হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতভুক্তির ইতিহাস

Hydrabad Rajjo Kibhabe Bharote Ontorbhukto Hoi :

হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতভুক্ত হওয়ার ইতিহাস : মাধ্যমিক ইতিহাস

ভূমিকা :- ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় দক্ষিণ ভারতের হায়দ্রাবাদ ছিল সর্ববৃহৎ দেশীয় রাজ্য। হায়দ্রাবাদের প্রধান শাসক নিজাম নামে পরিচিত ছিলেন।

জনবিন্যাস : ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় হায়দ্রাবাদের নিজাম ছিলেন ওসমান আলি খান। হায়দ্রাবাদের শাসক মুসলিম হলেও রাজ্যের অন্তত ৮৭ শতাংশ জনগণই ছিল হিন্দু।

ভারত-বিদ্বেষ : ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগের পর হায়দ্রাবাদের ভারত বিদ্বেষী নিজাম ভারত বা পাকিস্তানে যোগ না দিয়ে নিজ রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করেন। সাম্প্রদায়িক নেতা কাশিম রিজভির নেতৃত্বে ‘রাজাকার’ নামে হায়দ্রাবাদের দাঙ্গাবাহিনী সীমান্তবর্তী ভারতীয় ভূখণ্ডের হিন্দুদের ওপর চরম অত্যাচার শুরু করলে হিন্দুরা ভারতের ত্রাণশিবিরগুলিতে আশ্রয় নেয়।

জটিলতা বৃদ্ধি : হায়দ্রাবাদের নিজাম সেখানকার মুসলিমদের ভারতের বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণার আহ্বান জানান। হায়দ্রাবাদ পাকিস্তান থেকে অস্ত্রশস্ত্র এনে এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ ও আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে।

অপারেশন পোলো : এই জটিল পরিস্থিতিতে ভারত হায়দ্রাবাদকে একটি চরমপত্র পাঠালে নিজাম তা উপেক্ষা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর জেনারেল জে এন চৌধুরীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী হায়দ্রাবাদে অভিযান শুরু করে, যা ‘অপারেশন পোলো’ নামে পরিচিত।

আত্মসমর্পণ : ভারতীয় আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়ে হায়দ্রাবাদের বাহিনী শীঘ্রই পরাজিত হয় এবং ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে। ফলে হায়দ্রাবাদ ভারতের দখলে আসে।

হায়দ্রাবাদের ভারতভুক্তি : এরপর হায়দ্রাবাদে গণভোটের আয়োজন করা হলে অধিকাংশ প্রজা ভারতভুক্তির পক্ষে সম্মতি দেয়। নিজাম জাতিপুঞ্জে আবেদনের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তিনি’ভারতভুক্তির দলিল’-এ স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। হায়দ্রাবাদ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

উপসংহার :- হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতভুক্তি ভারতের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি ছিল।১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ভাষা ভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের সময় এই রাজ্যকে তিনটি অংশে ভাগ করে অন্ধ্র, বোম্বাই ও মহীশূর রাজ্যের সাথে যুক্ত করা হয়।

Rlearn Education