ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি | মাধ্যমিক ইতিহাস

Workers and Peasants Party (India)|Madhyamik History

ভূমিকা :- ভারতের জাতীয় কংগ্রেস শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার যে উদ্যোগ নেয় সেক্ষেত্রে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি।

পেজেন্টস পার্টির বাংলা শাখা : কাজি নজরুল ইসলাম, হেমন্ত কুমার সরকার, কুতুবউদ্দিন আহমেদ, সামসুদ্দিন হুসেন প্রমুখের উদ্যোগে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় কংগ্রেসের মধ্যে ‘লেবার স্বরাজ পার্টি অব দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ নামে একটি দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে এই দলের নাম হয় ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি অব বেঙ্গল।

পেজেন্টস পার্টির সর্বভারতীয় শাখাশাখা : বাংলার অনুকরণে বিভিন্ন প্রদেশে শীঘ্রই এই পার্টির শাখা গড়ে ওঠে। এই শাখাগুলি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে অল ইন্ডিয়া ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক হন আর এস নিম্বকার।

উদ্যোগ : পেজেন্টস পার্টি শ্রমিকদের মধ্যে প্রচার করতে থাকে যে, শ্রমিকরা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাধীনতা না পেলে রাজনৈতিক দিক থেকে স্বাধীনতার কোনো মূল্যই থাকবে না। পেজেন্টস পার্টির নেতারা রাজনৈতিক আন্দোলন ও শ্রেণি সংগ্রাম সম্পর্কে শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে থাকেন।

মুখপত্র: বিভিন্ন প্রদেশে এই পার্টির মুখপত্র প্রকাশের মাধ্যমে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চলতে থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘লাঙল’, ‘গণবাণী’, ‘শ্রমিক’, ‘সোশ্যালিস্ট’ ‘কীর্তি’, ‘লেবার-কিষান-গেজেট’ প্রভৃতি।

আন্দোলন: পেজেন্টস পার্টির পরিচালনায় বোম্বাইয়ে রেল, ছাপাখানা, পৌরসভা, বন্দর প্রভৃতির শ্রমিকরা শক্তিশালী সরকার-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা: পেজেন্টস পার্টির আন্দোলনে আতঙ্কিত হয়ে সরকার এই দলের বহু নেতাকে গ্রেফতার করে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় (১৯২৯ খ্রি.) অভিযুক্ত করলে তাদের আন্দোলনের গতি দুর্বল হয়ে যায়।

উপসংহার :- ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’র মূল লক্ষ্য ছিল কৃষক শ্রমিক স্বার্থে কাজ করা। এই দল তাদের মুখপত্রের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষকে বামপন্থী চিন্তাধারায় উদ্‌বুদ্ধ করতে থাকে। জমিদারি প্রথা বিলোপ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের স্বাধীনতা, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দান প্রভৃতির পক্ষে এই দল প্রস্তাব গ্রহণ করে।

Rlearn Education