পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন : অ্যামোনিয়া (Ammonia)ও ইউরিয়া (Urea) প্রস্তুতি

Inorganic chemistry in the Laboratory and in industry
অ্যামোনিয়া (Ammonia)ও ইউরিয়া (Urea) প্রস্তুতি : মাধ্যমিক পরীক্ষা প্রস্তুতি


সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ) :

1. প্রদত্ত কোনটি আর্দ্র অ্যামোনিয়াকে শুষ্ক করতে ব্যবহার হয় ? MP 17

A] H2SO4. B] CaO. C] P2O5. D] CaCl2

উত্তর : CaO (পোড়াচুন ) |

2. কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে অতিরিক্ত পরিমাণ জলীয় অ্যামোনিয়া যোগ করলে উৎপন্ন দ্রবণের রং কী হবে ? MP 18

A] হলুদ B] সবুজ C] গাঢ় নীল D] বাদামি

উত্তর : গাঢ় নীল |

3. লাইকার অ্যামেনিয়াতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ –

A] 25% B] 30% C] 35% D] 50%

উত্তর : 35%

4. নেসলার বিকারকের সাহায্যে কোন গ্যাস শনাক্ত করা হয় ?

A] NH3. B] H2O. C] H2. D] O2

উত্তর : NH3

5. লাইকার অ্যামোনিয়ার প্রবণ –

A] আম্লিক B] ক্ষারীয় C] প্রশম D] কোনোটি নয়

উত্তর : ক্ষারীয় |

6. একটি ঝাঁজালো গন্ধের গ্যাসের সঙ্গে গ্যাসীয় হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের বিক্রিয়ায় একটি কঠিন পদার্থের সাদা ধোঁয়া উৎপন্ন হয় | ঝাঁজালো গ্যাসটি হল –

A] CO2 B] H2S C] NH3 D] Cl2

উত্তর : NH3

7. কালো উত্তপ্ত কিউপ্রিক অক্সাইডের মধ্য দিয়ে অ্যামোনিয়া গ্যাস চালনা করলে উৎপন্ন গ্যাসে প্রধানত থাকে –

A] H2 B] N2 C] O2 D] NO2

উত্তর : N2

8. অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণকে বলে –

A] নাইট্রোলিম B] তরল অ্যামোনিয়া C] সোডামাইড D] লাইকার

উত্তর : লাইকার |

9. NH3 এর জলীয় দ্রবণ –

A] ক্ষারধর্মী B] আম্লিক C] প্রশম D] কোনটি নয়

উত্তর : ক্ষারধর্মী |

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (VSAQ) :

1. লাইকার অ্যামোনিয়া কী ?

উত্তর : অ্যামোনিয়ার সম্পৃক্ত জলীয় দ্রবণকে লাইকার আ্যমোনিয়া বলে |

2. ফেরিক ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ যোগ করলে যে অধঃক্ষেপ পড়ে তার সংকেত কী?

উত্তর : Fe(OH)3

3. তরল অ্যামোনিয়ার একটি ব্যবহার লেখো |

উত্তর : হিমায়ক রুপে ( শীতলীকরণের কাজে) ব্যবহার হয় |

4. অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ যোগ করলে যে অধঃক্ষেপ পড়ে তার সংকেত লেখো |MP 18

উত্তর : Al(OH)3

5. নেসলার বিকারকের সঙ্গে অ্যামানিয়ার বিক্রিয়ায় কী রং উৎপন্ন হয় ? MP 19

উত্তর : তামাটে |

6. উপযুক্ত লিটমাস কাগজের সাহায্যে দেখাও যে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় প্রকৃতির | MP 20

উত্তর : অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাস পেপারকে নীল করে |

7. ইউরিয়ার একটি ব্যবহার লেখো |MP 20

উত্তর : নাইট্রোজেন ঘটিত সার হিসাবে ব্যবহার হয় |

8. সত্য না মিথ্যা লেখো : অ্যামোনিয়া বায়ুর চেয়ে হালকা |

উত্তর : সত্য |

9. অ্যামোনিয়ার ক্ষারীয় জলীয় দ্রবণে কয়েক ফোঁটা ফেনল্‌পথ্যালিন যোগ করলে দ্রবণের বর্ণ কীরকম হবে ?

উত্তর : লালচে বেগুনি |

10. হেবার পদ্ধতিতে কোন্ গ্যাস প্রস্তুত করা হয় ?

উত্তর : অ্যামোনিয়া |

11. নেসলার বিকারকের সংকেত লেখো |

উত্তর : K2HgI4

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (SAQ) :

1. পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়া গ্যাস প্রস্তুতির প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ , শর্ত ও রাসায়নিক সমীকরণ লেখো |


2. অ্যামোনিয়ার বিজারণ ধর্মের উদাহরণ বিক্রিয়াসহ লেখো |

অথবা, প্রমান করো, NH3 এর মধ্যে নাইট্রোজেন আছে |

অথবা, উত্তপ্ত কিউপ্রিক অক্সাইডের ওপর NH3 গ্যাস চালনা করলে কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো |


3. অ্যামোনিয়াকে জলের নিম্ন অপসারণ দ্বারা সংগ্রহ করা হয় না কেন ?


12. হেবার পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়ার (NH3) শিল্পোৎপাদনে পদ্ধতিগত শর্তগুলি কী কী? MP 2023

উঃ হেবার পদ্ধতিতে 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে এবং 550 ডিগ্রি C উষ্ণতায় উত্তপ্ত লৌহচূর্ণ অনুঘটক ও মলিবডেনাম উদ্দীপকের উপস্থিতিতে 1:3 আয়তনিক অনুপাতে নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন গ্যাস সরাসরি বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়া প্রস্তুত করা হয়।

4. পরীক্ষাগারে প্রস্তুত অ্যামোনিয়াকে P2O5 দ্বারা শুষ্ক করা যায় না কেন ?


5. লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার সময় বোতল ঠান্ডা করে খুলতে হয় কেন ?

উত্তর : অ্যামোনিয়ার সম্পৃক্ত জলীয় দ্রবণকে লাইকার অ্যামোনিয়া বলা হয়। উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে জলের মধ্যে অ্যামোনিয়ার দ্রাব্যতা কমে যায়। লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার সময় উষ্ণতা বেশি হলে দ্রবণ থেকে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া বেরিয়ে এসে দ্রবণের উপর সঞ্চিত থাকে। বোতুলের ছিপি খোলার সঙ্গে সঙ্গে এই গ্যাস সজোরে বেরিয়ে আসে। ক্ষারধর্মী এই গ্যাস চোখের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। শ্বাসনালীর ভেতর এই গ্যাস প্রবেশ করলে শ্লৈষ্মিক-ঝিল্লি আক্রান্ত হয়। তাই লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার আগে সেটিকে ভালো করে ঠান্ডা করে নেওয়া উচিৎ। উষ্ণতা হ্রাস পেলে জলে অ্যামোনিয়ার দ্রাব্যতা বেড়ে যায়। ফলে দ্রবণ থেকে বেড়িয়ে আসা গ্যাসের বেশিরভাগটাই আবার জলে দ্রবীভূত হয়। এর ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

6. লাইকার অ্যামোনিয়া ও তরল অ্যামোনিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো |

উত্তর :


7. নেসলার বিকারক কী ? এই বিকারকে NH3 পাঠালে কী দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটে ?


8. দুটি জলীয় দ্রবণের একটি ফেরিক ক্লোরাইড ও অপরটি অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড | অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণের সাহায্যে কীভাবে ফেরিক ক্লোরাইড দ্রবণটি শনাক্ত করবে ? সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ উত্তর দাও |


9. দুটি গ্যাস বিক্রিয়া করে একটি কঠিন পদার্থ উৎপন্ন হয়। সমীকরণসহ লেখো।

অনুরূপ প্রশ্ন : অ্যামোনিয়া গ্যাসকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের সংস্পর্শে আনলে কী ঘটে? সংশ্লিষ্ট বিক্রিয়াটি লেখো।

উঃ অ্যামোনিয়া ও গ্যাসীয় হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের বিক্রিয়ায় কঠিন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।

NH3 (g) + HCl (g) = NH4Cl (s)

10. অ্যামোনিয়া থেকে প্রস্তুত হয়–এমন দুটি রাসায়নিক সারের নাম লেখো।

উঃ অ্যামোনিয়াম সালফেট [(NH4)2SO4], অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (NH4NO3) ইত্যাদি।

11. অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শুষ্ক করা হয়?

উঃ অ্যামোনিয়া গ্যাস শুষ্ক করত হলে পোড়াচুন (CaO) ব্যবহার করা হয়, কারণ উভয়ই ক্ষারীয় পদার্থ, তাই পরস্পর বিক্রিয়া করে না।

কিন্তু অ্যামোনিয়া শুষ্ক করতে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ফসফরাস পেন্টক্সাইড বা অনার্দ্র ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয় না, কারণ এইসব পদার্থের সঙ্গে অ্যামোনিয়া বিক্রিয়া করে।

13. অ্যামোনিয়ার ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি কী কী?
উঃ (১) অ্যামোনিয়া ক্ষারধর্মী ঝাঁঝালো গ্যাস। এজন্য এই গ্যাস চোখের পক্ষে ক্ষতিকর।
(২) শ্বাসের সঙ্গে এই গ্যাস শরীরে প্রবেশ করলে শ্লৈষ্মিক-ঝিল্লি আক্রান্ত হয়।

14. একটি গ্যাস ভরতি জারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড সিক্ত একটি কাচদণ্ড প্রবেশ করানো হল। একটি সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি হল। জারের গ্যাসটি কী? সাদা ধোঁয়া কোন্ যৌগের? সমীকরণ দাও।

অনুরূপ প্রশ্ন : একটি গ্যাস ভরতি পরীক্ষা নলের মুখের কাছে গাঢ় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডে সিক্ত একটি কাচ দণ্ড ধরলে সাদা ধোঁয়া সৃষ্টি হয়।পরীক্ষানলে কোন্ গ্যাস উপস্থিত? সমীকরণ দাও।

ANS: গ্যাসটি অ্যামোনিয়া। সাদা ধোঁয়া অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড যৌগের।
● সমীকরণ : NH3 + HCI → NH4Cl

15. অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণে অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড যোগ করলে কী ঘটে সমীকরণ সহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন : অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণে অ্যামোনিয়া গ্যাস চালনা করা হলে কী ঘটে সমিত সমীকরণসহ লেখো।MP 20

ANS: অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণে অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড যোগ
করলে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইডের সাদা আঠালো অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
AlCl3 + 3NH4OH➝ 3NH4Cl + Al(OH)3 (সাদা আঠালো)

অথবা, AlCl3 + 3NH3 + 3H2O ➝ Al(OH)3 + 3NH4CI

দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (LAQ) :

1. শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ ইউরিয়াকে কীভাবে শিল্পোৎপাদন করা হয় লেখো |

অথবা, কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে কীভাবে ইউরিয়া প্রস্তুত করবে ?

অথবা, ইউরিয়ার শিল্পোৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থগুলির নাম ও বিক্রিয়ার সমিত রাসায়নিক সমীকরণ লেখো |MP 19


2. অ্যামোনিয়াকে বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারণ ঘটিয়ে কীভাবে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন করা হয় অনুঘটকের নাম ও শর্ত উল্লেখসহ লেখো | বিক্রিয়াটির সমিত রাসায়নিক সমীকরণ লেখো |MP 20

অথবা, অ্যামোনিয়া ও অক্সিজেনের মিশ্রণ 700⁰C উষ্ণতায় প্ল্যাটিনাম তারজালির মধ্য দিয়ে দ্রুত চালনা করলে – কী ঘটে সমীকরণ সহ লেখো |

অথবা, অ্যামোনিয়া থেকে কীভাবে নাইট্রিক অক্সাইড প্রস্তুত করবে ?


3. একটি বর্ণহীন গ্যাস X কে উত্তপ্ত CuO এর ওপর দিয়ে চালনা করায় Y গ্যাস পাওয়া গেল | Y গ্যাসকে উত্তপ্ত Mg ধাতুর ওপর দিয়ে চালনা করায় সাদা বর্ণের কঠিন পদার্থ Z পাওয়া গেল | Z এর সঙ্গে ফুটন্ত জলের বিক্রিয়ায় পুনরায় X গ্যাসটি পাওয়া গেল | X, Y এবং Z কে শনাক্ত করো | এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিক্রিয়ার সমীকরণগুলি লেখো |

উত্তর :


4. কোনো জায়গায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়লে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ?

উঃ কোনো জায়গায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়লে সেখানে ভালোভাবে জল ছেটানো দরকার। কারণ অ্যামোনিয়া গ্যাস জলে অতিমাত্রায় দ্রবণীয়। ফলে নির্গত গ্যাস জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়, ফলে ক্ষতির মাত্রা কম হয়। এছাড়া কোনো ব্যক্তি অ্যামোনিয়া গ্যাসের দ্বারা আক্রান্ত হলে তার চোখে-মুখে অনবরত জলের ঝাপটা দেওয়া উচিৎ এবং জলে ভেজানো রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা উচিৎ। কখনোই চোখে অ্যাসিডের ঝাপটা দেওয়া উচিৎ নয়। অ্যাসিডের ঝাপটা দিলে আমাদের ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

5. একটি গ্যাস জারে অ্যামোনিয়া আছে কিনা-কীভাবে শনাক্ত করবে?

উঃ ঘন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডে একটি কাচদণ্ডকে ডুবিয়ে সেটিকে পরীক্ষণীয় গ্যাসজারে প্রবেশ করালে যদি ঘন সাদা ধোঁয়া উৎপন্ন হয় তাহলে বোঝা যাবে যে গ্যাসজারে অ্যামোনিয়া গ্যাস আছে। কারণ অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় সাদা বর্ণের অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।

The post পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন :অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া প্রস্তুতি appeared first on Rlearn Education.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *