চুয়াড় বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট | মাধ্যমিক ইতিহাস

West Bengal Madhyamik History Suggestion | Class ten History Suggestion| History Suggestion for Madhyamik | Dosom srenir itihas Suggestion| WBBSE History Suggestion| Important Questions Answer for Madhyamik Exam| Model Question paper Madhyamik History Exam | Madhyamik History Suggestion |Madhyamik History Suggestion | Rlearn Education |Samrat Exclusive Suggestion| Ready Steady go Madhyamik Suggestion| Madhyamik Challengers Suggestion|Khan sir Suggestion| Jewel Sir Suggestion|Rlearn Education| Class Ten Suggestion 2025 | Madhyamik History Suggestion 2025 | Class Ten Suggestion

চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে আলোচনা করো ।

অথবা , চুয়াড় বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব বর্ণনা করো ।

ভূমিকা :

মেদিনীপুর , বীরভূম , বাঁকুড়া , ঘাটশিলায় চুয়াড় উপজাতির কৃষকেরা ১৭৬৮ থেকে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সাতবার যে বিদ্রোহ করেছিল , তা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত । এগুলির মধ্যে ১৭৯৮-১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে পরিচালিত বিদ্রোহ ছিল দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ ।

বিদ্রোহের কারণ :

চুয়াড় বিদ্রোহের কারণগুলি হল—

জমি দখল : কৃষিকাজ ও পশুপালন ছিল চুয়াড়দের প্রধান জীবিকা । বাংলায় কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার পর কোম্পানির কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলের জমিদারদের জমি দখল করে তার ওপর অত্যন্ত চড়া হারে ভূমিরাজস্ব ধার্য করলে জমিদাররা এবং তাদের পাইক চুয়াড়রা এর বিরোধিতা করে ।

জীবিকা সমস্যা : সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমি ( পাইকান ) দখল , চুয়াড় বিদ্রোহের অন্যতম কারণ । জমি – নির্ভর চুয়াড়দের অধিকাংশ জমি কোম্পানি দখল করে নিলে তারা জীবিকাহীন হয়ে পড়লে চুয়াড়রা বিদ্রোহের সূচনা করে ।

চুয়াড় বিদ্রোহের ব্যাপ্তি : দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ শুরু হলে রায়পুরের পূর্বতন জমিদার দুর্জন সিংহ , মেদিনীপুরের জমিদার রাণি শিরোমণি এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন । এই বিদ্রোহ রায়পুর , তমলুক , রামগড় , শালবনী , বাসুদেবপুর প্রভৃতি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে । দুর্জন সিং – এর নেতৃত্বে অন্তত ৩০ টি গ্রামের সর্দার ও পাইকরা দল বেঁধে লুটপাট চালায় ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে । এই বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন গোবর্ধন দিকপতি , লাল সিং মোহনলাল প্রমুখ ।

বিদ্রোহর দমন :

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে চুয়াড় বিদ্রোহে মেদিনীপুরের শান্তি বিঘ্নিত হলে প্রথমত , লর্ড ওয়েলেসলি দুটি সেনাদলের সাহায্যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন । দ্বিতীয়ত , সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের গ্রেপ্তার করে গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়ে তাদের ঘাঁটিগুলি জ্বালিয়ে , তাণ্ডব চালিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে এই বিদ্রোহ দমন করে । তৃতীয়ত , বিভাজন নীতির আশ্রয় নিয়ে চুয়াড় ও পাইকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এবং জমিদারদের নানাভাবে আশ্বস্ত করে কৌশলে চুয়াড় বিদ্রোহের অবসান ঘটানো হয় ।

গুরুত্ব :

চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্বগুলি হল——

কৃষক চৈতন্য : প্রাণশক্তি নিপীড়িত কৃষকরা বুঝেছিল যে , জমিদারদের নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া অপেক্ষা ব্রিটিশ শাসনের অবসান বেশি জরুরি ।

ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম : জমিদার ও কৃষকরা মিলিত হয়ে এই বিদ্রোহ সংগঠিত করেছিল যা অত্যন্ত বিরল ঘটনা ।

অনুপ্রেরণাস্থল : বিদ্রোহীদের আত্মত্যাগ ও ন্যায্য অধিকার রক্ষার সংগ্রাম পরবর্তীকালে আরও বৃহত্তর সংগ্রামের দিশারি ছিল ।

স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ : অধ্যাপক নরহরি কবিরাজ বলেছেন যে চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল নিম্নশ্রেণির মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত অথচ ব্যাপক বিদ্রোহ ।

Rlearn Education