ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা : মাধ্যমিক ইতিহাস

Madhyamik History Model Questions| মাধ্যমিক ইতিহাস মডেল প্রশ্ন

প্রশ্ন:- ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলি কী কী ?

ভূমিকা :- ইন্টারনেট থেকে নানা তথ্য ও চিত্র সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন বর্তমান কালের ঐতিহাসিকরা। ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধা আছে। যেমন —

তথ্যের সহজলভ্যতা : ইনটারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে অতি সহজে ইতিহাস সহ দুনিয়ার যাবতীয় তথ্য জেনে নেওয়া যায়। অন্য কোনো মাধ্যম থেকে এত সহজে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।

স্বল্প অর্থব্যয় : বিভিন্ন বইপত্র কিনে, গ্রন্থাগার বা গবেষণাগারে নিয়মিত যাতায়াত করে ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয় করতে হয়, তা ইনটারনেটের ক্ষেত্রে করতে হয় না। খুব সামান্য অর্থব্যয় করে ইনটারনেটের মাধ্যমে সেই সব তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব।

সময় সাশ্রয় : বইপত্র বা অন্য কোনো সূত্র থেকে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়। কিন্তু ইনটারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে খুব বেশি সময় নষ্ট হয় না। এমনকি, ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত কোনো সুবিশাল বইয়ের কোথায় প্রয়োজনীয় তথ্য বা শব্দগুলি আছে তাও সার্চ করে নিমেষেই বের করা যায়।

দুর্লভ তথ্যপ্রাপ্তি: ইনটারনেটের মাধ্যমে নানা ধরনের অনলাইন লাইব্রেরি থেকে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কোনো বইয়ের কপি, অনলাইন আর্কাইভ থেকে আসল রিপোর্টের কপি প্রভৃতি পাওয়া সম্ভব।

সহজে প্রশ্নের উত্তর লাভ :তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মনে কোনো প্রশ্ন জাগলে অনেকসময় ইনটারনেটে সেই প্রশ্ন লিখেও সরাসরি উত্তর পাওয়া যায়।

উপসংহার : ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেটের নানান সুবিধা থাকা সত্ত্বেও একে অতিমাত্রায় নির্ভরযোগ্য ভাবা ভুল হবে। তাই ইনটারনেট থেকে ইতিহাসের কোনো তথ্যসংগ্রহের জন্য একটু সতর্ক থাকতেই হবে।

প্রশ্ন:- ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি কী?

ভূমিকা : বর্তমান যুগ তথ্য বিস্ফোরণের যুগ নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে সম্প্রতি ইনটারনেট ব্যবস্থার ব্যাপক প্রসার। এটি ব্যবহার করে খুব সহজে এবং নিমেষে বিভিন্ন বিষয়ের মতো ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্যাদিও সংগ্রহ করা যায়। কিন্তু ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেট ব্যবহারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন –

নির্ভরযোগ্যতার অভাব : ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি কতটা যথার্থ বা নির্ভরযোগ্য তা যাচাই করা খুব কঠিন। একই বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পৃথক পৃথক তথ্য থাকায় পাঠক বা গবেষকরা বিভ্রান্ত হন।

মনগড়া তথ্য : ইনটারনেটে আজকাল যে-কেউ নিজের মনগড়া তথ্য আপলোড করছে। ফলে তা গবেষণার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অসুবিধার সৃষ্টি করছে।

গবেষণার মান হ্রাস : ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন অসত্য বা অর্ধসত্য তথ্য ব্যবহার করতে গিয়ে পাঠক ও গবেষকগণ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং তার সাথে গবেষণার গুণগত মানও কমে যাচ্ছে।

তথ্যের অসম্পূর্ণতা :বহু ক্ষেত্রে ইনটারনেটে বই বা গবেষণার অংশবিশেষ পাওয়া যায়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কাজটি পাওয়া না যাওয়ায় পাঠক ও গবেষকগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন হন।

উপসংহার :- উক্ত অসুবিধাগুলি সত্ত্বেও বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইনটারনেটকে অস্বীকার করার উপায় নেই। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে সময়ের অপচয় রোধ, অফুরন্ত তথ্যের জোগান প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইনটারনেটের জুড়ি মেলা ভার।

Rlearn Education