সিরাজদ্দৌলা : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত

মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান : সিরাজদ্দৌলা

স্বনামধন্য নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ (১৯৩৮) নাটকের দ্বিতীয় অংকের প্রথম দৃশ্যটি দশম শ্রেণির পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আলোচনা করা হল |

প্রশ্ন : “তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত”- কে কার কাছে লজ্জিত? এই লজ্জা পাওয়ার কারণ কী? ১+৩


উত্তর :শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে বাংলার নবাব সিরাজ ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লার কাছে লজ্জা প্রকাশ করেছেন। নবাব বলেছেন যে, তিনি ফরাসিদের কাছে লজ্জিত।
ইংরেজদের মতো ফরাসিরাও এদেশে বাণিজ্য করতে এসেছিল। তারা চন্দননগরে বাণিজ্য – কুঠি স্থাপন করেছিল। কিন্তু ইংরেজরা যেমন নবাবের আদেশ অগ্রাহ্য করে নবাবের বিরুদ্ধা – চরণ করত, ঠিক তার বিপরীতে, ফরাসিরা নবাবের অনুগত ছিল। সেইজন্য তারা নবাবের বিশেষ প্রিয়ও ছিল।
কিন্তু ইংরেজরা বাংলাদেশে একাধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্যে ফরাসি বাণিজ্যকুঠি দখল করতে শুরু করেছিল। এদেশে ইংরেজরা ফরাসিদের তুলনায় অনেক বেশি পরাক্রম – শালী ছিল। তাই সুবিচারের আশায় ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা এসেছিলেন নবাবের দরবারে।
ইতিমধ্যে একের পর এক যুদ্ধে সিরাজের লোকবল এবং অর্থবল ক্ষীণ হয়ে পড়েছিল। সেইজন্য ইচ্ছে থাকলেও ফরাসি বাণিজ্যকুঠি বাঁচানোর উদ্দেশ্য ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করার উপায় ছিল না। তাই সিরাজ অকপটে স্বীকার করেছেন যে তিনি লজ্জিত।

“আজ বিচারের দিন নয়, সোহার্দ্য স্থাপনের দিন”- কে, কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন? কথাটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। ১+৩

উত্তর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশ নবাব সিরাজদ্দৌলা তাঁর সিপাহসালার মীরজাফরকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন।
‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশের শুরুতেই দেখা যায় নবাবের দরবার কার্যত বিচারসভায় পরিণত হয়েছিল। দরবারে নিযুক্ত ইংরেজি প্রতিনিধি ওয়াটসকে লেখা একটি গোপন চিঠি সিরাজের হস্তগত হয়েছিল। তারপরেই নবাব রাজদ্রোহী ওয়াটসকে দরবার থেকে বিতাড়িত করেন। তবে শুধু ওয়াটস নয়, সিরাজের কয়েকজন কর্মচারীও তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তে যুক্ত ছিল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও নবাব তাদের বিচার না করে সোহার্দ্য-স্থাপনের জন্য আহ্বান জানান।
আসলে, সিরাজ কঠিন সময়ে তাঁর আপনজনদের হারাতে চাননি। বাংলার ভাগ্যাকাশে তখন সত্যিই ‘দুর্যোগের ঘনঘটা’। একদিকে বাংলার সিংহাসন নিয়ে নবাবের অন্দরমহলে গৃহদ্বন্দ্ব, আরেকদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ধূর্ত, দুর্বিনীত বণিক সম্প্রদায়। সিরাজ তাঁর পনেরো মাসের রাজত্বে গৃহদ্বন্দ্বের প্রায় অবসান ঘটিয়েছিলেন, কিন্তু ইংরেজরা ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছিল। তারা বাংলার নবাবকেও তোয়াক্কা করত না। ইংরেজদের শায়েস্তা করার জন্য প্রয়োজন ছিল সম্মিলিত প্রয়াস। এইজন্য সিরাজ নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর করে তাঁর সভাসদদের সৌহার্দ্য স্থাপনের আহ্বান জানান।

“কিন্তু ভদ্রতার অযােগ্য তােমরা”- কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলা হয়েছে? একথা বলার কারণ কী? ১+৩ [মাধ্যমিক ২০১৭]

উত্তর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে নবাবের দরবারে নিযুক্ত কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটসকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলা হয়েছে।
আলিনগরের সন্ধির শর্তগুলি যাতে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঠিকমতো পালন করে সেইজন্য কোম্পানির প্রতিভূ হিসেবে ওয়াটসকে সিরাজ তাঁর দরবারে স্থান দিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়াটস গোপনে সিরাজের বিরুদ্ধাচরণ করতে শুরু করেছিল। সিরাজের সিংহাসনে বসা নিয়ে তাঁর কয়েকজন কর্মচারীর মনে যে অসন্তোষ ছিল, ওয়াটস সেই ক্ষোভের আগুনে ইন্ধন জুগিয়েছিল। সে মীরজাফর সহ কয়েকজন রাজকর্মচারীকে নবাবের বিরোধিতা করার জন্য প্ররোচিত করেছিল।
এছাড়া, ওয়াটস কলকাতায় ইংরেজদের উপদেশ দিয়েছিল যাতে তারা সিরাজের আদেশ অগ্রাহ্য করে। তার চিঠিতে একথা স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, “নবাবের উপর নির্ভর করা অসম্ভব। চন্দননগর আক্রমণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।”
তার উদ্দেশ্যে লেখা অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের পত্র পড়ে জানা যায় যে ওয়াটস সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
সিরাজের বিরুদ্ধে এহেন চক্রান্ত করার জন্যই সিরাজ বলেছিওএন যে, তারা অর্থাৎ ইংরেজরা ভদ্রতার অযোগ্য।

Comments 2

  • Simply wish to say your article is as amazing The clearness in your post is just nice and i could assume youre an expert on this subject Well with your permission let me to grab your feed to keep updated with forthcoming post Thanks a million and please carry on the gratifying work

  • Wow wonderful blog layout How long have you been blogging for you make blogging look easy The overall look of your site is great as well as the content

Rlearn Education