Madhyamik Bangla Examination 2019

মাধ্যমিক বাংলা 2019 সালের প্রশ্নের সমাধান



১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো : ১৭ x ১ = ১৭

১.১ তপনের মেসোমশাই কোন পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপানোর কথা বলেছিলেন ?

(ক) ধ্রুবতারা (খ) শুকতারা (গ) সন্ধ্যাতারা (ঘ) রংমশাল

Ans. (গ) সন্ধ্যাতারা

১.২ “নদেরচাঁদকে পিষিয়া দিয়া চলিয়া গেল”—

(ক) ৭নং ডাউন প্যাসেঞ্জার (খ) ৫ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার (গ) ৭ নং আপ প্যাসেঞ্জার (ঘ) ৫ নং আপ প্যাসেঞ্জার

Ans. (ক) ৭নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

১.৩ অপূর্বর পিতার বন্ধু হলেন—

(ক) জগদীশবাবু (খ) রামদাস (গ) নিমাইবাবু (ঘ) গিরীশ মহাপাত্র

Ans. (গ) নিমাইবাবু

১.৪ “যেখানে ছিল শহর / সেখানে ছড়িয়ে রইল” — কী ছড়িয়ে রইল ?

(ক) পায়ের দাগ (খ) কাঠকয়লা (গ) গোলাপি গাছ (ঘ) প্রাচীন জলতরঙ্গ

Ans. (খ) কাঠকয়লা

১.৫ আদিম যুগে স্রষ্ঠার কার প্রতি অসন্তোষ ছিল ?

(ক) দয়াময় দেবতার প্রতি (খ) কবির সংগীতের প্রতি (ঘ) ধরিত্রীর প্রতি

Ans. (গ) নিজের প্রতি

১.৬ কোনটি জয় গোস্বামীর লেখা কাব্যগ্রন্থ ?

(ক) বাবরের প্রার্থনা (খ) অগ্নিবীণা (গ) রুপসী বাংলা (ঘ) পাতার পোষাক

Ans. (ঘ) পাতার পোষাক

১.৭ রাজশেখর বসুর ছদ্মনাম —

(ক) বনফুল (খ) শ্রীপান্থ (গ) পরশুরাম (ঘ) রূপদর্শী

Ans. (গ) পরশুরাম

১.৮ “বাংলা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধাদিতে আর একটি দোষ” প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক কোন প্রবাদের উল্লেখ করেছেন ?

(ক) অরণ্যে রোদন (খ) অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী (গ) হাতের পাঁচ (ঘ) হ-য-ব-র-ল

Ans. (খ) অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী

১.৯ চিনারা চিরকালই লেখার জন্য ব্যবহার করে আসছে —

(ক) তুলি (খ) ব্রোঞ্জের শলাকা (গ) হাড় (ঘ) নলখাগড়া

Ans. (ক) তুলি

১.১০ ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্পর্ককে বলে —

(ক) সমাস (খ) কারক (গ) প্রত্যয় (ঘ) বিভক্তি

Ans. (খ) কারক

১.১১ ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’ — নিম্নরেখ পদটি —

(ক) সম্বোধন পদ (খ) কর্তৃকারক (গ) সম্বন্ধ পদ (ঘ) নিমিত্ত কারক

Ans. (গ) সম্বন্ধ পদ

১.১২ যে সমাসে সমাস্যমান পদ দুটির উভয় পদই বিশেষ্য ও পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে বলে —

(ক) তৎপুরুষ সমাস (খ) কর্মধারয় সমাস (গ) দ্বন্দ্ব সমাস (ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস

Ans. (খ) কর্মধারয় সমাস

১.১৩ কৃত্তিবাস রামায়ণ রচনা করেন — নিম্নরেখ পদটি কোন সমাসের উদাহরণ ?

(ক) কর্মধারয় সমাস (খ) তৎপুরুষ সমাস (গ) বহুব্রীহি সমাস (ঘ) দ্বন্দ্ব সমাস

Ans. (গ) বহুব্রীহি সমাস

১.১৪ ‘আমাদের মধ্যে যারা ওস্তাদ তারা ওই কালো জলে হরতুকী ঘষত ।’ — বাক্যটি কোন শ্রেণির ?

(ক) সরল বাক্য (খ) জটিল বাক্য (গ) যৌগিক বাক্য (ঘ) মিশ্র বাক্য

Ans. (খ) জটিল বাক্য

১.১৫ বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে — অর্থগত দিক থেকে এটি —

(ক) না-সূচক বাক্য (খ) সন্দেহবাচক বাক্য (গ) প্রশ্নবাচক বাক্য (ঘ) প্রার্থনাসূচক বাক্য

Ans. (গ) প্রশ্নবাচক বাক্য

১.১৬ ক্রিয়ার অর্থ প্রাধান্য পায় —

(ক) কর্তৃবাচ্যে (খ) ভাববাচ্যে (গ) কর্মবাচ্যে (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্যে

Ans. (খ) ভাববাচ্যে

১.১৭ তাকে টিকিট কিনতে হয়নি — বাক্যটির কর্তৃবাচ্যের রূপ হল —

(ক) তার টিকিট কেনা হয়নি

(খ) তিনি টিকিট কেনেননি

(গ) তাঁর দ্বারা টিকিট ক্রীত হয়নি

(ঘ) তিনি বিনা টিকিটে চলেছেন

Ans. (খ) তিনি টিকিট কেনেননি



২. কমবেশি ২০ট শব্দে প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ১৯ x ১ = ১৯



২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪ x ১ = ৪

২.১.১ ‘অদল বদল’ এর গল্প গ্রাম প্রধানের কানে গেলে তিনি কী ঘোষণা করেছিলেন ?

Ans. গ্রাম প্রধান ঘোষণা করেন যে গ্রামের সকলে অমৃতকে ‘অদল’ এবং ইসাবকে ‘বদল’ বলে ডাকবে ।

২.১.২ “সপ্তাহে বড়োজোর একটা দিন বহুরূপী সেজে পথে বের হন হরিদা” — ‘বহুরূপী’ কাকে বলে ?

Ans. ‘বহুরুপী’ হল একধরনের লোকশিল্পী যারা বিবিধ বেশে সজ্জিত হয়ে নানা রূপ ধারণ করে জীবিকা নির্বাহের জন্য উপার্জন করে ।

২.১.৩ ভামো যাত্রায় ট্রেনে অপূর্বের কে কে সঙ্গী হয়েছিল ?

Ans. একজন আর্দালী বা পিয়োন এবং অফিসের একজন হিন্দুস্তানি ব্রাহ্মণ পেয়াদা অপূর্বের সঙ্গী হয়েছিল ।

২.১.৪ “সূচিপত্রেও নাম রয়েছে” — সূচিপত্রে কী লেখা ছিল ?

Ans. সূচিপত্রে লেখা ছিল ‘প্রথম দিন’ (গল্প) শ্রী তপন কুমার রায় ।

২.১.৫ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম কী ?

Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম ছিল প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ।



২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৪ x ১ = ৪

২.২.১ “ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে !”—কী ছড়ানো রয়েছে ?

Ans. কাছে দূরে শিশুদের শব ছড়ানো রয়েছে ।

২.২.২ “ছদ্দবেশী অম্বুরাশি-সুতা” কেন ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন ?

Ans. বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ ও রাজা রাবণের যুদ্ধসজ্জার সংবাদ মেঘনাদকে দেওয়ার জন্য অম্বুরাশি-সুতা মেঘনাদের ধাত্রীর ছদ্মবেশে এসেছিল ।

২.২.৩ “সখী সবে আজ্ঞা দিল” — বক্তা তার সখীদের কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন ?

Ans. অচেতন চার সখীসহ পদ্মাবতীকে বসনাবৃত করে উদ্যানের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজ্ঞা দিয়েছিলেন ।

২.২.৪ ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি কে বাংলায় তরজমা করেছেন ?

Ans. ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন নবারুণ ভট্টাচার্য ।

২.২.৬ “প্রলয় বয়েও আসছে হেসে”— ‘প্রলয়’ বহন করেও হাসির কারণ কী ?

Ans. প্রলয় বহন করেও হাসির কারণ হল প্রলয়ের মধ্যেই সৃষ্টির উল্লাস রয়েছে ।



২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩ x ১ = ৩

২.৩.১ “সোনার দোয়াত কলম যে সত্যি হতো” তা লেখক কীভাবে জেনেছিলেন ?

Ans. সোনার দোয়াত কলম যে সত্যিই হতো তা লেখক জেনেছিলেন সুভো ঠাকুরের বিখ্যাত দোয়াত সংগ্রহ দেখতে গিয়ে ।

২.৩.২ দোকানদার লেখককে কলম বিক্রি করার আগে কী জাদু দেখিয়েছিলেন ?

Ans. লেখক কলম দেখতে চাইলে দোকানদার কলম বিক্রির আগে জাদু দেখিয়েছিলেন । দোকানদার কলমের মুখ থেকে খাপটা সরিয়ে সেটি ছুঁড়ে দিয়েছিলেন টেবিলের পাশে দাঁড় করানো একটা কাঠের বোর্ডের উপর । কিন্তু তা সত্ত্বেও কলমের নিবটি অক্ষত ছিল ।

২.৩.৩ ছেলেবেলায় রাজশেখর বসু কার লেখা জ্যামিতি বই পড়তেন ?

Ans. ছেলেবেলায় রাজশেখর বসু ব্রহ্মমোহন মল্লিকের লেখা বাংলা জ্যামিতি বই পড়তেন ।

২.৩.৪ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবে পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিলেন ?

Ans. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৩৬ সালে পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিলেন ।



২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৮ x ১ = ৮

২.৪.১ বিভক্তি ও অনুসর্গের একটি পার্থক্য লেখো ।

Ans. বিভক্তি একটি চিহ্ন, তাই এর নিজস্ব অর্থ নেই; অন্যদিকে অনুসর্গের একটি শব্দ, তাই এর নিজস্ব অর্থ আছে ।

২.৪.২ ‘মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘন্টা’— নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো ।

Ans. অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি ।

২.৪.৩ ব্যাসবাক্য-সহ একটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ দাও ।

Ans. ‘পিতামাতা’ হল দ্বন্দ্ব সমাস এবং এর ব্যাসবাক্য হল ‘পিতা ও মাতা’ ।

২.৪.৪ ‘মেঘে ঢাকা’ শব্দটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম উল্লেখ করো ।

Ans. ‘মেঘে ঢাকা’ ব্যাসবাক্য হল মেঘের দ্বারা ঢাকা । এবং এটি অলোপ তৎরুষ সমাস ।

২.৪.৫ বিধেয় প্রসারকের একটি উদাহরণ দাও ।

Ans. সে ভূতের গল্প ভালবাসে ।

২.৪.৬ ‘ঠিক ইসাবের মতো জামাটি না পেলে ও স্কুলে যাবে না ।’— যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন করো ।

Ans. ঠিক ইসাবের মতো জামাটি না পেলে ও কিন্তু স্কুলে যাবে না ।

২.৪.৭ কর্তৃবাচ্য কাকে বলে ?

Ans. যে বাক্যে কর্তার প্রাধান্য থাকে এবং ক্রিয়া কর্তার পুরুষের অনুগামী হয় তাকে কর্তৃবাচ্য বলে ।

২.৪.৮ ‘তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ।’—ভাববাচ্যে পরিবর্তন করো ।

Ans. তাদের আর স্বপ্ন দেখা হল না ।

২.৪.৯ .অলোপ সমাস কী ?

Ans. যে সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি সমাসবদ্ধ পদে লোপ পায় না তাকে অলোপ সমাস বলে ।

২.৪.১০ সে তখন যেতে পারবে না— হ্যাঁ-বাচক বাক্যে পরিবর্তন করো ।

Ans. সে তখন যেতে অপারগ হবে ।



৩. প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০টি শব্দে উত্তর দাও : ৩ + ৩ = ৬



৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ১ x ৩ = ৩

৩.১.১ “যে ভয়ঙ্কর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না ।’—’আহ্লাদ’ হবার কথা ছিল কেন ? ‘আহ্লাদ খুঁজে’ না পাওয়ার কারণ কী ?

Ans. তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে লেখক হিসাবে তার নাম ছাপা হবে —এ কথা ভেবেই তপনের আহ্লাদ হওয়ার কথা ছিল ।

– তপনের ছোটোমেসোর সহায়তায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তার গল্প প্রকাশিত হলে চারিদিকে সবাই মেসোর মহত্বেও কথাই বলতে থাকে । মেসো না থাকলে কোনোদিনই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদক তপনের লেখা ছুঁয়েও দেখত না —এরকম কথাও অনেকে বলে । এইসব কথার মাঝখানে আসল যে লেখক, সে-ই যেন কোথাও হারিয়ে যায় । তপনের যেন কোনো কৃতিত্বই নেই । এইসব দেখে লেখা ছেপে আসার পর তপনের যে আহ্লাদ হওয়া উচিৎ ছিল তা তপনের হয় না ।

৩.১.২ “নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে ।” — কার কথা বলা হয়েছে ? তার ‘পাগলামিটি’ কী ? ১ + ২

Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের উল্লিখিত অংশে নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে ।

– নদীর সঙ্গে সখ্য নদেরচাঁদের শৈশব থেকেই । কর্মক্ষেত্রে এসেও তার নদীর প্রতি আকর্ষণ একটুকুও কমেনি । তাই প্রবল বৃষ্টির কারণে পাঁচদিন নদীকে দেখতে না পেয়ে সে ‘ছেলেমানুষের মতো’ আকুল হয়ে ওঠে । নদীর প্রতি এই আকুলতাই ছিল তার ‘পাগলামি’ ।



৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ১ x ৩ = ৩

৩.২.১ “অতি মনোহর দেশ” — এই মনোহর দেশে’র সৌন্দর্যের পরিচয় দাও । ৩

Ans. সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মার একটি প্রাসাদ কল্পনা করা হয়েছে । এই প্রাসাদটিকে সমুদ্রের মাঝে দ্বীপভূমির মতো দেখায় । একেই অতি মনোহর দেশ বলা হয়েছে । কবির বর্ণনানুসারে এই দিব্যপুরী অতি মনোহর । সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট নেই । আছে শুধু সত্যধর্ম এবং সদাচার । আর আছে একটি পর্বত এবং নানা ফুলে ভরা অপূর্ব এক উদ্যান । সেখানে গাছগুলিতে নানা ফল ও ফুলের সমারোহ ।

৩.২.২ “অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো” — কবি কোথায় অস্ত্র রাখতে বলেছেন ? তাঁর একথা বলার কারণ কী ? ১ + ২

Ans. কবি গানের দুটি পায়ে অস্ত্র রাখতে বলেছেন ।

– কবি জয় গোস্বামী তাঁর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় যুদ্ধবাজ মানুষদের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান জানিয়েছেন । ক্ষমতার নেশায় মেতে ওঠা মানুষ নিজের শ্রেষ্ঠত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে হাতে অস্ত্র তুলে নেয় । অস্ত্র হিংসার প্রতীক । মানুষের পৃথিবীতে অস্ত্রের কোনো প্রয়োজন নেই । কারণ অস্ত্রই সভ্যতার শেষ কথা নয় । তাই কবি অস্ত্র ফেলে গানকেই জীবনযুদ্ধের হাতিয়ার করতে বলেছেন

। এখানে কবির মানবদরদী মনোভাবটি প্রকাশিত ।



৪. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫

৪.১ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অবলম্বনে নদীর প্রতি নদেরচাঁদের অকৃত্রিম ভালবাসার পরিচয় দাও ।

Ans. প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের মধুর সম্পর্কের রূপটি প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে । গল্পের সূচনাতেই আমরা দেখতে পাই, দীর্ঘ পাঁচদিন প্রচন্ড বর্ষার জন্য নদীকে দেখতে না পেয়ে নদেরচাঁদ অস্থির হয়ে উঠেছে । তাই বৃষ্টি থামলেই সে সহকারীকে দায়িত্ব দিয়ে ছোটে অতল জলের আহ্বানে । নদীই তার আপনজন । নদী তার কাছে শুধু প্রকৃতির দান নয়, আত্মার আত্মীয় । কর্মব্যস্ত জীবনে নদী তার খেলার সঙ্গী । তাই পাঁচদিন ধরে স্ত্রীকে লেখা চিঠি খুব সহজেই সে নদীর ঘোলাজলে ছিঁড়ে ফেলে দেয় আর এক অনাবিল আনন্দে ভরে ওঠে তার মন । শৈশবেও সে নদীর প্রতি ভালোবাসায় আবিষ্ট ছিল । নদী শুকিয়ে গেলে কান্নায় তার চোখ ভিজে যেত । আসলে নদীকে সে জীবন্ত সত্তা মনে করেছে, যার কাছে হারিয়ে গেছে তার একান্ত ব্যক্তিগত জীবন । এইসব ভাবনার মধ্য দিয়ে ধরা পড়েছে নদীর প্রতি তার আন্তরিক ভালোবাসা । নদীর ওপর ব্রিজ তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিকে রুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে নদেরচাঁদের হৃদয়ও যন্ত্রনায় ফেটে পড়তে চায় । কন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে, তাকেও মরতে হয় যন্ত্রসভ্যতার আর এক প্রতিভূর মাধ্যমে । চলন্ত রেলগাড়ি যন্ত্রদানবের মতোই মুহুর্তে নদেরচাঁদকে পিষে দিয়ে চলে যায়—যেন নদীর প্রতি নদেরচাঁদের এই সমব্যথারই উত্তর হিসেবে ।

৪.২ “অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না ।” — হরিদা কী ভুল করেছিলেন ? অদৃষ্ট ক্ষমা না করার পরিণাম কী ? ৩ + ২ = ৫

Ans. ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা অর্থ উপার্জনের জন্য বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন । হরিদার বেশভূষা, কথাবার্তায় জগদীশবাবু মুগ্ধ হয়ে ‘বিরাগী’কে আতিথ্য গ্রহণের অনুরোধ জানান এবং বিদায়ের সময়ে একশো টাকা প্রনামী দিতে চান । কিন্তু হরিদা উদাসীনভাবে সে টাকা প্রত্যাখ্যান করে চলে যান । যাওয়ার সময় বলে যান— “আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনিই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি ।” সন্ন্যাসী চরিত্রের সঙ্গে তিনি এতটাই একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন যে চরিত্রের ‘ঢং নষ্ট হবে’ বলে হরিদা টাকা নেননি । বিস্মিত গল্পকথক এটাকেই হরিদার ‘ভুল’ বলেছেন ।

– অভাবী হরিদার ভাগ্য হরিদাকে সঙ্গ দিতে চেয়েছিল । কিন্তু ব্যক্তিগত সততা ও আদর্শবোধের কারণে হরিদা ভাগ্যের সহায়তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন । যা নিশ্চিত করে দিয়েছে যে অভাব কখনও হরিদাকে ছেড়ে যাবে না । তার ভাতের হাঁড়িতে মাঝে মধ্যে শুধু জলই ফুটবে, তাতে চালের জোগান থাকবে না । কথকের মনে হয়েছে অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুলকে ক্ষমা করবে না ।



৫. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫

৫.১ “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে ।” — ‘তোমার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? তার ‘অপমানিত ইতিহাসে’র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । ১ + ৪

Ans. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার অন্তর্গত উদ্ধৃত অংশটিতে ‘তোমার’ বলতে আফ্রিকার কথা বলা হয়েছে ।

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের অত্যাচার ও শোষণ-বঞ্নার কাহিনিকে বর্ণনা করেছেন । প্রাকৃতিকভাবে দুর্গম আফ্রিকা দীর্ঘসময় ইউরোপীয় শক্তিগুলির নজরের বাইরে ছিল । কিন্তু উনিশ শতকে ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে । এই শতকের শেষে প্রায় পুরো আফ্রিকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশে পরিণত হয় । এইসব তথাকথিত সভ্য রাষ্ট্রশক্তি আফ্রিকার মানুষদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাত । তাদের নির্লজ্জ লোভ যেন বর্বরতার রূপ ধরে আত্মপ্রকাশ করেছিল । ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল আফ্রিকার মানুষ । তাদের রক্ত আর চোখের জলে কর্দমাক্ত হয়েছিল আফ্রিকার মাটি । সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রনায়কদের কাঁটা-মারা জুতোর নীচে বীভৎস কাদার পিণ্ড যেন চিরকালের মতো অত্যাচারের চিহ্ন রেখে গিয়েছিল আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে ।

৫.২. “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” — কবিতার মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখো । ৫

Ans. কবি জয় গোস্বামীর লেখা ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে যুদ্ধের বিরুদ্ধে গানের প্রয়োগ কথা । মানুষের পীড়ন-আর্তনাদের কলরোল গানের সুরের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে । সমস্ত ক্ষমতা, হিংস্রতা ও দম্ভকে বশ করার জন্য গানই কবির বন্ধু হয়ে উঠেছে । অস্ত্রের উদ্ধত আক্রমণকে রুখতে কবি গানকে অবলম্বন করেছেন । কবি চান উদার মানবিকতার সুউচ্চ আদর্শের অনুরণনে সমাজের বুকে উদ্যত অস্ত্রের ঝংকার বন্ধ হোক । কবির বিশ্বাস গানের সুরে তাড়ানো যায় বুলেট । আর যুদ্ধ নয় এবার হোক মানবতার জয় । একমাত্র গানই পারে সেই জয়কে ঘোষিত করতে, কারণ গান মানুষের অনাবিল ভালোবাসার প্রকাশ । যারা রক্তচক্ষুর শাসন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারাও একদিন গানের পায়ে অঞ্জলি দেবে সব অস্ত্র — এটাই কবির বিশ্বাস । তাই কবি দৃঢ় ভঙ্গিতে বলতে পেরেছেন —”অস্ত্র ফ্যালো,অস্ত্র রাখো পায়ে ।”

৬. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫

৬.১ “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই ।” — কারা কালি তৈরি করতেন ? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন ? ১ + ৪

Ans. প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ও তাঁর সতীর্থরা কালি তৈরি করতেন ।

– প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ও তাঁর সতীর্থরা নিজেরাই কালি তৈরি করতেন । যদিও তাঁর মা, পিসি ও দিদিরা এই কালি তৈরি করতে সাহায্য করতেন । এই কালি তৈরি করা নিয়ে প্রাচীনেরা বলতেন— “তিল ত্রিফলা শিমুল ছালা / ছাগ দুগ্ধে করি মেলা / লৌহ পাত্রে লোহায় ঘসি / ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি ।” ভালো কালি তৈরি করতে গেলে এই ছিল ব্যবস্থাপনা । প্রাবন্ধিকরা এত কিছুর আয়োজন করতে পারতেন না, তাই তারা সহজ কালি তৈরির পদ্ধতি অবলম্বন করতেন । বাড়ির রান্না হত কাঠের আগুনে, সেখানে রান্নার পর কড়াইয়ের নীচে প্রচুর কালি জমত । লাউপাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে একটা পাথরের বাটিতে রেখে তাঁরা জল দিয়ে গুলতেন । এভাবেই প্রাবন্ধিকরা কালি তৈরি করতেন । তবে যারা কালি তৈরিতে ওস্তাদ ছিল, তারা ওই কালো জলে হরতকী ঘষত । কখনো কখনো আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে ওই কালো জলে মেশাত । সব ভালোভাবে মেশানোর পর খুন্তির গোড়ার দিকটা পুড়িয়ে লাল টকটকে করে সেই কালো জলে ছ্যাঁকা দিত জল ফোটানোর জন্য । কিছু সময় টগবগ করে ফোটানোর পর ন্যাকড়ায় ছেঁকে দোয়াতে ঢেলে নিলেই লেখার জন্য কালি প্রস্তুত হয়ে যেত ।

৬.২ “পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নগণ্য ।” — লেখকের এমন মন্তব্যের কারণ কী ? ৫

Ans. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান যারা পড়েন, তাদের স্বরূপ নির্ণয় করতে গিয়ে লেখক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের পাঠকদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন । প্রথম শ্রেণি, যাঁরা ইংরেজি জানেন না বা খুব অল্প জানেন, দ্বিতীয় শ্রেণি যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজি ভাষায় কিছু বিজ্ঞান বই পড়েছেন । পাশ্চাত্যের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে এ দেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা তিনি বলেছেন । বিজ্ঞানের প্রাথমিক বিষয়গুলির সঙ্গে পরিচয় না থাকলে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বোঝা সম্ভব নয় । ইউরোপ আমেরিকায় পপুলার সায়েন্স লেখা খুব সহজ, কারণ সাধারন মানুষ অনায়াসে তা বোঝে । কিন্তু আমাদের দেশের সামাজিক পরিস্থিতি এতটা সহজ নয় । এখানে বয়স্কদের জন্য যা লেখা হয়, তা প্রাথমিক বিজ্ঞানের মতো গোড়া থেকে না লিখলে তাঁদের বোঝাবার মতো সহজ হয় না । বাংলা ভাষায় যাঁরা বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি করেন, তাঁদের জনপ্রিয়তা পেতে গেলে এই বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে । বিজ্ঞানশিক্ষার বিস্তার ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে প্রাবন্ধিক এই কথাগুলো বলেছেন । মনে রাখা দরকার যে, বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার যথাযথ না হলে বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্যের বিকাশ ঘটাও সম্ভব নয় ।



৭. কম-বেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪

৭.১ “বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না ।” — কাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলা হয়েছে ? কোন দুর্দিনের জন্য তাঁর এই আবেদন ? ১+৩

Ans. বিশিষ্ট নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাট্যাংশে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌলা সিপাহসলার মীরজাফর ও তার অনুগামীদের উদ্দেশ্য এ কথা বলেছেন ।

– ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্রমশঃ তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছে । কলকাতা এবং কাশিমবাজারে তাঁদের দুর্গনির্মাণ অব্যাহত । এর মধ্যে সিরাজের বিরুদ্ধে স্বয়ং মীরজাফর ও ঘসেটি বেগম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন । বিচক্ষণ সিরাজ বুঝেছেন এই পরিস্থিতিতে তাঁর ধৈর্য হারালে চলবে না । নিজেকে সংযত রেখে মনোমালিন্য মিটিয়ে নিতে হবে । তাই মীরজাফর ও তার অনুগামীদের যাবতীয় অভিযোগ নিজে মাথা পেতে নিয়ে তিনি সোহার্দ্য স্থাপনে প্রয়াসী হয়েছেন । নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে মীরজাফরকে বাংলার ঘোর দুর্দিনে সঙ্গ ত্যাগ না করার আবেদন জানিয়েছেন ।

৭.২ “ওখানে কী দেখচ মুর্খ, বিবেকের দিকে চেয়ে দ্যাখো !” — বক্তা কে ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি বক্তার কী মনোভাব লক্ষ করা যায় ?

Ans. শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদৌলা’ শীর্ষক নাট্যাংশের অন্তর্গত উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন ঘসেটি বেগম ।

– ঘসেটি বেগমের প্রকৃত নাম মেহেরুন্নিসা । তিনি নবাব আলিবর্দি খাঁ-র বড়ো মেয়ে, সম্পর্কে সিরাজের মাসি । ঢাকার শাসনকর্তা শাহমৎ জঙ্গের সঙ্গে ঘসেটির বিয়ে হয় । দত্তক পুত্র ইকরমের মৃত্যু হলে তার শোকে শাহমৎ জঙ্গও মারা যান । বিধবা ঘসেটি বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন । এদিকে বাংলার শাসনভার আলীবর্দী খাঁর মনোনীত সিরাজদৌলার হাতে যায় । এই ঘটনা ঘসেটি বেগমের ঈর্ষার কারণ হয় । তিনি আলিবর্দির মেজো মেয়ের ছেলে শওকত জঙ্গকে সিরাজের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন । বাংলার নবাব আলিবর্দির মৃত্যুর পরে ঘসেটি রাজবল্লভ ও অন্যদেরও নিজের দলে টানেন । এসব জানতে পেরে ক্ষিপ্ত সিরাজ ঘসেটির মতিঝিলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন এবং তাঁকে নিজের রাজপ্রাসাদে নজরবন্দি করে রাখেন । তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন । শওকত জঙ্গ সিরাজের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় । ঘটনাক্রমে ঘসেটি বেগম প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন । কিন্তু তাঁর ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের সমস্ত রাস্তা একে একে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত ঘসেটি বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে যান ।



৮. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ২ x ৫ = ১০

৮.১ “আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না ।” — বক্তা কাকে, কেন এ কথা বলেছিলেন ? ১ + ৪

Ans. মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টুচরণ ধরকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছিলেন ।

– ‘কোনি’ উপন্যাসে গঙ্গার তীরে বিষ্টুচরণ ধর শরীর ম্যাসেজ করাচ্ছিলেন । সেই সময় স্নান করার জন্য ক্ষিতীশ সিংহ গঙ্গার ঘাটে উপস্থিত ছিলেন । বিষ্টুচরণ ধরের বিশাল বপু ম্যাসেজের তালে তালে ওঠানামা করছিল । ক্ষিতীশ সিংহ এই দৃশ্য অবলোকন করে হাসি চেপে রাখতে পারেন না । বিষ্টুচরণ ধর অপমানিত বোধ করেন এবং নিজের অর্থ ও প্রভাবের কথা ঘোষণা করেন । বিষ্টুচরণ ধর তাচ্ছিল্য প্রকাশ করেন । আবার একইসঙ্গে ক্ষিতীশ সিংহের শারীরিক দক্ষতা দেখে অবাক হন । বিষ্টুচরণ ধর টাকার গর্বে অন্ধ ছিলেন । কিন্তু টাকা থাকলেই শরীরকে বশে রাখা যায় না । সেই প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ সিংহ উপরিউক্ত মন্তব্যটি করেন ।

৮.২ “এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক ।” — কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে ? কী কারণে এই পুষে রাখা ? ২ + ৩

Ans. ‘কোনি’ উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়েছিলেন । সেখানে তিন ঘন্টা ঘোরার পর দুজনে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা খাবার খেতে বসেছিল । কিন্তু তাদের সঙ্গে খাবার জল ছিল না । এমত অবস্থায় কোনি তাদের পাশে খেতে বসা ছাত্রীদলের কাছে জল চাইতে যায়, কিন্তু একজন দিদিমণি তাকে ফিরিয়ে দেয় । পরে ওই দলের হিয়া মিত্র নামের একটি মেয়ে কোনিকে জল দিতে আসলে কোনি আগের অপমানের জবাব হিসেবে ওই জলের গ্লাস ফেলে দেয় । হিয়ার প্রতি কোনির যে আক্রোশ প্রকাশ পেল জলের গ্লাস ফেলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাগটাই মনের মধ্যে পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে ।

– কোনি হিয়া মিত্রকে চিনত না, কিন্তু ক্ষিতীশ সিংহ এই হিয়া মিত্রকে চিনত । শুধু চিনতই না, সে জানত কোনির থেকে হিয়া মিত্র সাঁতারে অনেক ভালো অবস্থানে আছে । রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় হিয়ার সাঁতার ক্ষিতীশ সিংহ দেখেছে । বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবে গিয়েও সে হিয়ার ট্রেনিং দেখে এসেছে । তাই ক্ষিতীশ সিংহ মনে করেছিল হিয়াই কোনির ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বি । এই অপমানের যন্ত্রণাই কোনিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে । তাই হিয়া মিত্রকে হারিয়ে অপমানের প্রতিশোধ নেবার বাসনা জাগিয়ে রাখবার জন্যই ক্ষিতীশ সিংহ এই অপমানটাকে পুষে রাখতে বলেছিল ।

৮.৩ ‘কোনি’ উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিনী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও ।৫

Ans. মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসটি মূলত কোনি এবং তাঁর প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে । পার্শ্বচরিত্র হিসেবে অনেকেই এসেছেন । তাঁদের মধ্যে ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতী অন্যতম ।

পরিশ্রমী ও কর্মপটু : ছোটখাটো চেহারার, গৌরবর্ণা এবং গম্ভীর স্বভাবের লীলাবতী যথেষ্ট পরিশ্রমী । তাঁর সাংসারিক জ্ঞান ও সমস্ত কিছু দেখভাল করার জন্যই ক্ষিতীশ সিংহের সংসার টিকে ছিল । লীলাবতীর কর্মতৎপরতাতেই তাঁদের সংসার চলত । ‘সিনহা টেলারিং’ যখন লোকসানের মুখে সেই সময় লীলাবতী নিজের গয়না বন্ধক রেখে নতুন ধরনের কাজ শুরু করেন । এসময় তিনি দোকানের নাম পালটে ‘প্রজাপতি’ রেখে অসম্ভব পরিশ্রম ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে চার বছরের মধ্যেই ‘প্রজাপতি’র শ্রীবৃদ্ধি ঘটান ।

ব্যবসায়ী মানসিকতাসম্পন্ন : ব্যবসায়িক মনের পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দুজন মহিলা কর্মচারীকে দোকানে রেখে শুধু মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরি শুরু করেন । তাঁর নেতৃত্বেই ব্যবসা ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠে এবং আরও বড়ো স্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে । সেক্ষেত্রেও তিনি নিজেই হাতিবাগানের মতো এলাকায় পাঁচ হাজার টাকার সেলামিতে একটি ভাড়ার দোকানের ব্যবস্থা করেন ।

যোগ্য সহধর্মিনী : গম্ভীর স্বভাবের হলেও লীলাবতী স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল এবং পতিপ্রাণা ছিলেন । স্বামীর স্বভাব এবং সাঁতারপ্রীতির কথা জানতেন বলেই সাংসারিক ও ব্যবসায়ীক সমস্তরকম দেখভাল নিজেই করতেন । স্বামীর আদর্শ বা ভাবনা মেনে নিয়েই তাঁরই ইচ্ছামতো খাওয়ার পদ্ধতিও প্রায় মেনে নিয়েছিলেন । স্বামীর পরিশ্রমী সত্তার প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অটুট ছিল বলেই তিনি কোনির সাঁতার দেখতে হাজির হয়েছিলেন । স্বল্প পরিসরেও তাঁর কর্মপ্রাণা, সংসারী এবং পরোক্ষে স্বামী অনুরাগী চরিত্রটি উপন্যাসে ধরা পড়েছে ।



৯. চলতি গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো : ৪

One day a fox was going beside the vine yard. He saw the ripe grapes hanging from a vine. He jumped but did not reach it. Because they wear beyond his reach.

Ans. একদিন একটি শিয়াল একটি আঙ্গুর ক্ষেতের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল । সে দেখেছিল যে, একটা গাছ থেকে পাকা আঙুর ঝুলছে । শিয়ালটি লাফ দিল কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছতে পারল না কারণ সেগুলো তার নাগালের বাইরে ছিল ।



১০. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫

১০.১ বৃক্ষরোপণ-উপযোগিতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো ।

Ans. অনল : দেখলি, আমাদের স্কুলের সামনে এত বড়ো একটা বকুল গাছ কেটে ফেলা হল । শুনলাম ওখানে ফ্ল্যাট বানানো হবে ।

কমল : আর বলিস না ! মনটা এত খারাপ লাগছে, যে ওদিকে আর তাকাতেই পারছি না । সেই কোন ছোটবেলায় প্রথম স্কুলে আসার দিনটা থেকে গাছটার সঙ্গে বন্ধুত্ব, চেনাশোনা । মনে আছে, ছুটির পরে ওই বিশাল গাছটার নীচে বাঁধানো বেদিটায় চড়ে কত খেলেছি ।

অনল : সভ্যতার গর্বে উন্মত্ত মানুষ যেন ভুলেই গিয়েছে গাছের অবদান । নগরায়ণের এই হামলে পড়া নেশায় তরাই থেকে সুন্দরবন— সর্বত্রই চলেছে অরণ্যনিধনের এই যজ্ঞ ।

কমল : কেউ একবার অন্তত এটাও ভেবে দেখবে যে, এতে ক্ষতি আখেরে নিজেদেরই । এই ভয়ানক লোভে তো মানুষের নিজের সভ্যতাকেই ধ্বংস করছে । পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে, মেরুপ্রদেশের বরফ গলে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর জল স্তর, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য— গাছপালা কমে যাওয়ায় অতিবেগুনি রশ্মিও নির্বিরোধে প্রভাব ফেলছে পরিবেশের ওপরে । সব মিলিয়ে নানান অসুখবিসুখের প্রকোপও বেড়েই চলেছে ।

অনল : শুধু তাই নয়, তুই কি জানিস, বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো দেশের আয়তনের তুলনায় ভূভাগের পরিমাণ যখন ৩৫ শতাংশের নীচে নেমে যাবে, তখনই সেই দেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে । ভারত-সহ পৃথিবীর বহু দেশই এখন এই সমস্যার সম্মুখীন ।

কমল : আসলে কী বল তো, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’— এই বাক্যটিকে নিছক স্লোগান নয়, জীবনযাপনের অনিবার্য শর্ত করে তুলতে হবে । না ইলে এই ভয়ানক ধ্বংসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না ।

১০.২ বিদ্যালয়ের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।

Ans. বলরামপুর হাইস্কুলে শিক্ষক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত হল ।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বলরামপুর, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ :

বলরামপুর অঞ্চলের বিশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলরামপুর হাইস্কুলে গতকাল ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিবস তথা শিক্ষক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হল । বিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে দুপুর ১২ টায় এই অনুষ্ঠানের সূচনা করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক । তিনি দেশ ও জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভুমিকার কথা আলোচনা করেন । সভায় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন । বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক ও ছাত্রদের পক্ষ থেকে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সুন্দর ও সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অঞ্চলের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং প্রবীণ শিক্ষকদের সম্বর্ধিত করা হয় । অনুষ্ঠানের শেষে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন । বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সকলকে অনুষ্ঠানের স্মারক রূপে বিদ্যালয়ের নামাঙ্কিত কলম উপহার দেওয়া হয় ।

১১. কম-বেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করো : ১০

১১.১ বিজ্ঞান ও কুসংস্কার

১১.২ তোমার প্রিয় ঋতু

১১.৩ ছুটির দিন

১১.৪ বিশ্ব-উষ্ণায়ন |

Rlearn Education