রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়া | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল

রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া :

রাসায়নিক আবহবিকার কাকে বলে :
বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত অক্সিজেন , কার্বন ডাইঅক্সাইড , জলীয়বাষ্প প্রভৃতির প্রভাবে শিলাস্তরের নিজ স্থানে রাসায়নিকভাবে বিয়োজন ঘটলে বা গাঠনিক উপাদানগুলির বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটলে , তাকে রাসায়নিক আবহবিকার (Chemical Weathering) বলে।

রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া :
রাসায়নিক আবহবিকারের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি নিম্নরূপ—

1. জারণ :
বায়ুর অক্সিজেনের উপস্থিতিতে জলের দ্বারা শিলা মধ্যস্থিত খনিজের পরিবর্তন হওয়ার রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে জারণ (oxidation) বলে।

a.পদ্ধতি : লৌহ অক্সাইডযুক্ত শিলায় , অক্সিজেনের উপস্থিতিতে জলের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নতুন খনিজের সৃষ্টি হয় ও শিলার বিয়োজন ঘটে।

b. বিক্রিয়া : 4FeO + 3H2O + O2 ― 2Fe2O3 , 3H2O ( ফেরাস ( জল ) ( অক্সিজেন ) ( সোদক ফেরিক অক্সাইড) অক্সাইড )

c.বৈশিষ্ট্য : i. যে কোনো জলে এই আবহবিকার ঘটতে পারে । ii. এর প্রভাবে লৌহযুক্ত শিলায় মরচে পড়ে।

2. অঙ্গারযোজন :
বায়ুর কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের উপস্থিতিতে জলের দ্বারা শিলা মধ্যস্থিত খনিজের পরিবর্তন হওয়ার রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে অঙ্গারযোজন (Carbonation) বলে।

a. পদ্ধতি : বৃষ্টির জল , বাতাসের CO2 গ্যাসের সঙ্গে তৈরি করে অ্যাসিড মিশে কার্বনিক ( CO2 + H2O → H2CO3 ) , যা চুনাপাথরজাতীয় সহজ দ্রাব্য শিলার সঙ্গে বিক্রিয়া করে শিলার বিয়োজন ঘটায়।

b. বিক্রিয়া : CaCO3 + H2CO3→ Ca ( HCO3 ) 2

c. বৈশিষ্ট্য : i. বৃষ্টির জলে এই আবহবিকার বেশি ঘটে। ii. চুনাপাথরযুক্ত শিলায় বেশি সক্রিয়।

3. জলযোজন :
শিলা মধ্যস্থিত খনিজের সাথে জলের রাসায়নিক বিক্রিয়া ও শিলার বিয়োজনের প্রক্রিয়াকে জলযোজন (Hydration) বলে।

a. পদ্ধতি : কতকগুলি খনিজের জল শোষণ করার ক্ষমতা বেশি । রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলা মধ্যস্থিত খনিজের সাথে জলের অণু যুক্ত হয়ে খনিজগুলি স্ফীত হয়ে যায় ও শিলার বিয়োজন ঘটে ।

b. বিক্রিয়া : 2Fe2O3 + 3H2O→2Fe2O3, 3H2O

c. বৈশিষ্ট্য : i.শিলাগঠনকারী খনিজগুলি আয়তনে বৃদ্ধি পায়। ii.জল শোষণে শিলা নমনীয় হয়। ii. সমধর্মী খনিজের সৃষ্টি হয়।

Rlearn Education