Sirajuddaula natok suggestion
স্বনামধন্য নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ (১৯৩৮) নাটকের দ্বিতীয় অংকের প্রথম দৃশ্যটি দশম শ্রেণির পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আলোচনা করা হল |
“ওখানে কী দেখচ মূর্খ, বিবেকের দিকে চেয়ে দ্যাখাে।” – বক্তা কে ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি বক্তার কী মনােভাব লক্ষ্য করা যায়? ১+৩ [মাধ্যমিক ২০১৯]
উত্তর– শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে একথা বলেছিল সিরাজের মাসি ঘসেটি বেগম।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ সিরাজের প্রতি ঘসেটি বেগমের অত্যন্ত বিরূপ মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। ঘসেটি সিরাজের মাসি হলেও সিরাজ তাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করতেন কিন্তু সিরাজের প্রতি ঘসেটির আচরণ সন্তানসুলভ ছিল না। ঘসেটি বেগম সিরাজকে শুধু ঘৃণাই করত না বরং মনে মনে সে সিরাজের পতন কামনা করত।
সিরাজের জন্য ঘসেটি গৃহহারা হয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে সিরাজ তাকে মতিঝিল থেকে এনে নবাবের অন্দরমহলে গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। তার সঞ্চিত সম্পদ থেকেও তাকে বঞ্চিত করে রেখেছিলেন সিরাজ। তাছাড়া, যে সিংহাসনে সিরাজ উপবিষ্ট হয়েছিলেন সেই সিংহাসনের একজন দাবিদার ছিল ঘসেটির পালিত পুত্র। আর এইসব কারণে ঘসেটির মনে ক্ষোভের অন্ত ছিল না। সে এতটাই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছিল যে সিরাজের সামনেই তাঁর মৃত্যুকামনা করতে ভয় পায়নি। কোম্পানির ফৌজ মুর্শিদাবাদ আক্রমণ করে সিরাজকে পরাস্ত করুক, এই ছিল তার একান্ত বাসনা।
“এইবার হয় তাে শেষ যুদ্ধ!” কোন্ যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে? বক্তা এই যুদ্ধকে ‘শেষ যুদ্ধ’ বলেছেন কেন? ১+৩ [মাধ্যমিক ২০২০]
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে পলাশীর যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে।
বাংলার নবাব হিসেবে সিংহাসন লাভ করার পর থেকেই সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল রচনা করা হয়েছিল। আসলে অপুত্রক নবাবের দৌহিত্র সিরাজকে বাংলার মসনদের উত্তরাধিকারি হিসেবে অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। এমনকি, সিরাজের সিংহাসনে বসা নিয়ে তাঁর আত্মীয়স্বজনদের মনেও ক্ষোভ ছিল। ধূর্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর পূর্ণ সুযোগ নিয়েছিল। তারা সিরাজের আত্মীয়স্বজনদের মন বিষিয়ে দিয়েছিল এবং তাঁর সভাসদদের নবাব-বিরোধী কাজে প্ররোচিত করেছিল। একইসঙ্গে তারা সিরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজন শুরু করে দিয়েছিল। পলাশির প্রান্তরে যে যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সিরাজ সে খবর জানতেন। কথা প্রসঙ্গে সেই কথাই তিনি বেগম লুৎফাকে বলেছিলেন।
সিরাজ এই পলাশির যুদ্ধকেই ‘শেষ যুদ্ধ’ বলেছেন কারণ তিনি জানতেন যে, এই যুদ্ধে ইংরেজদের হারাতে পারলে ইংরেজদের প্রতিহত করা সম্ভব হবে এবং তিনি যদি হেরে যান তবে তাঁকে প্রাণে মরতে হবে।
“দরবার ত্যাগ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি জাঁহাপনা।”- বক্তা কে? তারা কেন দরবার ত্যাগ করতে চান? ১+৩ [মাধ্যমিক ২০২০]
উত্তর- শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে মীরজাফর একথা বলেছেন।
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্ররোচনায় সিরাজের সভাসদদের একাংশ রাজদ্রোহে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। সেই দলে ছিলেন মীরজাফর, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, জগতশেঠ প্রমুখ। আলোচ্য অংশে ‘আমরা’ বলতে এইসকল সভাসদদের বোঝানো হয়েছে। তারা নবাবের দরবার ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।
আসলে নবাব-বিরোধী সভাসদদের প্রধান মন্ত্রনাদাতা ছিলেন জনৈক ইংরেজ কর্মচারি ওয়াটস। এই ওয়াটস ছিল নবাবের দরবারে নিযুক্ত ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন প্রতিনিধি। রাজদ্রোহে লিপ্ত থাকার অপরাধে সিরাজ তাকে দরবার থেকে বিতাড়িত করেন। রাজা রাজবল্লভ এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে নবাব রাজদ্রোহী সভাসদদের সতর্ক করে বলেন যে সকলের কুকীর্তির খবর তিনি রাখেন। এই প্রসঙ্গে নবাব-অনুগামী মোহনলাল এবং মীরমদন নবাবের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানায়। তারা স্পষ্ট ভাষায় বলে, “আমরা নবাবের নিমক বৃথাই খাই না”। তাদের কথায় অপমানিত বোধ করেন নবাবের প্রধান সেনাপতি মীরজাফর। সেইজন্য তিনি স্বপক্ষীয় সভাসদদের সঙ্গে দরবার ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।
“বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না।”- কাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলা হয়েছে? কোন্ দুর্দিনের জন্য তাঁর এই আবেদন ? ১+৩ [মাধ্যমিক ২০১৯]
উত্তর– শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ তাঁর সভাসদদের উদ্দেশ্যে একথা বলেছিলেন।
সিরাজ সিংহাসনে আরোহণ করার পর থেকেই বাংলার রাজনৈতিক বাতাবরণ যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিল। একদিকে তাঁর নিজের আত্মীয়স্বজনরা তাঁর বিরুদ্ধে নানারকম চক্রান্ত শুরু করেছিল তো আরেকদিকে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবকে পর্যুদস্ত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। নবাব নিজে ইংরেজদের দুরভিসন্ধির কথা বুঝতে পারলেও তাঁর সভাসদরা ইংরেজদেরকেই আপন ভেবেছিল এবং নবাব-বিরোধী ষড়যন্ত্রে হাত মিলিয়েছিল।
এদিকে, দিন দিন ইংরেজদের ধৃষ্টতা লাগামছাড়া হয়ে উঠেছিল। কলকাতায় দুর্গ স্থাপন, জোর করে ফরাসি বাণিজ্যকুঠি দখল ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে কোম্পানির সঙ্গে নবাবের তিক্ততা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। নবাবের দরবারে নিযুক্ত কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটসের গোপন চিঠি আবিষ্কার হওয়ার পর নবাব জানতে পারেন যে কোম্পানি সেনা তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ-অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আলোচ্য অংশে সিরাজ এই দুর্দিনের কথা বলতে চেয়েছেন।
Hello my loved one I want to say that this post is amazing great written and include almost all significant infos I would like to look extra posts like this