অ্যান্টাসিডের প্রকারভেদ | অ্যান্টাসিডের প্রয়োজনীয়তা | অ্যান্টাসিডের উদাহরণ
সংজ্ঞা :
যে সকল ক্ষারকীয় পদার্থ পাকস্থলীতে নিঃসৃত প্রয়োজনাতিরিক্ত অম্লকে সাময়িক ভাবে শোষণ বা প্রশমিত করে পাকস্থলীর মধ্যস্থ তরলের pH -এর মান স্বাভাবিক রাখে সেই পদার্থগুলিকে অম্লনাশক তথা অ্যান্টাসিড বলে।আমাদের গৃহীত খাদ্যবস্তু হজমের এবং পরিপাকের জন্য পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) স্বাভাবিক নিয়মেই ক্ষরিত হয়। এর pHএর মান 1.5-3.5 হয়। কিন্তু অনেক সময় খাবারের প্রকৃতি বা কোনো অসুখের কারণে পাকস্থলীতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। এর ফলে হজম প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে এবং গলা, বুক জ্বালা করে। এই অতিরিক্ত HCI ক্ষরণের ফলে পাকস্থলীর অন্তর্গাত্রে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এই ক্ষত থেকে পেপটিক আলসার হতে পারে। এই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে প্রশমিত করার জন্য অ্যান্টাসিড ব্যবহার করা হয়।
● প্রয়োজনীয়তা :
আমাদের গৃহীত খাদ্যবস্তু হজমের এবং পরিপাকের জন্য পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) স্বাভাবিক নিয়মেই ক্ষরিত হয়। এর pHএর মান 1.5-3.5 হয়। কিন্তু অনেক সময় খাবারের প্রকৃতি বা কোনো অসুখের কারণে পাকস্থলীতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। এর ফলে হজম প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে এবং গলা, বুক জ্বালা করে। এই অতিরিক্ত HCI ক্ষরণের ফলে পাকস্থলীর অন্তর্গাত্রে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এই ক্ষত থেকে পেপটিক আলসার হতে পারে। এই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে প্রশমিত করার জন্য অ্যান্টাসিড ব্যবহার করা হয়।
* বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিসিড :
[1] সিস্টেমিক অ্যান্টাসিড : এরা জলে দ্রাব্য এবং সহজে শোষিত হয়। এই অ্যান্টাসিডগুলি শোষিত হওয়ার ফলে দেহের আ্যাসিড এবং ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট হয়। যেমন- সোডিয়াম বাই কার্বনেট।
[2] নন সিস্টেমিক অ্যান্টাসিড : এরা জলে সহজে দ্রবীভূত হয় না। পাচকরসের সঙ্গে বিক্রিয়ায় ক্লোরাইড লবণ গঠন করে। এই সব অ্যান্টাসিডগুলি শোষিত হয় না বলে দেহে অ্যাসিড ও ক্ষারের সমতার ভারসাম্য নষ্ট হয় না। যেমন ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রক্সাইড, অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড।
অ্যান্টাসিডের ওষুধের মূল উপাদান এবং তাদের কার্যকরিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
1) সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) :
কার্যকারিতা : এটি অত্যন্ত দ্রুত কার্যকরী কিন্তু এর কার্যকারিতার সময় অল্প।
বিক্রিয়া: NaHCO3 + HCl ➝ NaCl + CO2 + H2O
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :
i) অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রক্তে Na + আয়নের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রক্তচাপ বেড়ে যায়।
(ii) বেশিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে মূত্র ক্ষারধর্মী হয়ে যায় ফলে মূত্রনালির সংক্রমণ ঘটে।
(iii) অম্ল ও ক্ষারের সমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়।
2 ) অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড [Al(OH)3] :
কার্যকারিতা : ধীরে ধীরে কাজ করে কিন্তু স্থায়ী উপশম হয়।
বিক্রিয়া: Al(OH)3 + 3HCI ➝ AICl3 + 3H2O
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :
(i) কোষ্ঠকাঠিন্যর সম্ভাবনা থাকে।
(ii) রক্তে ফসফেট লেভেল কমে যায়।
(ii) পেপসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়।
3) ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রোক্সাইড [Mg(OH)2] :
কার্যকারিতা : দ্রুত কাজ করে, শীঘ্র আরাম দেয়।
বিক্রিয়া : Mg (OH)2 + 2HCl➝ MgCl2 + 2H2O
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : পেটের অসুখ ও উদরাময় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কতকগুলি অ্যান্টাসিড ওষুধ ও তাদের উপাদান :
1. মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া: এটি ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রোক্সাইডের জলীয় প্রলম্বন। এতে 7-8% Mg(OH)2, থাকে।
2. ডায়োভল: AI (OH)3 + Mg (OH)2 + MgCO3 এর মিশ্রণ (ট্যাবলেটরূপে বা জলীয় প্রলম্বন রূপে)
3. ইনো: NaHCO3 + সাইট্রিক অ্যাসিড + Na2CO3 মিশ্রণ।
4. ডায়াজিন: Al(OH)3 +Mg(OH)3 + ম্যাগনেশিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট সিমোথিকোন (ট্যাবলেট রূপে বা জেল রূপে)
5. জেলুসিল: Al(OH)3 +Mg (OH)2 + সিমেথিকোন (ট্যাবলেট রূপে বা জেল রূপে)
জেনে রেখো :
বর্তমানে জিন্টেক, ওমেজ,প্যান-40, অ্যাসিলক ইত্যাদি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলি খাবার খাওয়ার আগে খেতে হয়।ওষুধগুলিতে এমন সব উপাদান আছে যা HCI নিঃসরণ হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে অম্বল হয় না। এই অ্যান্টাসিডগুলিকে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটার (PPI) বলে।