টীকা লেখো : হিন্দুমেলা
হিন্দুমেলা : উনিশ শতকের বাংলাদেশে যেসব সাংস্কৃতিক ও জাতীয়তাবাদী সভাসমিতি গড়ে ওঠে, তার মধ্যে উল্লেখ – যোগ্য ছিল হিন্দুমেলা। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে নবগোপাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে হিন্দুমেলার সূচনা হয়।
উদ্দেশ্য : হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—
- হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করা,
- সর্বভারতীয় চেতনা গড়ে তোলা,
- দেশীয় শিল্প, সাহিত্যকে উৎসাহদান |
- হস্তশিল্পে উৎসাহদান।
- সাহিত্যচর্চায় উৎসাহদান।
- বাঙালির হীনমন্যতা দূর করা।
- শরীরচর্চায় উৎসাহ দেওয়া
- আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা প্রভৃতি |
- কার্যাবলি : ধর্ম ও ইতিহাস বিষয়ক বক্তৃতা, ছাত্রদের ব্যায়াম প্রদর্শনী, মেলা, গান-বাজনা, ফল-ফুল প্রদর্শনী, মাটির জিনিসপত্রের প্রদর্শনী, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি এই মেলায় অনুষ্ঠিত হত। শোভা – যাত্রা করে অনেকে মেলায় আসতেন|
অবদান : স্বল্পকালীন (১৮৬৭–১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ) হলেও জাতীয়তাবোধ জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে হিন্দুমেলার বিশেষ ভূমিকা ছিল—
1. সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘মিলে সব ভারত সন্তান’ সংগীতটি দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলে।
2. বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ রচনার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়।
3. মেলায় হস্তশিল্পের প্রদর্শনী শিল্পী ও কারিগরদের উৎসাহ দেয়।
4. মেলার আয়োজকদের প্রকাশিত ন্যাশানাল পেপার জাতীয়তাবোধ জাগরণে সাহায্য করে।