ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ | সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিনক্রোনাস উপগ্রহ

আজকের পোষ্টে আমরা মাধ্যমিক ভূগোল বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ এবং সানসিনক্রোনাস উপগ্রহ বা সূর্যসমলয় উপগ্রহ নিয়ে আলোচনা করবো– যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ | বিষয়টি অধ্যায়ন করলে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর পেতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ |সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিনক্রোনাস উপগ্রহ | মাধ্যমিক ভূগোল

ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ কি ?

পৃথিবীর উপর অবস্থিত কোনো স্থানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পৃথিবীর আবর্তন গতির সাথে সমান গতিতে যে সকল কৃত্রিম উপগ্রহগুলি পৃথিবীর চারিদিকে পরিক্রমণ করে , তাদের ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ (Geostationary Satellite) বলে ।

উদাহরণঃ ভারতের ইনস্যাট সিরিজের স্যাটেলাইট, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের GOES, জাপানের GMS প্রভৃতি ।

বৈশিষ্ট্যঃ ভূসমলয় উপগ্রহ – এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ –

  • পৃথিবীর নিরক্ষীয় তল বরাবর এগুলি অবস্থান করে ।
  • এগুলি মোটামুটিভাবে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬০০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থান করে ।
  • পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তনের সাথে সাথে সমলয়ে এরাও আবর্তিত হয় ।
  • অনেক উপরে অবস্থানজনিত সুবিধার কারণে এরা পৃথিবীর প্রায় অর্ধাংশেরও সম্পূর্ণ চিত্র সংগ্রহ করতে সক্ষম ।
  • এই উপগ্রহগুলি যোগাযোগ ও আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
  • একই জায়গায় অবস্থান করে বলে এরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রচুর চিত্র তুলতে সক্ষম ।

গুরুত্বঃ ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহগুলি আধুনিক পৃথিবীর তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে এবং তা বিশেষ করে পরিবহণ – যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আবহাওয়া বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে । কারণ উপগ্রহ – গুলি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে নিরবিচ্ছিন্ন- ভাবে প্রচুর চিত্র তুলে পাঠাতে পারে । তাই এদের Information Satellite ও বলে ।

সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিনক্রোনাস উপগ্রহ কি ?

উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু কক্ষপথে সূর্যের সাথে আপাত কৌণিক সামঞ্জস্য রেখে যে সকল কৃত্রিম উপগ্রহগুলি পৃথিবীকে পরিক্রমণ করে চলেছে , তাদের সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিনক্রোনাস উপগ্রহ ( Sun- Synchronous Satellite ) বলে ।

উদাহরণ: ভারতের IRS সিরিজের স্যাটেলাইট , ফ্রান্সের SPOT , আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের LANDSAT সিরিজের স্যাটেলাইট প্রভৃতি ।

বৈশিষ্ট্য :

সূর্যসমলয় উপগ্রহ – এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ——–

  • পৃথিবীর দুই মেরু তল বরাবর এগুলি অবস্থান করে ।
  • এগুলি মোটামুটিভাবে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭০০ – ১০০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থান করে ।
  • পৃথিবীর দুই মেরুর নিকটবর্তী অঞ্চল বরাবর উত্তর থেকে দক্ষিণে এরা প্রদক্ষিণ করে ।

  • এরা পৃথিবীর প্রতিটি অক্ষরেখাকে প্রায় একই স্থানীয় সময়ে অতিক্রম করে ।

  • এই উপগ্রহগুলি ভূসম্পদ জরিপ ও সমীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।

  • এরা দিনে প্রায় গড়ে ১৪ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ।


গুরুত্বঃ সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিন – ক্রোনাস উপগ্রহগুলি আধুনিক পৃথিবীর তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে এবং তা বিশেষ করে ভূসম্পদ জরিপ ও সমীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে । কারণ উপগ্রহগুলি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সম্পদসংক্রান্ত প্রচুর চিত্র তুলে পাঠাতে পারে । তাই এদের Resource Monitoring Satellite ও বলে ।

ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহ ও সূর্যসমলয় উপগ্রহ বা সানসিনক্রোনাস উপগ্রহের পার্থক্য :

Rlearn Education