হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ| মাধ্যমিক ভূগোল

হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশান |

হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি হল—
[1] করি বা সার্ক: হিমবাহের উৎসমুখী ক্ষয়কার্যের কারণে উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে সার্ক বা করি সৃষ্টি হয়|হিমবাহ যখন উঁচু পার্বত্য অঞ্চল থেকে নীচের দিকে নামে তখন একইসঙ্গে হিমবাহের অবঘর্ষ ও উৎপাটন প্রক্রিয়ার দরুন পর্বতের ঢালের পিছনদিকে খাড়া দেয়াল, মধ্যভাগে অর্ধবৃত্তকার গহ্বর এবং সামনে ধাপসমন্বিত হাতলযুক্ত ডেক চেয়ারের মতো ভূমিরূপ গঠিত হয়। এইরকম ভূমিরূপকে স্কটল্যান্ডে করি এবং ফ্রান্সে সার্ক বলা হয়।

একটি করির তিনটি অংশ দেখা যায়—
[i] করির পিছনদিকে একটি খাড়া দেয়াল
থাকে |
[ii] করির মধ্যভাগে একটি অর্ধবৃত্তাকার গর্ত বা খাত থাকে এবং
[iii] করির নীচের দিকে বা প্রান্তভাগে উটের কুঁজের মতো একটি অংশ বর্তমান।

হিমবাহ-গলা জল করিতে জমে হ্রদ সৃষ্টি হলে তাকে বলা হয় করি বা টার্ম হ্রদ, যেমন—হিমালয়, আল্পস প্রভৃতি হিমবাহ অধ্যুষিত পার্বত্য অঞ্চলে এই প্রকার হ্রদ দেখতে পাওয়া যায়|
উদাহরণ: অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত
ওয়ালকট পৃথিবীর গভীরতম করি বা সার্ক।

[2] এরিটি বা অ্যারেট : হিমবাহের উৎসমুখী ক্ষয়ের ফলে একই পর্বতশৃঙ্গের দুই দিকে দুটি করির সৃষ্টি হলে ও তাদের আয়তন ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে মধ্যবর্তী সংকীর্ণ খাড়া শিরা বা তীক্ষ্ম প্রাচীরের মতো অংশকে বলা হয় এরিটি বা অ্যারেট।

বৈশিষ্ট্য : [i] এরিটিগুলি প্রায় ছুরির ফলার মতো ধারালো হয়। [ii] কোনো অংশ যদি ভেঙে যায় তাহলে এক সার্ক থেকে অন্য সার্কে যাওয়ার ‘গিরিপথ’ সৃষ্টি হয়|
উদাহরণ: হিমালয় এবং কারাকোরাম পর্বতে অনেক এরিটি দেখা যায়।

[3] পিরামিড চূড়া: পার্বত্য উপত্যকায় হিমবাহের উৎসমুখী ক্ষয়কার্যের অন্যতম নিদর্শন হল পিরামিড চূড়া। একটি পর্বতের বিভিন্ন দিকে পাশাপাশি তিন-চারটি বিপরীত মুখী ‘করি’-র সৃষ্টি হলে সেগুলি ক্রমাগত মস্তকদেশের দিকে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে একটি পিরামিডের মতো আকৃতির চূড়া গঠন করে। এজন্য এর নাম পিরামিড চূড়া বা হর্ন।
উদাহরণ: আল্পস পর্বতের ম্যাটারহর্ন এরকম একটি বিখ্যাত পিরামিড চূড়া। গঙ্গোত্রীর কাছে নীলকণ্ঠ শৃঙ্গও পিরামিড চূড়ার নিদর্শন।

Welcome Visitor

Rlearn Education