নিপা ভাইরাস প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে ! জেনে নিন ভাইরাসের উপসর্গ ও মোকাবিলার উপায়

Content Topic :

  • নিপা ভাইরাস কি ?
  • নিপা ভাইরাসের বাহক |
  • নিপা ভাইরাসের সূত্রপাত |
  • নিপা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায় |
  • নিপা ভাইরাসের উপসর্গ বা লক্ষণ |
  • নিপা ভাইরাসের চিকিৎসা |
  • নিপা ভাইরাস থেকে মোকাবিলার কৌশল |

Nipha virus (নিপা ভাইরাস) : Science & Medicine

নিপা ভাইরাস কি ?
নিপা ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস, যার মানে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। নিপা ভাইরাস ফল খাওয়া বাদুড়দের থেকে অন্যান্য প্রাণী ও মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসটির নাম মালয়েশিয়ার সুঙ্গাই নিপা গ্রাম থেকে এসেছে যেখানে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল 1998-1999 সালে। সাধারণত, এই ভাইরাস কুকুর, ঘোড়া, শূকর ইত্যাদি প্রাণীকে প্রভাবিত করে। যদি নিপা ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি একটি গুরুতর সংক্রমণের কারণ হতে পারে যার ফলে মৃত্যু হতে পারে।

Credit: The Hindu


বাহক: প্রধান বাহক ফলখেকো বাদুড়। তবে শূকরও এই ভাইরাস বহন করে।

সূত্রপাত: মালয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালে প্রথম মালয়েশিয়ায় এই ভাইরাসের সন্ধান মেলে। শূকর প্রতিপালকদের মধ্যে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে।

বাংলায় আগেই হয়েছে:

১) ২০০১ সালে শিলিগুড়িতে নিপার হামলায় আক্রান্ত হন ৬৬ জন। এর মধ্যে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় একজন চিকিৎসকও ছিলেন।

২) ২০০৭ সালের এপ্রিলে নদিয়ায় একই পরিবারের চারজন নিপার ছোবলে প্রাণ হারান। রোগীর রক্ত সংগ্রহ করতে এসে এক ব্লাড কালেক্টরও প্রাণ হারান।

শিলিগুড়িতে মৃত্যুর হার ছিল ৬৮ শতাংশ। নদিয়াতে ১০০ শতাংশ।

সম্প্রতি কেরলের কোঝিকোড়,মল্লপুরম-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নিপা ভাইরাসের ছোবলে দশজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

কীভাবে ছড়ায় ?

বাদুড় বা বাদুড়ের বিষ্ঠার সংস্পর্শে আসা ফল খেলে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই রোগ হতে পারে। আক্রান্ত শূকর বা বাদুড়ের থেকেও সরাসরি মানুষের শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।

উপসর্গ বা লক্ষণ :

  • শ্বাসকষ্ট এবং ক্রমাগত কাশি সহ জ্বর
  • মস্তিষ্কের জ্বর
  • তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ (গুরুতর বা হালকা)
  • ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ – জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, স্ট্রোক, বমি, গলা ব্যথা, মাথা ঘোরা, তন্দ্রাভাব, স্নায়বিক ব্যাধি যা এনসেফালাইটিস এর নির্দেশ করে।
  • নিউমোনিয়া (কিছু ক্ষেত্রে)
  • তীব্র শ্বাসকষ্ট সহ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা
  • গুরুতর ক্ষেত্রে খিঁচুনি এবং এনসেফালাইটিস হতে পারে, যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি 24-48 ঘন্টার মধ্যে কোমায় চলে যেতে পারে৷
  • চিকিৎসা : কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক নেই। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাই একমাত্র সম্বল। ভেন্টিলেটর সুবিধাযুক্ত আইসিইউ বেডে রেখে রোগীর চিকিৎসা করতে হবে। দু’একজন চিকিৎসক ‘রাইভা ভিরিন’ নামে অ্যান্টি ভাইরাল ট্যাবলেট প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি |
  • মোকাবিলা: নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ, হ্রাস এবং এড়াতে, একজন ব্যক্তির নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:
  • সংক্রমিত ব্যক্তি বা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর জল ও সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
  • কাঁচা খেজুরের রস পান করবেন না।
  • শৌচাগার বা বাথরুমে সাধারণত ব্যবহৃত সামগ্রী, জামাকাপড় এবং জিনিসপত্র, যেমন মগ এবং বালতির স্বতন্ত্রভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসম্মত – ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
  • জনস্বাস্থ্য আধিকারিকদের দ্বারা জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে নিপা-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃতদেহগুলি পরিচালনা করা উচিত। এক্ষেত্রে কোনো অবহেলা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
  • সঠিকভাবে ধুয়ে ফেলার পরেই ফল খান। মাটিতে পড়ে থাকা অর্ধেক খাওয়া ফল খাবেন না। এই ফলগুলি সংক্রামিত কোন প্রাণীর খাওয়া হতে পারে, বিশেষ করে উড়ন্ত শিয়ালের যারা নিপা ভাইরাসের প্রধান বাহক রূপে পরিচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *