জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ : মাধ্যমিক ভূগোল

Madhyamik Geography Suggestion|Joar Vata Sristir karon

জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ :

জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণগুলি হল—

পৃথিবীর ওপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ বল:

নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুসারে,এই বিশ্ব- ব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি বস্তুই একে অপরকে আকর্ষণ করে। সুতরাং গ্রহ, উপগ্রহ,সূর্য প্রভৃতি প্রতিটি জ্যোতিষ্কই পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই হিসেবে চাঁদ, সূর্য ও
পৃথিবী একে অপরকে আকর্ষণ করে। তবে সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর ওপর চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি হয়। যদিও চাঁদের তুলনায় সূর্যের ভর প্রায় 260 লক্ষ গুণ বেশি কিন্তু পৃথিবী থেকে চাঁদ যত দূরে আছে, সূর্য রয়েছে তার থেকে প্রায় 389 গুণ বেশি দূরে (চাঁদ ও পৃথিবীর দূরত্ব প্রায় 3 লক্ষ 84 হাজার কিমি কিন্তু সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব প্রায় 15 কোটি কিমি)।

এজন্য জোয়ারভাটা সৃষ্টির ক্ষেত্রে চাঁদের আকর্ষণ সূর্যের আকর্ষণের প্রায় 2.2 গুণ বেশি। তাই প্রধানত চাঁদের আকর্ষণে পৃথিবীর জলরাশি ফুলে ওঠে অর্থাৎ জোয়ার হয়। সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবীতে জোয়ার হলেও তা অতটা বেশি বা প্রবল আকার ধারণ করে না। তবে পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করলে জোয়ারের তীব্রতা বেশি হয়।

পৃথিবীর আবর্তন গতিজনিত কেন্দ্রাতিগ বল:

পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে ভূপৃষ্ঠে একটি বিকর্ষণ শক্তি বা কেন্দ্রাতিগ বলের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের জলরাশি বাইরের দিকে বিক্ষিপ্ত হওয়ার প্রবণতা লাভ করে। এই বল পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করে। এজন্য চাঁদের আকর্ষণে যেখানে জোয়ার হয় তার ঠিক বিপরীত দিকে বা প্রতিপাদ স্থানে চাঁদের মহাকর্ষ শক্তির তুলনায় পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব বেশি কার্যকরী হওয়ায় জোয়ারের সৃষ্টি হয়। উপযুক্ত দুটি কারণে পৃথিবীর যে দুটি স্থানে জলস্ফীতি ঘটে বা জোয়ারের সৃষ্টি হয় ঠিক তার সমকোণে অবস্থিত দুটি স্থান থেকে জল জোয়ারের দিকে সরে যায়। ফলে ওই স্থান দুটির জলতল নেমে গিয়ে ভাটার সৃষ্টি হয়।

Comments 1

Rlearn Education