নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা | মাধ্যমিক ইতিহাস | ক্লাস টেন ইতিহাস

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা

ভূমিকা:

মোটামুটিভাবে বিংশ শতাব্দীর ৬-৭-এর দশকে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার সূত্রপাত ঘটে। এর কিছুকালের মধ্যেই এই ইতিহাসচর্চা যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নতুন সামাজিক ইতিহাস – চর্চার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন—

[1] আলোচনার ব্যাপকতা:

নতুন সামাজিক ইতিহাসে আলোচনার পরিধি যথেষ্ট ব্যাপক এবং বহুমুখী। পোশাক- আশাক, খাদ্যাভ্যাস, খেলাধুলা, শিল্পচর্চা, পরিবেশ, জাতীয়তাবাদ, নারীবাদ-সহ বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ই এই ইতিহাসচর্চার অন্তর্ভুক্ত |

[2] সমাজের সর্বস্তরের আলোচনা:

নতুন সামাজিক ইতিহাস শুধু রাজা-মহারাজা বা অভিজাতবর্গের আলোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। এই চর্চার সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্ত্যজদের জীবনযাত্রার আলোচনাও সমানভাবে গুরুত্ব পায়।

[3] আলোচনায় নিম্নবর্গীয়দের প্রাধান্য:

গত শতাব্দীর ৯-এর দশক থেকে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার সাবলটার্ন বা নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার মধ্য দিয়ে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা শুরু হয়েছে। জাতি- ধর্ম -বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের নিম্নস্তরের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে এই ইতিহাসচর্চা এগিয়ে চলেছে।

[4] আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা:

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চায় বৃহত্তর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইতিহাসের বাইরেও স্থানীয়
ও আঞ্চলিক ইতিহাসকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়|

[5] উপাদানের নতুনত্ব:

নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ঐতিহাসিক উপাদানের নতুনত্ব। এই চর্চায় শুধু সরকারি ও প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নথিপত্রই শুধু নয়, বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কাগজপত্রও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গুরুত্ব পায়।


উপসংহার:

বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্থে যে নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার সূচনা হয় তা ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এক নব দিগন্তের সূচনা করে। এর ফলে ইতিহাসচর্চার নতুন নতুন উৎসমুখ খুলে যায়, যা প্রকৃত ইতিহাস চর্চাকে সার্থক করে তোলে।

Rlearn Education