জাতীয় শিক্ষা পরিষদ : মাধ্যমিক ইতিহাস


ভূমিকা : ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশি আন্দোলন শুরু হলে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে স্বদেশি বা জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে গড়ে-ওঠা জাতীয় শিক্ষা পরিষদ জাতীয় শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

[1] উদ্দেশ্য: জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল—জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা, নৈতিক শিক্ষা দান করা, মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো প্রভৃতি।

[2] বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা: স্বদেশি প্রথায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে 1906 খ্রিস্টাব্দের
15 আগস্ট জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ| সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন এর সুপারিন্টেন্ডেন্ট। রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, বিনয়কুমার সরকার, হারানচন্দ্র চাকলাদার, সখারাম গণেশ দেউসকর, ধর্মানন্দ কোশাম্বী প্রমুখ খ্যাতনামা শিক্ষকরা এখানে শিক্ষাদান
করতেন।

[3] বহু জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা: জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রেরণায় বাংলার বিভিন্ন স্থানে জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। 1906 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউট। বিভিন্ন ধনবান ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নিযুক্ত হন রাসবিহারী ঘোষ|

[4] সামাজিক অবদান: জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে বহু শিক্ষার্থী স্নাতক হয়ে
পরবর্তী জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছে। এসব প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় শিক্ষা পরিষদছাত্রসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন অবিনাশ চন্দ্ৰ ভট্টাচার্য এবং যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন হীরালাল রায় ও উপেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ।

উপসংহার: ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ শহর ও বাংলার বিভিন্ন স্থানে জাতীয় কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এই পরিষদ জাতীয় আদর্শ অনুসারে শিক্ষাদান, পাঠ্যসূচি নির্মাণ, আধুনিক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি উদ্যোগ গ্রহণ করে।

The post জাতীয় শিক্ষা পরিষদ : মাধ্যমিক ইতিহাস appeared first on Rlearn Education.

Rlearn Education