মাধ্যমিক বাংলা 2017 সালের প্রশ্নের সমাধান
১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো: ১ x১৭=১৭
১.১ গিরীশ মহাপাত্রের সাথে অপূর্বর পুনরায় কোথায় দেখা হয়েছিল ?
(ক) পুলিশ স্টেশনে (খ) জাহাজ ঘাটে (গ) রেল স্টেশনে (ঘ) বিমান বন্দরে
Ans. (গ) রেল স্টেশনে
১.২ বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল—
(ক) আট টাকা দশ আনা (খ) আট টাকা আট আনা (গ) দশ টাকা চার আনা (ঘ) দশ টাকা দশ আনা
Ans. (ক) আট টাকা দশ আনা
১.৩ হোলির দিন দলের ছেলেরা অমৃত আর ইসাবকে এক রকম পোষাকে দেখে কি করতে বলেছিল ?
(ক) ছবি আঁকতে (খ) হোলি খেলতে (গ) কুস্তি লড়তে (ঘ) ফুটবল খেলতে
Ans. (গ) কুস্তি লড়তে
১.৪ ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?
(ক) লোরচন্দ্রানী (খ) পদ্মাবতী (গ) সতীময়না (ঘ) তোহফা
Ans. (খ) পদ্মাবতী
১.৫ “প্রদোষ কাল ঝঞ্ঝা বাতাসে রুদ্ধশ্বাস,”— ‘প্রদোষ’ শব্দের অর্থ —
(ক) সন্ধ্যা (খ) ভোর (গ) রাত্রি (ঘ) দুপুর
Ans. (ক) সন্ধ্যা
১.৬ ইন্দ্রজিতের স্ত্রীর নাম—
(ক) ইন্দিরা (খ) সরমা (গ) নিকষা (ঘ) প্রমিলা
Ans. (ঘ) প্রমিলা
১.৭ “সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন” তার পোশাকি নাম—
(ক) রিজার্ভার (খ) স্টাইলাস (গ) পার্কার (ঘ) পাইলট
Ans. (খ) স্টাইলাস
১.৮ নিজের হাতের কলমের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল যে লেখকের, তার নাম—
(ক) বনফুল (খ) পরশুরাম (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (ঘ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
Ans. (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
১.৯ যাদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ লেখা হয় তাদের প্রথম শ্রেণিটি —
(ক) ইংরেজি ভাষায় দক্ষ (খ) বাংলা ভাষায় দক্ষ (গ) ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে (ঘ) ইংরেজি জানে এবং ইংরেজি ভাষায় অল্পাধিক বিজ্ঞান পড়েছে
Ans. (গ) ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে
১.১০ বিভক্তি—
(ক) সর্বদা শব্দের পূর্বে বসে (খ) সর্বদা শব্দের পরে যুক্ত হয় (গ) শব্দের পরে আলাদা ভাবে বসে (ঘ) শব্দের পূর্বে আলাদা ভাবে বসে
Ans. (খ) সর্বদা শব্দের পরে যুক্ত হয়
১.১১ “তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে ।” নিম্নরেখ পদটি —
(ক) অপাদান কারক (খ) কর্ম কারক (গ) করণ কারক (ঘ) অধিকরণ কারক
Ans. (গ) করণ কারক
১.১২ কর্মধারয় সমাসে প্রাধান্য থাকে —
(ক) পূর্বপদের অর্থের (খ) পরপদের অর্থের (গ) উভয়পদের (ঘ) ভিন্ন অর্থ সমস্ত পদের
Ans. (খ) পরপদের অর্থের
১.১৩ “ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে তো একেবারেই গররাজি”— নিম্নরেখ পদটি কোন সমাসের উদাহরণ ?
(ক) অব্যয়ীভাব (খ) নঞতৎপুরুষ (গ) বহুব্রীহি (ঘ) কর্মধারয়
Ans. (খ) নঞতৎপুরুষ
১.১৪ “এইটুকু কাশির পরিশ্রমেই সে হাঁফাতে লাগিল” — বাক্যটি কোন শ্রেণির ?
(ক) সরল বাক্য (খ) জটিল বাক্য (গ) যৌগিক বাক্য (ঘ) মিশ্র বাক্য
Ans. (ক) সরল বাক্য
১.১৫ যে বাক্যে সাধারণভাবে কোনো কিছুর বর্ণনা বা বিবৃতি থাকে, তাকে বলা হয়—
(ক) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য (খ) নির্দেশক বাক্য (গ) আবেগসূচক বাক্য (ঘ) প্রশ্নবোধক বাক্য
Ans. (খ) নির্দেশক বাক্য
১.১৬ যে বাক্যে কর্ম কর্তা রূপে প্রতীয়মান হয় তাকে বলে—
(ক) কর্মবাচ্য (খ) কর্তৃবাচ্য (গ) ভাববাচ্য (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য
Ans. (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য
১.১৭ “পাঁচ দিন নদীকে দেখা হয় নাই” — এটি কোন বাচ্যের উদাহরণ ?
(ক) কর্তৃবাচ্য (খ) ভাববাচ্য (গ) কর্মবাচ্য (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য
Ans. (খ) ভাববাচ্য
২. কমবেশি ২০টি শব্দের মধ্যে উত্তর লেখো: ১x১৯=১৯
২.১ যে কোন ৪টি প্রশ্নের উত্তর দাও: ১x৪=৪
২.১.১ তপনের গল্প পড়ে ছোট মাসি কী বলেছিল ?
Ans. তপনের গল্প পড়ে ছোটোমাসি তার লেখার প্রশংসা করেছিল এবং একটি সন্দেহের সুরে জিজ্ঞাসাও করেছিল যে সে আদৌ কোনোখান থেকে টুকলিফাই বা নকল করেছে কি না ।
২.১.২ “এক একখানি পাতা ছিঁড়িয়া দুমড়াইয়া মোচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল ।”— উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল ?
Ans. ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের নায়ক নদের চাঁদ তার পকেটে থাকা একটি পুরানো চিঠির পাতা জলে ফেলতে লাগল ।
২.১.৩ “ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল।” —ভ্রম’টি কী ?
Ans. ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের নাম— গদ্যাংশের নায়ক, অপূর্ব ফাস্ট ক্লাস প্যাসেঞ্জার হওয়ায় ভেবেছিল যে কেউ তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে না এবং সে রাত্রিতে সুখনিদ্রার মধ্যেই পরের দিন ভামো পৌঁছে যাবে । একেই ‘ভ্রম’ বলা হয়েছে ।
২.১.৪ ‘অদল বদল’ গল্পটি কে বাংলায় তরজমা করেছেন ?
Ans. ‘অদল বদল’ গল্পটি বাংলায় তরজমা করেছেন অর্ঘ্যকুসুম দত্তগুপ্ত ।
২.১.৫ জগদীশবাবু তীর্থভ্রমণের জন্য কত টাকা বিরাগীকে দিতে চেয়েছিলেন ?
Ans. জগদীশবাবু তীর্থভ্রমণের জন্য বিরাগীকে একশো এক টাকা দিতে চেয়েছিলেন ।
২.২ যে-কোনো ৪টি প্রশ্নের উত্তর দাও: ১x৪=৪
২.২.১ “শিশু আর বাড়িরা খুন হলো”—’শিশু আর বাড়িরা’ খুন হয়েছিল কেন ?
Ans. ‘রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো’ যুদ্ধের করাল থাবার আঘাতে ‘শিশুরা আর বাড়িরা’ খুন হয়েছিল ।
২.২.২ “আমাদের পথ নেই আর”— তাহলে আমাদের করণীয় কী ?
Ans. পথ না থাকার দরুন আমাদের আজ একতাবদ্ধ হয়ে ‘আরো বেঁধে বেঁধে’ থাকতে হবে ।
২.২.৩ “এসো যুগান্তের কবি”— কবির ভূমিকাটি কী হবে ?
Ans. ‘যুগান্তের কবি’ আসন্ন সন্ধ্যায় শেষ রশ্মিপাতে দাঁড়িয়ে মানহারা মানবীকে শোনাবে সভ্যতার শেষ পুণ্যবানী’ — ‘ক্ষমা করো ।’
২.২.৪ “অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো”— কোথায় অস্ত্র ফেলার কথা বলা হয়েছে ?
Ans. গানের চরণযুগলে অস্ত্র ফেলার কথা বলা হয়েছে ।
২.২.৫ “দেখিয়া রুপের কলা/ বিস্মিত হইল বালা /অনুমান করে নিজ চিতে ।”—’বালা’ কী অনুমান করেছিল ?
Ans. প্রশ্নের উদ্ধৃত অংশে ‘বালা’ অর্থাৎ সমুদ্রকন্যা পদ্মা, অচেতন পদ্মাবতীকে দেখে অনুমান করেছিল এই কন্যা হয়তো ইন্দ্রশাপে স্বর্গভ্রষ্ট কোনো বিদ্যাধরী অর্থাৎ স্বর্গের গায়িকা ।
২.৩ যে-কোনো ৩টি প্রশ্নের উত্তর দাও: ১x৩=৩
২.৩.১ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ -এ বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির দাম কত ?
Ans. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ -এ বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির দাম আড়াই হাজার পাউন্ড ।
২.৩.২ “আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতাম ।” — বক্তা কেন তা পুকুরে ফেলে দিতেন ?
Ans. প্রশ্নের উদ্ধৃত অংশের প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ হোমটাস্কের জন্য ব্যবহৃত কলাপাতা পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন কারণ তা গোরুতে খেয়ে নিলে অমঙ্গল হবে ।
২.৩.৩ বিশ্ববিদ্যালয়-নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি নবাগত রাসায়নিক বস্তুর ইংরেজি নাম সম্বন্ধে কী বিধান দিয়েছিলেন ?
Ans. বিশ্ব বিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি নবাগত রাসায়নিক বস্তুর ইংরেজি নাম বাংলা বানানে লেখার বিধান দিয়েছেন । যেমন- অক্সিজেন, প্যারাডাইক্লোরোবেনজিন ।
২.৩.৪ পরিভাষার উদ্দেশ্য কী ?
Ans. পরিভাষার উদ্দেশ্য হল অর্থ সুনির্দিষ্টকরণ ও ভাষা ও ভাবের সংক্ষিপ্তকরণ ।
২.৪ যে-কোনো ৮টি প্রশ্নের উত্তর দাও: ১x৮=৮
২.৪.১ ‘শূন্য বিভক্তি’ কাকে বলে ?
Ans. যে বিভক্তি শব্দের সহিত যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে কিন্তু নিজে প্রকাশিত হয় না, তাকে বলে শূন্য বিভক্তি । যেমন— আমি ভাত খেয়ে বিদ্যালয়ে যাই । এক্ষেত্রে ‘ভাত’ হল এমন একটি পদ যেখানে শূন্য বিভক্তি প্রযুক্ত হয়েছে ।
২.৪.২ ‘অস্ত্র রাখো’ —নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো ।
Ans. অস্ত্র = কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি ।
২.৪.৩ নিত্য সমাস কাকে বলে ?
Ans. নিত্য সমাস : যে সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না, সর্বদাই সমাসবদ্ধ থাকে, ব্যাসবাক্যে তার পূর্বপদ ও পর পদের মাত্র একটি ব্যবহার হয়, অন্যটির অর্থ ভিন্ন শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা হয় তাকে নিত্য সমাস বলা হয় ।
২.৪.৪ ‘চরণ কমলের ন্যায়’ —ব্যাসবাক্যটি সমাসবদ্ধ করে সমাসের নাম লেখো ।
Ans. চরণ কমলের ন্যায় = চরণকমল । এটি হল উপমিত কর্মধারয় সমাস ।
২.৪.৫ আমি গ্রামের ছেলে —বাক্যটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশ চিহ্নিত করো ।
Ans. ‘আমি’ হল উদ্দেশ্য এবং ‘গ্রামের ছেলে’ হল বিধেয় ।
২.৪.৬ একটি অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের উদাহরণ দাও ।
Ans. একটি অনুজ্ঞাসূচক বাক্য হল — দরজা বন্ধ করো ।
২.৪.৭ কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তনের অন্তত একটি পদ্ধতি উল্লেখ করো ।
Ans. কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তনের জন্য কর্তার সাথে ‘দ্বারা’, ‘দিয়ে’, ‘কর্তৃক’ ইত্যাদি অনুসর্গ প্রয়োগ করতে হবে ।
২.৪.৮ প্রযোজক কর্তার একটি উদাহরণ দাও ।
Ans. শিক্ষিকা আমাদের ভূগোল পড়ান । ‘শিক্ষিকা’ হল প্রযোজক কর্তা । এক্ষেত্রে ‘শিক্ষিকা’ নিজে ক্রিয়া সম্পাদন না করে ‘আমাদের’ দিয়ে তা করাচ্ছেন । তাই ‘শিক্ষিকা’ হল প্রযোজক কর্তা ।
২.৪.৯ অসিতবাবু আর কোনো প্রশ্ন করলেন না — প্রশ্নবাচক বাক্যে পরিবর্তন করো ।
Ans. অসিতবাবু আর কোনো প্রশ্ন করলেন কি ?
২.৪.১০ এ কার লেখা ? — কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তন করো ।
Ans. এ কে লিখেছে ?
৩. প্রসঙ্গ নির্দেশ-সহ কমবেশি ৬০টি শব্দের উত্তর দাও: ৩+৩=৬
৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৩x১=৩
৩.১.১ হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়েছিলেন ? তিনি কীভাবে মাস্টারমশাই কে বোকা বানিয়েছিলেন ? (১+২)
Ans. সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের মুখ্য চরিত্র, বহুরূপী হরিদা পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়েছিলেন ।
♦ হরিদা পুলিশ সেজে স্কুলের চারজন ছাত্রকে আটক করেছিলেন যারা লিচুবাগানে অনধিকার প্রবেশ করেছিল । ছেলেগুলো ভয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে । অবশেষে বিদ্যালয়ের মাস্টারমশাই পুলিশবেশী হরিদার স্বরূপ না বুঝতে পেরে তাকে অনুরোধ করেন ছেলেদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য এবং আট আনা উপঢৌকন দিয়ে ছাত্রদের মুক্ত করেন । এইভাবেই হরিদা তার সুনিপুণ সাজসজ্জা ও অভিনয় কৌশলের মাধ্যমে মাস্টারমশাইকে বোকা বানিয়ে ছিলেন ।
৩.১.২ “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে” —কে বুঝতে পেরেছে ? নদীর বিদ্রোহ বলতে সে কী বোঝাতে চেয়েছে ? (১+২)
Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়- এর লেখা “নদীর বিদ্রোহ” গল্পের মুখ্য চরিত্র নদের চাঁদ নদীর বিদ্রোহের কারণ বুঝতে পেরেছে ।
♦ নদীর উত্তাল ভয়ঙ্কর রূপ নদের চাঁদকে ভাবতে বাধ্য করেছে, যে মানুষের প্রযুক্তি প্রকৃতিকে বন্দি করে নিজেদেরই ক্ষতি করেছে । প্রকৃতির রুদ্ররোষ মানুষের সৃষ্ট গর্বের সৌধ ভেঙ্গে খান খান
করে দিতে পারে । সেই কারণে প্রকৃতি তথা নদী প্রতিশোধ নিতে চায় । এই উপলব্ধি নদের চাঁদের মনে আসামাত্র নতুন ব্রীজ নিয়ে তার গর্ব চুরমার হয়ে যায় ।
৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.২.১ “আসছে নবীন — জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন !” — উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য লেখো ।
Ans. “আসছে নবীন — জীবন হারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন ।”
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের “প্রলয়োল্লাস” কবিতায় চলমান জীবনের জয়গান গাওয়া হয়েছে । কালের অগ্রগতিতে জীবন এসে হাত ধরে নূতনের । শাশ্বত জীবন ধারায় যা কিছু অ-সুন্দর তার বিনাশ ঘটিয়ে বিশ্বচরাচরে নূতনের আহ্বানকে মুক্ত করে । ধ্বংসের মাঝেই লুকিয়ে থাকে সৃষ্টির বীজ । তাই চির আশাবাদী কবি পরাধীন ভারতীয়দের জীবনহারা অ-সুন্দর জীবনের ইতি টেনে নবীনকেই স্থায়ী আসন দিতে চেয়েছেন ।
৩.২.২ “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;” —কাহাকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে ? তার বিস্ময়ের কারণ কী ? (১+২)
Ans. কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ -র প্রথম সর্গ থেকে গৃহীত ‘অভিষেক’ নামাঙ্কিত কাব্যাংশে উল্লিখিত ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে রাবণ পুত্র বীর মেঘনাদ ওরফে ইন্দ্রজিৎকে ।
♦ ইন্দ্রজিৎ ধাত্রী মা প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণকারী রক্ষঃকুললক্ষ্মীর কাছ থেকে শুনতে পেয়েছিলেন যে, রাঘবশ্রেষ্ঠ রামচন্দ্রের হাতে তাঁর প্রিয় ভ্রাতা, বীরবাহু নিহত হয়েছেন । তাই পুত্রশোকে আহত ও ক্রুদ্ধ রাজা রাবণ ‘সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি’ । কিন্তু ইন্দ্রজিতের স্পষ্টভাবে মনে রয়েছে যে তিনি নিশারণে রাঘবদের পরাজিত করেছিলেন, শুধু তাই নয় তিনি তাদের খণ্ড খণ্ড করে কেটেও ছিলেন । সুতরাং মৃত রামচন্দ্র কিরুপে পুনর্জীবন লাভ করে
বীরবাহুকে হত্যা করতে পারেন — এই বিষয়টাই ‘মহাবাহু’ ইন্দ্রজিতের বিস্ময়ের কারণ হয়ে উঠেছিল ।
৪. কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫
৪.১ “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোল আনাই বজায় আছে ।” — বাবুটি কে ? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও । (১+৪)
Ans. কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের নাম গদ্যাংশে উল্লিখিত ‘বাবু’টি ছিলেন, ‘রাজনৈতিক সন্দেহভাজন’ সব্যসাচী মল্লিক ওরফে ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র ।
♦ গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা ছিল খুবই হাস্যকর । ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েও সে যেভাবে তার পোশাকের সৌখিনতা বজায় রেখেছিল তা পুলিশ অফিসার নিমাইবাবুর কাছে রীতিমতো জিজ্ঞাসার বিষয় হয়ে উঠেছিল । তার মাথায় চুল ছিল সামনের দিকে বড় বড়, ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই বললেই চলে, এমনই ছোটো করে ছাঁটা । মাথায় চেরা সিঁথি । চুল অপর্যাপ্তভাবে তৈলনিষিক্ত । তার লেবুর তেলের গন্ধবিলাসে পুলিশ স্টেশনের সকলের মাথা ধরে গিয়েছিল । গিরীশের গায়ে ছিল রামধনু রঙা জাপানি সিল্কের চুড়িদার পাঞ্জাবি, যার পকেট থেকে দেখা যাচ্ছিল বাঘ আঁকা রুমালের কিছু অংশ । পরনে বিলাতি মিলের তৈরি কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি । পায়ে লোহার নাল দেওয়া বার্নিশ করা পাম্প-শু, সবুজ ফুল মোজা, যা হাঁটুর উপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা । গিরীশের হাতে ছিল হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি । তবে, গৌরবর্ণ, কৃশকায় গিরীশের জামাকাপড় দীর্ঘ জাহাজ যাত্রার ধকলে যেন ময়লা হয়ে গিয়েছিল বলে লেখক মত প্রকাশ করেছেন ।
৪.২ জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল, তা বর্ণনা করো ।
Ans. সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু একটি পার্শ্বচরিত্র । তিনি শিক্ষিত, মার্জিত ও ভদ্র, সৌম্য-শান্ত চেহারার অধিকারী, ধনী হলেও কৃপণ । তাঁর জীবনের দুর্বলতা হল অন্ধ ভক্তি । সুখ-শান্তির আশায় সাধু সন্ন্যাসী দেখলেই তাঁদের তিনি তুষ্ট করার চেষ্টা করতেন । সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেই বহুরূপী হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন ।
♦ হরিদা শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে বহুরুপী নয়, তার ব্যক্তিগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্রে ভরা । তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদারকে আমরা দেখতে পাই । এক স্নিগ্ধ-শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দায় চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর চোখের পাতা পড়ছিল না । কারণ সিঁড়ির কাছে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি জটাধারী, হাতে কমণ্ডলু, চিমটে, মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোন সন্ন্যাসী নন, তিনি একজন বিরাগী, যার আদুড় গা এবং তার উপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোট বহরের থান, মাথার সাদা চুল বাতাসে উড়ছে, ধুলোমাখা হাত-পা, কাঁধে ঝোলা, ঝোলার মধ্যে বই বলতে গীতা । তাঁকে দেখে জগদীশবাবুর মনে হয়েছিল তিনি যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তার চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাত্ত শান্ত এক দৃষ্টি । বলাবাহুল্য তিনি আর কেউ নয়, সন্ন্যাসীবেশী হরিদা । হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে অভাবী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর দেওয়া সমস্ত সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন । কথক ও তাঁর বন্ধুরা যখন অভাবী হরিদা প্রণামী না নেওয়ার জন্য হরিদাকে কাঠগোড়ায় তুলেছেন, হরিদা তখন শিল্প ও শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্লিপ্তভাবে বলেছেন,
— “তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয় ।”
৫. কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫
৫.১ “হায় ছায়াবৃতা” — ‘ছায়াবৃতা’ বলার কারণ কী ? তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখো । (১+৪)
Ans. কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পত্রপুট’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আফ্রিকা’ কবিতার প্রশ্নোদ্ধৃতাংশে অসূর্যম্পশ্যা, বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন সূর্যের আলো ও সভ্যতার আলো প্রবেশ না করায় তাকে ‘ছায়াবৃতা’ বলা হয়েছে ।
♦ ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবিগুরু আফ্রিকার জন্মলগ্ন থেকে তার বিবর্তনের কথা ও সর্বশেষে ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে তার বন্দিনী হওয়ার করুন আখ্যান বর্ণনা করেছেন । জন্মমুহূর্তে আফ্রিকা প্রাচী ধরিত্রীর অখন্ড অংশের সাথে যুক্ত ছিল । কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল জলস্রোতে সে মাতৃহারা হল, আশ্রয় নিল অরণ্যের বন্ধনে, যেখানে সূর্যরশ্মিরও প্রবেশ নিষেধ । এই ঘন অরণ্যবেষ্টিত আফ্রিকা ক্রমশ ভীষণ থেকে ভীষণতর হয়ে উঠছিল, চিনছিল জলস্থলের দুর্বোধ সংকেত । কবির কথায় —
“বিদ্রুপ করেছিলে ভীষণকে
বিরূপের ছদ্মবেশে”
আফ্রিকার এই স্বাধীন সফর, নিজেকে চিনতে শেখার সফর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সমাপ্ত হয়ে গেল । তার কোমল কায়ায় থাবা বসলো মানুষ— নেকড়ের দল যারা নিজেদের পাশ্চাত্যের শিক্ষিত সম্প্রদায় বলেই পরিচয় দিয়ে থাকেন । ঔপনিবেশিক শক্তির আক্রমণে আফ্রিকার কুমারীত্ব গেল ঘুচে । তার বনজ ও মানবিক সম্পদ দখল করে নিল ‘মানুষ ধরার দল’ কালিমালিপ্ত হল ইতিহাস, অপমানিত আফ্রিকার অশ্রুজলে । আফ্রিকার অবগুণ্ঠিত ক্রন্দনে —
“বাষ্পাকুল হল অরণ্যপথে,
পঙ্কিল হলো ধুলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে”
ছায়াবৃতা আফ্রিকার কালো ঘোমটার নীচে লুক্কায়িত মানবী রূপ প্রকাশিত হল বিশ্বের কাছে, কিন্তু সে যে যন্ত্রণাদায়ক প্রকাশ । কবি একথা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন । তাই তিনি ‘যুগান্তের কবি’ কে আহ্বান করেছেন এবং বিশ্বমানবতাকে বলেছেন এই ‘মানহারা মানবী’র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে । কবির কথায়, এই ক্ষমাভিক্ষাই হয়ে উঠুক ‘সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’ ।
৫.২ “যেখানে ছিল শহর /সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা ।” — ‘অসুখী একজন’ কবিতা অবলম্বনে শহরের এই পরিণতি কীভাবে হল লেখো ।
Ans. চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদার “অসুখী একজন” কবিতায় অপেক্ষমান নারীর মধ্যে ভালোবাসার অনির্বাণ রূপটি ফুটে উঠেছে । কথক তাঁর প্রিয় নারীকে রেখে বহুদূরে চলে যান । অপেক্ষারতা জানত না যে তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । সময় চলমান তাই তা অতিক্রম করে কালকে । কথকের পদচিহ্ন ধুয়ে যায় । তাঁর চলার পথে ঘাস জন্মায় তবুও নারীর প্রতীক্ষার অবসান ঘটে না ।
এইভাবে প্রতিক্ষার প্রহর গুণতে গুণতে সময়ের পাল্লা ভারী হয়ে মেয়েটির মাথায় যেন চিন্তার পাহাড় নেমে আসে । যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ে শহরে । আগুনের করাল গ্রাসে ধ্বংস হয় শিশু দেবতারা । শান্ত হলুদ দেবতারা তাঁদের মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে । কবির স্বপ্নের বাড়ি-ঘর সব চূর্ণ হয়ে যায়, পুড়ে যায় আগুনে । যেখানে শহর ছিল সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা, পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা, আর রক্তের একটা কালো দাগ । কিন্তু এত সবের মধ্যেও কবির প্রিয়তমা বেঁচে রইলেন । কারণ, প্রেম শ্বাশত তার মৃত্যু নেই । সেই জন্য ধ্বংসের মাঝেও বেঁচে থাকে মেয়েটির অনির্বাণ ভালবাসা, বেঁচে থাকে ভালবাসার জন্য প্রতীক্ষা । আগামীর প্রত্যাশায় যা চিরন্তন অমলিন স্মৃতিতে ভাস্বর ।
৬. কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১=৫
৬.১. “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চায় এখনও নানা রকম বাধা আছে ।” — এই বাধা দূর করতে লেখক কী কী পরামর্শ দিয়েছেন, তা আলোচনা করো ।
Ans. “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা” — প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা বিষয়ে বিভিন্ন বাধা ও তার দূরীকরণ বিষয়ে নিম্নরূপ আলোচনা করেছেন —
প্রথমত, ইংরেজী জানেন এবং ইংরেজীতে বিজ্ঞান পাঠ এমন পাঠকের বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা বেশ কঠিন ।
দ্বিতীয়ত, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপযুক্ত পারিভাষিক শব্দের অভাব এ পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
তৃতীয়ত, পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানবোধ খুবই কম । সামান্য বিজ্ঞানবোধ না থাকলে বিজ্ঞান ভিত্তিক রচনা বোধগম্য হয় না । তাই বাংলায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে গিয়েছে ।
চতুর্থত, অনেক লেখকের ভাষা আড়ষ্টতা ও ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ দোষে দুষ্ট হয়ে রচনা তার সাবলীলতা হারায় ।
পঞ্চমত, অনেকে পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে রচনাকে সহজ বোধ্য করার ভাবনা ভাবলেও তা বাস্তবতা পায়নি ।
ষষ্ঠত, উপমা ও রূপক ছাড়া অন্যান্য অলংকার বিজ্ঞানভিত্তিক রচনার গুরুত্বকে লঘু করে দেখায় ।
সপ্তমত, শেষ বাধাটি হল ভুল তথ্য পরিবেশন । অনেকেই না জেনে বা সামান্য জেনে বাংলায় বিজ্ঞান রচনায় ভুল তথ্য পরিবেশন করেন ।
প্রাবন্ধিকের মতে আলোচিত বাধাগুলি অতিক্রম করতে না পারলে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব নয় ।
৬.২ ‘ফাউন্টেন পেন’ বাংলায় কী নামে পরিচিত ? নামটি কার দেওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে ? ফাউন্টেন পেনের জন্ম ইতিহাস লেখো (১+১+৩)
Ans. বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার ওরফে শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ অনুযায়ী ‘ফাউন্টেন পেন’ বাংলায় ‘ঝরনা কলম’ নামে পরিচিত ।
♦ উক্ত নামটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া বলে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন ।
♦ তথাকথিত ‘ফাউন্টেন পেন’ -এর পূর্বনাম ছিল ‘রিজার্ভার পেন’ । একেই উন্নত করে ‘ফাউন্টেন পেন’ -এর রূপদান করা হয়েছিল । ‘ফাউন্টেন পেন’ -এর স্রষ্টা ছিলেন, লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান নামে জনৈক ব্যবসায়ী । তিনি একবার অন্য আরেক ব্যবসায়ীর সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করতে গিয়েছিলেন । কিন্তু চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করা কালীন দোয়াতে রাখা কালি কাগজের উপর উল্টে পড়ে যায়, ফলে ওয়াটারম্যানকে কালি সংগ্রহের জন্য পুনরায় বাইরে যেতে হয় । কিন্তু ফিরে এসে তিনি শোনেন ইতিমধ্যে অন্য এক তৎপর ব্যবসায়ী চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে চলে গিয়েছেন । দোয়াতে রাখা কালির জন্য ঘটা এই দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, এই উদ্দেশ্যে ওয়াটারম্যান ‘ফাউন্টেন পেন’ -এর আবিষ্কার করেছিলেন । এইভাবে লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান ফাউন্টেন পেন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ”কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিলেন ।
৭. কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪
৭.১ ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাট্যাংশ অবলম্বনে সিরাজদৌলার চরিত্র বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো ।
Ans. শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজ এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । তাঁর চরিত্রের যে গুণগুলি সহজেই আমাদের আকর্ষণ করে, সেগুলি হল —
দেশাত্মবোধ :- সিরাজ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় ষড়যন্ত্রকে কখনোই ব্যক্তিগত আলোকে দেখেন নি । বরং বাংলার বিপর্যয়ের দুশ্চিন্তাই তাঁর কাছে প্রধান হয়ে ওঠে । বাংলাকে বিদেশী শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি অধস্তনের কাছে ক্ষমা চাইতে বা শত্রুর সঙ্গে সন্ধিতেও পিছপা হন না ।
সাম্প্রদায়িক মানসিকতা:- সিরাজ বুঝেছিলেন বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, শুধু মুসলমানের নয়— হিন্দু মুসলমান মিলিত প্রতিরোধই বাংলাকে ব্রিটিশের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতে পারে । সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত এই জাতীয়তাবোধ সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত ।
আত্মসমালোচনা :- নবাব সিরাজদ্দৌলা বুঝেছিলেন ষড়যন্ত্রীরা যেমন ভুল করেছে, তেমনি তাঁর নিজেরও অনেক ত্রুটি আছে । তাই তিনি বাংলার বিপদের দিনে নিজের ভুল স্বীকারে দ্বিধাগ্রস্থ হন না ।
দুর্বল মানসিকতা :- সিরাজ তাঁর শত্রুদের চক্রান্ত বুঝতে পারলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন নি । তেমনি ঘসেটি বেগমের অভিযোগেরও তিনি প্রতিবাদ করতে পারেন না । বরং নিজের দুর্বলতা নিজে মুখেই স্বীকার করে নেন “পারিনা শুধু আমি কঠোর নই বলে ।”
সব মিলিয়ে নাট্যকার নবাব সিরাজকে সফল ট্রাজিক নায়কের রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন ।
৭.২ “কিন্তু ভদ্রতার অযোগ্য তোমরা” — কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলা হয়েছে ? এ কথা বলার কারণ কী (১+৩)
Ans. বিশিষ্ট নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশের প্রশ্নোদ্ধৃতাংশ কথাটি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব, সিরাজদৌলা ইংরেজ প্রতিনিধি ওয়াটসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন ।
♦ সিরাজ ছিলেন একজন দক্ষ কূটনৈতিক । তাই তিনি তাঁর সভাসদদের সকল গোপনীয় কার্যকলাপের খবরাখবর রাখতেন । ইংরেজ প্রতিনিধি, ওয়াটসের কাছে আসা কিছু গোপন পত্রও সিরাজের হাতে এসে পৌঁছায় । এই পত্রগুলির মধ্যে ছিল অ্যাডমিরাল ওয়াটসন -এর পত্র ও ওয়াটসের পত্র । পত্রগুলি থেকে সিরাজ জানতে পারেন, কোম্পানির ফৌজ আরো জাহাজ ও আরো সৈন্যদলসহ বাংলার অভিমুখে যাত্রা করেছে, এমনকি অ্যাডমিরাল এও বলেছেন বাংলায় তিনি এমন আগুন জ্বালাবেন যে তা গঙ্গার জল দিয়েও নেভানো যাবে না । ওয়াটসের পত্রে বলা ছিল নবাবের উপর নির্ভর না করে চন্দননগরের ফরাসি কুঠি আক্রমণ করাই শ্রেয় । নবাবের প্রতি এহেন অমর্যাদা প্রদর্শন ও চক্রান্ত স্বভাবতই সিরাজের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভবপর ছিল না । তাছাড়া তিনি আরো জানতে পারেন যে, ওয়াটস তাঁরই সভায় স্থান পেয়ে সভাসদ ও আত্মীয়স্বজনের কানে কুমন্ত্রণা দিয়ে তাদের নবাব বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছেন । তারা নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য রাতের আঁধারে অস্ত্রে শান দিচ্ছে ।
কোম্পানির এহেন কুচক্রী কার্যকলাপে বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ হয়েই নবাব সিরাজ ওয়াটসকে বলেছিলেন — “কিন্তু ভদ্রতার অযোগ্য তোমরা ।”
৮. কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x২=১০
৮.১ কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও ।
Ans. বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসে প্রান্তিক পরিবারের সন্তান কোনির গঙ্গায় একজন মেঠো সাঁতারু থেকে ভারত সেরা সাঁতারু হয়ে ওঠার এক রোমাঞ্চকর কাহিনী বর্ণিত আছে ।
♦ কোনি ছিল নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের কন্যা । সুতরাং তার জীবনের সাথে দারিদ্র্য ও বঞ্চনা জড়িয়ে ছিল ওতপ্রোতভাবে । বেদনায় বিধুর কোনির জীবনে দারিদ্রই হয়ে উঠেছিল তার জীবনের সঙ্গী । কবির কথায় — “হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান ।” কোনির দরিদ্র পরিবারে ছিল তার মা, তার দাদা কমল পাল, তার ছোট ভাই গোপাল এবং আরো দুই বোন । তার এক দাদা মারা গিয়েছে ইলেকট্রিক তারে কাটা পড়ে, অপর এক দাদা থাকে পিসির বাড়ি, কাঁচড়াপাড়ায় । দারিদ্র্যক্লিষ্ট কোনির সংসারে একমাত্র ‘bread-winner’ ছিল কমল পাল, সে রাজাবাজারে মোটর গ্যারেজে কাজ করে । সামান্য আয়ে সংসার চলে । কোনির শৈশবের কুয়াশার আড়ালে বাবা হারিয়ে গেছে টি.বি. রোগে । কমলও আকস্মিকভাবে একই রোগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় । ফলে, কোনির পরিবার থেকে হারিয়ে যায় সুখের কলরোল । শ্যামপুকুর বস্তির চালার ঝুপড়ি ঘরে নেমে আসে বিষন্নতা । হতাশার বেনোজলে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে আসে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ ।
সাঁতারে আসার আগে, কোনি গঙ্গায় সাঁতার কেটে আম কুড়োত আর পয়সা উপার্জনের আশায় সেই আম বাজারে বেচতো । সামান্য ফ্যান ভাত, তেঁতুল, কাঁচা লঙ্কা আর কাঁচা পেঁয়াজ খেয়েই জীবন ধারণ করতো । থাকতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছোট্ট একটা ঘরে । কিন্তু কমলের মৃত্যুর পর, কোনিদের অবস্থা আরো সঙ্গীন হয়ে পড়ে । ছোট ভাই পনেরো টাকা মাইনেতে চায়ের দোকানে কাজ করতে লেগে পড়ে । কোনি চল্লিশ টাকা মাইনেতে ক্ষিতিশের স্ত্রী লীলাবতীর টেলারিং শপ, ‘প্রজাপতি’ তে ফাইফরমাশ খাটতে থাকে আর কমলের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে যে সে ভারতসেরা সাঁতারু হয়ে উঠবে, কোনি কমল দীঘির জলে স্বপ্নের ঢেউ তোলে । ক্ষিতিশের বদান্যতায় কোনির পরিবার কমলের অনুপস্থিতিতে মুখে ভাতটুকু তুলতে পারে । দু-টাকার ডিম, কলা, টোস্টের জন্য লালায়িত কোনি ও তার যৌথ পরিবারকে ক্ষিতীশ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল । এভাবেই উপন্যাসে কোনির বেদনাদীর্ণ পারিবারিক জীবনের চালচিত্র ফুটে উঠেছিল ।
৮.২ ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans. বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনির ক্ষিদ্দা ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ । সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে নিজের একগুঁয়েমি নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়কে পাথেয় করে কোনির কাঙ্খিত উচ্চতায় উত্তরনের পিছনে যে মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন কোনির ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ ।
প্রতিভাকে চিনে নিয়ে তাকে সুশৃংখল প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে চালনা করতে যে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, তা ক্ষিতীশের ছিল । ক্ষিতীশ দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া একজন খেলোয়াড় তৈরি করতে জলের মতো অর্থ ব্যয় করেছেন । কোনিকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কেবল একজন সুযোগ্য খেলোয়াড় তৈরির জন্য । নিজে রোজগার বা অন্য কোন স্বার্থের জন্য নয় । নিজের সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনির খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের দায়িত্ব নিয়েছেন । কোনিকে অনিচ্ছাকৃত হলেও তাকে দিয়ে প্রবল পরিশ্রম করিয়েছেন । আবার বড় দাদার মতো তাকে চিড়িয়াখানায় কুমীর দেখাতে নিয়ে গিয়েছেন । যে ক্ষিদ্দা কোনি কেঁদে ফেললেও প্র্যাকটিস থেকে রেহাই দেন নি । খাওয়ার টোপ দিয়ে সাঁতার কাটানোর মতো অমানবিক আচরণ করেছেন । তিনিই আবার কোনি ঘুমিয়ে পড়লে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনি নিজেকে প্রমাণ করার পর তার মাথার উপর ঝরে পড়েছে তার আনন্দাশ্রু ।
৮.৩ “জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে” — কোনির এই অভিমানের কারণ কী ? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো । (২+৩)
Ans. সাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রশ্নোদ্ধৃতাংশের বক্তা, কোনি যখন হিয়ার কাছ থেকে জানতে পারে, জাতীয় সাঁতারের শেষ ইভেন্টে ৪ x ১০০ মিটার রিলেরেসের চতুর্থ ব্যক্তি, অমিয়ার অসুস্থতা জনিত কারণবশতঃ কোনিকে জলে নামতে হবে তখন সে বেঁকে বসেছিল । কারণ সুদূর এই মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার কম্পিটিশনে কোনি প্রতিযোগী হয়ে আসা সত্বেও তাকে বিভিন্ন অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়, প্রতিযোগীদের লিস্টে কোনির নাম নেই, এই কারণে কোনি কোনো ইভেন্টে অংশ নিতে পারে না । শুধু তাই নয় কোনিকে ‘চোর’ অপবাদও সহ্য করতে হয়েছিল, চড়ও মারা হয়েছিল । এই দুর্ব্যবহারে ক্রুদ্ধ কোনি তাই বাংলার স্বার্থে আর প্রতিযোগিতায় নামতে চায়নি । তার অভিমান হয়েছিল ।
♦ কোনি হিয়ার অনুরোধে হিয়ারই দেওয়া অতিরিক্ত কস্টিউম পরে রিলে রেসে নামার জন্য রাজি হয়েছিল । এরপর মেয়েদের ৪০০ মিটার রিলে রেস শুরু হয় । প্রথমে বাংলার হয়ে জলে ঝাঁপ দেয় হিয়া মিত্র । সে সবার আগে বোর্ড স্পর্শ করে ফিরে এসে বাংলার পুষ্পিতাকে কিছুটা আগুয়ান থাকার সুবিধা দেয় । কিন্তু মহারাষ্ট্র এবার বাংলার থেকে এগিয়ে যায় । এরপর জলে নামে বাংলার বেলা । সে মহারাষ্ট্রের দীপ্তি কারমারকারের সাথে জোর প্রতিযোগিতা করেছিল । বেলার এই সাফল্যকে পরিপূর্ণতা দান করেছিল কোনি । কোনির সাথে প্রতিযোগিতা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের নামী সাঁতারু রমা যোশীর । রমার জলে পড়ার তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে ঝাঁপ দেয় । জলে নামার পূর্ব মুহূর্তে সে দেখতে পায়, তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহকে । তাঁর মুখে উচ্চারিত হয়েই চলেছিল — “ফাইট কোনি ফাইট ।”
দীর্ঘ অদর্শনের পর কোনি ক্ষিদ্দাকে দেখে মনে বল পায় । রমার পরে জলে নামলেও সে নিজেকে উজাড় করে দেয় । লেখক বলেছেন — জলের বদলে মাটি থাকলে বলা যেত একটা কালো প্যান্থার শিকার তাড়া করেছে । ক্ষিদ্দার আপ্তবাক্যকে স্মরণ করে সে রমার সাথে ইঞ্চি ইঞ্চি করে ব্যবধান কমাতে থাকে এবং এগিয়ে যায় । নিজের সমস্ত ক্ষোভ যন্ত্রণাকে উজাড় করে দিয়ে কোনি রমার আগে বোর্ড স্পর্শ করে ও বেঙ্গল লেডিস টিমকে জাতীয় সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করে দেয় ও হিয়াকে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সাঁতারু হওয়ার সুযোগ করে দেয় । এভাবেই কোনি সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সাফল্যের জয়মুকুট পরে নিয়েছিল ।
৯. চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো : ৪
One day a dog stole a piece of meat from a butcher shop. He was crossing over a bridge. Suddenly, he saw his own shadow in the water. He thought that there was another dog and he had a bigger piece of meat.
Ans. একদিন একটা কুকুর এক কসাইখানা থেকে একটুকরো মাংস চুরি করেছিল । সে একটা সেতু অতিক্রম করছিল । হঠাৎ সে দেখতে পেল জলে তার নিজেরই প্রতিবিম্ব পড়েছে । সে ভাবল যে এটা আরেকটা কুকুর এবং এর কাছে আরো বড় একটা মাংস খন্ড রয়েছে ।
১০. কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১=৫
১০.১ নারী-স্বাধীনতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো ।
Ans. ললিতা : মাধ্যমিক পাশ করার পর তুই তো উচ্চমাধ্যমিক পড়বি ? আমার ভাই এই মাধ্যমিকেই পড়াশুনো থমকে যাবে ।
বিশাখা : দুঃখ করার কিছু নেই । আমারও তো এখন সেই একই অবস্থা । মা-বাবা এখন থেকেই সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন ।
ললিতা : স্বাধীনতা শব্দের অর্থ শুধুমাত্র আকারেই বেড়েছে । নারীর ক্ষেত্রে তা বেশির ভাগ সময় সে সবের কোনো অর্থই নেই ।
বিশাখা : বলতো ! এই পড়াশুনা নিয়ে কতটা এগুতে পারি আমরা ।
ললিতা : আমাদের বাবা-মাদের বোঝাতেই হবে । আর তাদের মাথা থেকে সরাতে হবে তাড়াতাড়ি মেয়েদের বিবাহ দেওয়ার চিন্তা ভাবনা ।
বিশাখা : মনে আছে যখন আমরা নবম শ্রেণীতে শারদীয় উৎসবে “স্ত্রীর পত্র” অভিনয় করেছিলাম ।
ললিতা : মনে নেই আবার, সে সব কথা মনের মধ্যে গেঁথে আছে । সত্যিকারের নারী স্বাধীনতার হদিস তো ওখানেই পেয়েছিলাম ।
বিশাখা : আর্থিক স্বাধীনতা ছাড়া নারী স্বাধীনতার কোনো অর্থই হয় না । অতএব এবার আমাদের শপথ নিতে হবে, যেমন করেই হোক পড়াশুনোটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে ।
১০.২ কোনো গ্রামীণ এলাকায় একটি সরকারি হাসপাতাল উদ্বোধন হল —এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।
Ans. বলরামপুরে গ্রামে উদ্বোধন হল সরকারি হাসপাতাল
নিজস্ব সংবাদদাতা, বলরামপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ২২ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : বিষ্ণুপুর ১ নং ব্লকের অন্তর্গত এক প্রান্তিক গ্রাম বলরামপুরে গতকাল স্থানীয় বিধায়ক শ্রী সুকুমর মণ্ডলের উপস্থিতিতে একটি সরকারি হাসপাতালের উদ্বোধন হয়ে গেল ।
এর পূর্বে বলরামপুরে কোনো সরকারি হাসপাতাল ছিল না । চিকিৎসার জন্য মানুষকে বারুইপুর সদরের হাসপাতালে ছুটে যেতে হতো । অনেক সময় সদর হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হয়ে গেলে, বহু দুরারোগ্য রোগী পথ মধ্যেই মারা যেতো । কিন্তু এই বলরামপুরে সরকারি হাসপাতালের উদ্বোধন হওয়ার পর এই সমস্যা আর থাকবে না বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ । স্থানীয় বিধায়ক মহাশয়ের মতে, “বলরামপুর সরকারি হাসপাতাল থাকার দরুন বহু অসুস্থ ব্যক্তি সঠিক চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবেন আশা করছি ।”
প্রসঙ্গক্রমে নতুন উদ্বোধন হওয়া এই সরকারি হাসপাতালে দশটি ঘর আছে । ডাক্তার থাকবেন পাঁচজন । বিনামূল্যে ওষুধ পত্র দেওয়ার সুব্যবস্থা থাকবে । এমনকি মাঝরাতে কোনো অসুবিধা হলে অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা আছে । হাসপাতালের উন্নত পরিকাঠামো দেখে বলরামপুরের এক বাসিন্দা হাবুল মন্ডলের মতে, “এবার থেকে অসুস্থ হলে আর দুর্ভাবনা থাকবে না । বলরামপুর সরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই ।
১১. কম বেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো: ১০
১১.১ বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য
১১.২ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
১১.৩ তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র
১১.৪ একটি গাছ একটি প্রাণ |