লা নিনা ( La – Nina)

Content Topic:

  • লা – নিনার অর্থ
  • লা – নিনার সংজ্ঞা
  • লা – নিনার বৈশিষ্ট্য
  • লা – নিনা প্রভাবিত অঞ্চল
  • লা – নিনার প্রভাব |

লা নিনা ( La – Nina) : মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল

লা নিনা ( La – Nina) :

অর্থ : La-Nina একটি স্পেনীয় শব্দ, যার ইংরেজি অর্থ The little girl অর্থাৎ, ছোটো মেয়ে। সুতরাং অর্থের দিক থেকে La-nina হলো El-nino (the little boy)-এর ঠিক বিপরীত।

সংজ্ঞা : দক্ষিণ আমেরিকার পেরু ও ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূলের অদূরে 5° উত্তর থেকে 5° দক্ষিণ অক্ষাংশে ও 90°-120° পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে বা নিরক্ষীয় পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কয়েক বছর অন্তর শীতকালে যে অতি শীতল (স্বাভাবিক থেকে প্রায় 4°C এর কম) উত্তরমুখী শীতল সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয় তাকে লা-নিনা বলে।লা নিনাকে মাঝে মাঝে El-Viejo ও Anti El-Nino বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য :
[1] প্রকৃতি: লা-নিনা একটি সাময়িক শান্ত ও শীতল উত্তরমুখী সমুদ্রস্রোত।
[2] আবির্ভাবের সময়: প্রায় 2-10 বছর অন্তর শীতকালে আবির্ভাব ঘটে।
[3] স্থায়িত্ব: অধিকাংশ ক্ষেত্রে লা-নিনার স্থায়িত্বকাল 6 মাস। তবে কখনো কখনো 2 বছর যাবৎ চলতে পারে।
[4] উষ্ণতা: পেরু ও ইকুয়েডর উপকূলে জলের উষ্ণতা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় 4° সেলসিয়াস হ্রাস পায়।
[5] ঊর্ধ্বমুখী আবর্ত: সংলগ্ন সমুদ্রজলে ঊর্ধ্বমুখী আবর্ত প্রক্রিয়া ঘটতে থাকে।

প্রভাবিত অঞ্চল : দক্ষিণ আমেরিকার পেরু, চিলি, ইকুয়েডর, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, উত্তর ও মধ্য আমেরিকার কোস্টারিকা, পানামা, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশ, মাইক্রো ও মেলানেশিয়া দ্বীপপুঞ্জ, এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস্, ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব আইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মায়ানমার ইত্যাদি স্থানে লা-নিনার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

লা – নিনার প্রভাব :

লা নিনার প্রভাবগুলি নিয়ে নীচে আলোচনা করা হলা—
পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব :
[1] ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পূর্ব অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে টাইফুন, ব্যাগুই, উইলি প্রভৃতি ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। যার ফলস্বরূপ, প্রচুর সম্পত্তিহানি ও জীবনহানি ঘটে থাকে।
[2] এই সমস্ত দেশগুলিতে বন্যার প্রকোপ বাড়ে। যেমন—2011 সালে ভারতে সৃষ্ট বন্যা।
[3] ভারতের মৌসুমি জলবায়ুর স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করে।
পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব :
[1] খরা: পেরু, চিলি, ইকুয়েডর, উত্তর ও মধ্য আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে, উচ্চচাপের অবস্থানের কারণে অনাবৃষ্টি, খরা ও শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।
[2] তুষারপাত: আলাস্কা, কলম্বিয়া, ক্যালিফোর্নিয়াতে তুষারপাতের প্রাধান্য দেখা যায়।
[3] জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব: পেরু উপকূলে মাছের সমাগম ঘটে। এছাড়া সামুদ্রিক কীটপতঙ্গ, জলজ প্রাণী ও
উদ্ভিদের সমৃদ্ধি ঘটে জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি পায়।
[4] হিমশৈলের আগমন: শীতল লা নিনার প্রভাবে দক্ষিণে কুমেরু স্রোতের ভাসমান হিমশৈলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

Rlearn Education