নারীশিক্ষার প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান | মাধ্যমিক ইতিহাস

মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশান | নারীশিক্ষার প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান

ভূমিকা:

উনিশ শতকের সূচনালগ্ন পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক বিধিনিষেধের ফলে বাংলায় নারী শিক্ষার বিশেষ প্রসার ঘটেনি। তবে কিছুকাল পর থেকেই এ বিষয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ শুর হয়। নারীশিক্ষার প্রসারে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বপ্রথম ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-
৯১ খ্রি.)।


[1] বিদ্যাসাগরের উপলব্ধি:

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উপলব্ধি করেন যে, নারীজাতির উন্নতি না ঘটলে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। এই জন্য তাদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটানো দরকার।

[2] প্ৰাথমিক উদ্যোগ:

মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠায় বিদ্যাসাগরের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল ড্রিংকওয়াটার
বিটনের সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতায় ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় (বর্তমান বেথুন স্কুল) প্রতিষ্ঠা| বিদ্যাসাগর ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমান জেলায় মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।


[3] চূড়ান্ত উদ্যোগ:

গ্রামাঞ্চলে নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারেও
বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন |এই উদ্দেশ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন জেলায় স্ত্রীশিক্ষা বিধায়িনী সম্মিলনী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নদিয়া, বর্ধমান, হুগলি ও মেদিনীপুর জেলায় ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলিতে ১৩ হাজার ছাত্রী পড়াশোনা করত। তাঁর ব্যক্তিগত ব্যয়ে বিদ্যালয়গুলি চলত।


[4] বিশেষ উদ্যোগ:

বিদ্যাসাগর পরবর্তীকালে বিভিন্ন স্থানে
আরও কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মা ভগবতী দেবীর স্মৃতিতে বিদ্যাসাগর ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে নিজ গ্রাম বীরসিংহে ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

উপসংহার:
নারীশিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে তাদের শৃঙ্খলমোচনই হয়ে উঠেছিল বিদ্যাসাগরের জীবনের ব্রত। তাই দেখা যায় যে, জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছেও তিনি নারীশিক্ষার প্রয়াস থেকে সরে আসেননি।

Rlearn Education