নদীর বিদ্রোহ রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

নদীর বিদ্রোহ সাজেশান : মাধ্যমিক বাংলা

নদীর বিদ্রোহ রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – নদীর বিদ্রোহ গল্পের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর -Nadir Bidroha Descriptive Questions and Answers

1. নদীর বিদ্রোহ গল্পে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নদীর যে রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন তা বর্ণনা করাে |

উত্তরঃ ভূমিকা: ‘নদীর বিদ্রোহ’ নামাঙ্কিত গল্পে নদের চাঁদের সঙ্গে নদীর সুগভীর সম্পর্ক রচিত হয়েছে। আলােচ্য গল্পে দুটি নদীর কথা আছে। একটি হল নদের চাঁদের গ্রামের নদী, আর একটি হল তার কর্মস্থানে নদীটি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন ৩০ বছর বয়সেও নদের চাঁদের নদীর প্রতি গভীর হৃদয়ের সমাজ তার কোথাও ঘাটতি পড়েনি। সে নিজেও জানে নদীর জন্য অদ্ভুত এক পাগলামাে। রয়েছে তার।

নদীর রূপ: নদের চাঁদ রেল লাইন ধরে এক মাইল দূরে নদীর ওপরকার সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটতে থাকে। টানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর আজ নদীকে দেখার সুযােগ। হয়েছে। আর সেই জন্য নদের চাঁদের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। পাঁচদিনের আকাশভাটা বৃষ্টির পর নদী যেন এক অপরুপ রুপ ধারণ করেছে। দুদিকে মাঠঘাট জলে ডুবে গিয়েছে। আর নদের চাঁদ নদীর বর্ষণপুঞ্জ মূর্তি কল্পনা করে আনন্দে মাতােয়ারা হয়েছে। পাঁচদিন আগেও বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদীর সেই নদী ক্ষেপে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পর মুষলধারায় আরম্ভ হলে নদেরচাদ বসে বসে ভিজতে থাকে। নদী থেকে একটা ভীষণ মধুর ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়। নদীর রূপ দেখে নদের চাঁদ ভয় পেয়ে যায়। তার মনে হয় রাগে ক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে এই নদী। তার রাগের কারণ হল তার গতিপথে অসংখ্য বাঁধ ও সেতু বসিয়ে চলার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। ফলে নদীর ভবিষ্যত দেখতে পায় নদের চাঁদ। তার মনে হয় এই নদী একদিন ক্ষীণস্রোতা নদীতে পরিণত হবে। এভাবে নদী হারিয়ে যাবে।

2. নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে-নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল? সে কীভাবে তা বুঝিতে পারিয়াছে?

উত্তরঃ বিদ্রোহের কারণ: ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অনুসারে আজন্ম নদীর ধারে বেড়ে ওঠা নদের চাঁদ নদীর প্রতিটি আচরণের তাৎপর্য জানত। বর্ষার জলে উপচে পড়া নদীকে সে ক্ষিপ্ত, বিক্ষুব্ধ বলে জানত। মানুষের তৈরি বাঁধ ও সেতু নদীকে বন্দি করে ফেলেছিল। বর্ষার আগমনে সেই নদী নিজের রুপ পাল্টে ফেলে। নদেরর্চাদ তার। সংবেদনশীল অন্তজগৎকে উপলব্ধি করেছিল নদীর বিক্ষোভের ভাষায়। যুগ যুগ ধরে মানুষের প্রযুক্তির কাজে অবদমিত প্রকৃতি নদীর মাধ্যমে প্রতিশােধ নিতে চাইছে। তাই শীর্ণকায়া নদী পরিণত হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচার একদিন মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। এই সমস্ত উপলব্ধি করে। নদের চাঁদ বুঝেছিল নদীর বিদ্রোহের কারণ।

নদের চাঁদের উপলব্ধি: নদের চাঁদ একজন সংবেদনশীল, শিল্পী মনের মানুষ। নদী । সম্পর্কে তার কৌতূহল আকর্ষণ পাগলামির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন নদীর সান্নিধ্য কাটানাের কারণে নদীর প্রতিটি পরিবর্তনের তাৎপর্য তার জানা ছিল। নদী বর্ষার জলে তার রূপ পরিবর্তন করলে সে প্রথম অবাক হলেও পরবর্তীকালে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হন। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে উন্নত মানুষ নিজের শক্তির পরিচয় দিতে গিয়ে প্রকৃতির বুকে সৃষ্টি করেছে তার নিজের কৃতিত্ব। নদীকে বাগে আনতে তার বুকে বাঁধ দিয়েছে, সেতু তৈরি করেছে। এ অন্যায়ের প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে। নদীর গর্জনে। কারণ সে সেতু ও বাঁধ ভেঙে ফেলতে চায়। প্রকৃতির এ আচরণ নদের চাঁদ উপলদ্ধি করেছে |

প্রশ্নঃ “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।”- কে বুঝতে পেরেছে? নদীর বিদ্রোহ বলতে সে কী বােঝাতে চেয়েছে? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৭]

প্রশ্নঃ “নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভােগ করে।”- কার কথা বলা হয়েছে? তার ‘পাগলামিটি’ কী ? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৯]

প্রশ্নঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অবলম্বনে নদীর প্রতি নদেরচাঁদের অকৃত্রিম ভালবাসার পরিচয় দাও। [মাধ্যমিক ২০১৯]

প্রশ্নঃ “ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য … এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক।” নদীর জন্য কার মায়া? তা অস্বাভাবিক কেন? এই অস্বাভাবিকতার পরিণতি কী হয়েছিল? ১+২+২

Comments 2

Rlearn Education