মাধ্যমিক ভূগোল সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন | সেট নম্বর – 1

Content Topic :
আলোচ্য বিষয় :
———————————————————

গ্রাবরেখা
ধারণ অববাহিকা
বৈপরীত্য উত্তাপ
শৈবাল সাগর
ই-বর্জ্য
কম্পোস্টিং
খাদার ও ভাঙ্গার এর পার্থক্য
ডেকান ট্র্যাপ
অনুসারী শিল্প
ভারতের নগরায়ণের দুটি সমস্যা
দূরসংবদেন ও ডিগ্রি শিট |

মাধ্যমিক ভূগোল সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন : মান-2



গ্রাবরেখা :
পার্বত্য উপত্যকা দিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষয়জাত পদার্থগুলি হিমবাহের সঙ্গে বাহিত হয়ে উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়| সঞ্চিত এইসব পদার্থ গ্রাবরেখা নামে পরিচিত।

উদাহরণ : তিস্তা নদীর উচ্চ অববাহিকায় লাচেন ও লাচুং অঞ্চলে গ্রাবরেখা দেখা যায় ।

ধারণ অববাহিকা :
যে অঞ্চলের ছোটো, বড়ো, মাঝারি প্রভৃতি অসংখ্য জলধারা থেকে নদী জল সংগ্রহ করে তার প্রবাহকে বাড়ায়, সেই অঞ্চলকে ধারণ অববাহিকা বলে | উদাহরণ: যে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বৃষ্টিপাতের জল দামোদর ও তার বিভিন্ন উপনদীতে এসে পড়ে, সেই সমগ্র অঞ্চলটিই হল দামোদরের ধারণ অববাহিকা।

বৈপরীত্য উত্তাপ :
কোনো কোনো সময় উচ্চতা বাড়লেও উষ্ণতা না কমে বরং বেড়ে যায়। সাধারণত পার্বত্য উপত্যকার শান্ত মেঘমুক্ত রাতে পর্বতের ওপর অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণ করে খুব ঠান্ডা ও ভারী হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পর্বতের ঢাল বরাবর নীচের উপত্যকায় নেমে আসে। অন্যদিকে, সারাদিন ধরে উষ্ণ হওয়া পর্বত পাদদেশের বায়ু হালকা হয়ে উপত্যকার ঢাল বেয়ে ঊর্ধ্বগামী হয়। ফলে, উপত্যকার নীচু অংশের উত্তাপ পর্বতের ওপর অংশের তুলনায় অনেক কম হয়।
একে বলা হয় বৈপরীত্য উত্তাপ |

শৈবাল সাগর বা সারগাসো সি (Sargasso sea) :
সাধারণত মহাসাগরের মধ্যভাগের স্রোতহীন, শৈবাল বা আগাছাভরা শান্ত অংশকে শৈবাল সাগর বা সারগাসো সি (Sargasso sea) বলে। উদাহরণ — প্রশান্ত মহাসাগরের অভ্যন্তরভাগে ও কর্কট- ক্রান্তিরেখার উভয় পার্শ্বে এইরকম শৈবাল সাগর দেখা যায়।

‘ই-বর্জ্য’ :
বর্তমানে বিশ্বে নানান ইলেকট্রনিকস দ্রব্য ব্যবহৃত হয়। এই দ্রব্যগুলির অব্যবহৃত বাতিল অংশ পরিবেশ দূষণ করে। এই জাতীয় বর্জ্যকে ‘ই-বর্জ্য’ বলে। যেমন— সার্কিট বোর্ড, টিভি বা কম্পিউটার মনিটর প্রভৃতি।

কম্পোস্টিং :
কম ক্ষতিকারক জৈব বর্জ্য থেকে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সাহায্যে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার উৎপাদনের পদ্ধতিকে কম্পোস্টিং বলে |
পদ্ধতি: দুটি পদ্ধতিতে কম্পোস্টিং হয়— a) পরিখা বা ট্রেঞ্চের মতো লম্বা গর্ত করে তার মধ্যে নানা ধরনের জৈব বর্জ্য ফেলে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি দ্বারা বিয়োজন, এবং b) যান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ একটি যন্ত্রের
মধ্যে জৈব বর্জ্যগুলিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে বিয়োজন।

খাদার ও ভাঙ্গারের দুটি পার্থক্য :
1. উচ্চ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলের নদী উচ্চ
উপত্যকার নতুন পলিমাটিকে বলে খাদার। অন্যদিকে উচ্চ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলের নদী উপত্যকার প্রাচীন পলিমাটিকে বলে
ভাঙ্গার।
2. নদীর উভয় তীরের নতুন প্লাবনভূমিতে অর্থাৎ নদীর কাছাকাছি অঞ্চলে খাদার মাটি দেখা যায় ৷ অপরদিকে নদী থেকে কিছুটা দূরে অর্থাৎ, পুরোনো প্লাবনভূমিতে ভাঙ্গার মাটি দেখা যায়।

ডেকান ট্র্যাপ বা লাভা মালভূমি :
দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর-পশ্চিমাংশ ডেকান ট্র্যাপ বা লাভা মালভূমি নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি লাভা শিলা বা ব্যাসল্ট দ্বারা গঠিত। ‘ডেকান’-এর অর্থ দাক্ষিণাত্য এবং ‘ট্র্যাপ’ বলতে বোঝায় ধাপ বা সিঁড়ি। সমগ্র মালভূমিটি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে। প্রায় 6 থেকে 13 কোটি বছর আগে ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত তরল পদার্থ বা ম্যাগমা কোনো বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে হাজার হাজার সুড়ঙ্গ বা ফাটলের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসে (বিদার অগ্ন্যুগম) লাভা প্রবাহরূপে এই অঞ্চলটিকে ঢেকে ফেলে| যা পরবর্তী সময়ে শীতল হয়ে লাভা শিলা বা ব্যাসল্ট শিলা গঠন করেছে।

অনুসারী শিল্প :
যখন কোনো শিল্পে উৎপাদিত দ্রব্যসমূহকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে পরস্পর নির্ভরশীল অনেক শিল্প গড়ে তোলা হয়, তখন প্রথমটিকে কেন্দ্রীয় শিল্প এবং বাকি শিল্প গুলিকে অনুসারী শিল্প বলে। উদাহরণ: হলদিয়ার পেট্রোরসায়ন শিল্প হল কেন্দ্রীয় শিল্প, আর এই শিল্পে উৎপাদিত দ্রব্য সমূহকে
কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে যেসব শিল্প গড়ে উঠছে তাদের অনুসারী শিল্প বলে।

ভারতে নগরায়ণের প্রধান দুটি সমস্যা :
ভারতে নগরায়ণের প্রধান দুটি সমস্যা হল—
[1] অপরিকল্পিত নগরায়ণ: চণ্ডীগড়ের মতো হাতেগোনা দু-একটি শহর বাদ দিয়ে ভারতের অধিকাংশ শহরই অপরিকল্পিত – ভাবে গড়ে উঠেছে। তাই শহরগুলির যত্রতত্র বাসস্থান, সড়কপথ, অফিস, আদালত, শিক্ষাকেন্দ্র, ধর্মস্থান প্রভৃতি লক্ষ করা যায়। এর ফলে বেশিরভাগ শহরেরই পরিবেশ ঘিঞ্জি প্রকৃতির, যা শহরগুলির সামগ্রিক অবস্থার অবনতি ঘটিয়েছে।
[2] মানুষের শহরমুখী প্রবণতা: শহর এবং গ্রামের উন্নয়নের পার্থক্যের জন্য ভারতে গ্রাম থেকে শহরে আসার প্রবণতা খুব বেশি। গ্রামের তুলনায় শহর-নগরে উন্নত জীবন- যাত্রার সুবিধা, কর্মসংস্থান ও উন্নত পরিসেবার সুযোগ থাকার কারণে গ্রামের বহু মানুষই এখন শহরমুখী | কিন্তু এইসব মানুষদের বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এবং অদক্ষ বলে শহরগুলিতে বেকারত্ব, বাসস্থানের সমস্যা, বস্তির উদ্ভব, নানাবিধ রোগের প্রকোপ প্রভৃতি সমস্যা খুবই বেশি।

দূর সংবেদন :
দূর সংবেদন হল ভূপৃষ্ঠের কোনো বস্তু বা উপাদানকে স্পর্শ না করে দূর থেকে তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া।
বৈশিষ্ট্য: সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই বস্তু বা উপাদান সম্পর্কে ধারণা লাভ করার এটি একটি উন্নত প্রযুক্তি।

ডিগ্রি শিট :
যেসব ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেল 1 ইঞ্চিতে 4 মাইল বা 1 : 250000 বা 1 সেমিতে 2.5 কিমি সেইসব ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রকে সিকি মানচিত্র বলে। সিকি মানচিত্রে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের বিস্তার 1° ✗ 1°| একে ডিগ্রি শিটও বলে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *