বিপ্লবী আন্দোলনে লীলা নাগ|দীপালি সংঘের ভূমিকা

আলোচ্য বিষয় :

  • ভূমিকা
  • দীপালি সংঘের প্রতিষ্ঠা
  • দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য
  • দীপালি সংঘের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা
  • শিক্ষার প্রসারে দীপালি সংঘের ভূমিকা
  • পত্রিকা প্রকাশ
  • উপসংহার |

বিপ্লবী আন্দোলনে লীলা নাগ ও দীপালি সংঘের ভূমিকা : মাধ্যমিক ইতিহাস

প্রশ্ন : বিপ্লবী আন্দোলনে লীল নাগ ও দীপালি সংঘের ভূমিকা আলোচনা করো |


ভূমিকা: বিংশ শতকে কংগ্রেসের উদ্যোগে জাতীয় আন্দোলনগুলি ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণ করতে ব্যর্থ হলে বাংলায় সরকারের বিরুদ্ধে বৈপ্লবিক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই সময় নারীদের সংগঠিত করে বিপ্লবী কার্যকলাপে শামিল করার ক্ষেত্রে দীপালি সংঘের গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

দীপালি সংঘের প্রতিষ্ঠা: কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করার পর সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ লীলা নাগ (রায়) (১৯০০-৭০ খ্রি.)
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় দীপালি সংঘ নামে একটি নারী সংগঠন স্থাপন করেন। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, বীণা দাস, শান্তি দাস প্রমুখ এই সংঘের সদস্যা ছিলেন।

প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য: দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে লীলা নাগের উদ্দেশ্য ছিল নারী সমাজকে সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে শামিল করা। মেয়েদের বিপ্লবী আন্দোলন পরিচালনার যোগ্য করে তোলার জন্য এই সংঘ উৎসাহ প্রদান করত।

প্রশিক্ষণ: মেয়েদের সাহস ও শক্তিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দীপালি সংঘে নিয়মিত লাঠিখেলা, শরীরচর্চা, অস্ত্রচালনা শিক্ষা প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া হত। এ ছাড়া মেয়েদের হাতের কাজ, শিল্পকর্ম প্রভৃতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ‘দীপালি শিল্প প্রদর্শনী’ (১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে) গড়ে তোলা হয়।

শিক্ষার প্রসার: শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে দীপালি সংঘ ঢাকায় ১২টি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এ ছাড়া তাদের উদ্যোগে ‘দীপালি স্কুল’, ‘নারী শিক্ষামন্দির’, ‘শিক্ষাভবন’ প্রভৃতি ইংরেজি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় | লীলা নাগ ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে ‘দীপালি ছাত্রী সংঘ’ নামে ভারতের প্রথম ছাত্রী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

পত্রিকা প্রকাশ: লীলা নাগ দীপালি সংঘের পক্ষ থেকে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় তিনি এই পত্রিকার নাম রাখেন ‘জয়শ্রী’|

উপসংহার: লীলা নাগ শুধু বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডে নয়, তিনি সমাজকল্যাণেও নিজেকে উজাড় করে দেন। ১৯৪৬-এর দাঙ্গা- বিধবস্ত নোয়াখালিতে তিনি ত্রাণকার্যে যোগ দেন। তিনি ‘ন্যাশনাল সার্ভিস ইন্সটিটিউট’ নামে একটি জনকল্যাণমূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় গণ- পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভারতীয় সংবিধান রচনায়ও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *