ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ : অ্যাজমা বা হাঁপানি (Asthama)

অ্যাজমা বা হাঁপানি (Asthama) :


ভূমিকা : অ্যাজমা সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার ফলে হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোনো একটি বহিঃস্থ পদার্থ ফুসফুসে প্রবেশ করলে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করতে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থার যেটুকু প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা, তার চেয়ে অনেক তীব্রভাবে প্রতিক্রিয়া ঘটলে অ্যাজমা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই অ্যাজমা আক্রান্ত শিশু বা ব্যক্তির বংশে হাঁপানি বা অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে। এটি ছোঁয়াচে নয়, জীবাণুবাহিত রোগও নয়।

কারণ: যেসব খাবার খেলে এলার্জি হয় (চিংড়ি, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ ইত্যাদি), বায়ুর সাথে ধোঁয়া, ধূলাবালি, ফুলের রেণু ইত্যাদি শ্বাস গ্রহণের সময় ফুসফুসে প্রবেশ করলে হাঁপানি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত সর্দি কাশি থেকে হাঁপানি হওয়ার আশংকা থাকে। বছরের বিশেষ ঋতুতে বা ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেড়ে যেতে পারে।

লক্ষণ বা উপসর্গ :

  • কাশির সাথে কখনো কখনো সাদা কফ বের হয় |
  • ফুসফুসের বায়ুথলিতে ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ না বা বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে রোগীর বেশি কষ্ট হয়।
  • হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
  • শ্বাসকষ্টে দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়, ঠোঁট নীল হয়ে গলার শিরা ফুলে যায় |
  • রোগী জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে, এ সময় বুকের ভিতর সাঁই সাঁই আওয়াজ |
  • শ্বাস নেওয়ার সময় রোগীর পাঁজরে চামড়া ভিতরে দিকে ঢুকে যায় |
  • সাধারণত জ্বর থাকে না।
  • রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে৷


প্রতিকার : চিকিৎসায় এ রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। তবে ঔষধ সেবনে রোগী কিছুটা আরাম বোধ করে।

  • যেসব খাদ্য খেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়, সেগুলো না খাওয়া।
  • যেসব জিনিসের সংস্পর্শ হাঁপানি বাড়ায় তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা। যেমন- পশুর লোম, কৃত্রিম আঁশ ইত্যাদি।
  • ধূমপান, গুল, সাদা পাতা, জর্দা ইত্যাদির ব্যবহার পরিহার করা।
  • শ্বাসকষ্টের সময় রোগীকে তরল খাদ্য খাওয়নো।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া ও সাবধানতা অবলম্বন করা।
  • আলো ও বাতাস পূর্ণ গৃহে বসবাস করা |

প্রতিরোধ :

  • স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা।
  • বায়ুদূষণ, বাসস্থান বা কর্মক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, এমন সব বস্তুর সংস্পর্শ পরিহার করা।
  • হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবের জন্য সবসময় সাথে ঔষধ রাখা ও প্রয়োজন মতো ব্যবহার করা।

পরামর্শ : এখানে লক্ষণীয় যে হাতুড়ে চিকিৎসকেরা অনেক সময় উচ্চমাত্রায় ক্ষতিক্ষারক স্টেরয়েড দিয়ে এর চিকিৎসা করে থাকে, যেটি উচ্চমাত্রায় প্রয়োগ করলে রোগীর কষ্ট তাৎক্ষণিকভাবে উপশম হলেও
দীর্ঘমেয়াদি এবং অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। তাই এ ধরনের চিকিৎসা বা চিকিৎসক থেকে দূরে থাকতে হবে। অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে |

Welcome Visitor

Rlearn Education