সভাসমিতির যুগ : মাধ্যমিক ইতিহাস

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার, জাতীয়তাবাদের উন্মেষ প্রভৃতির ফলে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে এজন্য এই সময়কালকে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলা হয় | ড.অনিল শীল উনিশ শতককে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন।

সভাসমিতি যুগের বৈশিষ্ট্য: সভাসমিতির যুগের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ —

[1] বাংলার সূত্রপাত : ব্রিটিশ শাসনকালে সর্বপ্রথম বাংলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা শুরু হয় | পরে ভারতের অন্যান্য প্রদেশেও অনুরূপ সংগঠন গড়ে উঠতে থাকে।

[2] উদ্দেশ্য: ভারতীয়দের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এইসব সভাসমিতির মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষা করা। এই উদ্দেশ্যে সভাসমিতি গুলি ব্রিটিশ সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবিদাওয়া পেশ করে।

[3] উচ্চবিত্তদের প্রাধান্য: সাধারণত সমাজের শিক্ষিত ও উচ্চবিত্তরাই এইসব সংগঠনের সদস্য হতেন এবং নেতৃত্ব দিতেন |

[4] সীমিত প্রভাব: এই সময়ের রাজনৈতিক সভাসমিতিগুলির প্রভাব ছিল খুবই সীমিত। দেশের সাধারণ দরিদ্র ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে এবং গ্রামাঞ্চলে এর বিশেষ প্রভাব পড়েনি।

[5] ধীরগতির কার্যকলাপ:

প্রাথমিকের সংগঠনগুলির রাজনৈতিক কার্যকলাপের গতি ছিল অত্যন্ত ধীর|প্রকৃতপক্ষে ‘ভারতসভা’ (১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে) প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনগুলির রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।

বিভিন্ন সভাসমিতি : উনিশ শতকে ভারতে বিভিন্ন সভাসমিতি গড়ে ওঠে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –

i. বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
ii. জমিদার সভা
iii. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন
iv. হিন্দুমেলা
v. ভারতসভা
vi. জাতীয় কংগ্রেস প্রভৃতি

উপসংহার: উনিশ শতকে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সভাসমিতি ভারতবাসীর রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে ছিল। তবে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত এই সমিতিগুলি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিজেদের কর্মকাণ্ডে শামিল করতে পারেনি।

The post সভাসমিতির যুগ: মাধ্যমিক ইতিহাস appeared first on Rlearn Education.

Rlearn Education