আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে ভারতবর্ষে কৃষক আন্দোলনের পরিচয়

Ayin Ommanno Andolon Porbe Bharotborse Krisok Andoloner Porichoy

প্রশ্ন:- আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে ভারতবর্ষে কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও।

ভূমিকা :- গান্ধিজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করার পর শীঘ্রই তা উত্তরপ্রদেশ, বিহার, বাংলা, গুজরাট, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

উত্তরপ্রদেশ : রায়বেরিলি, আগ্রা, বারাবাঁকি, লখনউ, প্রতাপগড় সহ উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানের কৃষকদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে এখানে আইন অমান্য আন্দোলন প্রকৃত গণ আন্দোলনে পরিণত হয়। উত্তরপ্রদেশে আন্দোলনরত কৃষকরা সরকার, জমিদার ও তালুকদারদের খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। রফি আহমেদ, কালিকা প্রসাদ, অঞ্জনি কুমার প্রমুখ এখানকার কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

বিহার : আইন অমান্য আন্দোলনের প্রভাবে স্বামী সহজানন্দ, যদুনন্দন শর্মা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বিহারে কিষান সভা গঠন করেন। বিহারে কৃষক আন্দোলন মূলত অহিংস পথে চললেও মুঙ্গের ও মুজফ্ফরপুর থানা আক্রমণের মতো সহিংস ঘটনাও ঘটে।

বাংলা: জোতদারদের বিরুদ্ধে বাংলার মেদিনীপুর জেলার কাথি ও মহিষাদলে কৃষকরা আন্দোলনে অংশ নেয়। তাছাড়া আরামবাগ, শ্রীহট্ট প্রভৃতি স্থানেও কৃষক আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

গুজরাট : গুজরাট রাজ্যের সুরাট, বারদৌলি, খেদা প্রভৃতি অঞ্চলের কৃষকরা সত্যাগ্রহ আন্দোলন চালিয়ে যায়। পুলিশের অত্যাচার সত্ত্বেও বহু স্থানে কৃষকরা অন্তত ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত খাজনা দেওয়া বন্ধ রাখে।

কেরল: আইন অমান্য আন্দোলনের সময় কংগ্রেস নেতা কেলাপ্পান কেরলে কৃষকদের নিয়ে সত্যাগ্রহ পরিচালনা করেন।

অন্ধ্রপ্রদেশ: এই সময় অন্ধ্রপ্রদেশে বাল রামকৃষ্ণের নেতৃত্বে কৃষকরা খাজনা দেওয়া বন্ধ করে এবং সত্যাগ্রহ শুরু করে।

অন্যান্য প্রদেশে: এছাড়াও পাঞ্জাবে জলসেচ কর ও রাজস্ব হ্রাসের দাবিতে কৃষকরা আন্দোলন চালায়। মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটকের কৃষকরাও খাজনা দেওয়া বন্ধ করে।

উপসংহার :- আইন অমান্য আন্দোলন থেমে যাওয়ার পরও কৃষক আন্দোলন ধীরগতিতে চলতে থাকে। এই পর্বে বামপন্থী ও কমিউনিস্টরা কৃষকদের নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন।

Rlearn Education