নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ | মাধ্যমিক ভূগোল

পার্বত্য প্রবাহে বা উচ্চগতিতে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ :

[1] ‘I’-আকৃতির উপত্যকা বা ক্যানিয়ন:

শুষ্ক ও প্রায় শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে ‘I’-আকৃতির নদী উপত্যকা বা ক্যানিয়নের সৃষ্টি হয়। কারণ, বৃষ্টিপাতের স্বল্পতার জন্য নদী উপত্যকাগুলির পার্শ্ব- দেশের বিস্তার কম, কিন্তু ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদীগুলির নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এজন্য নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ইংরেজি ‘I’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়| শুষ্ক ও প্রায়শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে সংকীর্ণ ও গভীর ‘I’-আকৃতির উপত্যকাকে ক্যানিয়ন বলা হয়।

উদাহরণ: কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
(গভীরতা প্রায় 1857 মি)।

[2] ‘v’-আকৃতির উপত্যকা বা গিরিখাত:

আর্দ্র ও আর্দ্র প্রায় অঞ্চলে নদীর উচ্চ বা পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি থাকায় নদীগুলি প্রবলভাবে নিম্নক্ষয় করে। এরূপ নিম্নক্ষয়ের কারণে নদী উপত্যকাগুলি যেমন সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ওঠে তেমনই আবহবিকার, পুঞ্জিতক্ষয় ইত্যাদির প্রভাবে কিছু পরিমাণ পার্শ্বক্ষয়ও চলে। ফলে নদী উপত্যকা আগের থেকে চওড়া হয়ে ইংরেজি ‘v’ অক্ষরের মতো আকৃতি ধারণ করে। অতিগভীর ‘V’-আকৃতির এই উপত্যকাকে বলা হয় গিরিখাত |

উদাহরণ: নেপালের কালী নদীর গিরিখাত।

[3] জলপ্রপাত:

নদীর জলপ্রবাহ যখন হঠাৎ কোনো উচ্চ স্থান থেকে নীচের দিকে লাফিয়ে পড়ে, তখন তাকে জলপ্রপাত বলে | নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলাস্তর ওপরে নীচে আড়াআড়িভাবে বা অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে, প্রবল স্রোতে ওপরের কঠিন শিলাস্তর ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার ফলে নীচের কোমল শিলাস্তর বেরিয়ে পড়ে। কোমল শিলাস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বলে, সেখানে খাড়া ঢালের সৃষ্টি হয় এবং নদীস্রোত খাড়া ঢাল থেকে প্রবল বেগে নীচে আছড়ে পড়ে জলপ্রপাতের সৃষ্টি করে।

উদাহরণ: ভেনেজুয়েলার ক্যারোনি (Caroni) নদীর উপনদী চুরান (Churun) নদীর গতিপথে সৃষ্ট অ্যাঞ্জেল প্রপাতটি পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত।

চিত্র : অবশ্যই দিতে হবে |

Rlearn Education