পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান : মাধ্যমিক ইতিহাস

ভূমিকা : উনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩ খ্রি.) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা
নিয়েছিলেন। তিনি মনে করতেন, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ওপর ভিত্তি করেই নতুন ভারত গড়ে উঠবে।

[1] বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা: পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে রামমোহন রায় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল নামে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

[2] সরকারকে পত্র: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিলে রামমোহন ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড আমহার্স্টকে দেওয়া পত্রে দাবি জানান যে, এই অর্থ আধুনিক বিজ্ঞান ও ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের জন্য ব্যয় করা হোক।

[3] পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে প্রচার: রামমোহন পাশ্চাত্য গণিত, দর্শন, রসায়ন, অস্থিবিদ্যা প্রভৃতি শিক্ষার সপক্ষে প্রচার চালান। তিনি কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন।

[4] বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা: শিক্ষার্থীদের মন থেকে নানা কুসংস্কার ও মূর্তিপূজা দূর করে পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে রামমোহন রায় ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

উপসংহার: পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে রামমোহন রায় শুধুমাত্র নিজের প্রত্যক্ষ উদ্যোগ নিয়েই থেমে থাকেননি; ডেভিড হেয়ার, আলেকজান্ডার ডাফ-সহ অন্যদের সহায়তা করতেও এগিয়ে আসেন। ডাফ জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলে রামমোহন তাঁকে বিশেষভাবে সহায়তা করেন। হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠায় রামমোহনের সহায়তার কথা কেউ কেউ স্বীকার করেন |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *