জৈব রসায়ন (Organic chemistry)|Madhyamik Physical Science

জৈব যৌগের সাধারণ ধর্ম ও নামকরণ (General properties of organic Compounds and Nomenclature)

Content Topic :
➤ অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর (VSAQ)
➤ IUPAC পদ্ধতিতে নাম
➤ জৈব ও অজৈব যৌগের পার্থক্য
➤ অ্যালকেন, অ্যালকিন এবং অ্যালকাইন
➤ সমাবয়বতা
➤ ইথেন, ইথিলিন এবং অ্যাসিটিলিন অণুর গঠন
➤ ক্যাটিনেশন ধর্ম
➤ কার্যকরী মূলকের সংজ্ঞা
➤ বিভিন্ন যৌগের কার্যকরী মূলকের সংকেত |

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান (MP Physical Science) : জৈব রসায়ন

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর (VSAQ) :

1. অজৈব যৌগ থেকে প্রস্তুত প্রথম জৈব যৌগের নাম (MP 2020) : ইউরিয়া (NH2CONH2) |

2. n সংখ্যক কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকেনে হাইড্রোজেন পরমাণুর সংখ্যা (MP 2016) : 2n+2 |

3. অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলক হল —- হাইড্রক্সিল ( – OH ) |

4. অ্যালডিহাইডের বা অ্যাসিটালডিহাইডের কার্যকরী মূলক হল — ফরমাইল ( –CHO )|

5. একটি জীবজ অণুর উদাহরণ – গ্লুকোজ |

6. দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু যুক্ত একটি হাইড্রোকার্বনের গঠন (MP 2010) : H−C≡C−H (আ্যাসিটিলিন) |

7. তিনটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকাইনের আনবিক সংকেত ( MP 2013) : C3H4

8. সমসংখ্যক কার্বন পরমাণু যুক্ত অ্যালকিন ও অ্যালকাইনের মধ্যে হাইড্রোজেন পরমাণুর সংখ্যার পার্থক্য ( MP 2014) : 2

9. অ্যালকিনের সাধারণ সংকেত [MP 2011] : CnH2n

10. প্রোপান্যাল এর সংকেত (MP 2018) : CH3CH2CHO

11. সরলতম হাইড্রো কার্বন : CH4

12. একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন (MP 2018) : C2H6

13. মিথেন অণুর H – C – H বন্ধন কোনের মান : 109⁰28′

14. অ্যালকাইনের সাধারণ সংকেত ( MP2012) : CnH2n-2

15. সরলতম অ্যালকেন : মিথেন |

16. দুটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকিল গ্রুপ ( MP 2019) : ইথাইল |

17. আ্যাসিটোনে উপস্থিত কার্যকরী মূলক : >C=O

18. কোন পলিমারটি জৈব ভঙ্গুর নয় : টেফলন |

19. পিভিসি-এর মনোমার হল : ভিসি (ভিনাইল ক্লোরাইড ) |

20. ইথিলিনের পলিমারকে বলে : পলিথিন |

IUPAC পদ্ধতিতে নাম :

1. CH3-CH2 – CH2 – OH (MP 2017) : 1 – প্রোপানল বা প্রোপান -1 -অল |

2. CH3-CH – CH3-OH (MP 2017) : 2 – প্রোপানল বা প্রোপান – 2 – অল |

3. CH3CHO : ইথান্যাল |

4. CH3CH2CHO : প্রোপানাল

5. CH3COOH : ইথানোয়িক অ্যাসিড

6. CH3CH2COOH : প্রোপানোয়িক অ্যাসিড

7. CH3CH2CH2COOH : বিউটানোয়িক অ্যাসিড |

8. CH3CH2CH2CH2COOH : পেন্টানোয়িক অ্যাসিড |

জৈব ও অজৈব যৌগের পার্থক্য :
১। সমস্ত জৈব যৌগের অণুতে কার্বন থাকবেই । যেমন: CH4, C2H3OH ইত্যাদি ।পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের অণুতে কার্বন থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে ।

২। জৈব যৌগগুলি সমযোজ্যতা দ্বারা গঠিত । সুতরাং, জৈব যৌগগুলি সমযোজী : যেমন: মিথেন, ইথেন প্রভৃতি । অজৈব যৌগগুলি তড়িৎযোজী হতে পারে আবার সমযোজীও হতে পারে ।

৩। জৈব যৌগগুলি সাধারণত জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় । এরা সাধারণত জলে অদ্রাব্য | পক্ষান্তরে অজৈব যৌগগুলি সাধারণত জল এবং সমধর্মী দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় এবং এরা জৈব দ্রাবকে অদ্রাব্য ।

৪। সাধারণত জৈব যৌগের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক অজৈব যৌগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম, তাদের উদ্বায়ীতাও বেশি । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক জৈব যৌগের তুলনায় অনেক বেশি । এগুলি সাধারণত অনুদ্বায়ী ।

৫। জৈব যৌগগুলি দাহ্য প্রকৃতির হয় । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগগুলি সাধারণত দাহ্য নয় ।

৬। জৈব যৌগগুলি অনেকক্ষেত্রে পলিমারাইজেশন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে | পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের ক্ষেত্রে পলিমারাইজেশন বিক্রিয়া খুবই কম ।

অ্যালকেন , অ্যালকিন এবং অ্যালকাইন :

যে হাইড্রোকার্বনে এক বা একাধিক কার্বন-কার্বন ত্রি-বন্ধন ( — C ≡ C — ) থাকে, তাদের অ্যালকাইন বলে । এরা অসম্পৃক্ত জৈব যৌগ । এরা এক অণু হাইড্রোজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রথমে অ্যালকিন এবং পরে আরও এক অণু হাইড্রোজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অ্যালকেন অণু গঠন করে । এই শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত CnH2n-2 , যেখানে n হল ধনাত্বক পূর্ণসংখ্যা । অ্যাসিটিলিন (C2H2) এদের প্রতিনিধিমূলক যৌগ । অ্যাসিটিলিনের আণবিক গুরুত্ব 26 । গঠন মূলক সংকেত হল H — C ≡ C —H । 1865 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এডমন্ড ডেভী অ্যাসিটিলিন (Acetylene) গ্যাস আবিষ্কার করেন ।

যেসব হাইড্রোকার্বনের যৌগে কার্বন পরমাণুগুলো পরস্পর একক বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং কার্বনের অবশিষ্ট বন্ধনগুলো হাইড্রোজেন দ্বারা পূর্ণ থাকে সে সমস্ত হাইড্রোকার্বনকে অ্যালকেন (Alkane) বলে। যেমন– মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6) ইত্যাদি। অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত হল CnH2n+2।

যে জৈব যৌগের কার্বন শিকলে অন্তত একটি কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে এবং কার্বনের অবশিষ্ট যোজনীগুলো হাইড্রোজেন দ্বারা পূর্ণ থাকে তাকে অ্যালকিন বলে।

যেমন, ইথিন(CH2= CH2), প্রোপিন( CH3-CH=CH2) ইত্যাদি ।

অ্যালকিনের সাধারণ সংকেত= CnH2n । এখানে n= 1, 2, 3…..ইত্যাদি যা অ্যালকিন অণুতে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা নির্দেশ করে।

জৈব যৌগের গঠনগত সমাবয়বতা (Constitutional Isomerism of Organic Compounds) :

সমাবয়বতা (Isomerism) : একই আণবিক সংকেত যুক্ত কিন্তু আলাদা গঠন ও ধর্মবিশিষ্ট একাধিক জৈব যৌগ পাওয়া যায় । এই ঘটনাকে সমাবয়বতা (Isomerism) বলে এবং এই ধরনের যৌগগুলিকে সমাবয়ব বা আইসোমার (Isomer) বলে ।

গঠনগত সমাবয়বতা (Constitutional Isomerism) : দুটি যৌগের একই আণবিক সংকেত থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ধরণের গঠন সংকেত (structural formula) থাকে, ওই সমাবয়ব যৌগগুলির মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম দেখা যায়, তখন ওই ঘটনাকে গঠনগত সমাবয়বতা বলে । গঠনগত সমাবয়বতা তিন ধরনের যথা: (ক) শৃঙ্খল ঘটিত সমাবয়বতা, (খ) অবস্থান ঘটিত সমাবয়বতা, (গ) কার্যকরী মূলক ঘটিত সমাবয়বতা ।

(ক) শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়বতা (Chain Isomerism) : কার্বন শৃঙ্খলের বিভিন্নতার জন্য জৈব যৌগে যে সমাবয়বতা সৃষ্টি হয়, তাকে শৃঙ্খল ঘটিত সমাবয়বতা বলে । যেমন: C4H10 সংকেত থেকে দুটি ভিন্ন গঠন যুক্ত যৌগ পাওয়া যায় ।

(খ) অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা (Positional Isomerism) : একই কার্বন শৃঙ্খল যুক্ত জৈব যৌগে প্রতিস্থাপিত পরমাণু বা কার্যকরী মূলকের ভিন্ন অবস্থানের জন্য যে সমাবয়বতার সৃষ্টি হয়, তাকে অবস্থান ঘটিত সমাবয়বতা বলে ।

গ) কার্যকরী মূলক ঘটিত সমাবয়বতা (Functional group Isomerism) :- একই আণবিক সংকেত বিশিষ্ট একাধিক যৌগে বিভিন্ন কার্যকরী মূলকের উপস্থিতির জন্য যে সমাবয়বতার সৃষ্টি হয়, তাকে কার্যকরী মূলক ঘটিত সমাবয়বতা বলে ।

যেমন— কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের দ্বারা সমযোজী বন্ধনে উৎপন্ন C2H6O যা ওই পরমাণু ত্রয়ের দ্বারা একটি যৌগের আণবিক সংকেত । ওই যৌগটি আবার বিভিন্নভাবে বিন্যস্ত হয়ে দুটি যৌগ তৈরি করে : প্রথমটি C2H5OH (কার্যকরী মূলক —OH) এবং দ্বিতীয়টি CH3—O—CH3 (কার্যকরী মূলক —O—) । এই দুটি যৌগে উপাদান হিসাবে C, H এবং O -এর ওজনের অনুপাত একই কিন্তু এরা ভিন্ন প্রকৃতির যৌগ । একটি হল অ্যালকোহল যা জলে দ্রাব্য এবং অন্যটি ইথার জলে দ্রাব্য নয়|



কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম :
যে ধর্মের জন্য কার্বন পরমাণুগুলি সমযোজী বন্ধনের (এক-বন্ধন, দ্বি-বন্ধন, ত্রি-বন্ধন) সাহায্যে পরস্পর যুক্ত হয়ে সুস্থিত কার্বন শৃঙ্খল গঠন করে, কার্বন পরমাণুর সেই বিশেষ ধর্মকে শৃঙখল গঠন বা ইংরেজি পরিভাষায় ক্যাটিনেশন বলে।

কার্যকরী মূলক :
কোনো জৈব যৌগে উপস্থিত যে পরমাণু বা পরমাণুগোষ্ঠী অথবা চিহ্ন উক্ত যৌগের সমগোত্রীয় শ্রেণীর পরিচয় বহন করে এবং সকল রাসায়নিক ধর্ম কার্যতভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক বা ক্রিয়াদর্শী মূলক বলে ।

কতকগুলি কার্যকরী মূলকের সংকেত এবং ওদের দ্বারা সৃষ্ট যৌগের শ্রেণির নাম দেওয়া হল :

Rlearn Education