উডের ডেসপ্যাচ (১৮৫৪ খ্রি.) : মাধ্যমিক ইতিহাস

Wood’s Despatch (1854 AD)
উডের ডেসপ্যাচ (১৮৫৪ খ্রি.) : মাধ্যমিক ইতিহাস

ভূমিকা :- লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আমল পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম ও গঠনরীতিতে কোনো সামঞ্জস্য ছিল না। এই পরিস্থিতিতে উডের ডেসপ্যাচ ঘোষণা করা হয়।

উডের ডেসপ্যাচ : বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন, যা চার্লস উডের ডেসপ্যাচ নামে খ্যাত।

সুপারিশ : উডের ডেসপ্যাচ-এ উল্লিখিত সুপারিশ গুলি হল –

[i] সমগ্ৰ শিক্ষাব্যবস্থাকে ৫টি শ্রেণিতে বিভাজন,
[II] দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা,
[iii] কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,
[iv] একটি পৃথক শিক্ষাদপ্তর গঠন,
[v] উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ কর্তা হিসেবে ‘ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ পদ সৃষ্টি,
[vi] শিক্ষক-শিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা,
[vii] সাধারণ শিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার
[viii] উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি,
[ix] স্ত্রীশিক্ষার প্রসার প্রভৃতি।

মহাসনদ : উডের নির্দেশনামা বা ডেসপ্যাচের ওপর ভিত্তি করে ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তাই এই নির্দেশ – নামাকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ‘ম্যাগনাকার্টা’ বা ‘মহাসনদ’ বলা হয়।

ফলাফল : এই নির্দেশ নামার ফলেই —

(i) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দেলর্ড ডালহৌসি বাংলা, বোম্বাই, পাঞ্জাব প্রভৃতি প্রদেশ শিক্ষা দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন।
(ii)১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
(iii) ১৮৮২খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সারা ভারতে সরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৬৩ টি।
উপসংহার :- আধুনিক শিক্ষার বিকাশের ক্ষেত্রে উডের নির্দেশনামা ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এটি ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাঠক্রম ও পঠনরীতির মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে সক্ষম হয়েছিল।

Rlearn Education