Content Topic :
- প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র
- সিমপ্যাথেটিক বা সমবেদী এবং প্যারাসিমপ্যাথেটিক বা পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য
- কার্য অনুসারে স্নায়ুর প্রকারভেদ |
- স্নায়ুর কাজ
- সাইন্যাপস কাকে বলে |
- নার্ভ গ্যাংলিয়ন বা স্নায়ু গ্রন্থি |
প্রঃ প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র এর প্রকারভেদ উল্লেখ করো ।
উঃ প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (PNS) : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে নির্গত সমস্ত রকম স্নায়ুসমূহ নিয়ে এই স্নায়ুতন্ত্র গঠিত হয়েছে। ১) করোটিক স্নায়ু -12 জোড়া ২) সুষুম্না স্নায়ু- 31 জোড়া ।
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (ANS) : যেসব স্নায়ু প্রাণীদেহের আন্তর যন্ত্র তথা অনৈচ্ছিক পেশিগুলিতে বিস্তৃত থেকে তাদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের স্বয়ংক্রিয় বা অটোনোমিক স্নায়ুতন্ত্র বলে । ১) সমবেদী স্নায়ুতন্ত্র ২) পরা – সমবেদী স্নায়ুতন্ত্র ।
প্রশ্ন : সিমপ্যাথেটিক বা সমবেদী এবং প্যারাসিমপ্যাথেটিক বা পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য লেখো । অথবা , সিমপ্যাথেটিক বা সমবেদী এবং প্যারাসিমপ্যাথেটিক বা পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের পার্থক্য লেখো ।
উত্তরঃ সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র :
- ১) তারারন্ধ্র প্রসারিত করে।
- ২) লালাগ্রন্থির ক্ষরণ হ্রাস করে।
- ৩) হৃদস্পন্দনের হার বৃদ্ধি করে।
- ৪) রক্ত শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ।
- ৫) পাকস্থলীর ক্ষরণ হ্রাস করে।
- ৬) অশ্রুগ্রন্থির ক্ষরণে সাহায্য করে।
- প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র :
- ১) তারারন্ধ্র সংকুচিত করে ।
- ২) লালাগ্রন্থির ক্ষরণ বৃদ্ধি করে।
- ৩) হৃদস্পন্দনের হার হ্রাস করে।
- ৪) রক্তশর্করার পরিমাণ হ্রাস করে ।
- ৫) পাকস্থলীর ক্ষরণ বৃদ্ধি করে।
- ৬) অশ্রু গ্রন্থির ক্ষরণে সাহায্য করে।
প্রশ্ন : মানুষের দশম করোটিক স্নায়ুর নাম কি?
উত্তর : ভেগাস ।
প্রশ্ন : কাজ অনুসারে স্নায়ু কয়প্রকার ও কি কি ?
উত্তর : কার্য অনুযায়ী স্নায়ু তিন প্রকার হয়, যথা-
১) অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ু : যে স্নায়ু রিসেপটর থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা বহন, তাকে অন্তবাহী স্নায়ু বা অ্যাফারেন্ট নার্ভ বলে । সেনসরি নিউরোনের স্নায়ুতন্তু দিয়ে গঠিত হওয়ায় একে সংজ্ঞাবহ স্নায়ু (sensory Nerve) বলে । যেমন- অলক্যাক্টরি (প্রথম করোটি স্নায়ু ) , অপটিক (দ্বিতীয় করোটি স্নায়ু), অডিটরি (অষ্টম করোটি স্নায়ু) ইত্যাদি।
২) বর্হিবাহী স্নায়ু বা আজ্ঞাবহ স্নায়ু : যে স্নায়ু কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে সাড়া বহন করে, তাকে বর্হিবাহী বা ইফারেন্ট নার্ভ বলে। মোটর নিউরোনের স্নায়ুতন্তু দিয়ে গঠিত হওয়ায় একে আজ্ঞাবহ স্নায়ু বা চেষ্টীয় স্নায়ু বলে। যেমন- স্পাইনাল অ্যাকসেসরি (একাদশ করোটি স্নায়ু) এবং হাইপোগ্লসাল (দ্বাদশ করোটি স্নায়ু )।
৩) মিশ্র স্নায়ু (Mixed Nerve) : যে স্নায়ু উভয়মুখে স্নায়ুস্পন্দন বহন করে ( রিসেপটর থেকে কেন্দ্রীয় এবং কেন্দ্রীয় থেকে ইফেকটরে ) এবং যে স্নায়ু সেনসরি ও মোটর উভয় প্রকার স্নায়ুতন্ত নিয়ে গঠিত, তাকে মিশ্র স্নায়ু বলে । যেমন- ফেসিয়াল সপ্তম করোটি স্নায়ু ) , ভেগাস (দশম করোটি স্নায়ু ) প্রভৃতি ।
প্রশ্ন : স্নায়ুর কাজ কী কী ?
উত্তর : ১) গ্রাহক কাজ : চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক প্রভৃতি থেকে বিভিন্ন ধরনের উদ্দীপনা গ্রহণ করে সেই সকল উদ্দীপনাকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে দেওয়া ।
২) প্রেরক কাজ : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি বা সাড়া বিভিন্ন প্রেরক যন্ত্রে অর্থাৎ ইফেকটরে পৌঁঁছে দেওয়া।
প্রশ্ন : সাইন্যাপস বা প্রান্তসন্নিকর্ষ কাকে বলে ? সাইন্যাপস এর কাজ কী ?
উত্তর : সাইন্যাপস : দুটি নিউরোনের যে সংযোগস্থলে একটি নিউরোন শেষ হয় এবং অপর একটি নিউরোন শুরু হয়, তাকে স্নায়ু সন্নিধি বলে।
কাজঃ সাইন্যাপস স্নায়ু স্পন্দনকে এক নিউরোন থেকে অপর এক নিউরোনে প্রবাহিত করে।
প্রশ্ন : গ্যাংলিয়ন বা স্নায়ু গ্রন্থি কাকে বলে ? এর কাজ কী?
উত্তর : নার্ভ গ্যাংলিয়ন : কয়েকটি স্নায়ু কোশের কোশ দেহগুলি মিলিত হয়ে যে গ্রন্থি সৃষ্টি করে তাকে স্নায়ু গ্রন্থি বলে। কাজঃ ১) স্নায়ু গ্রন্থি থেকে স্মায়ুর উৎপত্তি হয় ৷ ২) নিউরো – সিক্রেসন নামক রস ক্ষরণ করে স্নায়ুতন্ত্রকে সিক্ত রাখে।