ট্রনিক্স মাধ্যমে গোনাহ সংঘটিত হলে এটিকে চোখের খেয়ানত মনে করা জরুরি।